আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

বাংলাদেশ অথবা নাম, গোত্র, ঠিকানা, জন্ম তারিখ, পেশা, জাতীয়তার জগাখিচুড়ি রাস্ট্র

নৌকা আর ধানের শীষে ভোট দিয়ে সোনার বাংলার খোয়াব দেখা আর মান্দার গাছ লাগিয়ে জলপাইর আশা করা একই! বিস্ময়ের ব্যাপার হল দিনের পর দিন আমরা তাই করছি!! চাকরির সুবাদে গ্রাহকদের আইডেন্টিটি নিয়ে কাজ করতে হয়। আর আইডেন্টিটি মানে সবার আগে গ্রাহকের নাম। ধরা যাক, জনৈক মিস্টার ফারুক। বাংলায় এত সহজ হলেও ইংরেজিতে Faroque, Faruk, Farook, Faruq, Faroq, Faruque....etc. বিপত্তি আরো বাড়ে যখন ভদ্রলোকের পুরো নাম ভোটার আইডি, পাসপোর্ট, এস এস সির সনদ, অন্যান্য প্রতিস্টানের ডকুমেন্ট বা চেয়ারম্যান সনদে ভিন্ন ভিন্ন রূপে পাওয়া যায়। কোনটা রেখে কোনটা ছাড়ি।

জটিলতায় আরেক প্যাঁচ কষে যখন না বুঝেই মো: যোগ করে দেয়া হয়। মো:, মোহা:, মোহাম্মদ, মুহাম্মদ, মু:, মুহা: ইত্যাদি প্রিপিক্স যোগে পরিস্থিতিকে যারপরনাই জটিল করে ফেলা হয়। আমার নামের আগে কোনো প্রিফিক্স না থাকলেও Standard Chartered এর মত খাস ঈহুদি নাসারাদের ব্যাংক Md. যোগ করে দিয়েছে। তাদের এ মহান ধর্মপ্রেমের খেসারত দিতে হয় যখন আমি একাউন্ট পেয়ি চেক জমা দিই! যাহোক, মোদ্দাকথা হল মানুষের নামের ব্যাপারে বাংলাদেশে বিশেষ করে মুসলিম সম্প্রদায়ের 'গ্রামাটিক্যাল' অবস্থা অত্যন্ত শোচনীয়। আরবের আবুবকর, উমর, আলীর নামের আগে মো: না পেলেও আমাদের তৃতীয় শ্রেনীর ইসলাম জ্ঞান সবার আগে তা বসিয়ে দিচ্ছে! সরকারেরও এ ব্যাপারে কোন আইন, বিধি, সংস্থা নেই যারা এ ব্যাপারে মানুষকে গাইড করবে।

১০ লাখের মত সরকারী কর্মচারীর সিংহভাগ শুয়ে বসে (কৃষি, সমাজসেবা, মৎস্য, পানি....) খেলেও মৌলিক এসব নাগরিক সেবা ছিঁচকে মাস্তান, লোকাল টাউট অধ্যুষিত পৌরসভা/ইউনিয়নের কাঁধে চাপিয়ে দিয়ে সরকার খালাস। জন্ম তারিখের ক্যাঁচাল সবার জানা। নিজেরটাই বলি। কে, কবে, কখন জন্ম তারিখ বসিয়ে দিয়েছে কিছুই জানিনা। পরে টের পেলাম ক্লাশ নাইনের রেজিস্ট্রেশনের সময় হাইস্কুলের কেরানী কম্মটি করেছে নিজের ইচ্ছামত।

আমার আসল ডেটের চেয়ে আরো ১০ মাস পিছিয়ে বড়সড় 'বাঁশ' দিয়েছে। ইউনিভার্সিটি ছাড়তে ছাড়তে কিছু কিছু চাকরিতে (২৫ বছর চায় এমন) এজ এক্সপায়ার্ড! ঠিকানার তেলেসমাতি আরো চরম। দাগ, মৌজা দিয়ে জমিজমা চিহ্নিত হলেও বাস্তবে এগুলোর ব্যবহার নেই। ফলে গ্রামবিমুখ প্রজন্ম বাপদাদার জোতজমিও চিহ্নিত করতে পারবেনা। গ্রাম, পো:, থানা ও জেলা ভিত্তিক গ্রামের ঠিকানা লেখাজোখা হলেও ইউনিয়ন উহ্য থাকার কারণে কাউকে ট্রেস করা অত ইজি না।

পৌর এলাকায় হোল্ডিং নম্বরগুলো বড়ই বিচিত্র। যেমন- ১/৫৮/এ দক্ষিন মুগদা। রাস্তাঘাটের বিস্তারিত রেফারেন্স জানা না থাকলে কারো সাধ্য নেই এ ঠিকানা খুজে বের করে। ঢাকা/চট্টগ্রামে থানা ও ওয়ার্ডে অনেক কারবার হলেও বেশীরভাগ অধিবাসী জানেনা আসলে তিনি কোন থানা বা ওয়ার্ডের লোক! শুধু ইলেকশন এলে......! মোদ্দাকথা হল দেশের কোন বাড়িকে আমরা খুব পরিছন্ন ও বৈজ্ঞানিকভাবে ইউনিক ঠিকানায় চিহ্নিত করতে পারিনি যদিও বিভাগ, জেলা, উপজেলা, ইউনিয়ন, ওয়ার্ড, গ্রাম, থানা, মৌজা, বৃহত্তর জেলা, সংসদীয় আসন নানান 'হরিলুটের' খন্ডাংশে বিভক্ত করেছি! জীবিত সি.আর দত্তের নামে রোড দিয়ে বহুল পরিচিত সোনারগাঁ রোডকে আড়াল করার মত গাঁজাখুরি কম্ম করেছি।  ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.