আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

সীমান্তে গড়ে প্রতিমাসে ৩-৭ জন বাংলাদেশীকে খুন এবং ৬ জনকে আহত করছে BSF ( ভারতীয় সীমান্ত রক্ষী বাহিনী ) মানবতা এখানে শুধুই ভদ্দরনোকের (!) শব্দ ।।

কলম চালাই ,এইগুলো লেখার পর্যায়ে পরে কি না তা নিয়ে যথেষ্ট সন্দেহ আছে :) ব্লগের বয়স বছরের উপরে দেখালেও নিয়মিত লিখছি ১৭ আগস্ট ২০১২ থেকে :) একটা ছোট্ট পরিসংখ্যান দেইঃ ২০১৩ ( জানুয়ারি – জুন ) – খুন ১৪ জন বাঙালী । আহত/গুলিবিদ্ধ ৩১ জন । বিগত পাঁচ বছরেঃ ( ২০০৮ থেকে ২০১৩ ) – খুন ২১৪ জন । আহত / গুলিবিদ্ধ ৩২৩ জন । অর্থাৎ , প্রতিমাসে গড়ে ৩ জনের বেশী বাঙালী খুন করেছে বি এস এফ ।

আর জখম করেছে গড়ে প্রতিমাসে ৬ জনের মত । হিসাবটি কি বুঝতে পারছেন ? কোন রকম বিচার / আইন কানুন তোয়াক্কা না করে শুধুমাত্র পেশীবলে ভারতের সীমান্ত রক্ষাকারী বাহিনী প্রতি ১০ দিনে একজন বাংলাদেশীকে সিমান্তে হত্যা করছে এবং ২ জনকে গুলিবিদ্ধ করছে ! (সংবাদ সম্মেলনে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের (বিজিবি) মহাপরিচালক মেজর জেনারেল আজিজ আহমেদ এসব তথ্য অনুযায়ী ) কিন্তু বেসরকারি বিভিন্ন মাধ্যমের সুত্র অনুসারে এই খুনের হার আরও বেশী , প্রায় দ্বিগুণ ! এখন ২০০০ থেকে ২০১১ সালের একটি পরিসংখ্যান দেইঃ অর্থাৎ , এই ১১ বছরে বি এস এফ মোট ৯১৬ জন বাংলাদেশীকে সীমান্তে খুন করেছে । আমি আবার বলি , নয়শত ষোল জন ! এখানে আওয়ামীলীগ , বি এন পি , তত্ত্বাবধায়ক কাউকেই আলাদাভাবে দোষারোপ করার সুযোগ নেই । কেননা এই ১১ বছরে তারা সবাই ক্ষমতায় ছিল । এদেরকে ‘ছিলেন’ বলতে আমার ইচ্ছে হচ্ছে না এই পরিসংখ্যান দেখার পরে ।

এই ১১ বছরের হিসেবে ভারতীয় সীমান্ত রক্ষাকারী বাহিনী প্রতি বছর গড়ে ৮৩ জনের বেশী বাংলাদেশীকে খুন করেছে । মাসে প্রায় ৭ জন । গড়ে প্রতি ৪ দিনে একজন বাঙালী বি এস এফ’এর গুলিতে খুন হয়েছে !!! এ যেন অনেকটা হিসাব মিলিয়ে মিলিয়ে গড় ঠিক রেখে খুন করা !! ভাবছেন , এতো বাংলাদেশী খুন ? কৈ , সেভাবে তো পত্রিকা – টেলিভিশনে দেখলাম না ! দেখবেন কিভাবে ? নিত্যনৈমত্তিক ঘটনায় পরিণত হওয়া এইসব খবর এখন আর গুরুত্ব পায় না । সংবাদপত্রের একেবারে ভিতরে এককোনায় ছোট্ট একটা কলামে কোন রকমে টিকে থাকে এই সংবাদগুলো । ছবিবিহীন ।

আমরা দেখেও দেখি না ! টেলিভিশনেরও একই অবস্থা । ভিডিও রিপোর্টবিহীন দুই লাইনের সংবাদ । আমরা শুনেও শুনি না । পাছে , ভারতের সাথে না আমাদের সম্পর্ক খারাপ হয়ে যায় !! সামনে দিয়ে কুটোটি গেলে আমরা হায় হায় করে কপাল চাপড়াই , পেছন দিয়ে যে ঘর চলে যায় , সে খেয়াল নাই ! বিধাতা বাঙালীই বানাইয়া রাখলা , আর মানুষ করলা না ! কারা খুন হচ্ছেঃ শুধুমাত্র বাংলাদেশী নাগরিকরা । আজ পর্যন্ত ভারতীয় কোন নাগরিক বাংলাদেশ- ভারত সিমান্তে খুন হয়েছে বলে শুনি নি ।

কারও কাছে তথ্য প্রমাণ থাকলে জানিয়ে যাবেন । কারা খুন করছেঃ বি এস এফ ( ভারতীয় সীমান্ত রক্ষা বাহিনী ) আজ পর্যন্ত বাংলাদেশী সীমান্ত রক্ষা বাহিনী বি জি বি ( বি ডি আর ) এখন পর্যন্ত একজন ভারতীয় নাগরিককে বাংলাদেশ – ভারত সিমান্তে গুলি চালিয়ে খুন করেছে বলে কোথাও খুঁজে পাই নি । এই বিষয়েও কারও কাছে কোন তথ্য প্রমাণ থাকলে মন্তব্যের ঘরে জানিয়ে যাবেন । কিভাবে খুন করছেঃ ভাববেন না , বি এস এফ শুধুমাত্র সভ্য জাতির নিয়ম অনুসারে (!) শুধুমাত্র গুলি করে বাংলাদেশীদের খুন করেই খ্যান্ত হচ্ছে । অনেক সময় তারা জানোয়াররুপী হয়ে বাঙালীদের ধরে নিয়ে অমানুষিক নির্যাতন করে খুন করছে ।

তাতেই খ্যান্ত হচ্ছে না তারা । সিমান্তে ফেলে রাখছে , কাঁটাতারে ঝুলিয়ে রাখছে সে মৃতদেহ । ফেলানী’র কথা মনে আছে ? বাংলাদেশী মেয়ে ? যাকে অবর্ণনীয় নির্যাতন করে খুন করে সিমান্তে কাঁটাতারের বেড়ায় ঝুলিয়ে রাখা হয়েছিলো ঘণ্টার পর ঘণ্টা ! এ যেন , কাঁটাতারে ঝুলছে না মৃত ফেলানী , ঝুলছে অথর্ব বাংলাদেশ । আমার খুব জানতে ইচ্ছে করে , সেই নরপশুদের কি কোন বিচার হয়েছিলো আদৌ ?? কেন হচ্ছে এই সীমান্ত খুনঃ সবচে’ প্রচলিত কিছু থিওরি’র মধ্যে রয়েছে , ১) ভারতে লোভনীয় অভিবাসনের জন্য বাঙালীরা ভারতে অবৈধ অনুপ্রবেশ করছে ! তাই তাদের গুলি করা হচ্ছে । শুনতে যেমন হাস্যকর তেমনি অযৌক্তিক ।

International Monetary Fund , World Bank , CIA World Factbook , United Nations জরিপ অনুযায়ী গড় মাথাপিছু আয় বাংলাদেশের (প্রায় ৮০০ ইউ এস ডলার ) চেয়ে ভারতের ( প্রায় ১৪০০ ইউ এস ডলার ) কিঞ্চিৎ বেশী , কিন্তু তা মোটেও লোভনীয় নয় । ভারতের ২/১ টি শহর বাদে সাধারণ ভারতীয়দের বাংলাদেশীদের চেয়ে দৈনিক আয় বেশী না , বরঞ্চ কম ! বাংলাদেশে একজন রিকশাচালকও দৈনিক ৭০০ থেকে ১০০০ টাকা আয় করেন । একজন দিনমজুর ৪৫০ টাকার নিচে কাজ করেন না , তাও পেট পূরে দুই বেলা খাবার সহ । এই বিষয়ে একটা কৌতুকের কথা মনে পরে গেল , এক বাঙালী গেছেন কোলকাতার মাছবাজারে । তো এক দাদা সেখানে গিয়ে খুব গম্ভীর গলায় মাছবিক্রেতাকে বললেন , শ’ খানেক ইলিশ দেন তো ভাই ।

বাঙালী সেই লোক তো হতভম্ভ হয়ে রইলেন ! বলে কি ! ১০০ ইলিশ কিনবেন ! কোলকাতার মানুষ তো তাহলে রুপির জোয়ারে ভেসে যাচ্ছে ! মাছবিক্রেতা যখন সেই দাদাকে ১০০ গ্রাম ইলিশ মেপে দিল , তখন তার ভুল ভাঙল ! সে দ্বিতীয়বারের মত হতভম্ভ হল । যারা এই যুক্তি দেখান তাদের বলিঃ দাদা আমরা এখনও ইলিশ শ’ করে খাওয়া ধরি নি ! ২) গরু চোরাচালানকারীরা অবৈধ অনুপ্রবেশ করছে । তাই তাদের গুলি করা হচ্ছে । বুঝলাম গরু চোরাচালানকারীরা খারাপ , অন্যায় করছে । কিন্তু স্থানীয় আইন বলেন , দেশীয় আইন বলেন আর আন্তর্জাতিক , কোন আইনেই বলা নেই যে হোক চোরাচালানকারী কিংবা অবৈধ অনুপ্রবেশকারী , তাদেরকে গুলি করে খুন করা জায়েজ ।

তাদেরকে আপনি ধরে নিতে পারেন , জেল জরিমানা করতে পারেন । কিন্তু তাদের উপর নির্বিচারে গুলি চালানো রীতিমত মনাবাধিকারের চরম লঙ্ঘন এবং সর্বোচ্চ শাস্তিযোগ্য অপরাধ । এখন এখানে আমার কিছু প্রশ্ন থেকে যায়ঃ ১) ভারতীয় চোরাচালানকারীরা তাহলে কেন গুলিবিদ্ধ হচ্ছে না ? ২) যারা ভারত থেকে ফেন্সিডিল পাচার করে বাংলাদেশে নিয়ে আসছে তারা বি এস এফ’এর হাতে গুলিবিদ্ধ না হয়ে বিজিবি’র হাতে ধরা পড়ছে অথবা পালিয়ে যাচ্ছে কিভাবে ? ৩) যারা গাঁজা , মদ, হেরোইন পাচার করে ভারত থেকে বাংলাদেশে নিয়ে আসছে তারা বি এস এফ’এর হাতে গুলিবিদ্ধ না হয়ে বিজিবি’র হাতে ধরা পড়ছে অথবা পালিয়ে যাচ্ছে কিভাবে ? ৪) যারা ভারতীয় শাড়ি পাচার করে ভারত থেকে বাংলাদেশে নিয়ে আসছে তারা বি এস এফ’এর হাতে গুলিবিদ্ধ না হয়ে বিজিবি’র হাতে ধরা পড়ছে অথবা পালিয়ে যাচ্ছে কিভাবে ? ৫) যারা যৌন উত্তেজক ট্যাবলেট, জন্ম নিয়ন্ত্রণ পিল, বিভিন্ন প্রকার ওষুধ পাচার করে ভারত থেকে বাংলাদেশে নিয়ে আসছে তারা বি এস এফ’এর হাতে গুলিবিদ্ধ না হয়ে বিজিবি’র হাতে ধরা পড়ছে অথবা পালিয়ে যাচ্ছে কিভাবে ? ৬) যারা আগ্নেয়াস্ত্র ও বোমা তৈরীর মসলা পাচার করে ভারত থেকে বাংলাদেশে নিয়ে আসছে তারা বি এস এফ’এর হাতে গুলিবিদ্ধ না হয়ে বিজিবি’র হাতে ধরা পড়ছে অথবা পালিয়ে যাচ্ছে কিভাবে ? ৭) যেসব ভারতীয় চোরাচালানকারীরা বাংলাদেশ থেকে কাসা, পিতল, স্যালো ইঞ্জিন, বিভিন্ন ধরণের প্রসাধনী, ধুর, পলেস্টার কাপড়সহ বিভিন্ন দ্রব্যাদি পাচার করে নিয়ে যাচ্ছে তারা কেন বি এস এফ’এর হাতে গুলিবিদ্ধ হয়ে খুন হচ্ছে না ? .............................................. এভাবে বলতে গেলে প্রশ্নের আর শেষ হবে না । কেন শুধুমাত্র গরুচোরাচালানকারীরাই গুলিবিদ্ধ হচ্ছে জানেন ? অন্যান্য চোরাচালানগুলো খুব সহজ , ধরা পরার ভয় থাকে না বি এস এফ’এর । তাতে বি এস এফ’এর মুনাফাও বেশী ।

কিন্তু তাদের যত সমস্যা ঐ গরু চোরাচালানকারীদের নিয়েই । লোভ না সামলাতে পেরে তারা কাজটি নেয় এবং গলায় আটকালে গুলি করে তা উতরে দেবার চেষ্টা করে । আর মাঝে মধ্যে মনে হয় খামখেয়ালীর বশেই তারা অবৈধ অনুপ্রবেশকারী নাম দিয়ে সীমান্তে বসবাসকারী বাঙালীদের গুলি করে বসে । কিভাবে চোরাচালান হয় সীমান্তে তা আরও বিস্তারিত জানতে অনুসন্ধানী প্রতিবেদন দেখুন সীমান্ত হত্যার পোস্টমর্টেম: যেভাবে কাটাতার, আধিপত্য আর মুনাফার করিডোরে খরচ হচ্ছে মানুষ এই সীমান্ত হত্যাকাণ্ডের পিছনে কি দোষ শুধুমাত্র গরুচোরাচালানকারীদের আর বি এস এফ এর ? না । দোষ ভারত এবং বাংলাদেশ উভয় সরকারের ও রয়েছে ।

সীমান্ত হত্যাকান্ড ঘটলে বাংলাদেশ সরকারের পক্ষ থেকে সব সময়ই চোরাচালানকারীদের দায়ী করা হয়। অথচ সরকার নিজেই “করিডোর” নামের এক অদ্ভুত প্রথার মাধ্যমে সেই ভয়ংকর ঝুকিপূর্ণ চোরাচালানকে রীতিমত উৎসাহিত করছে। করিডোর প্রথা অনুসারে চোরাচালানকৃত গরুগুলোকে প্রথমে মালিকানাবিহীন দেখিয়ে “বাজেয়াপ্ত” ঘোষণা করা হয় এবং রাষ্ট্রীয় মালিকানায় দেখানো হয়। এরপর এই “রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন বাজেয়াপ্ত” গরু স্রেফ ৫০০ টাকার বিনিময়ে গরু ব্যাবসায়ীর কাছে বিক্রি করে দেয়া হয়! গরু করিডোর করার রসিদ । বাস্তবে গরু চোরাকারবারীর কাছেই থাকে, চোরকারবারীর কাছ থেকেই গরু ব্যাবসায়ী ৩০ হাজার বা ৪০ হাজার টাকার বিনিময়ে গরু কেনে, এর মাঝে সরকারকে ৫০০ টাকা দেয়ার বিনিময়ে গরুর মালিকানার ৪ দিন মেয়াদি একটি বৈধ রসিদ পায় যে রসিদের নাম্বারটি গরুর গায়ে রঙ দিয়ে লিখে ট্রাকে ওঠানো হয়।

গরু ব্যাবসায়ী এক রসিদ দিয়ে যেন একাধিক চালানের গরু বৈধ করতে না পারে সে জন্য মালিকানার রসিদের মেয়াদ ৪ দিন বেধে দেয়া হয়। বিভিন্ন এলাকার সীমান্ত চোরাকারাবারের সাথে যুক্ত লোকজনের বক্তব্য অনুসারে এই সমস্ত আয়োজনের বিনিময়ে গরু প্রতি বিজিবি ক্যাম্প ২০০ টাকা, থানা ২০০ টাকা, ইউনিয়ন পরিষদ ৩০০ টাকা এমনকি কোথাও কোথাও সাংবাদিক মহল ১০০ টাকা করে ভাগ পায়। আরো উপর মহলে কে কি ভাবে কত পায় তা অবশ্য জানা যায় নি। চোরাচালানকৃত গরুর গায়ে লাল রঙ দিয়ে করিডোরের নম্বর দেয়া হচ্ছে। এভাবে বাংলাদেশের সরকার উভয় দেশের চোরাকারবারি, মহাজন বা গরু ব্যাবসায়ীর মুনাফা নির্বিঘ্ন করার জন্য করিডোর প্রথা চালু করে গরু চোরাচালানকে উৎসাহিত করছে কিন্তু সেই চোরাচালান করতে যাওয়া সীমান্তের অভাবি মানুষগুলোর নিরাপত্তার কোন দ্বায়িত্ব নিচ্ছে না।

ভারত সরকারও দিনের পর দিন সীমান্ত এলাকায় ভারতের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে গরু নিয়ে এসে জড়ো করা ও বাংলাদেশে বিক্রি করার সুযোগ দিচ্ছে ভারতীয় গরু ব্যাবসায়ীদের কিন্তু সেই গরু নিতে ভারতে যাওয়া মানুষগুলোকে কাটাতার কাটা, অবৈধ অনুপ্রবেশ, হামলা ইত্যাদির অযুহাতে বিএসএফ কে দিয়ে গুলি করে মারছে, নিপীড়ন করছে। ভারত ও বাংলাদেশের গরু ব্যাবসায়ী ও তাদের দোসরদের মুনাফা নিশ্চিত করা এবং বাংলাদেশের মানুষের গরুর মাংসের চাহিদা পূরণ করতে গিয়ে যারা জীবন দিচ্ছে তারা যেন চোর, অপরাধী, যেন মৃত্যু আর নির্যাতনই তাদের উচিত পাওনা। অথচ এই মানুষগুলো ভারত থেকে গরু চুরি করে আনে না, ভারতের গরু ব্যাবসায়ী গরু বিক্রি করে বলেই এদেশের গরু ব্যাবসায়ীর হয়ে তারা ভারতে যায় গরু আনতে। এভাবে গরু আনা যদি অপরাধ হয় তাহলে তার শাস্তি গরু আনতে যাওয়া বাংলাদেশের গরীব মানুষটির কেন হবে, তাও আবার একেবারে জীবন দিয়ে? এই কারবারের মূল আয়োজন তো সে করেনি, মূল সুবধিা ভোগীও সে নয়। এই চোরাকারবারের দায় তো ভারতের গরু বিক্রেতার, গরু বিক্রেতাকে সীমান্ত এলাকায় গরু নিয়ে আসা ও বিক্রি করার অবাধ সুযোগ দেয়া ভারত সরকারের, দায় লাইন খাওয়া ভারতীয় বিএসএফ ও বাংলাদেশের বিজিবি’র, দায় তো বাংলাদেশের গরু ব্যাবসায়ীর এবং গরু চোরাচালনকে করিডোরের মাধ্যমে উৎসাহ দেয়া বাংলাদেশ সরকারের।

তবে সবচে’ বড় এবং গুরুত্বপূর্ণ যে কারনে হচ্ছে এই হত্যাযজ্ঞ তা উপরে বর্ণিত এসব কিছুই নয় । সবচে’ বড় কারণ হল , ভারত বড় দেশ , অনেক ক্ষমতাশালী এবং দাম্ভিক । না , এসব উস্কানিমূলক কোন কথা নয় । বাস্তব সত্য । ভারত তার দাম্ভিকতার ফলে শুধু বাংলাদেশ নয় , আশেপাশের সবগুলো দেশকে ডমিনেট করে যাচ্ছে ।

বিদেশে থাকার সুবাদে আমার সার্কভুক্ত ছোট দেশগুলোর শ্রীলঙ্কান , নেপালি , ভুটানি , মালদ্বীপের অনেকের সাথেই কথা হয়েছে , এই বিষয়ে । প্রেক্ষাপট শুধুমাত্র ভিন্ন , কিন্তু ভারতের ডমিনেশনে অতিষ্ঠ ওরাও । পাকিস্থানের হিসাব বাদ । ভারতের ভাবটা যেন এমন – আমার ইচ্ছে হয়েছে , আমি করেছি , তোদের কি ? পারলে ঠেকা ! কিছু করে দেখা ! পাকিস্থানের সাথে তাদের একরকম যুদ্ধাবস্থাই বিরাজ করে সবসময় , সেই তাদের সীমান্তগুলোতেও মনে হয় এতো বেশী খুনের ঘটনা ঘটে না । বাংলাদেশ-ভারত সীমান্তে একটি বড় সমস্যাঃ বাংলাদেশের সঙ্গে ভারতের এখনো ৫০০ কিলোমিটার অরক্ষিত সীমান্ত রয়েছে।

ওই সীমান্তে বিজিবি টহল দিতে পারে না। বাংলাদেশের সঙ্গে ভারতের সীমান্তে ৯৩৫ কিলোমিটার সীমান্তজুড়ে সড়ক নির্মাণের পরিকল্পনা হাতে নেওয়া হয়েছে। তিন বছরের মধ্যে এই সড়ক নির্মাণ করা হবে। কিছু বিরোধপূর্ণ সীমান্ত অঞ্চল ছাড়া বাংলাদেশ-ভারত সীমান্তের বেশিরভাগ অংশই কাটাতার দিয়ে ঘিরে রেখেছে ভারত। বাংলাদেশের নিজস্ব কোন কাটাতার নাই, ফলে বাংলাদেশের সীমান্ত রক্ষীবাহিনী বিজিবি’র কাটাতার রক্ষার কোন দায় নেই, তারা সীমান্ত রেখা বরাবর হেটে বা সাইকেলে করে পাহারার কাজটি করে।

যে কারনে বিজিবি’র পক্ষে সীমান্তে এই ব্যাপারে কার্যকরী ভূমিকা পালন করা বেশ কঠিন হয়ে দাড়ায় । বি এস এফ এই সুযোগ এবং সুবিধাকে কাজে লাগিয়ে বি জি বি’র চোখ ফাঁকি দিয়ে একই দিকে যেমন ভারত থেকে চোরাচালানের মাল বাংলাদেশে প্রবেশ করতে সাহায্য করছে কিংবা বাংলাদেশ থেকে ভারতে চোরাচালানের মাল ভারতে যেতে সাহায্য করছে অর্থের বিনিময়ে তেমনি নিজেদের বিপদ দেখলে অর্থাৎ ঊর্ধ্বতন কতৃপক্ষের হাতে ধরা খাওয়ার অবস্থার সৃষ্টি হলে গুলি চালিয়ে বাহাদুর সাজছে ! মাঝে মাঝে যে বিজিবিও এইসব চোরাচালানকারীদের সুযোগ দিচ্ছে না তা নয় , কিন্তু বিজিবি কখনোই গুলি করে নি ! চোরাচালানকারীদের ধরে এনে আইন অনুযায়ী শাস্তির বিধান করেছে । এর প্রেক্ষিতে কোন দেশ কি পদক্ষেপ নিচ্ছেঃ বাংলাদেশঃ বিজিবি যা করেছেঃ চলতি বছরের ২৩ জুন পর্যন্ত সীমান্তের ঘটনায় ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর (বিএসএফ) কাছে ৪৫টি প্রতিবাদপত্র পাঠানো হয়েছে। চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে মে পর্যন্ত বিভিন্ন বিষয় নিয়ে বিএসএফের সঙ্গে দুই হাজার ২২০টি পতাকা বৈঠক করেছে বিজিবি ! সরকারঃ না পারতে বাংলাদেশের চরম ব্যার্থ পররাষ্ট্রমন্ত্রীরা বছরে একবার ভারতের সাথে চা খাওয়ার সৌজন্য সাক্ষাত করেন । ‘’ ভালো আছি , ভালো থাকবেন , আকাশের ঠিকানায় চিঠি লিখবেন ‘’ – এই জাতীয় কথাবার্তার মাধ্যমে তাদের সফল (!) সাক্ষাৎ সম্পন্ন হয় ।

আমজনতাঃ এতো সময় কৈ ? ভারতঃ কিছুই না । বিশ্বঃ নীরব দর্শক । ফলাফল যা হচ্ছেঃ কিছুই না । আগেও যেমন সীমান্তে বাংলাদেশীদের খুন করেছে বি এস এফ , এখনও করে যাচ্ছে । ভবিষ্যতেও করে যাবে ।

মানবতা এখানে শুধুই ভদ্দরনোকের (!) শব্দ । ।  ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.