আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

ঝিঁঝিঁ পোকা’র কিছু অনৈতিক অথবা “পেক পেক পেক” ঘটনা। পর্ব ২

"মাসুদ পারভেজ মিঠু" দ্যা "পেক পেক পেক" বয়!!! ১ অপরিসীম শক্তিধর (!) ঝিঁঝিঁ ছোটবেলায় নায়ক হইতে অনেক মন চাইত। মনে মনে ভাবতাম নায়ক হওয়ার প্লাস পয়েন্ট তো বিরাট! অনেক জিনিস (!) ভালোমতোন উপভোগ করা যাবে! সাথে আরেকটা জিনিসও ফাও পাওয়া যাবে! সেইটা হলো “অপরিসীম শক্তি”! ছোটবেলায় মামা সুত্রে অনেক বাংলা ছবি হজম করার সুযোগ হইছিল। আহা (!) কি সেই সোনালি দিনগুলা ছিল। ভিশুমাইক টাইপের মারামারি! আকাশেতে লক্ষ তারা চাঁদ কিন্তু একটারে, ইয়াহহ টাইপের গান! সেইখানে দেখতাম নায়ক কোন অপরাধ করলে নায়কের মা “মুগুর” টাইপের কি একটা দিয়া জানি মারত। অথবা, নায়ক গরীব হ্ইয়া বড়লোক জমিদারের কোন মেয়েকে ভালোবাসলে জমিদার তাকে চাবুক দিয়ে চুম্মা দিতেন (!) সুরি মারতেন।

কিন্তু আজব হয়ে অবলোকন করতাম যে নায়ক কখনো চুল পরিমান সরে না! থাম্বা’র মতো দাড়ায়া থাকে! আজিব! সে কি ব্যাথা পায় না? তখন ভাবলাম নায়ক হইলে মনে হয় গায়ে ব্যাথা পাওয়া যায় না! আমারো তখন অসীম শক্তিধর হবার শখ হলো। কিন্তু এমতে এমতেই তো আর কাউরে আমারে মারার অধিকার দিতে পারি না। একদিন বাসায় কি জানি একটা অপরাধ করেছিলাম মনে নাই। আমার মা আমাকে বেত নিয়ে মারতে আসছিল। নানী তাকে থামাইবার অনেক চেষ্টা করতেছিল।

কিন্তু মা মানতে নারাজ। উনার ইচ্ছা উনি আমাকে সেইদিনই মেরে ফেলবেন। আমিও জিদ ধরে দাড়াইয়া থাকলাম। মনে মনে ভাবলাম আইজকা নায়ক হইয়াই ছাড়ুম! মা তো মারতেই আছে, মারতেই আছে। নানী আমাকে বুঝাইতেছে আমি যাতে মাফ চাইয়া নেই।

কিন্তু আমার মনে তো নায়ক হবার শখ। আমি মাফ চামু না বইলা ঠিক করলাম। কিন্তু হঠাত কইরা যখন একটা বাড়ি জায়গা মতন লাগলো তখন মনে হইল দুনিয়া আন্ধার হইয়া গেছে! আমি মনে হয় যাইতেছিগা নানার কাছে (নানা দুনিয়াতে নাই)! জোরে একটা চিক্কুর মাইরা অফ হইয়া গেলাম! মা ভাবলো যে আমি মনে হয় বেশী ব্যাথা পাইছি তাই ছাইড়া দিল। পড়ে যখন বরফ টরফ দিয়া নিজেকে শান্ত করলাম তখন মা’র পায়ে ধইরা মাফ চাইলাম। নায়ক হয়ার এই আজাইড়া ইচ্ছা আর জাগে নাই।

এখনো আগের কোন নায়ককে এইরকম পোজ দিয়া মাইর খাইতে দেখলে ওই মাইরের কথা মনে পড়ে! উহু!! পেক পেক পেক ২ ঐদিন কেন জানি মনে হয়েছিল হাসলে মেয়েদের ডাইনীর মতো লাগে! ২০০২ সালের কথা । তখন ক্লাশ সিক্সে পড়ি। নতুন নতুন সাইকেল চালানো শিখলাম। নতুন সাইকেল পেলাম। নিজের সাইকেল রে হোন্ডা ভাবতাম! চালাইতে বসলেই মনে হতো আমি বাইক চালাইতেছি।

একটা মেয়ে সামনে পড়লে তো শরীররে বাইক চালানোর মতো কইরা এক হাত ছাইড়া চালাইয়া যাইতাম আরেক হাত দিয়া চুল ঠিক করতাম! কি ভাব ছিল তখন! হবিগঞ্জে তখন দুইটা স্কুল অনেক বিখ্যাত ছিল। একটা হলো আমাদের স্কুল (হবিগঞ্জ সরকারী উচ্চ বিদ্যালয়) আরেকটা হলো মেয়েদের স্কুল (বি কে জে সি সরকারী বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়) একদিন ভাবলাম ওই দিক দিয়া একটা ভাব নিয়া সাইকেল চালাইয়া যামু। যেই ভাবনা সেই কাজ। ৪টার স্কুল ছুটির পর এক মিনিট ও দেরী করি নাই। সাইকেল নিয়া বের হয়ে পরলাম।

উদ্দেশ্য মেয়েদের স্কুলের সামনে দিয়ে বাসায় যাব। স্কুলের সামনে একটা মোড় ছিল। রাস্তার কাজ করার জন্য কিছু পাথর রাখা ছিল যেটা আমার নজরে আসে নাই। ওই মোড়ে আইসা আমার স্পীড বাইড়া গেল। কোমর বাকাইয়া যেই সাইকেল ঘোড়াইতে যামু তখনই পিছলা খেয়ে আমি ও আমার সাইকেল ধরনীকে চুম্বন করিলাম।

কিছু সময় আমার মাথায় কিছু যাচ্ছিল না। মানুষের হাসি শুনে আমার হুস হলো। উপরে তাকাইয়া দেখি গোটা তিরিশেক ললনা আমার দিকে তাকাইয়া হাসিতেছে। তারা মনে হয় আমার বীরত্বকে সার্কাস হিসেবে নিছিল! কে জানি আমাকে বলেছিল “হাসলে নাকি মেয়েদের মুখ থেকে মুক্তা বের হয়” কিন্তু ওই সময় আমার মনে হয়েছে হাসলে মেয়েদের ডাইনীর মতো লাগে! তারপর আমার স্কুল জীবনে ওই রাস্তা দিয়া আর যাই নাই। শুধু ২০০৭ সালে এস এস সি পরীক্ষা দিতে ওই স্কুলে যাইতে হইছিল।

এখন যখন দেখি কেউ কেউ রাস্তা দিয়া বাইকরে রকেট ভাইবা চালাইয়া যাইতেছে তখন মনে হয় একবার উষ্টা খাইয়া দেখ। পরে ভ্যাসপা’র মত বাইক চালাবি! সবাই ভালো থাকবেন পেক পেক পেক  ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।