আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

বিড়ি বানানো ও হ্যাকিং বিড়ি বানানো ও হ্যাকিং

কি বলব অন্যরকম বৃত্তিমূলক শিক্ষার খোঁজ পাওয়া গেছে। শিক্ষার্থীরা শিশু। মাসুম বলেই তারা নিরুপায়। জীবিকার জোয়াল চেপে বসেছে তাদের কাঁধে। কী আর করা? অগত্যা টানতে হচ্ছে জীবিকার ঘানি।

যে অঞ্চল থেকে এ খবরের উদ্ভব, সেই তল্লাট তামাকুর জন্য বিখ্যাত। কেউ কেউ বলেন কুখ্যাত। অনেক আগে থেকেই এই বদনাম অর্জন করেছে অঞ্চলটি। রংপুরের হারাগাছ হচ্ছে ঘটনাস্থল। কী ঘটেছে ওখানটায়? দৃষ্টি মেলে দেখাই যাক না প্রথমটায়।

হারাগাছ পৌর এলাকায় প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ছাত্রছাত্রীদের নিয়ে সংবাদ। দুপুরের পর তারা স্কুলে থাকে না। চলে যায় বিড়ি তৈরির কাজে। উত্পাদনমুখী কর্মকাণ্ড বলে কথা! গালভরা বুলিতে বলতে হয় ইনকাম জেনারেটিং ওয়ার্ক। নিন্দুকেরা শিশুশ্রম বলে নাক সিটকাবেন।

তাচ্ছিল্যে ঘুরিয়ে নেবেন মুখ। গার্জেনরা এসবের থোড়াই কেয়ার করেন। তাদের একজনের ভাষ্য এরকম—‘হামার ছাওয়া প্রতিদিন স্কুলোত যায়। বিড়ির কাম করার জন্যে দুপুরবেলা চলি আইসে। ’ আরেক গার্জেনের কথায় ফুটে ওঠে প্রশ্রয়ের পরিষ্কার ছবি।

তার বক্তব্য হলো—‘ছাওয়া বিড়ির কাম করে বলে এখনো ভালো আছি। না হইলে সংসার চলা কষ্ট। ’ এই বিষয়ক পরিসংখ্যানটাও এক ফাঁকে দেখে নেয়া যাক। হারাগাছ পৌরসভায় স্কুল রয়েছে ১৭টি। সরকারি বেসরকারি মিলিয়ে।

এসব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে পড়াশোনা করছে প্রায় সাড়ে আট হাজার শিশু। স্কুলে যাওয়ার উপযোগী শিশুর সংখ্যা প্রায় ১৫ হাজার। পৌর এলাকার বিদ্যালয়গুলো থেকে দুপুরের পর বিড়ি বানানোর কাজে চলে যায় ৪০ শতাংশ শিশু। জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা বলেছেন, সেখানে এ ধরনের চিত্র দীর্ঘদিনের। বিড়ি কারখানায় শিশুদের যাতে না নেয়া হয়, সেজন্য বলে দেয়া হয়েছে।

তারা নিতে না চাইলেও অভিভাবকরা পরিবারের অভাব-অনটন দূর করতে শিশু-সন্তানদের কাজে লাগান। ভালো সিদ্ধান্তই নিয়েছেন অভিভাবকেরা। শিশুরা কাজ করছে, দু-চার টাকা রুজি-রোজগার করছে, সেটা খুবই ভালো কথা। আমরা এই ‘শুভ সংবাদ’ বিরস বদনে নেব কেন? হাসিমুখে এই খবর শুনতে চাই, জোরসে তালিয়াও বাজাতে চাই। এমন খোশখবরে যে নরাধম বেজার হয়, তাকে আমরা ‘পাষাণ হৃদয়’ অভিধায় আখ্যায়িত করতে চাই।

বিড়িশ্রমিক শিশুদের পক্ষে আমরা সাফাই গাওয়ার পবিত্র দায়িত্ব নিয়েছি। সেই দায়িত্ব পালনকালে কেউ যদি বাঁকা চোখে তাকান, তেরচা মন্তব্য করেন—সেসব আমরা বরদাশ্ত করব না। কভি নেহি। এক্ষণে আমরা বিড়িশিল্প ও শিশু শ্রমিক বিষয়ক অভিসন্দর্ভের খসড়া একটি রূপরেখা তৈরিতে লিপ্ত হবো। হয়তো এটা অপচেষ্টাই।

তারপরও তথাকথিত দায়দায়িত্ব বলে কথা। * শিশুরা আয়-রোজগার করছে। সেটা ওরা করছে বলেই ‘মঙ্গা’ খামোশ খেয়ে থাকছে। ওই অঞ্চলে আঘাত হানার মতো দুঃসাহস দেখাতে পারছে না। * অবুঝ শিশুরা নির্মল শৈশবেই বাপ-মার আর্থিক যন্ত্রণা লাঘবের গুরুদায়িত্ব কাঁধে তুলে নিয়েছে।

এ থেকে প্রমাণ হয় যে, তারা সুনাগরিক হিসেবে গড়ে উঠছে। তারা হলো জুনিয়র সুনাগরিক। এখনই তাদের ‘সুশীল’ বলতে চাই না। বড়জোর ‘সুশিশু’ বলতে পারি। এই বলাটাও এক প্রকার ক্ষমতার অপব্যবহারই।

* ধিঙ্গি ধাড়ি সুশীলরা কথা পালটে, স্যরি বোল পালটে ফেলতে সময় নেয় না। রাতারাতি। তাদের চোখের পর্দা বলতেও কিছু নেই। যেমন? উদাহরণ সামনেই আছে। ভারতকে ট্রানজিট (আসলে করিডোর) দিলে বাংলাদেশ সিঙ্গাপুর হয়ে যাবে।

উন্নয়ন উথলে উথলে পড়বে। এমন-ধারা রঙিলা বুলি কপচিয়েছিলেন সুশীলরা। এখন তারা গর্তে ঢুকে গেছে। বন্ধু কথাশিল্পী হুমায়ূন আহমেদের ভাষায় ‘গর্তজীবী’ হয়ে গেছেন তারা। দিনবদলের সঙ্গে ম্যাচিং করে ভূমিকা বদল।

অথবা ভোল বদল। * এই শিশুরা বিড়িবান্ধব হিসেবে গড়ে উঠছে। এমন কপাল কয়টা শিশুর হয় এই ধরাধামে? মাদকীয় পরিবেশে তারা বিড়িতে আসক্ত হয়ে পড়লেও তাদের মধ্যে কোনো অপরাধবোধ থাকবে না। থাকবার সঙ্গত কারণই নেই। বাপ-মা-ই তো পাঠিয়েছে ওদের।

শিশু মন কৌতূহলী। বিড়ির টেস্ট কেমন, সেটা চেখে দেখতে চাইলে ওদের দোষ দেয়া চলবে না। বিড়ি বানানেওয়ালা পিচ্চি সুশিশুরা কিন্তু অমন ধড়িবাজ নয়। তারা বাপ-মার কমান্ড মেনে চলছে। একবেলা পড়া একবেলা বিড়ি তৈরি—এই ফর্মুলায় শৈশবজীবন যাপন করছে।

ভণ্ড সুশীলদের সঙ্গে ওদের তুলনা করা তাই কোনোমতেই ঠিক হবে না। * এই প্রকল্পে সরকার বাহাদুরেরও খুশি হওয়া উচিত। সাংবাদিক দম্পতি সাগর ও রুনি খুন হওয়ার রহস্য ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে বের করা হবে—এমন বাজখাঁই ঘোষণা দিয়েছিলেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী। ছয়দিন গত হয়ে গেল, তদন্তের বেলুন চুপসে আছে এখনও। রহস্যের কোনো কূল-কিনারা হয়নি।

সরকার তলে তলে নিজেরাই ফেঁসে গেছে কিনা, সেটাই বা কে বলবে? বাংলাদেশী শিশুরা শুধু বিড়িই বানায় না। একটু যারা বড়, সেই তরুণরা অন্য ধরনের কাজও করতে সক্ষম। ভারতীয় একটি পত্রিকা ডেকান ক্রনিকল মন্তব্য করেছে—সাইবার যুদ্ধে বাংলাদেশী হ্যাকারদের কাছে ভারতের পরাজয় হয়েছে। দক্ষিণ ভারতের বহুল প্রচারিত ইংরেজি এই দৈনিকটির গত ১৪ ফেব্রুয়ারি ’১২ সংখ্যায় এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে এ কথা। বলা হয়েছে, ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর (বিএসএফ) একটি ওয়েবসাইটসহ হ্যাক করেছে বাংলাদেশভিত্তিক ব্ল্যাকহ্যাট হ্যাকার্স গ্রুপ।

এর মধ্যে বিএসএফের ওয়েবসাইটটি পুরোপুরি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ব্ল্যাকহ্যাট হ্যাকার্স গ্রুপের দাবি— সীমান্তে বিএসএফ কর্তৃক বাংলাদেশী হত্যার প্রতিবাদে তারা এ কাজ করেছে। ।


এর পর.....

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.