আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

চাকরি, উদ্যোক্তা এবং বেকারত্ব- কি ভাবছেন আপনি

যে জানেনা এবং জানে যে সে জানেনা সে সরল, তাকে শেখাও। যে জানেনা এবং জানেনা যে সে জানে না, সে বোকা-তাকে পরিত্যাগ কর। প্রতিটি শিক্ষিত ব্যক্তির জীবনের লক্ষ্য থাকে একটি কর্মজীবনে প্রবেশ করা এবং আয় করা। লেখাপড়া শেষে কেউ একটি চাকুরি পেলে তার শিক্ষার সমাপ্তি বলে ধরে নেয়। ছেলে মাস্টার্স পাশ করে ব্যবসা করে কথাটা অভিভাবকরা সহজভাবে নেন না।

তারমানে ছেলে বেকার। একটা ব্যবসা দাঁড় করাতে গেলে আসলেই অনেকটা বেগার খাটতে হয়। এই খাটা খাটুনিটা যদি অস্থিতিশীল হয় তাহলেই আপনি উদ্যোক্তা হওয়ার প্রেরণা পাবেন না। ধরুন, আপনি পাশ করে বের হয়ে চাকুরির জন্য বিভিন্ন জায়গায় আবেদন দিয়ে যাচ্ছেন। কয়েক জায়গায় ইন্টারভিউ দিয়েছেন।

চাকরি পাচ্ছেন না। এদিকে আত্মকর্মসংস্থানমূলক কিছু করবেন কিনা সে ভাবনায়ও আপনি দোদূল্যমান। এই দোটানায় পড়ে আপনি একজন উদ্যোক্তা হওয়ার সম্ভাবনাকে তিরোহিত করলেন। আপনি যদি অনেক মেধাবী হন তবে আপনার আত্মবিশ্বাস থাকবে যে আপনি একটি সম্মানজনক পেশা বেছে নিতে পারবেন। সম্মানজনক পেশা না পেলে হতোদ্যম হয়ে যাবেন না।

বর্তমান শিক্ষায় শিক্ষিত আপনি। আপনি চাকুরির চিন্তা না করে আত্মকর্মসংস্থানমূলক কিছু করার উদ্যোগী হোন। চাকুরি না পেলে ব্যবসা করার চিন্তা করবেন এরকম অনিশ্চিত ক্যারিয়ার চিন্তা আপনাকে পিছিয়ে দেবে। আমাদের দেশে বর্তমানে প্রাইভেট সেক্টরের চাকরি বলতে গুটিকয়েক কর্পোরেট প্রতিষ্ঠানের এক্সিকিউটিভ পদকে বুঝায়। আইটি শিক্ষা বিস্তৃতি পাচ্ছে।

টেলিকম প্রতিষ্ঠানে এই শিক্ষিত তরুণদের জায়গা হয়ে যাচ্ছে। প্রাইভেট ব্যাংকগুলো মেধাবী শিক্ষার্থীদের নিয়ে যাচ্ছে। বিভিন্ন কর্পোরেট প্রতিষ্ঠান স্মার্ট মেধাবী তরুণদের আকর্ষণ করে। এনজিওগুলোকে আমি চাকরির বড় উৎস বলবো। বিভিন্ন বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও চাকরির আরেকটি উৎস।

কিন্তু এই চাকরিগুলো সামাজিক অবস্থানে আকর্ষণীয় নয় অনেক মেধাবী শিক্ষার্থীর কাছে। এখন দেশে সরকারি চাকরি সোনার হরিণ। প্রথম শ্রেণীর কর্মকর্তা পদে প্রতিবছর দেড় দুই হাজার জনবল নিয়োগ দেওয়া হয়। আবেদন প্রার্থী থাকে প্রায় দেড় লাখ। দ্বিতীয়, তৃতীয় ও চতুর্থ শ্রেণীর জনবল বেশি।

সবমিলিয়ে প্রায় ১১ লাখের মত সরকারি চাকুরিজীবী। ১৬ কোটি লোকের দেশে সরকারি বেসরকারি মিলিয়ে মোট ৯৪ লাখ চাকুরিজীবী হলে (২০১০ পর্যন্ত, প্রথম আলো, ২৯/০১/২০১২, পৃষ্ঠা ১৫) মোট জনগোষ্ঠীর একটা বৃহৎ অংশই বেকার থাকে বা অন্য কোনো উপায়ে জীবিকা নির্বাহ করে। ২০১০ সাল নাগাদ দেশে দুই কোটি ২০ লাখ স্বনিয়োজিত কর্মী রয়েছেন। এক কোটি ৬ লাখ দিনমজুর ভিত্তিক শ্রমিক রয়েছেন। ১ কোটি ১৮ লাখ নারী-পুরষ গৃহস্থালীর কাজ করেন।

দেশের মোট জনগোষ্ঠীর প্রায় ৩ কোটি ৮৯ লক্ষ ব্যক্তি এখনো শ্রমশক্তির বাইরে রয়ে গেছেন। ২০০৬ সালেও উদ্যোক্তা ছিলেন ১ লাখ। ২০১০ সালেও উদ্যোক্তা ১ লাখ। তারমানে এই ৫ বৎসরে উদ্যোক্তা একজনও বাড়েনি। ব্যাংকগুলো নবীন উদ্যোক্তাদের পৃষ্ঠপোষকতা করে না।

উদ্যোক্তা হওয়ার জন্য যে প্রাথমিক কাজগুলো করতে হয়ে পদে পদে বাধা। ফলে অনেকে শিক্ষা শেষে অনিশ্চিত পথে পা বাড়াতে চায় না। আমাদের অনেক সম্ভাবনাময় শিক্ষিত যুব সমাজ উদ্যোক্তা হওয়ার প্রচেষ্টায় নামলে দেশে অনেক কর্মসংস্থান বৃদ্ধি পাবে। এ প্রসঙ্গে ২৯/০১/২০১২ তারিখের দৈনিক প্রথম আলো পত্রিকায় প্রকাশিত বাংলাদেশ এমপ্লয়ার্স ফেডারেশনের সভাপতি জনাব ফজলুল হকের একটি সাক্ষাৎকার ছাপা হয়েছে। বক্তব্যটা খুব পরিষ্কার হয়েছে।

এক প্রশ্নের জবাবে...বাংলাদেশের জন্য নতুন কর্মসংস্থান সৃষ্টি এক বিরাট চ্যালেঞ্জ। ভবিষ্যতে এটা আরও বাড়বে। কেননা, প্রযুক্তিগত বিকাশের প্রভাবে কৃষিতে উৎপাদন বেড়েছে, কর্মসংস্থান সংকুচিত হয়েছে। মানে, কৃষিখাতে কর্মসংস্থান খুব একটা বাড়ার সুযোগ কম। সে ক্ষেত্রে সেবা খাতে কাজের সুযোগ তৈরির চাপ বাড়বে।

কিন্তু প্রতিবছর গড়ে ২২ লাখ মানুষের কাজের সুযোগ সৃষ্টির যে চাপ এখন বাংলাদেশে রয়েছে, তা মোকাবিলা করতে হলে শিল্পখাতের প্রবৃদ্ধির দিকেই সবচেয়ে বেশি জোর দিতে হবে। দুর্ভাগ্যজনকভাবে গ্যাস, বিদ্যুৎ, যোগাযোগসহ অবকাঠামোগত সংকট শিল্পখাতের বিকাশে বড় বাধা হয়ে উঠেছে। সরকারের এদিকে নজর দিতে হবে। তা না হলে কর্মহীন মানুষের সংখ্যা বেড়ে সামাজিক অস্থিরতা ও অপরাধপ্রবণতা বেড়ে যাবে, সামাজিক বৈষম্য বেড়ে যাবে। বেকারত্বের চাপ মোকাবিলায় শিল্পখাতের প্রবৃদ্ধি অপরিহার্য শিরোনামে প্রকাশিত সাক্ষাৎকারটি পড়ে একটি কথা জানতে ইচ্ছ করে শিল্পখাতে প্রবৃদ্ধি বাড়াতে হলে উদ্যোক্তাদের পৃষ্ঠপোষকতা দিতে হবে।

নবীন উদ্যোক্তাদের জন্য ব্যাংক ঋণ সহজ করতে হবে। বন্ধুরা, আপনাদের ভাবনা কি? ।

সোর্স: http://www.somewhereinblog.net     দেখা হয়েছে বার

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.