আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

হাসিনা উৎখাতে ধর্মান্ধ সৈন্যদের চেষ্টা ব্যর্থ

everything is fair in love and war কিছু প্রবাসীর ইন্ধনে ধর্মান্ধ সাবেক ও বর্তমান কিছু সেনা কর্মকর্তা শেখ হাসিনার সরকার উৎখাতের ষড়যন্ত্রে লিপ্ত বলে সুনির্দিষ্ট তথ্য পাওয়ার কথা জানিয়ে সেনাবাহিনী বলেছে, সেনাবাহিনীর পুরো বক্তব্য এই ঘটনার তদন্ত ইতোমধ্যে শুরু হয়েছে, দোষীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে। যুদ্ধাপরাধের অভিযোগে গোলাম আযমকে কারাবন্দি হওয়ার প্রেক্ষাপটে সেনাবাহিনীতে কয়েকজন সাবেক ও বর্তমান সদস্যের বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির খবর গণমাধ্যমে প্রকাশের মধ্যেই বৃহস্পতিবার সেনা সদরে এক সংবাদ সম্মেলনে এই তথ্য জানানো হয়। সেনাবাহিনীর এই ধরনের সংবাদ সম্মেলন দেশে বিরল ঘটনা। সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে বলা হয়, স¤প্রতি কিছু প্রবাসী বাংলাদেশি নাগরিকের ইন্ধনে সেনাবাহিনীতে কর্মরত ও অবসরপ্রাপ্ত কতিপয় ধর্মান্ধ কর্মকর্তা কর্তৃক অন্যান্যদের ধর্মান্ধতাকে পুঁজি করে দুরভিসন্ধিমূলক কর্মকাণ্ডের মাধ্যমে সেনাবাহিনীতে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করে বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক ধারা ব্যাহত করার প্রয়াস চালানো হয়। “এই অপপ্রয়াস সেনাবাহিনীর ঐকান্তিক চেষ্টায় প্রতিহত করা হয়েছে।

” সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে সেনাবাহিনীর পরিচালক (পিএস পরিদপ্তর) ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মোহাম্মদ মাসুদ রাজ্জাক বলেন, এ বিষয়ে গত ২৮ ডিসেম্বর একটি তদন্ত আদালত গঠন করা হয়েছে এবং তার কার্যক্রম চলছে। তদন্ত সাপেক্ষে দোষীদের বিরুদ্ধে সেনা আইন অনুযায়ী সর্বোচ্চ শাস্তি দেওয়া হবে বলে জানিয়েছে সেনাবাহিনী। ব্রিগেডিয়ার রাজ্জাক জানান, চক্রান্তের অভিযোগে অবসরপ্রাপ্ত লেফটেন্যান্ট কর্নেল এহসান ইউসুফ ও মেজর জাকিরকে আটক করা হয়েছে। চক্রান্তে জড়িতের সংখ্যা কত- জানতে চাওয়া হলে তিনি বলেন, তদন্ত চলছে, শেষ না হওয়া পর্যন্ত সঠিক সংখ্যা বলা যাবে না। “তবে ধারণা করছি, এই ক্যু বা অভ্যুত্থান চেষ্টার সঙ্গে মিড লেভেলের (মধ্যম স্তরের) ১৪ থেকে ১৬ জড়িত থাকতে পারে।

সঠিক চেইন অফ কমান্ড থাকায় এই চেষ্টা সেনাবাহিনী প্রতিহত করতে পেরেছে,” যোগ করেন ব্রিগেডিয়ার রাজ্জাক। চক্রান্তে বিদেশি কোনো রাষ্ট্র জড়িত কি না- প্রশ্ন করা হলে তার উত্তর আসে- “আমরা কোনো কিছুই উড়িয়ে দিচ্ছি না। ” অভ্যুত্থানের ঘটনায় সেনাবাহিনীর কুমিল্লা অঞ্চলের প্রধান (জিওসি) মেজর জেনারেল কামরুজ্জামান উধাও হওয়ার যে গুজব ছড়িয়েছিল, সে বিষয়ে জানতে চাইলে সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, তিনি ঢাকা সেনানিবাসে লগ এরিয়ায় সপরিবারে অবস্থান করছেন। তিনি গৃহবন্দি কি না- জানতে চাওয়া হলে ব্রিগেডিয়ার মাসুদ বলেন, সেনাবাহিনীতে গৃহবন্দিত্ব বলে কিছু নেই। সংবাদ সম্মেলনে সেনাবাহিনীর চিফ অফ জেনারেল স্টাফ লেফটেন্যান্ট জেনারেল মইনুল ইসলাম, ভারপ্রাপ্ত জজ অ্যাডভোকেট জেনারেল লেফটেন্যান্ট কর্নেল মোহাম্মদ সাজ্জাদ সিদ্দিকসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারাও ছিলেন।

লিখিত বক্তব্যে বলা হয়, সেনাবাহিনীর ঘাড়ে ভর করে গণতান্ত্রিক সরকার ব্যবস্থাকে উৎখাতের ঘৃণ্য চক্রান্তের সঙ্গে বাহিনীতে চাকরিরত কিছু অফিসারের সম্পৃক্ততার সুনির্দিষ্ট তথ্য উদ্ঘাটন হয়েছে। এতে বলা হয়, ষড়যন্ত্রকারীরা পরিকল্পনা বাস্তবায়নের ষড়যন্ত্রকারীরা ইন্টারনেট ও মোবাইল ফোনের মাধ্যমে যোগাযোগ রক্ষা এবং প্ররোচিত করার কাজটি করেন। ষড়যন্ত্রকারী হিসেবে মেজর সৈয়দ মো. জিয়াউল হক নামে এক কর্মকর্তার নাম প্রকাশ করে সেনাবাহিনী বলেছেন, তিনি হিযবুত তাহরীরের সংগঠক; জঙ্গি তৎপরতার জন্য এই সংগঠনটি আড়াই বছর আগে নিষিদ্ধ হয়। ব্রিগেডিয়ার রাজ্জাক বলেন, “মেজর জিয়া গত ২২ ডিসেম্বর অন্য এক অফিসারের সঙ্গে দেখা করে তাকেও রাষ্ট্র ও গণতন্ত্রবিরোধী কর্মকাণ্ড তথা সেনাবাহিনীকে অপব্যবহার করার কর্মকাণ্ডে সম্পৃক্ত হতে প্ররোচনা দেন। তবে ওই অফিসার বিষয়টি যথাযথ কর্তৃপক্ষকে জানালে মেজর জিয়ার ছুটি ও বদলির আদেশ বাতিল করা হয়।

” ছুটি বাতিলের সিদ্ধান্ত ২৩ ডিসেম্বর জিয়াকে জানানো হলেও তিনি ‘পলাতক’ অবস্থায় সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র এখনো চালিয়ে যাচ্ছেন বলে সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়। “মেজর জিয়া ২৬ ডিসেম্বর তাকে গ্রেপ্তার ও নির্যাতন সংক্রান্ত কল্পনাপ্রসূত ও অবিশ্বাস্য গল্প বর্ণনা করে উস্কানিমূলক একটি ইমেইল তার পরিচিতদের কাছে পাঠান, যা সোলজারস ফোরাম নামে একটি ব্লগসাইটেও আপলোড হয়,” বলেন ব্রিগেডিয়ার রাজ্জাক। এরই ধারাবাহিকতায় ৩ জানুয়ারি আমার দেশ-এ প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন বিভ্রান্তি তৈরি করেছে বলে সেনাবাহিনী জানায়। এরপর ৮ জানুয়ারি হিযবুত তাহরীরের একটি লিফলেটও এ নিয়ে প্রচার হয়। তারপর ৯ জানুয়ারি চট্টগ্রামের সমাবেশে সেনাসদস্যও গুম হচ্ছে বলে বিরোধীদলীয় নেতা খালেদা জিয়ার বক্তব্যের প্রসঙ্গ ধরে ব্রিগেডিয়ার রাজ্জাক বলেন, “একটি বৃহত্তর রাজনৈতিক দলও মনগড়া, বিভ্রান্তিকর ও প্রচারমূলক সংবাদের সঙ্গে তাল মিলিয়ে অভিযোগ করে, যা সেনাবাহিনী তথা সচেতন নাগরিকদের মধ্যে অনাকাক্সিক্ষত উস্কানিমূলক বিতর্কের সৃষ্টি করে।

” মেজর জিয়া তার অভ্যুত্থান পরিকল্পনা নিয়ে ইশরাক আহমেদ নামে প্রবাসী এক ব্যক্তির সঙ্গে টেলিফোনে কথোপকথন চালাতেন বলে সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়। ইশরাক সম্পর্কে সেনাবাহিনী জানায়, তিনি সম্ভবত হংকংয়ে রয়েছেন। তার বাড়ি নওগাঁ সদরের বারশাইল ইউনিয়নের বালুভাড়া গ্রামে। সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, অভ্যুত্থানের এই পরিকল্পনায় ধর্মীয় কট্টর একটি গোষ্ঠী, অতীতের গণতন্ত্র ধ্বংসের বিভিন্ন অপশক্তি জড়িত রয়েছে। আর অপপ্রচারের জন্য ব্যবহৃত হয়েছে স্বার্থান্বেষী সংবাদপত্র, নিষিদ্ধ জঙ্গি সংগঠন ও রাজনৈতিক দলের প্ল্যাটফর্ম।

সেনাবাহিনীর পুরো বক্তব্য সুত্র আরও খবর সরকার উৎখাতে কয়েকজন সেনা কর্মকর্তার চেষ্টা নস্যাৎ করা হয়েছে: সেনাসদর সেনা অভ্যুত্থান প্রচেষ্টা: মেজর জিয়াউলের শ্বশুর বাড়িতে গোয়েন্দারা ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.