আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

বিশ্ব ইজতেমার আখেরি মুনাজাত নিয়ে কিছু কথা

لا إله إلا الله محمد رسول الله টঙ্গীতে আখেরি মুনাজাতের মাধ্যমে শেষ হল বিশ্ব ইজতেমার ১ম পর্ব। বিশ্ব ইজতেমায় অনেকেই আসেন শুধু আখেরি মুনাজাতে অংশ নিতে। টেলিভিশনে সরাসরি সম্প্রচারে লক্ষ করলাম বয়ানে উর্দু আর বাংলা ভাষা ব্যবহার করা হয়েছে কিন্তু আখেরি মুনাজাতে বাংলার কোন স্থান নেই, যেখানে অধিকাংশ মুসল্লিই বাংলাভাষী!পৃথিবীতে জনসংখ্যার দিক থেকে আরবি ভাষার পরেই সবচেয়ে বেশি মুসলিম বাংলা ভাষায় কথা বলে। আর খোদ বাংলাদেশে ইজতেমা ময়দানে আখেরি মুনাজাত হল আরবি আর উর্দু ভাষায়??!!কোন যুক্তিতে বাংলা বাদ দিয়ে উর্দুতে মুনাজাত হয়,না বুঝে শুধু ভক্তি ভরে "আমিন আমিন" বলার মধ্যে কোন কল্যাণ আছে কি?পবিত্র কুরআনের সুরা ইব্রাহিমের ৪ নং আয়াতে আল্লাহপাক বলেন,وَمَا أَرْسَلْنَا مِنْ رَسُولٍ إِلَّا بِلِسَانِ قَوْمِهِ لِيُبَيِّنَ لَهُمْযার অর্থ হচ্ছে,"আমি রাসুলদের তাদের স্বজাতির ভাষা ভাষী করে পাঠিয়েছি যাতে তাদের নিকট স্পষ্ট করে বোঝাতে পারেন"। স্বয়ং আল্লাহ তাঁর প্রতিনিধিদের পাঠিয়েছেন স্থানীয় জনগণের বোধগম্য ভাষা দিয়ে আর আজ আমরা "বুঝবার" সে গুরুত্ব অগ্রাহ্য করে অন্য ভাষায় মুনাজাত করছি!কোন মুনাজাত উত্তম,অনুধাবনের সাথে আল্লাহর কাছে চাওয়া নাকি না বুঝে ইমামের সাথে আমিন বলা?{অনেকেই কিন্তু শুধু এই মুনাজাতটার জন্যই ইজতেমায় আসে;এরপর যদি সে সেটার অর্থই না বোঝে তবে তা কতটুকু কল্যাণ বহন করতে পারে? }আরবি মুনাজাত অবশ্যই করতে হবে,কুরআন ও হাদীসে উল্লেখিত মুনাজাতগুলো অর্থ না বুঝে করার মাঝেও নিশ্চয়ই কল্যাণ আছে{তবে বুঝে করাটাই ভাল।

আল্লাহতো বলেছেনই কুরআন বিশ্বজগতের জন্য এক ‘উপদেশ’। এই ‘উপদেশ’ কিন্তু শুধু পড়লেই হবেনা,বুঝতেও হবে!}। কিন্তু উর্দু মুনাজাতের ক্ষেত্রে একথা খাটেনা,বাংলা আর উর্দুর সমান মর্যাদা{ইসলামে ‘বিশেষ’ ভাষা একমাত্র আরবিই-আর তা কুরআন-হাদীসের জন্য;ফার্সি বা উর্দু নয়}। উপমহাদেশের বাইরের মুসলিমরা কিন্তু উর্দু বোঝেনা,উর্দু ভাষা তাই উপমহাদেশের মুসলিমদের জন্যই। গতবার ৯৩টা দেশ থেকে মুসল্লিরা এসেছেন;এসব দেশের কয়টা দেশের মানুষ উর্দু বোঝে?বলা হতে পারে এর চেয়ে উর্দুভাষী বেশি মুসলমান ইজতেমায় আসে-আর আমি বলব “তার চেয়ে বাংলাভাষী মুসলমান বেশি আসে”।

ভারত থেকেও বহু বাংলাভাষী মুসলমান ইজতেমায় আসে। যদি জনসংখ্যা বিবেচনা করা হয় তাহলে পৃথিবীতে আরবিভাষীর পরেই সবচেয়ে বেশি মুসলিম বাংলাভাষী[তথ্যসূত্রঃদৈনিক আমাদের সময়]শুধু তাইনা,এখনো আমাদের দেশে ওয়াজ মাহফিল,মিলাদসহ বিভিন্ন জায়গায় কিছু মাওলানার উর্দুপ্রীতি লক্ষ করা যায়। সকলের প্রতি শ্রদ্ধা রেখেই বলছি,বক্তব্য বিষয় যদি মানুষ বুঝতেই না পারে তাহলে সে বয়ান বা মুনাজাতের সার্থকতা অনেকাংশেই হারিয়ে যায়। উপমহাদেশের আরো বিভিন্ন স্থান থেকে মুসল্লিরা ইজতেমায় আসে,সেজন্য আখেরি মুনাজাতে উর্দু থাকতে পারে তবে তার আগে অবশ্যই বাংলা থাকতে হবে। ইজতেমার মূল উদ্যেশ্য হচ্ছে দ্বীনি শিক্ষা,অর্থহীন বয়ান আর মুনাজাত দিয়ে এই উদ্যেশ্য পূরণ সম্ভব না।

তাই ২০ জানুয়ারী থেকে শুরু হওয়া ইজতেমার ২য় পর্ব থেকে আখেরি মুনাজাতে আরবি আর উর্দুর পাশাপাশি বাংলা ভাষাকে অন্তর্ভুক্ত করার আহ্বান জানাচ্ছি। বয়ানের সময় যেমন বাংলার ব্যবস্থা করা হয়েছে তেমনটা মুনাজাতের সময়েও চাই। যদি আরবির পরে উর্দু রাখা যায় তাহলে বাংলা রাখতে সমস্যা কোথায়?আর যা হোক,উর্দু কুরআন-হাদীসের ভাষা নয়,বাংলার মতই একটা ‘সাধারণ’ ভাষা। আল্লাহ আমাদের সকলকে জেনে বুঝে আমল করবার তৌফিক দান করুন,আমিন। ।

সোর্স: http://www.somewhereinblog.net     দেখা হয়েছে ১০ বার

এর পর.....

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.