আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

একটি পূর্নদৈর্ঘ্য স্বপ্ন- জান্নাত, জাহান্নাম ভ্রমন (ধার্মিকদের কাছে আমি ক্ষমাপ্রার্থী )

হারতে শিখিনি কোনদিন । হারবও না । বিশেষ দ্রষ্টব্যঃ- ধর্মকে হেয় করা ও ধর্মানুভূতিতে আঘাত করা আমার এই লেখার উদ্দেশ্য নয় । স্বপ্নটি দেখেছি কিছুদিন আগে । পূর্নদৈর্ঘ্য সিনেমার এটিকে বলা যায় পূর্নদৈর্ঘ্য স্বপ্ন ।

কারন স্বপ্নটি যেন পূর্ন একটা গল্পের মতই । পূর্নদৈর্ঘ্য স্বপ্ন- প্রথম পার্ট পৃথিবী ধ্বংস হতে চলেছে । আমি জড়োসড়ো হয়ে একটি ভবনের জানালা দিয়ে পৃথিবী ধ্বংস হওয়া দেখছি । সূর্য ও চাঁদ পৃথিবীর খুব কাছে চলে এসেছে । এত কাছে চলে এসেছে যেন হাত বাড়াইলেই ধরা যাবে ।

দৃশ্যটা উপভোগ্য নয়- বরং ভয়াবহ ভয়ংকর লাগছে । কোরানে বর্ণিত ঈসরাফিল (আঃ) এর কেয়ামতের সিঙ্গার ধ্বনি শুনতে পাচ্ছি । তবে সেটা আমার কাছে মনে হচ্ছে ‘পিচ্চি পোলাপানের’ হুইসেল বাশির আওয়াজ । একসময় হঠাৎই সে ভবন দুলে উঠলো । আমি মাটিতে শুয়ে পড়লাম ।

বুঝলাম আমার মৃত্যুর সময় এসে গেছে । কেয়ামত এখনই সংঘটিত হবে । ভবনের দুলুনিটা বাড়তে লাগল । একসময় তা ভেঙ্গে পড়তে লাগল আমার শরীরের উপরে । আমি ভয়াবহ যন্ত্রনা টের পাচ্ছিলাম ।

আমি বুঝতে পারলাম আর সময় নেই । আমার মনে পড়ল ধর্মের কথা। মসজিদে যেতাম । হুজুর বলত - যে মৃত্যুর সময় কালেমা পড়ে মরতে পারবে তার জন্য নাজাত রয়েছে । আমি তাই নাজাতের লোভে তাড়াতাড়ি কালেমা পড়ে ফেললাম ।

মনে মনে বললাম এইবার আর আমাকে জান্নাতে যাওয়া থেকে ঠেকায় কে ?আমি দেখতে পেলাম জান্নাতে বসে বসে আমি ফলমূল খাচ্ছি আর ফলের ‘চুল্লা’ ঢিল মেরে নদীতে ফেলছি । একসময় যন্ত্রনাটা বাড়তেই থাকল । বাড়তেই থাকল । হঠাৎই আমি বুঝলাম আমি আর বেঁচে নেই । পূর্নদৈর্ঘ্য স্বপ্ন- দ্বিতীয় পার্ট এর পর থেকে স্বপ্নটির দ্বিতীয় পার্ট শুরু হল ।

আমি দেখছি আমি আল্লাহর সামনে দাড়িয়ে আছি । আল্লাহ মানুষের বিচার করছেন । কাউকে জান্নাতে ঢুকাচ্ছেন কাউকে ফেরেশতা দিয়ে পেটাতে পেটাতে জাহান্নামে ঢুকিয়ে দিচ্ছেন । আমি আল্লাহর চেহারা দেখতে পাচ্ছি না । কিন্তু বুঝতে পারছি আমার অদূরেই আল্লাহ আছেন ।

একসময় আমার পালা এলো । আমি বুকটান করে আল্লাহর সামনে দাড়ালাম । আমি একটুও ভয় পাচ্ছিলাম না । কারন আমি তো মরার সময় কালেমা পড়েই এসেছি । সুতরাং আমার আর ভয় কিসের ? কিন্তু আল্লাহ আমাকে দেখেই গর্জে উঠলেন ।

বললেন- এক্ষুনি জাহান্নামে ঢুকে যাও । আমিও গর্জে উঠলাম- চোর ! চোর ! আমি কেন জাহান্নামে যাবো? আমি তো কালেমা পড়েই মরেছি । কিন্তু আল্লাহ আবার বললেন- নাহ- তোমাকে জাহান্নামে যেতেই হবে । আমি বললাম- চেঁচাবেন না । তাই যাচ্ছি ।

আমি জাহান্নামের দরজা দিয়ে ঢুকে পড়লাম । আর বলতে লাগলাম – এটা কেমন প্রতারনা ? পূর্নদৈর্ঘ্য স্বপ্ন- তৃতীয় পার্ট এর পর থেকে শুরু হল তৃতীয় পার্ট । জাহান্নামে ঢুকেই দেখি অনেকগুলো কামরা আমার সামনে । প্রচন্ড গরম । জাহান্নামীরা কেউ চিৎ হয়ে, কাৎ হয়ে কেউ উল্টে-পাল্টে পড়ে আছে ।

এমন সময় এক ফেরেশতা এসে বলল- একটু পরেই আগুন এসে পৌছবে । আমি বললাম- আমার জায়গা কোথায় ? ফেরেশতাটা আমাকে বলল- ভাই আপনি জাহান্নামী নন । আপনি জাহান্নামে ঢুকার সময় আল্লাহ আপনাকে ক্ষমা করে দিয়েছেন । সুতরাং আপনি জান্নাতে চলে যান । জাহান্নামের আগুন আসার আগেই যান ।

আমি এক দৌড়ে দরজা দিয়ে বেরিয়ে গেলাম । অন্য একজন ফেরেশতা আমার হাত ধরে একটি দরজার সামনে নিয়ে এসে বলল - এটা জান্নাত । আমি ঢুকলাম । দেখি অসংখ্য জান্নাতীরা রয়েছেন । মুরগির খোপের মত কামরা ।

সেইসব কামরার ছাদ নেই । আমি বুঝতে পারলাম এখানেও গরম । জান্নাতীদের কেউ কেউ বসে বসে হাত পাখা দিয়ে নিজের শরীরে নিজে বাতাস করছে । আমি আবারও চেচিয়ে উঠলাম-এটা তো বাটপারি ! এটা যদি জান্নাতই হত তবে সুন্দর বাগান কই ? হুর কই ?মনোরম আবহাওয়া কই ? ফলফলাদির গাছ কই ? একজন জান্নাতী উঠে এসে আমাকে বলল- ভাই এটাই জান্নাত । আপনার ভালো না লাগলে চলে যান ।

তর্ক অনর্থক দেখে একটা জায়গা নিয়ে বসে পড়লাম । বুঝলাম আমার পেটে প্রচন্ড খিদে ! আমি ঘুরে ঘুরে দেখতে লাগলাম গাছ-টাছ আছে কিনা । কিচ্ছু নাই । চারদিকে বড় বড় দেয়াল । আমি আবারও চেঁচাতে লাগলাম ।

এবার এক জান্নাতের ফেরেশতা আমার চেঁচামেচি শুনে এগিয়ে এল । বলল- ওহে জান্নাতী ভাই চেঁচামেচি করছেন কেন ? আমি বললাম- এটা কেমন বাটপারি ? জান্নাতে গাছ নাই, হুর নাই, মনোরম আবহাওয়া নাই । ফেরেশতা বলল- যারা জীবিত থাকতে সুবহান্নাল্লাহ বলেছে তাদের জন্য জান্নাতে গাছ আছে । আপনি বোধহয় বলেননি । আমি ভেবে দেখলাম আমি জীবনে অনেকবারই সুবহান্নাল্লাহ বলেছি ।

আমি আবারও চেঁচালাম- মিথ্যা কথা । আমি জীবনে অনেক বার সুবহান্নাল্লাহ বলেছি । আমার গাছ আপনারা জালিয়াতি করে মেরে দিয়েছেন । ফেরেশতা বললেন- আচ্ছা ঠিক আছে আপনি আপনার গাছ নিন । এই বলে তিনি একটি গাছ নিয়ে আসলেন ।

আমি বুঝলাম এটি একটি জাম গাছ । আমি এইবার তেলে বেগুনে জ্বলে উঠলাম । ‘আমি জাম অপছন্দ করি । খাবো না জান্নাতের জাম । ’ এই বলে আমি আমার সামনে এনে রাখা জাম গাছে সজোরে লাথি মারলাম ।

আর সাথে সাথে ব্যাথায় কাতরে উঠলাম । আমার স্বপ্ন ভেঙ্গে গেল । ঘুম থেকে উঠে দেখি পায়ে ব্যাথা । বুঝতে বাকি রইল না আমি জান্নাতের জাম গাছ ভেবে ব্রেডের পাশের দেয়ালে সজোরে ক্লিক মেরেছি । ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.