আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

শিরোনামটা নাহয় এবার নাই হলো....

আনাড়ী রন্ধন শিল্পীর ব্লগ B-)। ব্লগের বাজে-মানহীন লেখাগুলোর মাস্টার পিস দেখতে চাইলে এই ব্লগারের পোষ্ট গুলো পড়ে দেখতে পারেন। কথা দিচ্ছি, নিরাশ হবেন না। B-) কয়েকদিন ধরে মনির মন খারাপ হলেও তা চরম আকার ধারন করেছে গতকাল থেকে। কিছুক্ষন বাদে বাদেই চোখ মুছছে।

বাসার সবার ব্যস্ততা দেখে বুকটা মোচর দিয়ে উঠছে। এ অবস্থার মাঝেই ঘরদোর গোছগাছ করেছে মনি আজ সকালে শেষ ফিনিশিং দিচ্ছে। কাজ করে গেলেও সকাল থেকে অঝোর বৃষ্টি ঝরছে ওর চোখ থেকে। কারন একটাই আজ পাত্রপক্ষ দেখতে আসবে। আগে থেকেই মোটামুটি ফাইনাল হলেও আজ ছেলে-মেয়ে দেখা দেখি হবে।

পছন্দ হলে আংটিও পড়াবে মনে হয়। মোটামুটি ফাইনাল হলেও একেবারে নিশ্চিত না হয়ে বাইরের কাউকে ডাকবে না বলে ঠিক করেছে মনির বাবা-মা। এদিকে সাহায্য করার কেউ না থাকায় ঘর গোছানো, খাবার-দাবার সব দিক সামাল দিতে হিমশিম খেতে হচ্ছে সবার। মেয়ের চোখের পানি দেখে মনির মা মিসেস আলম বহু কষ্টে কান্না চেপে রেখেছেন যা কিছুক্ষন পর পর দীর্ঘ শ্বাস রুপে বের হচ্ছে। মেয়েকে বার বার জিজ্ঞেস করেছিলেন কোন পছন্দ আছে কিনা।

মেয়ে না সূচক জবাব দিয়েছে। তবে তিনি ধরে নিয়েছেন সমস্যা কোন একটি আছে। বেশী কিছু বলেননি, কারন ছেলে এবং তার পরিবার তার খুব পছন্দ হয়েছে। ছেলের বাবার ঢাকায় বাড়ী রয়েছে, ছেলের নামেও রয়েছে একটি। মধ্যবিত্ত পরিবার তার, ছেলে-মেয়ে পড়ালেখা করিয়ে ঢাকা শহরে খেয়েপড়ে আর কিছু করতে পারেননি।

এখানে বিয়ে হলে ভালই হবে, ঢাকায় বড় হয়ওয়া মেয়েটির ঢাকায়-ই থাকার একটি ব্যবস্থা হবে। কাজ করতে করতে এসব ভাবছিলেন মিসেস আলম। এর মাঝে খবর এলো ছেলের পরিবার চলে এসেছে। ছেলে ছেলের মা-বোন নিয়ে এসেছে। মনি কিছুতেই তাদের সামনে শাড়ী পড়ে যেতে রাজী হয় না।

আর সাজগোজ করে পাত্র পক্ষের সামনে যাওয়ার পক্ষপাতী ও কখনই না। ওর শুধু বার বার রাফাতের কথাই মনে হচ্ছিলো। সম্পর্কটা খুব বেশী দিনের না হলেও দুজন দুজনকে প্রচন্ড ভালবাসতো। এত ভালবাসা কি করে ভেংগে গেলো....ওকে যদি জিজ্ঞেস করা হয় এর সঠিক উত্তর মনি দিতে পারবে না। কারন ঠিক কি কারনে এমনটি হলো ও জানেনা।

আর এই না জানাটিই ওকে আরো বেশী যন্ত্রনা দিচ্ছে। নিজেকে কোন ভাবেই স্বান্তনা দিতে পারছেনা। খুবই সিম্পল সুতী সালোয়ার-কামিজ পড়ে মাথায় ওড়না পেঁচিয়ে সরবতের ট্রে হাতে মাথা নিচু করে ঢুকলো মেহমানের সামনে। চোখে তখনও অঝোর ধারা বইছিলো। ছোট্র করে কান্না জড়ানো গলায় সালাম দিয়ে একটু চোখ তুলতেই আকাশ ভেংগে পড়লো ওর মাথায়।

মনে হলো সারা পৃথিবীটা বনবন করে ঘুরছে, পায়ের নিচ থেকে মাটি সরে গেল। মনে হচ্ছিলো একটু বসি। এর মাঝেই ছেলের মা বসতে বলার সাথে সাথেই রিতীমত ধপ করে বসে পড়লো একটি চেয়ারে। কল্পনাপ্রসু মস্তিষ্কটা কাজ করছেনা, পানিভরা চোখে হয়ত ভুল দেখছে ভেবে হাতের মুঠোয় থাকা টিস্যুপেপার দিয়ে চোখ মুছে আবার একটু তাকায়। কিন্তু না মানুষটিত বদলায়নি।

এতো সেই রাফাত। তার-ই রাফাত যে কিনা দু বছর আগে কোন কারন না জানিয়ে-ই যোগাযোগ বন্ধ করে দিয়েছিলো। ফাজিলটা তাহলে এমন কেন করলো!! ভেবে পায়না মনি। টুকটাক ফর্মালিটি হিসেবে এটা সেটা জিজ্ঞেস করে রাফাতের মা এক পর্যায়ে ওর হাত তার হাতে নিয়ে "তোমাকে আমার পছন্দ হয়েছে, আমার ছেলের বউ বানাবো তোমাকে" বলতে বলতে সুন্দর একটি আংটি মনির ডান হাতের অনামিকায় পড়িয়ে দেন। মনি ভাবছে পুরো ব্যাপারটি এরকম হলে ভালই হতো, যদিও এতটা ভাল কপাল বলে ওর মনে হয়না।

বাস্তবে এসব না ঘটার হলেও কল্পনাকে কোনভাবেই দমিয়ে রাখতে পারেনা। ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।