আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

অতুল + ইতি

অতুল + ইতি অতুলের মন আজ বড়ই অস্থির। সে কিছুতেই মনটাকে শান্ত করতে পারছে না। কিছুক্ষণ আগেই তার স্কুল ছুটি হয়েছে। আর স্কুল ছুটি হওয়ার পর থেকে তার মনের অস্থিরতা বেড়ে গেছে বহুগুন। আজ স্কুলে এমন একটা ঘটনা ঘটেছে যা সে কিছুতেই ভুলতে পারছে না।

স্কুলে ঘটা ব্যাপারটা তাও মানা যায়, কিন্তু স্কুল ছুটির পর যে ব্যাপারটা ঘটলো তা সে কিছুতেই মেনে নিতে পারছে না। ভাবতেই তার মেজাজ খারাপ হয়ে যাচ্ছে। অথচ, গোটা ব্যাপারটাতেই তার কোনো দোষ ছিল না। স্কুল ছুটির পর যখন ব্যাপারটা ঘটলো, তার পরপরই অতুল কোনো বন্ধুর সাথে কথা না বলেই একা একা বাসায় ফেরার জন্য রীতিমত ছূটতে শুরু করেছিল। তার মন অনেক খারাপ হয়ে গিয়েছিল।

তার সারা দেহ অবশ হয়ে আসতে চাইছিল। তার কিছুই ভাল লাগছিল না। অতুলের বাসা সাভারে। সে সোজা সাভারে যাওয়ার বাসে উঠে পড়েছিল। এখন অতুল বাসের সিটে বসে আছে।

জানালার পাশে তার সিট। অতুল উদাস দৃষ্টিতে জানালার বাইরে তাকিয়ে রইলো। বার বার তার মনের পর্দায় ভেসে উঠছে স্কুলের ব্ল্যাকবোর্ডে লেখা কথাটা- "অতুল+ইতি”। ইতি হচ্ছে ক্লাসের ফার্স্ট গার্ল। আর অতুল হচ্ছে সেকেন্ড বয়।

তাদের মধ্যে কখনও কথাবার্তাই হয় নি। অতুল বরাবরই মেয়েদের এড়িয়ে চলতো। মেয়েদের সাথে কথা বলাটা অতুল পছন্দ করতো না। অবশ্য মেয়েরা অতুলকে খুবই পছন্দ করতো। অতুলের সাথে একটু কথা বলার জন্য অনেক মেয়েই ঘুরঘুর করতো।

অতুল পাত্তা দিত না। কিন্তু ইতি কখনই অতুলের সাথে কথা বলতে আসে নি। সেও ছিল একদম অতুলের মতই। শান্ত, ভদ্র, খুব পড়াশোনা করতো। ছেলেদের সাথে কথা বলতো না।

তাহলে কেন অতুল আর ইতিকে নিয়ে এভাবে ব্ল্যাকবোর্ডে লেখা হবে? কে করতে পারে এই বাজে কাজ? অতুলের মনে হল নিশ্চয়ই এ কাজটা ক্লাসের শয়তান ছেলে শফিউলের! ওর কাজই তো হচ্ছে সারাদিন নানা রকম শয়তানি করে বেড়ানো। ভাবতেই অতুলের রাগে গা জ্বলে যেতে চাইলো। তার ইচ্ছা হল এখনই শফিউলকে গিয়ে একটা থাপ্পর মেরে আসে! কিন্তু অতুল জানে, তা সে পারবে না। সে জীবনে কখনও মারামারি করে নি। সে খুব ভদ্র ছেলে।

অতুল ব্ল্যাকবোর্ডের লেখাটা মুছার কোনো সময়ই পায় নি। ক্লাসে ঢুকেই লেখাটা দেখে সে বিস্ময়ে থ হয়ে গিয়েছিল। ঘোর কাটতে যখন সে লেখাটা মুছতে ছুটে যাচ্ছিল তখন বন্ধুরা তাকে জাপটে ধরে রেখেছিল। বন্ধুরা এমন হাসাহাসি শুরু করে দিয়েছিল যেন মনে হচ্ছিল ক্লাসে বিরাট কোনো উৎসবের জোয়ার বয়ে যাচ্ছে। অতুল চিৎকার করে উঠতে চাইছিল, “ছেড়ে দে! লেখাটা মুছতে দে! প্লিজ, আল্লাহর দোহাই!” কিন্তু সে চিৎকার করে উঠতে পারে নি।

সে ধস্তা ধস্তি করে বন্ধুদের কাছ থেকে ছুটে যাওয়ার চেষ্টা করছিল। আর ইতি সে সময় লজ্জায়, রাগে, অপমানে মুখ ঢেকে ক্লাসের এক কোণায় বসে ছিল। সে কি কাঁদছিল? অতুল ঠিক খেয়াল করে নি। অতুল বন্ধুদের কাছ থেকে ছাড়া পেয়ে যেই ব্ল্যাকবোর্ডের লেখাটা মুছতে যাবে ঠিক তখনই আলম স্যার ক্লাসে ঢুকে পড়লেন। অতুলের তখন মনে হয়েছিল কোনো যমদূত তার জান নিতে এসেছে।

অতুল ভয় পেয়ে তাড়াতাড়ি নিজের বেঞ্চে গিয়ে বসে পড়েছিল। আলম স্যার ক্লাসে ঢুকে বেশ কিছুক্কণ বড় বড় চোখে ব্ল্যাকবোর্ডের দিকে তাকিয়ে রইলেন। অতুলের তখন ভয়ে জান বের হয়ে যাওয়ার অবস্থা। তার মনে হচ্ছিল এখনই স্যার ভয়ানকভাবে রেগে উঠবেন। কিন্ত স্যার সেরকম কিছু করলেন না।

তিনি গম্ভীর নুখে ক্লাসের রোল ডাকা শুরু করলেন। অতুলের মনে হালকা একটা স্বস্তির বাতাস বয়ে গেল। মনে হয় স্যার এ বিষয়ে কোনো কথা বলবেন না। অতুল আড়চোখে ইতির দিকে তাকালো। ইতি তখনও দুহাত দিয়ে মুখ ঢেকে ছিল।

অবশ্য স্যার যখন ‘রোল নাম্বার এক’ ডাকলেন তখন ইতি উঠে দাঁড়িয়ে মৃদুস্বরে বললো- “প্রেসেন্ট স্যার। ” স্যার ‘রোল নয়াম্বার দুই’ ডাকলে অতুল ধড়মড় করে উঠে দাঁড়িয়ে নার্ভাস হয়ে বলতে লাগলো-“জি স্যার...আছি স্যার, ...ইয়েস স্যার...প্রে...প্রেসেন্ট স্যার!” অতুল ধপ করে বসে পড়লো আর ভাবতে থাকলো, স্যার ওই লেখার ব্যাপারটা এড়িয়ে গেলেই হয়। কিন্তু অতুলের আশা পূরণ হল না। আলম স্যার রোল ডাকা শেষ হতেই বলে উঠলেন-“অতুল আর ইতি উঠে দাঁড়াও। ” অতুলের মনে হল, তার হদপিন্ডে কেউ হাতুড়ি দিয়ে বাড়ি মেরেছে।

সে চোর চোর মুখ নিয়ে উঠে দাঁড়াল। ইতিও ম্লান মুখে দাঁড়িয়ে পড়লো। ইতিকে দেখে মনে হল সে কান্না চাপার প্রাণপণ চেষ্টা করছে। দুজনকে উঠে দাঁড়াতে দেখে আলম স্যার কর্কশ কন্ঠে বললেনঃ “দেখো, এটা পড়াশোনা করার জায়গা, প্রেম করার জায়গা নয়। ” ইতি কাঁদো কাঁদো স্বরে বললোঃ “স্যার আমি এসবের কিছুই জানি না...” আলম স্যার গর্জে উঠলেনঃ “চুপ! বললাম তো এটা প্রেম পিরিতি করার জায়গা না।

এসব লেখতে চাইলে গাছের ডালে লেখতে পারো। ভবিষ্যতে এরকম কিছু যদি আমি দেখি তাহলে খুব খারাপ হবে। এখন বসো!” অতুলের তখন চিৎকার করে বলতে ইচ্ছা করছিল, ‘স্যার ইতি ঠিক বলছে। এসবের আমরা কিছুই জানি না। স্যার, বিশ্বাস করুন! বিশ্বাস করুন!’ কিন্তু অতুল কিছুই বলতে পারলো না।

সে পরাজিত হতাশ মানুষের মত বসে পড়লো। তার নিজেকে সে সময় দুনিয়ার সবচেয়ে অসহায় ছেলে বলে মনে হচ্ছিল। আর ইতি নিজেকে আর ধরে রাখতে পারলো না। সে বাচ্চা শিশুর মত কেঁদে ফেললো। আলম স্যার কোনো দিকে না তাকিয়ে ক্লাশ নেয়া শুরু করলেন।

অতুল যেন এক ঘোরের মধ্যে ক্লাশ করতে লাগলো। স্যারের কথাবার্তা তার কিছুই কানে যাচ্ছিলো না। সে সারাটা ক্লাশ শুধু ইতির দিকে তাকিয়ে থাকলো। মেয়েটা কেঁদেই যাচ্ছে, কিছুতেই কান্না থামাতে পারছে না। অতুল ইতির জন্য এক ধরনের গভীর মায়া অনুভব করলো।

মেয়েটার নিষ্পাপ মুখ বেয়ে একের পর এক বড় বড় অশ্রু গড়িয়ে পড়ছে। আহা মেয়েটা এত কাঁদছে কেন? নিশ্চয়ই সে এই অপমানের জ্বালা সইতে পারছে না। এরপর একের পর এক ক্লাস চলতে লাগলো। অতুলের মনে যেন ঘন আঁধার খেলা করছিল। আলম স্যারের কথাগুলো যেন তার মনে বার বার কাঁটা বিঁধাচ্ছিল।

না জানি স্যার তার আর ইতির ব্যাপারে কি ভাবছেন! স্যার কি ভাবছেন তারা দুজন প্রেম করে? আর ভাবছেন যে ব্ল্যাকবোর্ডের লেখাটা তারাই লিখেছে? নাহ! অতুলের এত দিনের ভাল ইমেজটা পুরোপুরি নষ্ট হয়ে গেল। সেই সাথে অতুলের মনে ভেসে বেড়াচ্ছিল ইতির কান্নাভেজা চেহারা। ইতি অতুলের ব্যাপারে কি ভাবছে কে জানে। ইতিও কি মনে করছে লেখাটা অতুলই লিখেছে? সে ইতির দিকে তাকানোর আর সাহস পেল না। মেয়েটা আবার না কি ভেবে বসে! স্কুল শেষে অতুল একা একা মন খারাপ করে রাস্তা দিয়ে হেঁটে যাচ্ছিল।

বন্ধুরা তার পিছন পিছন এসে তাকে নানাভাবে স্বান্তনা দেয়ার চেষ্টা করছিল। কিন্তু বন্ধুদের স্বান্তনা বাণী অতুলের ব্যথিত মনের ভিতর পৌঁছাল না। সে চুপচাপ নিচের দিকে তাকিয়ে শুধু হেঁটে যাচ্ছিল। আর তখনই অপ্রত্যাশিত ঘটনাটা ঘটলো। অতুল হঠাৎ করে ইতির কন্ঠ শুনতে পেল-“অতুল, তোমার সাথে কথা আছে।

” অতুলের এক মুহূর্তের জন্য মনে হল, সে কি ভুল শুনছে? না, ভুল শুনে নি অতুল। সে তাকিয়ে দেখলো, ইতি তার সামনে দাঁড়িয়ে আছে। অতুল ইতির চোখে তাকিয়ে থমকে গেল। ইতির সেই চোখের দৃষ্টি অতুল কখনও ভুলতে পারবে না। ওর চোখ দুটো দিয়ে যেন আগুন বের হচ্ছিল।

ইতির চোখ দুটোতে কার উপর এত রাগ ছিল অতুল তখন ঠিক বুঝতে পারে নি। অতুল ইতির চোখ থেকে চোখ সরিয়ে নিয়ে বললোঃ “হ্যা, বলো। ” ইতি বেশ রাগের সাথে বললোঃ “অতুল, আমি তোমার দ্বারা এ কাজটা আশা করিনি। ” কাঁটার মত যেন কথাগুলো অতুকের মনে বিঁধে গেল। ইতি তাহলে তার উপরই রেগে আছে? ইতি তাকেই দোষী ভাবছে? অতুল মন খারাপ করে বললোঃ “দেখো ইতি, আমি ওই লেখার ব্যাপারে কিছুই জানি না...” ইতি ঝাঁঝের সাথে বললোঃ “তুমি না লিখলে কে এসব লিখতে পারে?” অতুল একটু কড়া ভাষায় বললোঃ “তার আমি কি জানি? ছেলেদের মধ্যে কেউ ওটা লিখতে পারে, তোমার আমাকে কি মনে হয়, আমি এসব লিখতে যাব কোন দুঃখে?” -“যাই হোক, তোমরা ছেলেরাই তো ওটা লিখছো।

তোমরা ছেলেরা সবাই খারাপ! সবাই খুব খারাপ...” বলে ইতি কেঁদে ফেললো। আর কাঁদতে কাঁদতে অতুলের কাছ থেকে ধীরে ধীরে চলে যেতে লাগলো। অতুল ডাক দিল, “ইতি শুনো...” কিন্তু ইতি অনেক দূরে চলে গেছে। কান্নার দমকে তার দেহ লেঁপে লেঁপে উঠছিল। অতুল হা করে কতক্ষণ সেদিকে তাকিয়ে রইলো।

হুঁশ ফিরতে অতুলের মনে হচ্ছিল, তার মন ভেঙ্গে চুরে একাকার হয়ে গেছে। সে তখন একা একা বাড়ি ফেরার পথে রওনা দিয়েছিল। “গেন্ডা! গেন্ডা! নামেন! নামেন!” বাসের হেল্পারের চিৎকারে অতুল বাস্তবে ফিরে এল। সে খেয়ালই করে নি বাস কখন সাভার ছাড়িয়ে গেন্ডায় এসে পড়েছে! অতুল এক ঘোরের মধ্যে বাস থেকে নেমে গেন্ডা থেকে আরেক বাসে উঠে সাভারের পথে রওনা দিল। আর ভাবতে লাগলো, এসব কি হচ্ছে ওর? তার জ্ঞান হুশ কোথায় চলে যাচ্ছে? বাসায় গিয়ে অতুলের অবস্থা আরও খারাপ হয়ে গেল।

তার কোনো কাজেই মন বসছে না। খাওয়া দাওয়াও ঠিকমত করতে পারছে না। তার বার বার ক্লাসের ঘটনার কথা মনে হচ্ছে। মনে পড়ছে আলম স্যার তাকে কিভাবে সবার সামনে অপমান করলো আর সে কিছুই করতে পারলো না। তবে অতুল বুঝতে পারলো, এর থেকেও বেশি তার মনে পড়ছে ইতির কথা।

ইতির কান্নাভেজা চেহারা। কান্নার ফলে ইতির কেঁপে ওঠা দেহটা। আহা কি কষ্টই না পেয়েছে মেয়েটা। কিন্তু ইতি তাকে কেন দোষী ভাবলো? ইতি কি বুঝে না তার মত ছেলে এ কাজ করতে পারে না? ইতি কি এতদিন ধরেও তাকে এতটুকু চিনতে পারে নি? সে তাকে কিভাবে অন্য ছেলেদের সাথে তুলনা করতে পারলো? সে তাকে কিভাবে খারাপ বলতে পারলো? বেলা যতই বাড়তে লাগলো, অতুল ততই বুঝতে পারলো সে ইতির কথা কিছুতেই ভুলতে পারছে না। বার বার ইতির মুখ তার মনে ভেসে উঠছে।

হায় সে কিছুতেই ইতিকে মন থেকে তাড়াতে পারছে না। এ কি হল তার? তবে কি সে ইতির প্রেমে পড়ে যাচ্ছে? ব্ল্যাকবোর্ডের ওই লেখাটা কি ইতির প্রতি তাকে দুর্বল করে ফেলেছে? ওদিকে ইতির অবস্থাও বিশেষ সুবিধার নয়। রাতে পড়তে বসে ইতি খেয়াল করলো, তার কিছুতেই পড়ায় মন বসছে না। সে ব্ল্যাকবোর্ডের ওই লেখাটা আর ক্লাসের সবার সামনে অপমানের ব্যাপারটা ভুলতে পারছে না। ভাবতেই তা কান্না চলে আসছে।

ইতি অতুলের সাথে খারাপ ব্যবহারের কথাও ভুলতে পারছে না। ইতি জানে যে অতুল কখনও ওই লেখাটা লিখতে পারে না। তবু কেন সে অতুলের সাথে খারাপ ব্যবহার করলো? তাকে দোষী বানিয়ে ফেললো? শুধুমাত্র আবেগের বশবর্তী হয়ে কাজটা করা কি তার উচিত হল? আসলে সে মুহূর্তে রাগে অপমানে তার মাথাই কাজ করছিল না। অতুলের নিশ্চয়ই খুব খারাপ লেগেছে। না জানি অতুল তার সম্পর্কে কি ভাবছে।

নাহ কাজটা করা তার মোটেও উচিত হয় নি। ইতি অতুলের প্রতি এক ধরনের বিচিত্র আবেগ অনুভব করলো। আগে কখনো সে এরকম অনুভব করে নি। সে কি অতুলের প্রতি কিছুটা দুর্বল হয়ে পড়ছে? না এ হতেই পারে না, সে নিজেকে বোঝাল। ইতি আবেগটাকে শক্তভাবে দমানোর চেষ্টা করলো কিন্তু সে কিছুতেই তা দমাতে পারলো না।

পরদিন সকাল। ক্লাসে এসে পড়েছে সবাই। অতুল আর ইতিও এসেছে। গতদিনের লেখাটা আর ব্ল্যাকবোর্ডে নেই। ওটা অনেক আগেই মুছে ফেলেছে অতুলের বন্ধুরা।

অতুল আর ইতি স্বাভাবিকভাবে একের পর এক ক্লাস করে গেল। কিন্তু দুজনের কেউই ক্লাসে ঠিকমত মনোযোগ দিতে পারলো না। অতুল আর ইতি দুজনেই আড়চোখে একে অপরের দিকে একটু পর পর তাকাতে লাগলো। অতুলকে দেখে ইতির মনে এক ধরনের শিহরণ বয়ে গেল। কিন্তু ইতি আবেগটাকে কঠিনভাবে দমন করে রেখে ক্লাস করতে লাগল।

আর অতুল যতবারই ইতির দিকে তাকাচ্ছে ততবারই যেন তার মধ্যে ঝড় বয়ে যাচ্ছে। সে কিছুতেই মনের অস্থিরতাকে নিয়ন্ত্রণ করতে পারলো না। ক্লাস শেষে অতুল দেখল ইতি তার বান্ধবীদের সাথে হেঁটে যাচ্ছে। অতুলের মনে হল ইতি তার দিকে একবার তাকাল। অতুলের ইতির সাথে খুব কথা বলতে ইচ্ছা করলো।

তার ভীষণ ইচ্ছা করলো ইতিকে ডাক দিতে। কিন্তু ইতি কি ভাবে না ভাবে মনে করে তার আর ডাকা হল না। অতুল ডাকতে পারলো না। হায়, সে কেন পারে না? অতুলের বুকটা হাহাকার করে উঠলো। পরমুহূর্তেই সে স্বাভাবিকভাবে বন্ধুদের সাথে হাঁটতে লাগলো।

ইতিরও অতুলের সাথে কথা বলতে ইচ্ছা করছে। কিন্তু সে ঠিক করেছে অতুল তার সাথে নিজে থেকে কথা না বললে সে কথা বলবে না। ইতি একটা দীর্ঘশ্বাস ফেলল। অতুল কি পারে না তাকে একটু ডেকে কথা বলতে? অতুল হাঁটতে হাঁটতে ভাবতে লাগল, ব্ল্যাকবোর্ডের লেখাটা মুছে গেলেও তার মন থেকে ইতির নামটা মুছা বোধহয় আর সম্ভব হবে না। ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।