আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

উজ্জ্বল দৃষ্টান্তের নাম ডাঃ অতুল চন্দ্র গোস্বামী ২৪ বছর ধরে ফ্রি চিকিৎসা!!!



অবহেলিত জনপদের নাম উত্তর জনপদ। সকল ধরনের প্রাকৃতিক দূর্যোগ, সরকারী বে-সরকারী পর্যায়ের দীর্ঘদিনের অবহেলা এই জনপদের পিছিয়ে পড়ার নেপথ্য কাহিনী। যদিও রাষ্ট্র যন্ত্রের নিয়ামক শক্তির বিশাল অংশ এই উত্তর জনপদের। এছাড়াও এখানে আছে বিভিন্ন পর্যায়ে উজ্জল দৃষ্টান্ত। এমনি এক উজ্জল দৃষ্টান্তের নাম ডাঃ অতুল চন্দ্র গোস্বামী।

বিরামহীরভাবে ২৪ বছর ধরে নানা কঠিন রোগে আক্রান্ত রোগীদের বিনামূল্যে চিকিৎসা সেবা দিয়ে আসছেন তিনি। রংপুরের পীরগঞ্জ উপজেলা সংলগ্ন মিঠাপুকুরের ইমাদপুর ইউনিয়নের জামালপুর কুমারপাড়া গ্রামে ডাঃ অতুল চন্দ্র গোস্বামীজন্ম গ্রহণ করেন। হোমিও চিকিৎসায় অসাধ্য সাধনকারী ডাঃ অতুল চন্দ্র গোস্বামীর বসত ভিটা জামালপুর কুমারপাড়া গ্রামে গিয়ে দেখা গেল দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে আগত রোগীর সমাগম। জানা গেল তার বিনামূল্যে চিকিৎসা সেবা দেয়ার কাহিনী। কথা হয় চিকিৎসা সেবা দানকারী অতুল চন্দ্র গোস্বামীর সাথে।

হোমিও চিকিৎসায় একাডেমিক ডিগ্রিসহ শিাগত যোগ্যতা সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমার চেয়ে দেশে অনেক বড় ডিগ্রিধারী এবং উচ্চ শিায় শিতি মানুষ আছেন, আমার সামান্য যোগ্যতা নেই। চিকিৎসা সেবা প্রদান প্রসঙ্গে ত্িিন বলেন, ১৯৬৪ সালে আমি যখন রংপুর সরকারি স্কুলে ৯ম শ্রেণীতে পড়ি, তখন প্রধান শিক নওশের আলী তালুকদার আমাকে বলেছিলেন, গোসাই তুমি ডাক্তারি লাইনে পড়াশোনা কর, ভাল করবে। কিন্তু আমি কল্পনাও করিনি কোন দিন চিকিৎসা লাইনে পড়াশোনা বা এ পেশায় জড়িত হব। কিভাবে আমি চিকিৎসা কার্যক্রমে জড়িয়ে পড়লাম নিজেও জানি না। আপনার ওষুধে রোগ নিরাময়ের গ্যারান্টি দিয়ে কি আপনি ওষুধ দেন প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, আমার ওষুধে রোগ ভাল হবে, এটা যদি আমি বলি তাহলে তা হবে আমার ধৃষ্টতা এবং অপরাধ।

আমি ওষুধ দেই, ভাল হবে কিনা তা সৃষ্টিকর্তাই জানেন। তবে ২৪ বছর ধরে ওষুধ দিয়ে আসছি, ঈশ্বরের কৃপায় কঠিন রোগে আক্রান্ত অনেক রোগী সুস্থ হয়েছেন। ওষুধের মূল্য না নেয়ার কারণ জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমিও জানিনা কেন ওষুধের পয়সা নেই না। নিজের শিাগত যোগ্যতা সম্পর্কে পাশ কাটিয়ে গেলেও আশপাশের অনেকের সাথে কথা বলে জানা যায়, অতুল চন্দ্র গোস্বামী ইংরেজি ও রসায়নে মাস্টার্স পাস। অসম্ভর সাদামাটা মানুষটি যদি ইচ্ছা করতেন, প্রতিদিন ১৫-২০ হাজার আয় করতে পারতেন।

এখনও তিনি পাঞ্জাবি, ধুতি পরিধান করেন এবং পায়ে দেখা যায় সেই আগের আমলের কাঠের তৈরি খড়ম। রোগীদের সামনে চেয়ারে বসে একটি ছবি তোলার অনুরোধ করলে তিনি রাজি হননি। ওইদিন দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে ২ শতাধিক রোগী এসেছিলেন ওষুধ নিতে। রোগীদের অধিকাংশ মহিলা এবং ক্যান্সার রোগী। ক্যান্সারে আক্রান্ত রোগী জহুরুল ইসলাম জানান, রংপুর ও রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পরীা-নিরীায় ক্যান্সার ধরা পড়ার পর ঢাকা ইউনাইটেড হাসপাতালে ভারতীয় ডাঃ সম্রাট ভট্টাচার্যের নেতৃত্বে ৪জন ডাক্তার পরীা-নিরীা করে ক্যান্সার সনাক্ত করেন এবং দ্রুত ব্যাঙ্গালোর ক্যান্সার ইনষ্টিটিউট অথবা টাটা মেমোরিয়াল হাসপাতালে চিকিৎসা করার পরামর্শ দেন।

ভারত যাওয়ার প্রস্তুতির পাশাপাশি তিনি অতুল চ্দ্র গোস্বামীর নিকট হোমিও চিকিৎসা গ্রহণ করেন। ১ মাস ১০দিন ওষুধ খাওয়ার পর সুস্থ্য হয়ে উঠেন এবং উন্নত চিকিৎসার জন্য ভারতে গিয়ে এ্যাপেলো হাসপাতাল, ঠাকুর পুকুর ক্যান্সার হাসপাতাল এবং বোম্বের টাটা মেমোরিয়াল হাসপাতালে টেস্ট করান। টেস্ট রিপোর্টে ক্যান্সার নেই বলে জানানো হয়েছে। শুধু প্রধান শিক জহুরুল ইসলাম একাই নন শত শত কঠিন রোগে আক্রান্ত রোগী অতুল চন্দ্র গোস্বামীর হোমিও ওষুধ খেয়ে সুস্থ হয়েছেন। অতুল চন্দ্র গোস্বামীর বাড়িতে যেতে হলে সড়ক পথে মিঠাপুকুর উপজেলার শঠিবাড়ীতে নেমে টেম্পু, রিকশা-ভ্যান ও মোটর সাইকেলে ইমাদপুর ইউনিয়নের মাঠের হাটে যেতে হবে, সেখানে থেকে কোয়ার্টার কিলোমিটার দুরে জামালপুর কুমারপুর গ্রামে ঘাঘট নদীর পাড়েই তার বাড়ি।

রেলপথে গাইবান্ধার বামনডাঙ্গা স্টেশন থেকে মাঠের হাট (ইমাদপুর) হয়ে তার বাড়িতে যাওয়া যায়। বাড়েিত সোম, মঙ্গল ও বুধবার ২০০ থেকে ৬০০ পর্যন্ত রোগীর সমাগম ঘটে। বসার স্থান, পানীয় জল ও টয়লেট সমস্যা রয়েছে। এ প্রসঙ্গে স্থানীয় চেয়ারম্যান তাজুল ইসলামের সাথে যোগাযোগ করাল হলে তিনি এ প্রতিনিধিকে বলেন, বাবু অতুল চন্দ্র গোস্বামী একজন সুশিতি এবং আধ্যাত্মিক মানুষ। তিনি কারও সাহায্য-সহযোগিতা নেন না।

এলাকার অনেকেই বলেন, অতুল চন্দ্র গোস্বামী একজন মানব সেবায় নিয়োতি সাধক মানুষ। তার ওষুধের কার্যমতাও রহস্যজনক। অবিশ্বাস হলেও সত্য তার হোমিও চিকিৎসা নিয়ে ক্যান্সার আক্রান্ত অনেক রোগী সুস্থ হয়ে স্বাভাবিক ভাবে জীবন যাপন করছেন। তবে বাংলাদেশের বর্তমান চিকিৎসা ব্যবস্থার প্রোপটে অতুল চন্দ্র গোস্বামী বিনামূল্যে চিকিৎসার যে সেবা দিয়ে আসছেন, তা মানব সেবার একটি উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত।


অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।