আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

কে বলেছে আপুরা অবলা----দেখেন এরা কয় কি

একটা আটপৌরে ঘরোয়া সাদামাঠা প্রেমের কবিতা লিখতে চাই বার্তা নিউজ . নেট থেকে নেয়া দুনিয়ার নারীনেত্রীদের মধ্যে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে অন্যতম ‘আয়রন লেডি’ বা ‘লৌহমানবী’ হিসেবে আখ্যায়িত করেছেন আমেরিকার গবেষকরা। বাংলাদেশকে বিশ্বের ২২টি প্রতিষ্ঠিত গণতন্ত্রের একটি দেশ ধরে এই গবেষণা করা হয়। অন্য লৌহমানবীদের মধ্যে আছেন আমেরিকার সেক্রেটারি অফ স্টেট হিলারি ক্লিনটন, আর্জেন্টিনার প্রেসিডেন্ট ফার্নান্দেজ ক্রিচনার ও জার্মানির চ্যান্সেলর অ্যাঞ্জেলা মার্কেল। আমেরিকার টেক্সাস অঙ্গরাজ্যের একটি বিশ্ববিদ্যালয়ের দুই গবেষক তাদের গবেষণার ফলাফল জানিয়েছেন ৪৮ পৃষ্ঠার দীর্ঘ এক গবেষণাপত্রে। সাধারণভাবে এমন একটা নারীবাদী বক্তব্য আছে, দুনিয়ার নেতৃত্বে যদি নারীরা আসে তবে এতো যুদ্ধ বিগ্রহ থাকবে না।

নারীরা শান্তিবাদী হয়, নারী নেতৃত্বের দুনিয়াও শান্তিবাদী হবে। এমন পরিস্থিতি একসময় হয়তো যথার্থও ছিল। প্রথম বিশ্বযুদ্ধে আমেরিকা যোগ দেবে কি না, সেই প্রশ্নে কংগ্রেসে যুদ্ধবিরোধী একমাত্র ভোটটি ছিল নবনির্বাচিত নারী কংগ্রেসম্যান জিন রেংকিনের। চব্বিশ বছর পরে ১৯৪১ সালে পুরো কংগ্রেসের ভোট তিনি এসেছিলেন জাপানের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণার বিপক্ষে। তিনি বলেছিলেন, ‘‘একজন নারী হিসেবে আমি কখনো যুদ্ধে যেতে পারি না, এবং অন্য কাউকে পাঠানোর উদ্যোগও আমি নাকচ করছি।

’’ কিন্তু দিন বদলেছে এখন। এখন নারীরা আর দশটা বিষয়ের মতো যুদ্ধ-বিগ্রহ-রক্তপাতেও পুরুষের সমান আগ্রহী। সম্প্রতি কিছু ঘটনায় দেখা গেছে, অনেক ক্ষেত্রে পুরুষের চেয়ে বেশিও বটে। আমেরিকার টেক্সাস এ অ্যান্ড এম বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক মিখাইল কচ ও সারাহ ফুল্টন এ নিয়ে একটি গবেষণা করেছেন। গবেষকদের ভাষায় ২২টি ‘প্রতিষ্ঠিত গণতন্ত্রে’র দেশ ঘিরে গবেষণা চালিয়েছেন তারা।

এসব দেশের ১৯৭০ থেকে ২০০০ সাল পর্যন্ত ‘জাতীয় নিরাপত্তা বিষয়ক কর্মকাণ্ড’ পরীক্ষা-নিরীক্ষা করেছেন তারা। যেমন লিবিয়ার বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণার সময় দেখা গেছে আমেরিকান প্রশাসনের উচ্চপদে থাকা নারীরাই সবচেয়ে বেশি সক্রিয় ছিলেন। যেমন সেক্রেটারি অফ স্টেট হিলারি ক্লিনটন, জাতিসংঘে আমেরিকার রাষ্ট্রদূত সুসান রাইস। সামরিক অভিযানের পক্ষে ওনারা উদ্যোগী ভূমিকা নিয়েছিলেন। মিখাইল ও সারাহ’র গবেষণায় এর পেছনের বিজ্ঞানসম্মত কারণ খুঁজে পাবার দাবি করা হয়েছে।

দেখা গেছে, নারীরা যদি পার্লামেন্টে প্রভাবশালী হয় তবে ওই দেশটির যুদ্ধে যাবার সম্ভাবনা কমে, অন্যদিকে নারীরা যদি দেশের প্রধান নির্বাহী ক্ষমতায় বা মন্ত্রিসভায় থাকে তবে যুদ্ধে যাবার সম্ভাবনা বাড়ে। গবেষণার ফলাফলে দেখা গেছে, এসব দেশের পার্লামেন্টে নারী সদস্যের অনুপাত প্রতি এক শতাংশ বৃদ্ধির সময় একইসঙ্গে দেশগুলোর প্রতিরক্ষা খাতে ব্যায়ের পরিমাণ কমেছে ০.১ ভাগ। তারা দেখেছেন পার্লামেন্টে নারী সদস্য বাড়লে পরে ওই দেশটির যুদ্ধে যাবার সম্ভাবনা কমে যায়। যেমনটি প্রমাণ করেছিলেন জিন রেংকিন। কিন্তু নারীরা যখন দেশের নির্বাহী ক্ষমতায় (প্রধানমন্ত্রী বা প্রেসিডেন্ট) যায় তখন এর ঠিক উল্টো ঘটনা ঘটে।

দেখা গেছে কোনো দেশের নির্বাহী প্রধান যদি নারী হয়, তবে প্রতিরক্ষা খাতে দেশটির ব্যায়ের পরিমাণ কমপক্ষে শতকরা আট ভাগ বেড়ে গেছে। দেশটির সেনারা যুদ্ধে আগ্রহী হন আরো বেশি। দেশটি যুদ্ধবাজ হয়। যেটা ঘটেছিল মার্গারেট থ্যাচারের বৃটেনে। কেন এমন হয়? নারী সংসদ সদস্যরা কেন জিন রেংকিনের মতো হন? আর মার্গারেট থ্যাচারের মতো হন কেন নারী প্রধানমন্ত্রী আর মন্ত্রীরা? গবেষক মিখাইল জানাচ্ছেন, ‘‘নারী সংসদ সদস্যরা তাদের নিজের নির্বাচনী এলাকা ও রাজনৈতিক দলের কাছে অনেক বেশি জবাবদিহি করেন।

নারী প্রধানমন্ত্রী বা অন্য নারী মন্ত্রীদের চেয়ে তারা অনেক কম লৈঙ্গিক কথকতার আক্রমণের শিকার হন তারা। ’’ মানে ‘এতো নরম নারী দিয়ে কি আর দেশ চলে!’ কিংবা ‘নারীরা কি করে শক্ত ব্যবস্থা নেবে!’ এ ধরনের পুরুষতান্ত্রিক আক্রমণের শিকার অনেক কম হন সংসদ সদস্যরা। যে আক্রমণ চলে প্রধানমন্ত্রী বা অন্য নারী মন্ত্রীদের ওপর। মিখাইল জানাচ্ছেন, ‘‘অন্যতম প্রধান দায়িত্ব হিসেবেই নির্বাহী ক্ষমতায় থাকা ব্যক্তিদের কাছে আশা করা হয় যে তারা জাতীয় নিরাপত্তার বিষয়ে ব্যবস্থা নেবেন। ’’ ফলে তারা অনেক সময় তাদের সমসাময়িক পুরুষদের চেয়েও বেশি ‘লৌহকঠিন আচরণ’ করেন।

মিখাইল ও সারাহ’র গবেষণায় অনুমান করা হচ্ছে যে, মন্ত্রীসভাসহ বিভিন্ন নির্বাহী ক্ষমতায় নারীদের অংশগ্রহণ যখন আরো বেড়ে যাবে, নারীরা ততোই নরম আচরণ করতে অভ্যস্ত হবেন। গবেষক দুজনের এই পূর্বানুমানের পাশাপাশি এটাও মনে রাখতে হবে যে আমেরিকার নারী সংসদ সদস্য জিন রেংকিন যখন ১৯১৬ সালে যুদ্ধের বিপক্ষে ভোট দিয়েছিলেন, তখন পুরো সংসদে তিনিই ছিলেন একমাত্র নারী। আর লিবিয়া যুদ্ধে আমেরিকার প্রধান উদ্যোক্তা হিলারি ক্লিনটনের সময়ে কংগ্রেসে নারীদের হার শতকরা ১৬ ভাগেরও বেশি। বাংলাদেশে যেখানে ১৯৯৫ সালে নারী সদস্যের হার ছিল মাত্র ৪.৮ শতাংশ, এখন সেই হার বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১৮.৩ শতাংশে। কিন্তু মিখাইল ও সারাহ’র গবেষণা দেখা যাচ্ছে নারী সদস্য বৃদ্ধির এ সময়ে দেশগুলোতে ‘রাজনৈতিক সহিংস আচরণে’র বিষয়ে সংসদের নিরবতাও পাল্লা দিয়ে বেড়েছে।

গবেষণা অনুযায়ী চারজন নারী নেত্রী হিলারি ক্লিনটন, সেক্রেটারি অফ স্টেট, আমেরিকা সন্ত্রাসে মদত দেয়ার অভিযোগে পাকিস্তানকে মোকাবিলা করছেন, আফগানিস্তানে সৈন্য বাড়াবার পক্ষে ভূমিকা রাখছেন। হিলারিই হচ্ছেন প্রথম নেতা যিনি গাদ্দাফিকে সতর্ক করে দিয়েছিলেন যে, তার বিরুদ্ধে যুদ্ধের কথাও ভাবা হচ্ছে। শেখ হাসিনা, প্রধানমন্ত্রী, বাংলাদেশ ভারতের বিভিন্ন বিচ্ছিন্নতাবাদী গেরিলাদের বিরুদ্ধে ভারত সরকারের যুদ্ধে সক্রিয়ভাবে অংশ নিয়েছেন। বিশেষ করে তিনদশক ধরে যুদ্ধরত আসামের গেরিলাদের নাস্তানাবুদ করে ছেড়েছেন। ক্রিস্টিনা ফার্নান্দেজ ডি ক্রিচনার, প্রেসিডেন্ট, আর্জেন্টিনা ফকল্যান্ড দ্বীপ ইস্যুতে মার্গারেট আমলের মতো লড়াই পুনরায় শুরু করেছেন ক্রিচনার।

বৃটেন নিয়ন্ত্রিত দ্বীপটিকে আর্জেন্টিনার অবিচ্ছেদ্য অংশ বলে দাবি করেছেন তিনি। অ্যাঞ্জেলা মার্কেল, চ্যান্সেলর, জার্মানি আফগানিস্তানে জার্মান সামরিক উপস্থিতির পক্ষে দেশের রাজনৈতিক মহলের বিরোধিতার মুখেও অটল রয়েছেন। ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।