If you donot see bangla, download: http://www.omicronlab.com/avro-keyboard-download.html ইদানিং একটি মহলকে দেখছি খুব সক্রিয়ভাবে জাফর ইকবাল স্যারের বিভিন্ন কুৎসা রটনা করতে। বলা বাহুল্য, তারা এসব রটনা করে স্যারের বিরুদ্ধে জনমত গঠনে বেশ সফল হয়েছে। আর সফল যে হয়েছে তা বেশ ভালভাবেই বোঝা যায়, যখন দেখি- ব্লগের যে পোস্টগুলোতে তাঁর বদনাম গাওয়া হয়, সেই পোস্টগুলোতে স্যারের বিপক্ষে বেশ কিছু কমেন্ট থাকে। স্যারকে নিয়ে যাদের এলার্জি আছে, তারা যে নিশ্চিতভাবেই প্রগতিশীলতা এবং মুক্ত চিন্তার বিপক্ষে, এ নিয়ে সন্দেহের কোন অবকাশ নেই। কিন্তু চিন্তার ব্যাপার হচ্ছে, এরা এসব প্রোপাগান্ডা ছড়িয়ে মানুষকে বিভ্রান্ত করছে।
আর দুঃখের ব্যাপার, কিছু মানুষ না জেনে এসব কথা বিশ্বাস করছে। তারা কিভাবে মিথ্যা প্রোপাগান্ডা চালাচ্ছে, সেটা জানতে হলে আমরা একটা কেস স্টাডি করব।
এতদিন যে ঘটনাগুলো শুনেছি সেগুলোর সাথে আমার প্রত্যক্ষ যোগাযোগ ছিল না, তাই সেগুলো নিয়ে সরাসরি কিছু বলতে পারিনি। কিন্তু চোখের সামনে যখন দেখি দিবালোকের মত স্পষ্ট একটা ঘটনাকে মিথ্যাবাদীরা কিভাবে পরিবর্তন করে প্রকাশ করছে, তখন আর চুপ থাকতে পারলাম না। আমি নিশ্চিতভাবেই বলতে পারি, এসব প্রোপাগান্ডা উদ্দেশ্যপ্রণোদিত।
এগুলো তারাই করে, যারা সত্যকে ভয় পায়। এরা খুব কৌশলে এখন আন্তর্জালের মাধ্যমে এদের এজেন্ডা বাস্তবায়ন করছে।
যাই হোক, এখন আসল কথায় আসি। গত সপ্তাহে বুয়েটে সি এস ই ফেস্টিভ্যাল হয়ে গেল। ফেস্টিভ্যালে বেশ কিছু ইভেন্ট ছিল।
এসেছিলেন শ্রদ্ধেয় জাফর ইকবাল স্যার। তিনি, কায়কোবাদ স্যার এবং সি এস ই ডিপার্টমেন্টের আরো বেশ কয়েকজন শিক্ষক মিলে প্রোজেক্ট শো দেখেন। জাফর স্যার প্রোজেক্টগুলোতে কমেন্টও করেন। কিন্তু ব্লগবাস্টার নামে কোন এক ব্লগার একটি ব্লগে একটি পোস্ট দেন। পোস্টের শিরোনামঃ ''জনাব জাফর ইকবাল, আপনার কাছে এমনটা আশা করিনি।
”
ওই পোস্টে তিনি যা বলতে চেয়েছেন, তা হল মোটামুটি এরকম- জাফর স্যার সবগুলো প্রোজেক্টই দেখেছেন, কিন্তু একটি প্রোজেক্ট দেখেননি। কারণ- ওই প্রোজেক্ট যারা করেছিল, তাদের পরনে ছিল পাঞ্জাবি আর টুপি, মুখে ছিল দাঁড়ি। ওই প্রোজেক্টটি নাকি তিনি ইচ্ছে করেই স্কিপ করে যান! ওই ব্লগ থেকে এই পোস্টটা ব্লগার নিজেই(সম্ভবত) ডিলিট করে দিয়েছেন। তবে অন্য একটি ব্লগে এটারই কপি পেস্ট দেয়া হয়েছে। লিংকটা আমি সবার সুবিধার্থে দিচ্ছিঃ
ব্লগের লিংক
জানি এই লিংকটিও ডিলিট হয়ে যেতে পারে, তাই সুবিধার্থে আমি স্ক্রিনশটও দিয়ে দিচ্ছিঃ
ওই ব্লগার তার কথার পক্ষে কোন প্রমাণ দেখাতে পারেননি।
কিন্তু তিনি যে স্পষ্টতই মিথ্যাচার করেছেন, সে প্রমাণ নিয়েই আমি এসেছি। তাহলে দেখা যাক, আমার প্রমাণগুলো কি কিঃ
বুয়েটের সি এস ই ডিপার্টমেন্টের একজন শিক্ষক, যাঁর নাম নাশিদ শাহরিয়ার, তিনি সি ‘এস ই ফেস্টিভ্যাল ২০১১’ ফেসবুক গ্রুপে একটি পোস্ট দিয়েছেন এ সম্পর্কে। তাঁর কথাগুলো এরকমঃ
''বাঙ্গালি জানতাম তিলকে তাল করে, কিন্তু কীভাবে যে একটা ঘটনাকে সম্পূর্ণ ভিন্নখাতে প্রবাহিত করতে পারে, তার উদাহরণ নিচের ব্লগটা। আমি ওইসময় তাঁর(জাফর ইকবাল) সাথে ছিলাম। দুইবার তিনি ওই প্রজেক্ট দেখতে যান।
কোনবারই তাদের প্রোজেক্ট রেডি ছিল না। শেষ বার ওরা বলে যে আরো দুই মিনিট লাগবে। তাই আমরা সময় সংকীর্ণতার কারণে তাঁকে নিয়ে অডিটোরিয়ামে চলে যাই। আর টুপি দাঁড়িতে তাঁর এলার্জি থাকলে টোল কালেকশনের প্রোজেক্টও উনি দেখতেন না...''
উল্লেখ্য, টোল কালেকশনের যে প্রোজেক্টটির কথা নাশিদ স্যার বলেছেন, এর প্রেজেন্টাররাও কিন্তু দাঁড়ি-টুপিওয়ালা ছিল! নাশিদ স্যারের পোস্টের স্ক্রিনশটটি এখানেঃ
এখন আমরা দেখব, টোল কালেকশনের যে প্রোজেক্টটির কথা নাশিদ স্যার বলেছেন, তার কিছু লিংকঃ
টোল কালেকশন প্রোজেক্ট, ছবি১
টোল কালেকশন প্রোজেক্ট, ছবি২
টোল কালেকশন প্রোজেক্ট, ছবি ৩
ছবিগুলোতে স্পষ্টই দেখা যাচ্ছে, জাফর স্যার টোল কালেকশনের একটি প্রোজেক্ট শুধু দেখছেনই না, সেখানে কমেন্টও করছেন। সুতরাং, জাফর স্যারের টুপি-দাঁড়িতে এলার্জি আছে, এটা যে কত ভয়ংকর রকমের একটি মিথ্যা, চোখটা একটু খোলা রাখলেই বোঝা যায়।
আর যে প্রোজেক্টটি তিনি দেখতে পারেননি, সেটা প্রোজেক্ট প্রেজেন্টারদেরই দোষ ছিল, তারা যথাসময় প্রোজেক্ট রেডি করতে পারেনি- সে কথা নাশিদ শাহরিয়ার স্যারের কথাতেই আমরা জানতে পারি।
এতকিছু বলার উদ্দেশ্য কী? উদ্দেশ্য হল, যেসব মানুষ ওদের মিথ্যা কথায় বিশ্বাস করে একজন ভাল মানুষকে নিমেষেই একশো একটা দোষ দিয়ে দিচ্ছে, তাদের চোখ খুলে দেয়া। আমি যতদূর শুনেছি, ওই পোস্টটার লিংক নাকি ইতোমধ্যেই নাকি অনেকের ফেসবুকে শোভা পাচ্ছে। অনেকে তো জাফর ইকবাল স্যারের উপর পুরোপুরি বীতশ্রদ্ধ হয়ে পড়েছে। আমি বলব, অন্ধ ভক্তি প্রকাশ না করে সত্যিকারভাবে জাফর স্যারের আদর্শে উদ্বুদ্ধ হোন।
স্যারের আদর্শে অনুপ্রাণিত হয়ে যারা স্যারকে ভালোবাসবে, তারা কখনো এসব বাজে কথায় কান দেবে না। স্যারও নিশ্চই কারো অন্ধ ভালোবাসা চান না, তিনি আমাদেরকে জাগ্রত করতে চান। স্বাধীনতার পর থেকে আমরা যে ভুলগুলো করেছি, সেগুলো শুধরে আমাদেরকে নতুন করে বাঁচার স্বপ্ন দেখিয়েছেন জাফর স্যার। আর তাই আঁতে ঘা লেগেছে কিছু মানুষরূপী পশুর। এরা মুক্ত বুদ্ধির চর্চাকে ভয় পায়।
এরা সবার ওপরে নিজেদের মতামতকে চাপিয়ে দিতে চায়। এদের জন্যই আজ তসলিমা নাসরিন দেশছাড়া, এদের জন্যই হুমায়ুন আজাদকে এভাবে মরতে হয়। ছাগু বলে উপেক্ষা করার সময় পেরিয়ে গেছে, কালসাপ চিনতে ভুল করলে কিন্তু আমরা নিজেরাও বাঁচব না। কালসাপের বিষদাঁত ভেঙ্গে না দিলে এই বিষ সবার মাঝে ছড়িয়ে যাবে। আর বিষদাঁত উপড়ে ফেলার দায়িত্বও আমাদেরই।
আজ যদি আমরা স্যারের পাশে না দাঁড়াই, তাহলে কে জানে, ভবিষ্যতে আমাদের হয়ত এরকমই আরও একটি পরিণতি দেখতে হবে। হলেও তো আমাদের কিছুই আসে যায় না। আমরা শাহরুখ খানের বদনাম শুনলে তেড়ে মারতে যাই। কোথাকার কোন জাফর ইকবালের কি হল তাতে আমাদের কি আসে যায়! ।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।