আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

বাড়ীভাড়া বিষয়ক কপি পেষ্ট,

আমরা সবাই একই পথের যাত্রী, দেখা হয় কারো কারো সাথে ক্ষণিকের তরে......... বাড়ীভাড়া বিষয়ক কপি পেষ্ট, দু:খিত লেখকের নাম মনে নেই,............................. বাড়িওয়ালা যখন-তখন বাড়িভাড়া বাড়িয়ে দিচ্ছেন। যখন ইচ্ছা বাড়ি ছেড়ে দিতে বলছেন। আপনি যেন আপনার অসহায়ত্বের কাছে জিম্মি হয়ে আছেন। অথচ ভাড়া বাড়িতে সুযোগ-সুবিধা নিয়ে থাকা আপনার অধিকার। বাংলাদেশের প্রচলিত আইনই এ অধিকার দিয়েছে আপনাকে।

বাড়িভাড়ায় করুন লিখিত চুক্তি বাড়িভাড়া নিতে চাইলে একটি চুক্তিপত্র করে রাখা জরুরি। প্রশ্ন আসতে পারে, কেন এই চুক্তিপত্র? জানিয়ে রাখছি, বাড়িভাড়া নিয়ে কোনো বাড়াবাড়ি হলে এই চুক্তিপত্রই আপনার সমাধান দিতে পারে। কিন্তু কী থাকবে এই চুক্তিতে? বাড়িভাড়ার মেয়াদ, ভাড়ার শর্তাবলি, সুযোগ-সুবিধা, মানসম্মত ভাড়া নির্ধারণ, বাড়ি ছাড়ার আগে নোটিশের শর্ত প্রভৃতি অবশ্যই থাকতে হবে এই চুক্তিপত্রে। আইনমতে, বাড়িভাড়া একটি চুক্তি এবং চুক্তি সম্পাদনে বাঞ্ছনীয় নীতিমালাও এ ক্ষেত্রে প্রযোজ্য হবে। কিন্তু বাস্তবে দেখা যায়, আইনমতো চুক্তিপত্র সম্পন্ন করা হয় না।

অনেক বাড়িওয়ালা আছেন, চুক্তিপত্রের মাধ্যমে কোনো কিছু সম্পন্ন করার প্রক্রিয়াকে অহেতুক ঝামেলাপূর্ণ মনে করেন। ফলে তাঁরা বিষয়টি এড়িয়ে চলেন। ভাড়াটেরাও একটি সুন্দর বাড়িতে মাথা গোঁজার ঠাঁই পাওয়ার লোভে চুক্তিপত্র সম্পন্ন হওয়ার বিষয়ে উৎসাহী হন না। ফলে কোনো ঝামেলা দেখা দিলে তাঁরা তা নিয়ে অহেতুক হয়রানির শিকার হন। অনেক সময় বাড়িওয়ালাও না জেনেশুনেই ভাড়াটেকে বাড়িভাড়া দিয়ে ফেঁসে যান, যখন তিনি দেখতে পান, ওই ভাড়াটে তাঁর বাড়িতে অবৈধ কিংবা বেআইনি কোনো কাজ চালিয়ে যাচ্ছেন।

এসব সমস্যা সমাধানের জন্য যে কেউ বাড়িভাড়া নিয়ন্ত্রণ আইন, ১৯৯১-এর আওতায় রেন্ট কন্ট্রোলারের (বাড়িভাড়া নিয়ন্ত্রক) আশ্রয় নিতে পারেন। বাড়িভাড়ার চুক্তি ১৫০ টাকার স্ট্যাম্পে করা যেতে পারে এবং প্রয়োজনে রেজিস্ট্রি করে নেওয়া যেতে পারে। মানসম্মত ভাড়া নির্ধারণ করতে হবে ১৯৯১ সালের বাড়িভাড়া নিয়ন্ত্রণ আইনের ৭ ধারামতে, কোনো বাড়ির ভাড়া মানসম্মত ভাড়ার অধিক বৃদ্ধি করা হলে ওই অধিক ভাড়া কোনোভাবেই আদায়যোগ্য হবে না। এ ক্ষেত্রে মানসম্মত ভাড়া বলতে উপযুক্ত ভাড়াকেই বোঝানো হয়েছে। এই ভাড়া বাড়ির মালিক ও ভাড়াটের মধ্যে আপসে নির্ধারিত হতে পারে।

আবার বাড়িভাড়া নিয়ন্ত্রকও এ ভাড়া নির্ধারণ করতে পারেন। ভাড়ার মেয়াদ বৃদ্ধির কারণে কোনো ব্যক্তি ভাড়ার অতিরিক্ত প্রিমিয়াম, সালামি, জামানত বা অনুরূপ কোনো অর্থ দাবি বা গ্রহণ করার লক্ষ্যে ভাড়াটেকে প্রদানের জন্য বলতে পারবেন না। কোনো ব্যক্তি কোনো বাড়ির আসবাব ক্রয়ের জন্য শর্ত রাখতে পারবেন না। ভাড়া নিয়ন্ত্রক বাড়ির মালিক বা ভাড়াটের আবেদনের ভিত্তিতে বাড়িভাড়া এমনভাবে নিয়ন্ত্রণ করবেন, যেন এর বার্ষিক পরিমাণ বিধি দ্বারা নির্ধারিত পদ্ধতিতে স্থিরকৃত ওই বাড়ির বাজারমূল্যের ১৫ শতাংশের সমান হয়। এ অবস্থায় অনুরূপভাবে নির্ধারিত মানসম্মত ভাড়া, নিয়ন্ত্রক কর্তৃক সংশোধন বা পরিবর্তন না করা পর্যন্ত এ ধারার অধীন নির্ধারিত মানসম্মত ভাড়া, নিয়ন্ত্রক কর্তৃক সংশোধন বা পরিবর্তন না করা পর্যন্ত এ ধারার অধীন নির্ধারিত মানসম্মত ভাড়া হিসেবে গণ্য হবে।

বাড়ির মালিক বা ভাড়াটের দরখাস্তের ভিত্তিতে দুই বছর পরপর নিয়ন্ত্রক মানসম্মত ভাড়া পুনর্নির্ধারণ করতে পারবেন। বাড়িওয়ালা যদি মানসম্মত ভাড়ার অতিরিক্ত ভাড়াটের কাছ থেকে আদায় করেন, তাহলে প্রথমবার অপরাধের জন্য মানসম্মত ভাড়ার অতিরিক্ত আদায়কৃত টাকার দ্বিগুণ পর্যন্ত অর্থদণ্ডে দণ্ডিত হবেন এবং পরবর্তী প্রতিবার অপরাধের জন্য ওই অতিরিক্ত টাকার তিন গুণ পর্যন্ত অর্থদণ্ডে দণ্ডিত হবেন। মনে রাখবেন, আইন অনুযায়ী এক মাসের সমপরিমাণ ভাড়া অগ্রিম হিসেবে জমা দেওয়ার বিধান রয়েছে। ভাড়াটেকে দিতে হবে ভাড়ার রসিদ কোনো বাড়ির মালিক ভাড়াটেকে ভাড়া গ্রহণের লিখিত রসিদ প্রদানে বাধ্য থাকবেন। এই রসিদ বিধি দ্বারা নির্ধারিত ফরমে স্বাক্ষর করে ভাড়াটেকে দিতে হবে।

বাড়ির মালিক ভাড়ার রসিদের একটি চেকমুড়ি সংরক্ষণ করবেন। এ রসিদ সম্পন্ন করার দায়দায়িত্ব বাড়িওয়ালার। রসিদ প্রদানে ব্যর্থ হলে ভাড়াটের অভিযোগের ভিত্তিতে আদায়কৃত টাকার দ্বিগুণ অর্থদণ্ডে দণ্ডিত হবেন। ভাড়াটেকে উচ্ছেদ করতে চাইলে ভাড়াটেকে ইচ্ছামতো বাড়ি থেকে উচ্ছেদ করা যায় না। চুক্তি অনুযায়ী ভাড়া পরিশোধ করে থাকলে ভাড়াটেকে হঠাৎ করেও উচ্ছেদ করা যায় না।

চুক্তিপত্রের অবর্তমানে যদি কোনো ভাড়াটে প্রতি মাসের ভাড়া পরবর্তী মাসের ১৫ তারিখের মধ্যে পরিশোধ করেন অথবা বাড়িভাড়া নিয়ন্ত্রকের কাছে জমা করতে থাকেন, তাহলেও ভাড়াটেকে উচ্ছেদ করা যাবে না। সাধারণত বাড়িভাড়া আইনের আওতায় যেসব কারণে ভাড়াটেকে উচ্ছেদ করা যায় তা হলো: ১. ভাড়ার সময়সীমা নির্ধারিত থাকলে; ২. মালিকের অনুমতি ছাড়া বাড়ির নকশা পরিবর্তন করলে কিংবা ভাড়াটে স্বত্ব অন্য লোকের কাছে হস্তান্তর করলে অথবা সাবলেট দিলে; ৩. ভাড়া বাকি পড়লে; ৪. কোনো উৎপাত বা ক্ষতিকর কাজ করলে। ভাড়াটে সম্পত্তি হস্তান্তর আইনের ১০৬ ধারা অনুযায়ী, ভাড়াটেকে উচ্ছেদ করা যাবে। বাসাবাড়ি, দোকানঘর, অফিস, গুদাম প্রভৃতি যদি মাসিক ভাড়ায় ব্যবহার করা হয়, সে ক্ষেত্রে ১৫ দিনের নোটিশে ভাড়াটেকে উচ্ছেদ করা যায়। চুক্তি যদি বার্ষিক ইজারা হয় বা শিল্পকারখানা হয়, তবে ছয় মাসের নোটিশে উচ্ছেদ করা যায়।

চুক্তিপত্রের মেয়াদ শেষ হলেও বাড়িওয়ালা যদি ভাড়া নিয়ে থাকেন, তাহলে ধরে নেওয়া হবে যে বাড়িওয়ালা চুক্তিপত্রটি নবায়ন করেছেন। ভাড়াটে নিয়মিত ভাড়া পরিশোধ করা অবস্থায় যদি বাড়িওয়ালা তাঁকে উচ্ছেদ করার চেষ্টা করেন, তাহলে আইনের আশ্রয় নেওয়ার অধিকার ভাড়াটের রয়েছে। আর ভাড়াটেকে যুক্তিসংগত কারণে উচ্ছেদ করতে হলে আদালতের আশ্রয় নেওয়া যেতে পারে। মনে রাখতে হবে, ভাড়ার টাকা যে তারিখ থেকে শুরু হবে, সেই তারিখ থেকেই মাস গণনা করতে হবে। কখন আদালতে ভাড়ার টাকা জমা দেওয়া যায় আইনে বাড়িভাড়া নিয়ন্ত্রণ এবং সমস্যা সমাধানের জন্য ভাড়া নিয়ন্ত্রক রয়েছেন।

সাধারণত সিনিয়র সহকারী জজ আদালতগুলো এ দায়িত্ব পালন করে থাকেন। এ নিয়ন্ত্রক কোনো অভিযোগের ভিত্তিতে দরখাস্তের শুনানি করতে পারবেন। প্রয়োজনে বাড়ির মালিক ও ভাড়াটের প্রতি নোটিশ জারি করতে পারবেন। প্রয়োজন হলে কোনো বাড়িতে প্রবেশ ও পরিদর্শনের ক্ষমতা থাকবে নিয়ন্ত্রকের। বাড়িওয়ালা কোনো কারণে ভাড়া গ্রহণে অস্বীকৃতি জানালে ভাড়াটেকে চুক্তি অনুযায়ী সময়ের মধ্যে অথবা চুক্তি না থাকলে পরবর্তী মাসের ১৫ তারিখের মধ্যে মানি অর্ডারযোগে বাড়িওয়ালার ঠিকানায় ভাড়া পাঠাতে হবে।

মানি অর্ডারযোগে প্রেরিত ভাড়ার টাকাও যদি বাড়িওয়ালা গ্রহণ না করেন, তাহলে ওই টাকা ফেরত আসার পরবর্তী ১৫ দিনের মধ্যে ভাড়াটেকে রেন্ট কন্ট্রোলার, অর্থাৎ সিনিয়র সহকারী জজের বরাবর দরখাস্ত দিতে হবে এবং ভাড়া জমা দিতে হবে। এ জন্য একজন আইনজীবীর মাধ্যমে কন্ট্রোলারের বরাবর আরজি করতে হবে। রেন্ট কন্ট্রোলারের রায়ের বিরুদ্ধে জেলা জজের কাছে আপিল করা যাবে। সাধারণত বাড়িওয়ালা ভাড়াটের বিরুদ্ধে উচ্ছেদ ও ক্ষতিপূরণের মামলা করে থাকেন। অন্যদিকে ভাড়াটে বাড়িওয়ালার বিরুদ্ধে ঘরভাড়া ফেরত, নিষেধাজ্ঞা, অগ্রিম টাকা ফেরত পাওয়া, নিষেধাজ্ঞাসহ মানসম্মত ভাড়া ধার্যের মোকদ্দমা করে থাকেন।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।