আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

পুরুষ যেখানে ধর্ষণের শিকার!

অজানাকে জানতে ছুটছি অবিরাম...! পর্যবেক্ষক নারী নয়, এবার ঘটছে ‘পুরুষ ধর্ষণ’র ঘটনা। আর তা ঘটেছে নারীর দ্বারা; যার সঙ্গে সাধারণত পরিচিত নয় মানব সমাজ। দুনিয়ায় নারী ধর্ষণের ঘটনা এবং এ ব্যাপারে অভিযোগ অনেক পুরনো। এর বিরুদ্ধে শক্ত আইনও আছে। স্বাভাবিকভাবেই নারী ধর্ষণের ঘটনাগুলোর নিয়ামক পুরুষই হয়ে থাকে।

কিন্তু কেউ যদি অভিযোগ করে, নারীই ‘ধর্ষণ’ করেছে পুরুষকে- তাহলে এর অর্থটা কী দাঁড়ায়? আর কোন শব্দ দিয়েই বা একে বোঝানো হবে? এর চেয়েও জটিল সমস্যা হচ্ছে, পুরুষ ‘ধর্ষণের’ বিচারের ক্ষেত্রে কোনো রকম আইন সম্ভবত বিশ্বের কোথাও নেই। সম্প্রতি এমন সঙ্কটে পড়েছে জিম্বাবুয়ে। সে দেশে অসম্ভব রকমে বেড়ে গেছে পুরুষ ধর্ষণের ঘটনা। সংঘবদ্ধ নারীরা কোনো পুরুষকে টার্গেট করে তাদের কামনা চরিতার্থ করার অভিনব কৌশল চর্চা করছে অবাধে। বিশেষ করে প্রাইভেট কার বা মাইক্রোবাসে লিফট দেয়ার নামে মহিলারা প্রথমে কোনো পুরুষকে কব্জা করে।

এরপর নির্জনে গিয়ে তাকে যৌন মিলনে বাধ্য করা হয়। এর আগে পুরুষটিকে উত্তেজক ওষুধ কিংবা ইনজেকশন পুশ করা হয়। জিম্বাবুয়ের পুলিশ বলছে, দেশব্যাপী পুরুষ ধর্ষণের একটি নারী সিন্ডিকেট কাজ করছে। কিন্তু তারা এর কুল-কিনারা পাচ্ছে না। বিষয়টি গোটা জাতিকেই দুশ্চিন্তার মধ্যে ফেলে দিয়েছে।

ধর্ষণের অভিযোগে সোমবার রাজধানী হারারের একটি আদালতে তিন নারীকে বিচারের জন্য নেয়া হয়। এদের বিরুদ্ধে এ ধরনের ১৭টি ঘটনার প্রমাণ পাওয়া গেছে। পুলিশ তাদের গাড়িতে ৩১টি ব্যবহৃত কনডমও পেয়েছে। কিন্তু সমস্যা হচ্ছে, নারীর দ্বারা পুরুষ ‘ধর্ষণের’ বিচারের আইন দেশটিতে নেই। ফলে সংস্কার করতে হচ্ছে প্রচলিত আইন।

সেক্ষেত্রে সরকারও পড়েছে বিভ্রান্তিতে। কারণ এ ধরনের আইন থাকার কোনো পূর্ব অভিজ্ঞতা কিংবা নজিরও তারা পাচ্ছে না। পুলিশ বলছে, গত এক বছরে এ ধরনের বেশ কিছু ঘটনার অভিযোগ পেয়েছে তারা। ‘পুরুষের বীর্য স্বাস্থ্যের জন্য উপকারী’- এমন ধারণার বশবর্তী হয়ে এক শ্রেণীর নারী এ রকম উন্মত্ত হয়ে উঠেছে। এছাড়া এভাবে বীর্য সংগ্রহ করে এ নারীরা তা দেশের বাইরে পাচার করছে বলেও ধারণা করছে পুলিশ।

তারা বলছে, প্রাপ্ত অভিযোগের চেয়ে অনেক বেশি হারে এ ধরনের ঘটনা ঘটছে। কারণ লোকলজ্জার ভয়ে অনেকেই প্রকাশ্যে অভিযোগ করে না। ফলে ভিন্ন ধরনের এ অপরাধ শনাক্ত করা কিংবা বিচারের আওতায় আনা সম্ভব হয় না। দেশটির জাতীয় টেলিভিশনে নিজের অভিজ্ঞতা বর্ণনা করতে গিয়ে এক ভুক্তভোগী বললেন, রাজধানী হারারের রাস্তায় তিনজন নারী তাদের গাড়িতে তাকে লিফট দেয়ার প্রস্তাব দেয়। তিনি গাড়িতে ওঠার প্রায় সঙ্গে সঙ্গেই একজন তার মুখে পানি ছিটিয়ে দেয়।

এরপর ইনজেকশন দেয়া হয়। ফলে তিনি তীব্র যৌন উত্তেজনা অনুভব করেন। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ওই ব্যক্তি বলেন, ‘ওই নারীরা নগরীর বাইরে একটি নির্জন স্থানে গাড়ি থামিয়ে সবার সঙ্গে কয়েক দফা যৌন মিলনে আমাকে বাধ্য করে। অবশ্য প্রতিবারই কনডম ব্যবহার করা হয়। তাদের ‘কাজ’ শেষ হলে রাস্তার পাশে আমাকে বিবস্ত্র অবস্থায় ফেলে চলে যায়।

পরে স্থানীয় লোকজন আমাকে উদ্ধার করে পুলিশের কাছে যেতে সাহায্য করে। তখনো আমার মধ্যে যৌন উত্তেজনা বজায় ছিল। ফলে পুলিশ আমাকে চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে নিয়ে যায়। ’ হারারেতে পুলিশের মুখপাত্র আন্দ্রে ফাইরি সাংবাদিকদের বলেন, ‘আমাদের ধারণা দেশজুড়ে নারীদের একটি সিন্ডিকেট এ অপকর্ম চালিয়ে যাচ্ছে। আমরা দেশের বিভিন্ন প্রদেশ এবং শহর থেকে এসব খবর পাচ্ছি।

তবে এর কারণ সম্পর্কে আমরা কিছুই এখনো বুঝে উঠতে পারছি না। ’ এ অবস্থায় জিম্বাবুয়ের সরকার আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী এবং নাগরিক সমাজ খুবই বিব্রত। দেশটির সংস্কৃতিজ্ঞ এবং মনস্তত্ত্ববিদরাও এ বিষয়ে কোনো মতামত দিতে পারছেন না। তাদের কাছে এ বিষয় প্রচলিত সব রীতিনীতি এবং সামাজিক-সাংস্কৃতিক আচরণের পরিপন্থী। এর আগে এ নিয়ে কোনো গবেষণাও হয়নি।

তবে অনেকেই এখন বিষয়টি নিয়ে ভাবতে শুরু করেছেন। সমাজবিদরা বলছেন, এটি এক ধরনের বিকৃতি অথবা কোনো বাণিজ্যিক কৌশল। তবে নারীর দ্বারা ‘পুরুষ ধর্ষণ’ পৃথিবীর ইতিহাসেই সম্ভবত নতুন ধারণা। এরজন্য এখন নতুন ভাষা এবং আইন করার কথা ভাবতে হচ্ছে সবাইকে। অদূর ভবিষ্যতে হয়তো ‘পুরুষ নির্যাতন’ বা ‘পুরুষ ধর্ষণ’ বিরোধী কোনো আইনের সংযোজন হবে বিচার প্রক্রিয়ায়।

এখন কেবল সেদিনটির অপেক্ষা! সূত্র : বিবিসি অনলাইন  ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.