আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

ব্লগার রিভিউঃ জিকসেস এর বাংলা ব্লগ......(শুধুমাত্র নতুন ব্লগাররা পড়বেন, পুরাতনরা পড়ে সময় নষ্ট করবেন না)

সামুতে সেফ হবার জন্য সংগ্রাম করছি! দোয়া করবেন! আমি বেশ কিছু দিন ধরে ব্লগ পড়ছি, জিকসেস ভাইয়ের ব্লগ পড়ে মনে হল, উনার ব্লগ থেকে নতুন যারা লিখতে আগ্রহী, তাদের অনেক কিছুই শেখার আছে। তাই এই পোস্টটি , বিশেষ করে যারা নতুন ব্লগ লিখছেন, তাদের জন্য উপকারী হবে বলে মনে করি। যারা পুরাতন ব্লগার, তারা আমার লিখার ভুল ভ্রান্তি ক্ষমাসুন্দর দৃষ্টিতে দেখবেন বলে আশা করি। আর এই ব্লগের সব তথ্যসূত্র জিকসেস ভাইয়ার ব্লগ এবং ফেসবুক থেকে আমি যা বুঝেছি , নিজের মতো করে লিখেছি। আমার বুঝায় ভুল হতে পারে, তাই এই পোস্টের কোন লিখার ব্যাপারে আপত্তি থাকলে, কমেন্ট এ জানাবেন।

প্রথমেই জিকসেস এর সংক্ষিপ্ত পরিচিতিঃ পুরো নাম বেশ বড়, অনেকেই লিখতে ভুল করে, ফেসবুকে তাই ইংরেজির পাশাপাশি বাংলা নাম দেয়া – রাসয়াত রহমান জিকো । স্কুলজীবন পার করেছেন বাংলাদেশের বিখ্যাত গবর্নমেন্ট ল্যাবরেটরি হাই স্কুল এ। তার ঠিক পাশেই ঢাকা কলেজ থেকে পাশ করেছেন ইন্টার। এরপর দেশের সেরা বিদ্যাপীঠ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এ পদার্থবিজ্ঞান এ ভর্তি হয়েছেন... এই পর্যন্ত তার সাথে আমার একাডেমিক লাইফ পুরা মিলে যায়! মাস্টার্স শেষ করে , আবার এমবিএ করেছেন ঢাবি থেকেই । অসাধারণ জনপ্রিয় এই ব্লগার এর সব থেকে প্রিয় পানীয় হল কোক আর পেপসি ... .নিজেকে তাই মজা করে বলেন পেপসিআর! এই মজা মানে সেন্স অব হিউমার জিনিসটা কি ও কাকে বলে, আপনি বুঝতে পারবেন যদি একবার আপনি তার ব্লগ গুলো পড়া শুরু করেন......খলিল সিরিজ- একবার পড়ে দেখুন, আমি আপনার সাথে ১০০ কোটি টাকা বাজি ধরলাম- আপনি যদি হাসতে হাসতে না পরে যান , তাইলে আমি আর ব্লগ লিখবো না! সম্ভবত তাঁর লিখালিখি শুরু হয় ফেসবুকে নোট লিখার মাধ্যমে – হৈমন্তী ২০১০ দিয়ে ।

হৈমন্তী আমাদের অনেকেরই পড়া, কিন্তু জিকো ভাই গল্পটা বর্তমান সময়ের সাথে সামঞ্জস্য করে লিখেছেন । এরপর লিখেন খলিল সিরিজ – ফেসবুকে সে সময় অনেক জনপ্রিয়তা পায় এইটা । এই সব গুলোই ছিল ইংরেজিতে, কাছের মানুষদের পরামর্শে সামুতে লিখা শুরু করলেন। প্রথম পোস্ট - এবার সম্পূর্ণ বাংলায় লিখা - হৈমন্তী ২০১০, সামুর পাঠকরা পেল দুর্দান্ত এক প্রতিভাবান ব্লগার কে, যিনি অসামান্য রম্য লেখার জোরে প্রথম থেকেই ব্লগারদের মনে জায়গা করে নিলেন। তাঁর এই পোস্টটি এখন পর্যন্ত পড়া হইছে প্রায় চার হাজার বারের মতো! সেটা ছিল ২০১১ সালের ৫ এপ্রিল।

আর এর পর থেকে একে একে আসতে থাকে খলিল সিরিজ – এই সিরিজটা সামুর ব্লগরা গোগ্রাসে গিলতে থাকে, আর প্লাসের বন্যায় ভেসে যায় জিকো ভাইয়ের ব্লগ! তাঁর লিখার বিষয়বস্তু বেশ বিস্তৃত । ক্রিকেট-ফুটবলে তাঁর আগ্রহ স্কুল থেকেই, তারই প্রতিফলন দেখা যায় “খেলাধুলা” বিভাগে। লিখেছেন দেশের সব থেকে গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা- ৭১ কে নিয়ে। সিনেমা নিয়ে তাঁর লিখা আপনাকে নতুন এক রম্য রচনার সাথে পরিচয় করিয়ে দিবে। স্কুল, কলেজ কিংবা ভার্সিটি নিয়ে তাঁর মজার মজার ব্লগ পরে দেখুন, হাসতে হাসতে আপনি পেটে তো হাট দিবেনই , পুরাতন সেই দিনগুলোর কথাও মনে পড়বে বেশি বেশি।

হুমায়ন আহমেদ কে লেখনী পিতা মানেন তিনি। জিকো ভাইয়ের ব্লগ এ আপনি তাই তাঁর ছায়া পাবেন। জাফর ইকবাল ও তাঁর প্রিয় লেখক। সবাই যেখানে বাচ্চারা দূরে থাকো টাইপ পোস্ট দেন , তিনি বাচ্চাদের নিয়াও পোস্ট দিছেন! অনেক শিশুর মতোই , তাঁর প্রিয় কার্টুন হল টিনটিন! এত এত কথা বললাম, এবার আসল কথায় আসি... জিকো ভাইয়ের ব্লগ, এ পর্যন্ত দেখা হয়েছে প্রায় ১ লক্ষ ৭০ হাজার বারের মতো! অবিশ্বাস্য! উনার লিখা ব্লগ মানুষ কেন পড়ে? উনি কি এমন লিখে? নতুন ব্লগার কিংবা নতুন লিখা শুরু করাদের জন্য, এই প্রশ্নের উত্তর জানা জরুরি। আমি এখানে আমার মতো করে, জিকো ভাইয়ের ব্লগের জনপ্রিয়তার কারণগুলো তুলে ধরছিঃ # প্রথম কথা, ভাইয়া ব্লগে খুবই ছোট ছোট বাক্য লিখেন, এতে পাঠক খুব আরাম করে তার লিখার মাঝে ঢুকতে পারে, সহজেই বুঝতে পারে –এই গুনটা খুব কম লেখকের মধ্যেই আছে ।

হুমায়ন আহমেদ ব্যাপক জনপ্রিয়তার কারণও আমার কাছে মনে হয় এজন্য! # কম শব্দ খরচ করে রসিকতা করার ক্ষমতা – জিকো ভাইয়ের লিখার অন্যতম গুন। # আপনি লক্ষ করে দেখবেন, উনি ব্লগ এ লিখছেন, নিজের আসল নামেই । এইটা একাটা গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। আপনি যখন আসল নামে লিখবেন, পাঠক আপনার সাথে নিজের একটা যোগাযোগ করতে পারে। ছদ্মনামে লিখলে পাঠকের বিশ্বাসযোগ্যতা অর্জন করাটা কঠিন! # খুব বেশি সিরিয়াস লিখা পড়তে , মনে হয় খুব কম মানুষই ব্লগে আসে।

সারাদিন কষ্ট করে এসে রম্য রচনাই মানুষের প্রথম পছন্দ। বাজি ধরে বলতে পারি, জিকো ভাইয়ের রম্য গুলো পড়লে ,মন খারাপ যতই থাক- একটু পরেই দেখবেন , চারিদিকে ফুর্তি আর ফুর্তি! # আপনি দেখবেন , জিকো ভাইয়ের প্রায় বেশির ভাগ হিট প্রাপ্ত পোস্ট গুলোর অনেকগুলোই কিন্তু গল্প! আমেরিকা- মধ্যপ্রাচ্য- জাতীয় রাজনীতি যত কিছু নিয়েই আপনি গবেষণা করে লিখেন না কেন, একটা নির্দিষ্ট সময় পর কিন্তু এই পোস্টগুলো মানুষ আর পড়বে না! কিন্তু খলিল সিরিজ পাঠকরা ১০০ বছর পরেও পড়বে! অন্যদের কথা জানি না, আমার মন খারাপ থাকলে, আমি জিকো ভাইয়ের ব্লগ পড়ি । সৃষ্টিকর্তা খুব কম মানুষকেই হিউমার করার ক্ষমতা দিয়েছেন, জিকো ভাই সেই বিরল সৌভাগ্যবানদের একজন। দূরের ও কাছের অসংখ্য মানুষের মমতা আর ভালবাসায় তাঁর জীবন আরও সাফল্যমণ্ডিত হোক! ভালবাসা এবং আরও বেশি বেশি ভালবাসা , প্রিয় জিকো ভাইয়ের জন্য............ ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.