আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

রংধনু ভালোবাসা

মনের এলোমেলো ভাবনাগুলোকে শব্দের ফ্রেমে বাঁধার এক অপচেষ্টা। পাঁচ মিনিটঃ মোবাইলটা চুপচাপ খাটের এক পাশে পড়ে আছে। কোন সাড়াশব্দ নেই। সাত মিনিটঃ এখনো কোন সাড়াশব্দ নেই। দশ মিনিটঃ মেঘলা মেজাজ খারাপ করে মোবাইলটাকে প্রায় একটা আছাড় মেরেই ফেলেছিলো ঠিক তখনই ফোনটা ভীষন ভ্রাইবেশনে কেঁপে উঠলো।

ইয়েস ইয়েস ইয়েস, ফোন আসছে, ফোন আসছে। কম্পমান ফোনটা হাতে নিয়েই মেঘলা একপাক নেচে ফেললো। মোবাইল স্ক্রীনে বেশ স্পষ্ট দেখা যাচ্ছে ঐ হাবলুটার নাম। এই কলটার জন্যই তো এতক্ষণ অপেক্ষা। এক আদিগন্ত বিস্তৃত হাসি ঝুলিয়ে সে সুন্দর করে মোবাইলের লাল বাটনটা চেপে দেয়।

ইহ! ঝগড়া করবে আবার ঝগড়া করার পুরো দশ দশটা মিনিট পর ফোন দিবে আর সেই ফোন মেঘলা নাচতে নাচতে ফোন ধরেও ফেলবে, পুরো ব্যপারটা এতো সোজা নয়। ঝগড়া করার দরকারটা কি ছিলো, মেঘলা ভ্রু কুঁচকে ভাবে; কেন বললো কাজল দিলে ওকে দেখতে পেত্নীর মতো লাগে। এবার ভালো হয়েছেনা। ফোন ধরা একেবারে বন্ধ। পেত্নীকে ফোন দেয়ার দরকারটা কি! কোন শাঁকচুন্নি খুঁজে নিতে পারেনা।

আবারো ফোন। মেঘলা এবার ফোনটা সাইলেন্ট করে রেখে পিসি ছেড়ে বসে পড়ে। অই ছাগলটা কি জানে সেদিন শুধুমাত্র ওর সাথে ঘুরতে বের হবে বলে কি কষ্ট করে চোখে কাজল লাগিয়েছিলো সে। কাজল লাগানো তো আর ছোটদের চিত্রকলা না যে পেন্সিলে দুইটা টান দিবে আর আম, জাম, কাঠাল হয়ে যাবে। পাশের ফ্ল্যাটের শিউলি আপাকে রীতিমতো তোষামোদ করে আনতে হয়েছে কাজল লাগিয়ে দেয়ার জন্য।

অই মেয়েটাও যা ঢঙ্গী। এমনিতে তো সারাদিন মেক আপ বক্স আর ড্রেসিং টেবিলের সাথে সুপার গ্লুর মতো এটে থাকে কিন্তু যদি বলা হয় একটু কাজল দিয়ে দাও, তখন তার আর সময় থাকেনা। শেষে যখন মেঘলা হুমকি দিলো, তার মোবাইল বয়ফ্রেন্ডকে তার ফেসবুকের বয়ফ্রেন্ডের কথা বলে দেয়া হবে, তখনই না বরফ গলে পুরো শরবত হয়ে গেলো। কিন্তু অই ছাগলটা এইসবের কি কঁচু বুঝবে! কি সুন্দর বলে দিলো পেত্নীর মতো দেখাচ্ছে। এইসব হাবু গাবুর সাথে কথা আজ থেকেই বন্ধ।

না ফোন আর আসছেনা। দুই তিনবার ট্রাই করার পরই আর খবর নাই। অদ্ভুত ছেলেপেলে সব। প্রথমে অযথাই রাগাবে, তারপর মানাবে, আর মানতে না চাইলে সোজা কেটে পড়বে। মেঘলা মেজাজ চুড়ান্ত মাত্রায় খারাপ করে এসাইনমেন্টের কাজ করতে বসে পড়ে।

এসাইনমেন্ট করার কয়েকটা ধাপ আছে। প্রথম ধাপটা হল নেট থেকে কপি পেস্ট, দ্বিতীয় ধাপ হল সিনিয়র ব্যাচ থেকে কপি পেস্ট এবং সবার শেষেরটা হল গ্রুপমেটদের কাছ থেকে কপি পেস্ট। এই তিন ধরনের কপি পেস্টে যদি একান্তই কাজ না হয় তখন শুরু হয় ঝামেলা। এখন প্রথম ধাপ চলছে। কিন্তু গুগল বাবাজির কি যেন হল।

কপি পেস্ট উপযোগী কোন রেজাল্টই সে শো করতে পারছেনা। মেঘলা আরেকটু ভালো করে চেক করতে গিয়ে দেখে এক জায়গায় বোল্ড করে হাবলুটার নাম। কি ব্যপার? সে এবার চোখ বড় বড় করে পড়তে শুরু করে। না, তেমন কিছুই না, এক রাইটারের বইয়ের রেফারেন্স দেয়া। রাইটারের নাম আর হাবলুটার নাম কাকতালীয়ভাবে মিলে গিয়েছে।

নিচেরটা চেক করতে গিয়ে দেখে সেখানেও একই অবস্থা। হাবলুর মতো নামওয়ালা একজন বিশাল বিজনেসম্যান তার কোম্পানীর কি সব লিগ্যাল জিনিসপাতি নিয়ে প্রেস কনফারেন্স করেছে তার বিবরন। কিন্তু নিচেরটা লিংকটা বেশ মজার। এইবার একই নামের একজন ডাকাতের কুকীর্তির ছবিসহ বিস্তারিত বর্ননা। বাহ! দারুন তো।

মেঘলা মনে মনে হাততালি দেয়। ইচ্ছে করছে ফেসবুকের ওয়ালে গিয়ে লিঙ্কটা শেয়ার করে আসে। কিন্তু দেয়া যাবেনা, এখন তো ঝগড়া চলছে। কিন্তু কাহিনী হল সব ঐ হাবলুর নামের রেজাল্ট শো করছে কেন? সন্দেহটা মাথার ভেতর ঢুকতেই মেঘলার চোখ সোজা সার্চবার বরাবর চলে যায় চলে যায় এবং সন্দেহ সত্যি হল। সার্চবারে এসাইন্মেন্টের টপিকের জায়গায় ঐ হাবলুটার নাম লেখা।

মেঘলা লম্বা একটা দীর্ঘশ্বাস ফেলে। ছেলেটা মনে হয় তার মাথার প্রত্যেকটা নিউরনে নিউরনে ঘাপটি মেরে বসে আছে। যতদিন পর্যন্ত তার শ্বাস ঠিকঠাকমতো চলবে ততদিন পর্যন্ত এই আহাম্মকটাকে এইখান থেকে কেউ টেনে বের করতে পারবেনা। একটা দীর্ঘশ্বাস ফেলে চেয়ার ঠেলে উঠে দাঁড়ায় সে। এসাইনমেন্ট আর করতে ইচ্ছে করছেনা।

অনেক রাত হয়ে গিয়েছে খেতেও ইচ্ছে করছেনা। আম্মুর সাথে মাঝারি ধরনের বাক যুদ্ধের পর মোটামুটি বিধ্বস্ত অবস্থায় মেঘলা বিছানায় এলিয়ে পড়লো। পাশের ফ্যাল্টের ছয়মাসের পিচ্চিটা চিৎকার করে কাঁদছে। ঘুমানো দরকার কিন্তু ঘুমের নাম গন্ধও নেই। মাথার কাছেই মোবাইলটা উল্টো করে রাখা।

চেক করবেনা করবেনা করেও হাতটা নিজে থেকেই মোবাইলের দিকে চলে যায়, নো মিসকল, নাথিং। মেঘলা টের পাচ্ছে পেটের ভেতর জমিয়ে রাখা কান্নাগুলো ক্রমশই ফুলে ফেঁপে সুনামির আকার ধারণ করছে। যে কোন সময় ভেতরের সবকিছু ভেঙ্গেচুরে বেড়িয়ে আসবে। সে নাকে মুখে যতদূর সম্ভব বালিশ গুঁজে কান্না আটকানোর চেষ্টা করতে লাগলো। সেতো আর পাশের ফ্যাল্টের পিচ্চিটার মতো এতো লাকি নয় যে চিৎকার করে কাঁদবে আর কেউ এসে জিজ্ঞেস করবেনা কেন কাঁদছে।

মেঘলা শুকনো মুখে বাসের জানালার পাশে বসে আছে। কাল রাত থেকে এখন পর্যন্ত মনে হয় কয়েক’শ বার সেল ফোনটা চেক করা হয়ে গিয়েছে। নাহ কোন ফোন আসেনি। মেসেজও নয়। আসার সময় আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে অনেক ঘষা মাজা করেছে কিন্তু চোখের ফোলা ভাবটা কমেনি।

যে কেউ দেখলেই বুঝে ফেলবে সে সারারাত কেঁদেছে। অদ্ভুত লাগে, পেপারে এতো এতো রুপচর্চার প্রণালী বের হয়, অথচ কেউ বললো না, কিভাবে চোখের ভেতর অশ্রুর সাথে মিশে থাকা কষ্টগুলোকে লুকোনো যায়। আজ প্রেজেন্টেশন আছে। কিন্তু সেটা নিয়ে চিন্তা করতে ইচ্ছে করছেনা। মেঘলা আনমনে জানালা দিয়ে বাহিরে তাকায়।

রাস্তার উপর একটা কুকুর কাকে যেন ধমকাতে ধমকাতে চলে যাচ্ছে, ছোট দুটো পথশিশু কি এক অদ্ভুত মজার খেলায় ব্যাস্ত। ইশ সেও যদি সবকিছু ভুলে কিছুক্ষনের জন্য এভাবে ছোটবেলায় ফিরে যেতে পারতো! পাশ দিয়ে হঠাৎ এক রিকশা চলে গেলো। কমবয়সী এক যুগল। ছেলেটা কি যেন বলছে আর মেয়েটা মনে হচ্ছে হাসতে হাসতে রিকশা থেকে পড়েই যাবে। মেঘলা চোখ সরিয়ে নেয়।

তার এখন ভীষন হিংসে হচ্ছে। এই পৃথিবীতে সবাই এতো সুখী কেন! সব দুঃখ কি তার কপালেই লেখা ছিলো? হঠাৎ একটা কাঁপুনিতে মেঘলা প্রায় লাফিয়ে উঠে। মোবাইলে ভ্রাইবেশন হচ্ছে। মেঘলা ব্যাগ থেকে মোবাইল উদ্ধার করার জন্য একদম ব্যস্ত হয়ে উঠে। তার মাঝারি একটা ব্যাগ।

তারপরও এই ব্যাগের ভেতরেই কিভাবে কিভাবে যেন মোবাইলটা হারিয়ে যায়। মেঘলা মোবাইল উদ্ধার করতে গিয়ে ব্যাগ থেকে ছাতা ফেলে দিলো। দুই তিনটা বই উল্টে উপরে ভাঁজ ফেলে দিলো। আর খাতার তো কোন আগা মাথাই নেই। অতপর একদম কোনায় গিয়ে পাওয়া গেলো মহাজনকে।

কিন্তু মোবাইলের স্ক্রিন এমন অন্ধকার কেন! কিছুক্ষন আগেও তো ভ্রাইবেশন হচ্ছিলো। মেঘলা মোবাইলটা হাতে নিয়ে একদম বোকা হয়ে যায়। নো মিসকল। কিচ্ছুনাই। প্রায় সাথে সাথেই রহস্যটা বোঝা গেলো।

ভ্রাইবেশন আসলে তার মোবাইলে হচ্ছিলো না। ভ্রাইবেশন হচ্ছিলো প্রায় তার কোলের উপর ফেলে রাখা পাশের আপুটার ব্যাগে। যে কিনা দিব্ব্যি ঘুমাচ্ছে। সেল ফোনের কোন খোঁজ খবরই নেই। মেঘলার একদম পিত্তি জ্বলে গেলো।

সে কাল রাত থেকে ফোনের অপেক্ষায় বসে আসে, অথচ ফোনের কোন নাম গন্ধ নাই। আর পাশের জনের ফোন বেজে বেজে ঠাণ্ডা হয়ে যায়, আর তার কোন খবরই নাই। মেঘলা রাগের চোটে পুরো রাস্তা জুড়ে পাশের আপুটার দিকে আর তাকালোই না। সাড়ে তিনটায় বাস। প্রেজেন্টশন বহু আগেই শেষ।

প্রেজেন্টেশনে কি বলেছে না বলেছে তা এখন আর মনেও পড়ছেনা। পড়ার দরকারও নেই। গ্রুপমেটদের চেহারা দেখেই বেশ ভালোই বোঝা যাচ্ছে, যা বলেছে তা অবশ্যই খুব একটা ভালো হয়নি। কিন্তু তাতে ওর কি। দোষ তো আর ওর না।

সব অই হাবলুটার দোষ। প্রথমে পেত্নী বললো কেন? একে তো পেত্নী বলে তার উপর ফোন দেয়ারও কোন খবর নাই। একদম জন্মের আড়ি এর সাথে। ইহকালে আর ভাব নেয়ার চান্স নেই। মেঘলা একবার এদিক ওদিক তাকায়।

ওই রামছাগলটা ভালো করেই জানে ওর ক্লাস কখন শেষ। আচ্ছা যদি এমন হয় ফোন না দিয়ে সরাসরি যদি দেখা করতে চলে আসে। কথাটা মনে হতেই মেঘলা মনে মনেই নিজের মাথায় চাটি মারে। ফোন দেয়ারই সময় হয়না, আবার দেখা করতে আসবে। কবে যে এইসব দিবাস্বপ্ন দেখা বন্ধ করতে পারবে তা একমাত্র সৃস্টিকর্তাই জানেন।

চোখের সামনেই বাসটা একেবারে কানায় কানায় ভরে গেলো। এখন উঠলে হয়তো ঠেলেঠুলে দাঁড়ানোর জায়গা পাওয়া যেতে পারে। কিন্তু আরো দেরী করলে মনে হয় বাসের পেছন পেছন দৌড়ে বাসায় যেতে হবে। মেঘলা তাকিয়ে তাকিয়ে দেখলো। বাসের চারপাশ কয়েকপাক ঘুরেও আসলো, কিন্তু বাসে উঠলো না।

এক পা আগায় তো কয়েক পা পিছিয়ে যায়। তার এখনো কেন যেন মনে হচ্ছে যে কোন সময় ওই গরুটা পেছন থেকে হঠাৎ করে ভৌ করে উঠবে। নাহ! আর দেরী করা যায়না। কেউ আসবেনা ওর জন্য। মেঘলা বাসের দরজায় পা রাখতেই কে যেন পেছন থেকে ওর ব্যাগ টেনে ধরে।

আরেকটু হলে পড়েই যাচ্ছিলো, কিন্তু একদম শেষ মুহুর্তে হাতটা ধরে ফেলায় রক্ষা। এই গর্দভমার্কা কাজ কার হতে পারে এটা জানার জন্য বিশেষ গবেষনার দরকার হয়না। মেঘলা ঘুরে দাঁড়িয়ে ভীষন একটা ঝাড়ি দিতে গিয়ে থেমে গেলো। সায়ান দাঁত কেলিয়ে দাঁড়িয়ে আছে। সায়ান দ্যা গরু, ছাগল, হাবলু, গাবলু সব।

এই গাধাটার জন্য এতকিছু অথচ কি নির্বিকারভাবে দাঁত কেলাচ্ছে। কষে একটা ঝাড়ি মারতে ইচ্ছে করছে, কিন্তু মারা যাবেনা। ঝাড়ি মারতে গেলেই তো কথা বলতে হবে। এই গর্দভের সাথে সব ধরনের কথা বন্ধ। কেন ফোন দিলোনা সে।

মেঘলা কাঁধের ব্যাগটা ঝটকা মেরে উঠিয়ে ঘুরে হাঁটা ধরে। বাস তো আর কপালে নেই, এখন রিকশা পেলে হয়। হাঁটতে শুরু করা মাত্রই সায়ান আবারো পিছন থেকে ব্যাগ টেনে ধরলো। এ প্রজাতির মানুষগুলোর জন্যই তো ডারউইন বলে গিয়েছেন, বানর মানুষের পুর্বপুরুষ। মেঘলা মনে মনে কঠিন কিছু কথা ঠিক করে নেয়।

আজ এই হ্যবালাটার একদিন তো ওর একদিন। কিন্তু বলতে গিয়ে আবারো থেমে যায়। সায়ান এখন তার নাকের ঠিক সামনে একগাদা কিটক্যাটের প্যাকেট ধরে আছে। এটাতো রীতিমতো প্রতারণা। কিটক্যাট একটা দেখলেই মেঘলার মাথা ঠিক থাকেনা, সেখানে এতোগুলো।

না, কিটক্যাটের ফ্যাক্টরি উঠিয়ে আনলেও আজ কোন সন্ধি হবেনা। মেঘলা ঝটকা মেরে সায়ানের হাত সরিয়ে দিতে গিয়ে আবারো থেমে যায়। ছেলেটার গা এতো গরম কেন? "এই কি হয়েছে তোমার? গা এতো গরম কেন"? বলেই মেঘলা জ্বিব কাটে। ওর না কথা বলা বন্ধ ছিলো। থাক কি আর করা।

বলে ফেলা কথাকে তো আর ফেরানো যায়না। "কি আর বলবো, তোমার মাথা এতো গরম হয়ে আছে যে তার তাপ বিকরিত হয়ে আশে পাশে যা কিছু আছে সব গরম করে দিচ্ছে। এই যে দেখ দেখ তোমার পায়ের নিচে মাটিও ফেটে চৌচির হয়ে আছে। প্লিজ মাথা ঠান্ডা করো। নাহলে যে কোন সময় দাবানল লেগে যেতে পারে"।

মেঘলা বুঝে পায়না, এই রকম ভয়ংকর সব কথা বার্তা বলার পরেও সে কেন এখনো এই ছেলের মাথায় কষে একটা চাটি দিচ্ছেনা। "এতো জ্বর লাগালে কবে"? "কাল থেকে! চোখে মুখে কি কাজল মেরে আসলা, দেখেই ১০৩ ডিগ্রি জ্বর উঠে গেলো। কাল রাতে তাই ঘুমিয়ে গিয়েছিলাম, পেত্নিটাকে আর মানুষ করা হয়নি। বাট আজ আর রিস্ক নিলাম না। জ্বর নিয়েই চলে আসছি! আজকেও যদি কাজল দিয়ে আসো! আম জনতার কি হবে তাহলে"! "তুমি এতো জ্বর বাঁধালা, আর আমাকে বল্লাও না।

তুমি মানুষ হবা কবে একটু বলবা"। "দিসিলাম তো ফোন, ধরলানা! আর মানুষ হয়ে কি হবে। পেত্নীর সাথে সংসার তো করা যাবেনা। তাই ঠিক করছি, পেত্নী যখন মানুষ হবেনা তখন আমিই নাহয় মরে ভূত হয়ে যাই। তারপর সুখে শান্তিতে সংসার করবো"।

মেঘলা স্থির দৃষ্টিতে কিছুক্ষণ সায়ানের দিকে তাকিয়ে থাকে। কাল এই গাবলুটার মুখ থেকে পেত্নী শুনে যে রকম ভয়ংকর রাগ হচ্ছিলো, আজ ঠিক সেই রকমই ভয়ংকর অপরাধবোধ হচ্ছে। ছেলেটা সারাটা রাত জ্বরে এমন কষ্ট পেলো অথচ সে কিসব ছেলেমানুষি রাগ করে বসে রইলো। কিন্তু তারপরেও দোষ ওই গাধাটারই। কেন ওকে পেত্নী বলতে গেলো।

"এই চলো বাসায় চলো এক্ষন। আর একটা কথাও না। দিবনা আর কাজল; খুশি এইবার"। "হুম, কিন্তু মাথার উত্তাপ যে আসলেও কমেছে তার একটা শিউরিটি চাই। একটু হাসি দেখতে পেলে নিশ্চিন্ত হইতাম দাবানলের আর কোন সম্ভাবনা নেই।

অন্তত এই কিটক্যাটের জন্য হলেও হাসো"। মেঘলা হাসবেনা হাসবেনা করেও পাশ ফিরে হেসে ফেলে। এই হাসি কান্নার খেলা গুলোর জন্যই তো ভালোবাসা এতো সুন্দর।  ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।