আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

আপুদের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি

নিজ সত্তার অভাবে মানুষের অন্তর পরিবর্তন হয় শুন্য আত্মায় আর শূন্য আত্মার নিজস্ব কোনও কথা থাকেনা................................... আপুদের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি । কথাগুলো একান্তই আমার বেক্তিগত জীবনের এবং সত্য কিছু কথা । হয়তো শুনতে কারো বিরক্ত লাগতে পারে কিন্তু স্থির হয়ে চিন্তা করবেন , আশা করি বুঝবেন । ক্লাস সেভেন থেকে টেন পর্যন্ত এমন কোন বিকেল ছিলোনা যে আমার মন খারাপ হয়নি । আমি খুব চুপচাপ ছিলাম , তেমন কারো সাথে মিশতাম না তাই তেমন বন্ধুও ২/১ জন ছাড়া ছিলোনা ।

আমাকে এলাকার ছেলেরা এত বিরক্ত করতো যে না পারতাম ছাদে যেতে , না উঠোনে ! কোচিংএ যখন যেতাম একেক দিন একেক জন ফলো করতো ! অনবরত পিছন থেকে কথা বলতে থাকত , আমি চুপ করে মাথা নিচু করে আমার মত চলে আসতাম । আমি কখনই কারো কোন পাল্টা উত্তর দিতাম না আর এটার জন্যই আমাকে কেউ বিরক্ত করতে আসলে সেই একসময় বিরক্ত হয়ে চলে যেতো । আমার কিছু করা লাগত না কিন্তু আমি এতো কন্সাস ছিলাম তবুও অনেকের কাছে অনেক কথা শুনতাম । কেউ আমার সামনে বলতনা কিন্তু পিছনে বলতো আমি নাকি অনেক ছেলে ঘুরাই , হাজার প্রেম করি ব্লা ব্লা । তখন খুব খারাপ লাগতো যে যারা এগুলো বলতেছে তারা দেখছে আমার পিছনে ছেলেরা ঘুরছে , এটা বুঝত না যে আমাকেই ওরা ডিস্টার্ব করতেছে ।

গুটি কয়ক ছেলেদের এক্মটা বাজে অভ্যাস হল আঙ্গুর ফল টক এই জাতীয় । যখন পাত্তা পেতনা তখন সারা দুনিয়া ওই মেয়ের নামে বদনাম শুরু করে ! মাঝে মাঝে খুব কাঁদতাম কারন আমাকে নিয়ে এতই খারাপ কথা পুরো এলাকায় ছড়িয়ে ছিল যে কেউ আমাকে নিয়ে ভাল কথা বললেও তাকে আমার সন্দেহ হতো ! আম্মুর সাথে কিছু শেয়ার করতাম যে আমিই কেন !! মা একটাই ডায়লগ দিতো যে দেখ আমরুল জামরুলে কেউ ঢিল মারে না ; সব ঢিল ফজলি আমেই পড়ে । তখন বুঝতাম না মানে তা কি আসলে আমি এতই মানসিক ভাবে অসুস্থ হয়ে গেছিলাম যে কিছু বলার নাই । এক ভাইয়া আমাকে পড়াত সে আমাকে খুব বুঝাতো যে আমি তো জানি আমি কিছু করিনি । সুতরাং নিজের কাছে সৎ থাকো তাহলেই হবে ।

তার অনেক হেল্পে আমি পরে নিজেকে সামলে নিয়েছি। এরপর কলেজে উঠার পর , আবার আমিই সকল প্রবলেমে ! আমি কিছুই করতাম না কিন্তু ঘুরে ফিরে কিভাবে যেন আমিই পরে যেতাম ! এমনও দিন গেছে যে পড়তে যাচ্ছি স্যারের বাসায় , সিঁড়িতে ছেলে ছুরি নিয়ে দাঁড়ায় আছে কেন আমি রেসপন্স করিনা ! রাস্তায় হটাত করে রিকশা থামায় দিতো , বাসায় ফুল চিঠি পাঠাতো , ফোনে মেরে ফেলার হুমকি দিতো অনেক কিছু ! অনেক কিছু পার করে এসেছি !! এত যে ধৈর্য আমার , আমি নিজেই জানতাম না! যাইহক এতো গুলো কথা বলার মূল কারন হচ্ছে ঠিক এই ইভটিজিং এর কারনে আমার বয়সী অনেক মেয়ে আত্মহত্যা করছে । খবরের কাগজে প্রায়ই পাওয়া যায় বখাটেদের যন্ত্রণায় আত্মহত্যা । যখন এগুলো পড়ি নিজেকে খুব ভাগ্যবান মনে হয় । যে নাহ আমি হার মানিনি , কটাক্ষ শুনতে শুনতে এতই শক্ত হয়ে গিয়েছিলাম উলটো পরে আমাকেই ছেলেরা ভয় পেতো ! তাই, আপুদের বলছি এমন অনেক কিছুই হবে , অনেক কিছুই শুনতে হবে যা আপনি স্বপ্নেও ভাববেন না যে আপনাকে নিয়ে মানুষ এত বাজে কথা বলছে ! তবুও এমন ভাবে নিজেকে গড়ুন যে দুনিয়া এক পাশে আপনার বিরুদ্ধে কথা বললেও আপনার যেনও কিছুই না আসে যায় ।

কখনই বখাটেরদের প্রশ্রয় দিবেন না । সব নিজের দোষ ভেবে মন খারাপ করবেন না। আমার পাশের বাসার একটা মেয়েও সেম কাহিনী তে সুইসাইড করেছিলো । হয়তো ওকে সাপোর্ট দেয়ার কেউ ছিলনা । তাই , এমন একজন কে বেছে নিন যেন সে সব সময় আপনাকে সাহস যোগায় ।

যেমন আমার আম্মু ছিল । সাড়া পৃথিবী উলটিয়ে যাক কিন্তু আপনি আপনার কাছে সৎ থাকুন তাহলেই হবে । কষ্ট পেয়ে কখনই ভুল সিদ্ধান্ত নিবেন না । চলার পথে আগাছা থাকবেই , আর আমাদের বাংলাদেশের অবস্থাই এখন এমন হয়ে গেছে । তাই নিজের ঢাল নিজে হওয়া ছাড়া উপায় নাই ।

পজিটিভ মাইন্ডের বন্ধু বানান । অনেক বই পড়ুন , যেন কোন বিকেল কোন ছেলের বাজে কথায় না কেটে চার্লি চ্যাপলিনের হাসিতে কেটে যায় । ভালো চিন্তা করুন , উন্নত মন মানসিকতার অধিকারী হন , পৃথিবীটা বদলে দিন . ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।