আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

অবিবাহিত লোককেও জন্মনিয়ন্ত্রণের স্থায়ী পদ্ধতি দেওয়া হয়েছে......কিশোরগঞ্জে পরিবার-পরিকল্পনা কার্যক্রম..!!

পৃথিবীর কাছে তুমি হয়তো কিছুই নও, কিন্তু কারও কাছে তুমিই তার পৃথিবী" অবিবাহিত তরুণকে জন্মনিয়ন্ত্রণের স্থায়ী পদ্ধতি! শফিক আদনান, কিশোরগঞ্জ কিশোরগঞ্জ জেলায় জোরেশোরে চলছে পরিবার-পরিকল্পনা কার্যক্রম। গত অর্থবছরে (২০১০-১১) সারা দেশে প্রথম হয়েছে এ জেলা। আর জেলার মধ্যে সেরা স্থানটি দখল করেছে করিমগঞ্জ উপজেলা। কিন্তু সম্প্রতি ঘটে যাওয়া একটি ঘটনা তাদের পুরো অর্জনকে বিতর্কের মধ্যে ফেলেছে। অভিযোগ উঠেছে, বেশি কাজ দেখাতে গিয়ে কর্মীরা নীতিনৈতিকতার ধার ধারছেন না।

যাদের জন্মনিয়ন্ত্রণের কোনো পদ্ধতিই গ্রহণ করার প্রয়োজন নেই, তাদেরকেও স্থায়ী পদ্ধতি গ্রহণ করাতে অপতৎপরতা চালানো হচ্ছে। এসব কাজে মাঠকর্মী ও তাঁর নিয়োগ করা দালালরা জড়িত। কমপক্ষে দুই সন্তানের জনক-জননী ও সক্ষম দম্পতিদের স্থায়ী পদ্ধতি দেওয়া হয়ে থাকে বলে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা জানান। জানা গেছে, গত ৫ অক্টোবর করিমগঞ্জের জাফরাবাদ ইউনিয়নের রাজকুন্তি গ্রামের মাঈনউদ্দিনের (৬০) অবিবাহিত ছেলে খায়রুল মিয়া (১৬) প্রতারণার শিকার হয়ে স্থায়ী জন্মনিয়ন্ত্রণ পদ্ধতি (এনএসভি অপারেশন) গ্রহণ করে। পরে সে নিজের বোকামি বুঝতে পারে।

তাকে জ্বরের ওষুধ ও টাকা পয়সার লোভ দেখিয়ে অস্ত্রোপচার কক্ষে নিয়ে যায় পাশের মাঝিরকোনা গ্রামের বাচ্চু মিয়া। পরিবার কল্যাণ সহকারী হেলেনা আক্তার বাকি কাজ করেন। এ ঘটনায় খায়রুলের রিকশাচালক বাবা মাঈনউদ্দিন ও মা দোলেনা খাতুন ঘটনার বিচার দাবি করেছেন। করিমগঞ্জ উপজেলা পরিবার পরিকল্পনা বিভাগের কয়েকজন মাঠকর্মী নাম প্রকাশ না করার শর্তে কালের কণ্ঠকে জানান, স্থায়ী পদ্ধতি গ্রহণকারীকে নগদ দুই হাজার টাকা, একটি করে শাড়ি বা লুঙ্গি এবং ওষুধপত্র দেওয়া হয়। যারা তাদের নিয়ে আসেন, সবাই বিভিন্ন অঙ্কের টাকা পান।

সব মিলিয়ে একজনের পেছনে খরচ হয় তিন হাজার ২০০ টাকা। অস্ত্রোপচার হলেই সবার পকেটে নির্দিষ্ট পরিমাণে টাকা যাচ্ছে, সবাই লাভবান হচ্ছে। তাই যারা অস্ত্রোপচার করাতে আসে, তাদের বিষয়ে খোঁজখবর নেওয়া হয় না। আর এ সুযোগটাই নিচ্ছে প্রতারকচক্র। মাঠকর্মীদের পক্ষ থেকে অভিযোগ করা হয়েছে, স্থায়ী পদ্ধতি গ্রহণে পরিবার পরিকল্পনা বিভাগের লোকজনকে লক্ষ্যমাত্রা কঠোরভাবে বেঁধে দেওয়া হচ্ছে।

এ ছাড়া আছে 'পুরস্কারের মুলো', 'তিরস্কারের ভয়'। তাই কর্মীরা যেভাবেই পারেন লক্ষ্যমাত্রা পূরণে তৎপর থাকেন। এসব করতে গিয়ে অনেকে ভুল করেন, কেউ বা অনৈতিকতায় জড়িয়ে পড়েন। উপজেলার জাফরাবাদ ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য সাইদুর রহমান জানান, তাঁর কাছে এ ধরনের আরো কিছু অভিযোগ আছে। মানুষের জীবন নিয়ে এভাবে প্রতিযোগিতা করা উচিত নয়।

যাদের স্থায়ী পদ্ধতি দরকার কেবল তাদের কাছেই যাওয়া উচিত কর্মীদের। তারা অস্বাভাবিক দ্রুতগতিতে দায়িত্ব পালন করতে চাইছেন। এভাবে তাড়াহুড়ো করে বেশি কাজ করতে গিয়ে ইউপি সদস্য বলেন, যদি গুণগত মান ঠিক থাকে তাহলে কাজ পরিমাণে একটু কম হলেও ভালো। একটি পরিসংখ্যান থেকে ইউপি সদস্য ও খায়রুলের বাবা-মায়ের অভিযোগের সত্যতা পাওয়া যায়। এ বছরের এপ্রিল থেকে জুন পর্যন্ত তিন মাসে জেলায় স্থায়ী পদ্ধতি করানোর লক্ষ্যমাত্রা ছিল দুই হাজার ৩৪ জন।

তারা লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে প্রায় এক হাজার বেশি লোককে স্থায়ী পদ্ধতি দিতে সক্ষম হয়েছে। করিমগঞ্জ উপজেলা পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা মো. সেলিম মিয়া ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে বলেন, যে ভুলটি হয়েছে সে ব্যাপারে তিনি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছেন। যে মাঠকর্মীর পরামর্শে খায়রুলকে অস্ত্রোপচার করানো হয়, তাঁর বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। আর দালাল ও প্রতারকচক্রের বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নেওয়া হবে। ক্ষতিগ্রস্ত খায়রুলকে আগের অবস্থায় নিয়ে যাওয়ার ব্যবস্থাও তার পরিবার চাইলে করে দেওয়া হবে।

তার জন্য আরেকটি অস্ত্রোপচার লাগবে। ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.