আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

ইনশাল্লাহ বলার শানে নযুল। জানা থাকলেও আবারো জানুন .....

ব্লগিং করে আনন্দ , সত্য সুন্দর শেয়ার করতে চাই একদিন এক লোক বাড়ি এসে তার বউকে বল্লো, বউ আজকে আর দুপুরে বাড়িতে খাব না। বউ বল্লো কেন ? সে উত্তর দিলো অমুক পাড়ার অমুক ভাই তার ছেলের মোছলমানি দিয়েছে। আজকে খানাপিনার আয়োজন করেছে। আমাকে যেতে বলেছে। আর ওখানে গেলে কি আর না খেয়ে আসতে দেবে? বউ তখন বল্লো, ও তা বেশ! তবে তোমার বলা উচিৎ ছিলো ইনশাল্লাহ আমি ঐ বাড়ি থেকে খেয়ে ফিরবো।

লোকটি বউয়ের কথায় একটু চটে গেলো। বল্লো দুপুরে খাব তার জন্য আবার ইনশাল্লাহ কি? যত্তো সব ... ইত্যাদি বলে সে বাড়ি থেকে বের হয়ে গেলো। গিয়ে দেখে ঐ লোকের বাড়িতে অনেক লোক। সবাই একসাথে খেতে বসতে পারছে না। উক্ত দাওয়াকারী ব্যাক্তি তাকে খাদেনদারীতে লাগালো।

এভাবে সেও খাদেনদারী করতে করতে বেলা গড়িয়ে সন্ধ্যা হয়ে গেলো। যখন সে খেতে বসলো, দেখা গেলো খাওয়ার মতো কিছুই আর অবশিষ্ট নেই। বেচারা ভগ্ন মনে বাড়ির পথ ধরলো। বাড়ি পৌছাতে বেশ রাত হয়ে গেলো। তার বউ এদিকে খুব চিন্তিত।

এখনো বাড়ি ফিরছে না কেন? হঠাৎ বাড়ির বাইরে দরজা ঠক ঠক এর আ্ওয়াজ শুনতে পেলো। বউ জিজ্ঞেস করলো কে? বাড়ির বাইরে থেকে উত্তর এলো ইনশাল্লাহ আমি তোমার স্বামী। দরজা খোলো। বউ তো অবাক! যে লোক দুপুরে ইনশাল্লাহ শুনে চটে গেলো, এই রাত্তিরে সে কিনা এই কথা বলছে। সে তার বউয়ের কাছে তার না খেয়ে থাকার কথা জানালো।

বউ তখন তাকে তাড়াতাড়ি খেতে দিলো। গল্পটা হয়তো আমরা সবাই কম বেশী জানি। এই গল্পের মাধ্যমে বোঝানো হয়েছে ভবিষ্যতের সব ধরণের হালাল কাজের নিয়্যতে ইনশাল্লাহ বলা। এটা নবিয়ে পাক হুজুরে আকরাম (সাঃ) এঁর সু্ন্নাত। কিন্তু কিভাবে এই সুন্নাত আমাদের মাঝে এলো।

আসুন জেনে নিই .....। ইমাম ইবনে জরীর তাবারী হযরত ইবনে-আব্বাসের রেওয়ায়েতে বর্ণনা করেনঃ যখন মক্কায় রসূলুল্লাহ্‌ (সাঃ) -এর নবুওয়তের চর্চা শুরু হয় এবং কোরাইশরা তাতে বিব্রত বোধ করতে থাকে, তখন তারা নযর ইবনে হারেস ও ওকবা ইবনে আবী মুয়ী'তকে মদীনার ইহুদী পন্ডিতদের কাছে প্রেরণ করে। রসূলুল্লাহ্‌ (সাঃ) সম্পর্কে তারা কি বলে, জানার জন্যে। ইহুদী পন্ডিতরা তাদেরকে বলে দেয় যে, তোমরা তাঁকে তিনটি প্রশ্ন করো। তিনি এসব প্রশ্নের সঠিক উত্তর দিলে বুঝে নেবে যে, তিনি আল্লাহ্‌র রসূল।

অন্যথায় বোঝবে, তিনি একজন বাগাড়ম্বরকারীরসূল নন। (১) তাঁকে ঐসব যুবকের অবস্থা জিজ্ঞাস কর, যারা প্রাচীনকালে শহর ছেড়ে চলে গিয়েছিল। তাদের ঘটনা কি? কেননা, এটা অত্যন্ত বিস্ময়কর ঘটনা। (২) তাঁকে সে ব্যক্তির অবস্থা জিজ্ঞেস কর, যে পৃথিবীর পূর্ব ও পশ্চিম এবং সারা বিশ্ব সফর করেছিল। তার ঘটনা কি? (৩) তাঁকে রূহু সম্পর্কে প্রশ্ন কর যে, এটা কি? উভয় কোরাইশী মক্কায় ফিরে এসে ভ্রাতৃসমাজকে বললঃ আমরা একটি চূড়ান্ত ফয়সালার পরিস্থিতি সৃষ্টি করে ফিরে এসেছি।

অতঃপর তারা তাদেরকে ইহুদী আলেমদের কাহিনী শুনিয়ে দিল। কোরাইশরা রসূলুল্লাহ্‌ (সাঃ) -এর কাছে এ প্রশ্নগুলো নিয়ে হাযির হল। তিনি শুনে বললেনঃ আগামীকাল উত্তর দেব। কিন্তু তিনি ইনশাআল্লাহ্‌ বলতে ভুলে গেলেন। কোরাইশরা ফিরে গেল।

রসূলুল্লাহ্‌ (সাঃ) ওহীর আলোকে জওয়াব দেবার জন্যে আল্লাহ্‌র তরফ থেকে ওহী আসার অপেহ্মায় রইলেন। কিন্তু ওয়াদা অনুয়াযী পর দিবস পর্যন্ত ওহী আগমন করল না; বরং পনের দিন এ অবস্থায় কেটে গেল। ইতিমধ্যে জিবরাঈলও এলেন না এবং কোন ওহীও নাযিল হল না। অবস্থাদৃষ্টে কোরাইশরা ঠাট্টা-বিদ্রূপ আরম্ভ করে দিল। এতে রসূলুল্লাহ্‌ (সাঃ) খুবই দুঃখিত ও চিন্তিত হলেন।

পনের দিন পর জিবরাঈল সূরা কাহফ নিয়ে অবতর করলেন। এতে ওহীর বিলম্বের কারণও বর্ণনা করে দেয়া হল যে, ভবিষ্যতে কোন কাজ করার ওয়াদা করা হলে ইনশাআল্লাহ্‌ বলা উচিত। { তাফসিরে মাআরেফুল কোরআন} ।

সোর্স: http://www.somewhereinblog.net     দেখা হয়েছে ১৯ বার

এর পর.....

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.