আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

ছেলেটার একটা ভাবনার ঝুলি ছিলো...........................

নতুনদিনের মিছিলে,একজন বেয়নেটধারী সৈনিক ছেলেটার একটা ভাবনার ঝুলি ছিলো। আজব সব কল্পনায় ভর্তি সেই ঝুলিটাকে কাঁধে চাপিয়ে সেই শৈশবে তার পরিভ্রমণ শুরু হয়েছিলো। আজো তা চলছেই। একটু আনন্দ, অতঃপর অনাবিল হাসি শৈশবে খেলার মাঠ ফেলে, ছেলেটা ঘুরে বেড়াতে বড় ভালোবাসতো। পিচঢালা পথ ধরে শুধু হাঁটা, আর নানারঙের মানুষের জীবনছবি তার নিত্যদিনের সঙ্গী।

সূর্য্যিমামা বাড়ি ফেরার আগে, বাড়ি ফিরতে হবে জানা ছিলো। তবু, কখনো সূর্য্যিমামাকে বাড়ি ফেরার দৌড়ে হারানো হয়নি। মনে প্রশ্নের আলাপন ছিলো। জবাব মেলেনি কখনো। শালিকের বাচ্চা কথা বলতে পারে! কি বিস্ময়! একটা শালিকের ছানা তার চাই চাই।

ছানাটাকে নামতা শেখানো হবে। লতিফ স্যারের ক্লাসে , ব্যাগে লুকিয়ে রাখলেই হবে। ১৩ এর ঘরের নামতাটা বড় যন্ত্রনার। স্যার লিখতে দিলে, পাখিটার কাছ থেকে শুনে শুনে, খাতায় তুলে নেবে। স্যারের কানটানা থেকে সেদিনের মত মুক্তি মিলবে।

স্কুল থেকে বাড়ি ফেরার কালে কিছু রাজা ফড়িং ধরে পকেটে লুকিয়ে আনা মায়ের সুতোর বান্ডিলে বেঁধে ঘুড়ি হবে। রাজা ফড়িং ধরা হয়নি কখনো। ওরা ধরা দেয়না। চলন্ত রিকশার মার্টগার্ড ছুঁয়ে দিতে পারলে বিশ্বজয়ের আনন্দ। তখন উপরের পাটির দুটো দাঁত যে উধাও হয়ে আছে, সেটা পরিস্কার বুঝা যেতো।

দলছুট ছেলেটার একা একা ঘুরেই আনন্দ। ড্রেনের উপর লাফিয়ে চলতে গিয়ে ড্রেনে পতন। অতঃপর বাসায় ফিরলে, মায়ের বকুনি আর সন্ধ্যার ঠান্ডা জলে অনিচ্ছাকৃত স্নান। হাঁটতে হাঁটতে ক্লান্ত হয়ে গেলে স্কুলের মাঠে শরীর পেতে দেয়া। আকাশের মেঘগুলোকে জোড়াতালি দিয়ে রুপকথার রাজ্য বানানো।

কৈশোরে ছেলেটার জীবনে প্রেম এসেছিলো ছেলেটার একাকী ভবঘুরে জীবনে কোথা হতে এক বালিকা এসেছিলো। বালিকাকে জিজ্ঞেস করা হয়নি, সে কি পাতালপুরের রাজকন্যা? নাকি মেঘরাজার কন্যে। তবু বালিকাকে দেখতে বড় ইচ্ছে হত। বিকেলে বালিকা তার বন্ধুদের সাথে কাঠবিড়ালী খেলতো। বৌচি খেলতো।

বালিকা কখনো জানলোনা। সে পড়ে গিয়ে ব্যাথায় কুঁকড়ে উঠলে, অচেনা এক বালকের খুব কান্না পেতো। বালিকাকে অনেকদিন দেখা যায়না, বিকেলে খেলার সাথীদের সাথে । ছেলেটা তবু যেতো। প্রতিদিন।

লজ্জায়, কাউকে জিজ্ঞেস করা হয়নি বালিকার কথা। তবু বালিকা, আজ অনেকবছর পরে এসেও ছেলেটা তোমাকে ভোলেনি। যৌবনের সবকিছু যেনো বড় এলোমেলো যৌবনের পাওয়া- না পাওয়ার গল্প যেনো ফুরাতেই চায়না। সবুজ মাঠ আর খোলা বারান্দা ফেলে ছেলেটার নাও মেট্রোপলিটন এক শহরে এসে ভেড়ে। সারারাত ধরে পথে পথে হাঁটা আর দিনের পুরোটাই ঘুমিয়ে কাটিয়ে দেয়া।

রাতপ্রহরীর বাঁধা, "কোথায় চলেছ হে? ঘরে ফিরে যাও। এ শহর নিরাপদ নিরাপদ নয়। " ছেলেটা, তবু থেমে যায়না। সে হেঁটে চলে। প্রতিরাতে।

রাতপ্রহরীরা চিনে নেয়, ছেলেটা পাগলাটে। ছেলেটার কাঁধে ভাবনার ঝুলি।  ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.