আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

পুলিশের বুট - বাংলাদেশী পুলিশের বুট

উইকিপিডিয়ায় দেয়া তথ্য অনুযায়ী বাংলাদেশের পুলিশ বাহিনীকে যে সব অস্ত্রশস্ত্র দেয়া হইসে, তার লিষ্টি এইরকম । ১) ৯ মি.মি. পিস্তল ২) এল.এম.জি. (লাইট মেশিনগান) ৩) এম.এম.জি. (মিডিয়াম মেশিন গান) ৪) ৩.৮ স্মিথ এন্ড ওয়েসন ৫) শট গান (১২ বোর) ৬) ৭.৬২ মি.মি. চাইনিজ রাইফেল ৭) ৭.৬২ x ৫১ জি-৩ রাইফেল ৮) একে-৪৭ ৯) টিয়ার শেল (গ্যাস গান) ১০) ৭.৬২ সাব মেশিন গান ১১) হ্যাঙ্গ্রেনেড ১২ ) ব্রাস নাকল্স (হাত দিয়া ফাইটিং করার মেটাল রিং টাইপ) এইগুলোকে আর্মড পুলিশের অস্ত্রশস্ত্র বা হাতিয়ার (উইপন) বলা হইসে। পুলিশের আরেকটা ক্যাটাগরী আছে যারা আনআর্মড নামে পরিচিত। তাদের একমাত্র হাতিয়ার হলো লাঠি ("Lathi" - stick) উইকির তথ্যকে বিশ্বাস করলে আমরা এই ডিশিসনে আসতে পারি যে বুট নামের বস্তুটি পুলিশের কোন হাতিয়ার নয়। এটা নিতান্তই পুলিশ ইউনিফর্মের একটা অংশ।

লক্ষ্য করুন, ঘুষাঘুষিতে সুবিধা করার জন্য ব্রাস-নাকলস (কেউ বাংলা অনুবাদ বলে দিলে কৃতার্থ হই) নামের ধাতব রিংগুলো কিন্তু পুলিশকে হাতে পড়ার জন্য দেয়া হচ্ছে। চাইলে বুটকে একই উদ্দ্যেশ্যে হাতিয়ারে পরিনত করা যাইতো আইনানুগভাবে । সেক্ষেত্র পুলিশ ভাইয়েরা বুটের মাথায় ছুড়ি চাকু ব্লেড ও লাগাতে পারবেন। কিন্তু জিনিসটা কোথাও তাদের উইপন তালিকায় নাই এখনতক। এতগুলি অস্ত্রশস্ত্র থাকতে বাংলাদেশের পুলিশগন বুটের ব্যবহারে এত উৎসাহী কেন ? এটা কি আপনাদের উদ্যত অহঙ্কার থেকে নাকি স্রেফ লাইমলাইটে আসার প্রচেষ্টা ? আপনি যাকে আপনার বুটের তলায় পিষতে চাইছেন সেটা একটা প্রানসম্পন্ন মানবিক মানুষ।

হতে পারে সেই মানুষটা মারাত্মক কোন অপরাধী । আপনার গাড়ি পুড়িয়ে ফেলেছে কিংবা আপনার মাথায় ঢিল ছুড়েছে। কিন্তু এই অপরাধীর গায়ে একটা মানুষের পা কোনভাবে লেগে গেলেও আপনি খেয়াল করলে দেখবেন গায়ে আঙ্গুল ছুইয়ে বুকে চোখে ছোয়াচ্ছে অন্য মানুষটা । এটা মানুষ নামের প্রাণীর বৈশিষ্ট্য। স্বাভাবিক সম্মানবোধ।

আপনি "আইনশৃঙ্খলা" বাহিনীর সদস্য। আপনাকে "শৃঙ্খলা" শেখানো হয়েছে । "আইন" শেখানো হয়েছে। অপরাধীকে এই দুইটার একটাও শেখানো হয়নি। সে আইন এবং শৃঙ্খলা ভঙ্গ করবে, আপনি পুলিশ, আইন ও শৃঙ্খলা (লক্ষ্য করুন, দুটো ভিন্নভিন্ন টার্ম) রক্ষা করবেন।

কিন্তু এসব্ আপনারা কি করছেন ? বুটের তলায় মানুষ ফেলে দুহাত উচিয়ে উল্লাস করার এই পৈশাচিকতার শৃঙ্খলা আপনাদেরকে কে শিখিয়েছে? এই বিভৎস দৃশ্য দেখতে দেখতে আমরা ভীত সন্ত্রস্ত হয়ে পড়ছি। বন্ধ করুন এই অমানবিকতা । মানুষেরে পায়ের তলায় ফেলার চেয়ে পাকিস্তানি স্টাইলে গুলি করে মেরে ফেলুন । তবু এই কদর্য নোংরামী বন্ধ করুন। আপনাকে লাঠি দেয়া হয়েছে, পেটান।

আপনাকে টিয়ার সেল দেয়া হয়েছে, ব্যবহার করুন সেটা। আপনাকে রাবারবুলেট দেয়া হয়েছে-আপনাকে শটগান দেয়া হয়েছে - জলকামান দেয়া হয়েছে । মানুষকে শারিরীক আঘাত করার অনেক এখতিয়ার আপনাকে দেয়া হয়েছে । কিন্তু পায়ের তলায় পিষবার অধিকার কারো নেই। মানুষেরে অপমান করার অধিকার কোন মানুষের নেই।

যতবড় অপরাধী হোক, বুটের তলায় পড়ে থাকতে পারবেনা কোন মানুষ। পুলিশ হয়ে হাতে অস্ত্র পেয়েছেন বলে নিজেকে রাজা মহারাজা ভাবার থার্ডক্লাশ অহঙ্কার থেকে নিজেকে সরান। যত দ্রুত সম্ভব। নির্বোধ শ্রেষ্ঠত্ববোধ আপনার করুন পরিনতি ডেকে আনবে। আপনি একজন চাকুরীজীবি - শ্রেফ চাকুরীজীবি- আপনাকে কাজের বিনিময়ে বেতনের টাকা দেয়া হয়।

টাকাটা যারা দেয় - সেই জনমানুষকে আপনারা আপনাদের শত্রু শ্রেণীতে পরিনত করছেন। জীবিকায় টান পড়ার উপলক্ষ্য যেকোন সময় তৈরী হয়ে যাবে। সাবধান! ক্ষমতা যে জনতার হাতে সেটা কিন্তু সত্য। নির্বোধের চোখে পড়তে সময় লাগে একটু। পাইপাই হিসেব বুঝিয়ে দিতে পারে নির্যাতীত মানুষরা - আরো সহজ কথায় আপনাকে প্রতিপালনকারী দেশের সাধারণ জনগন!  ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.