আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

পুলিশের কা-



বাংলাদেশ ছাড়া বিশ্বে এমন একটি দেশ আর আছে কিনা যে দেশে শিক্ষক পেটানো এত সহজ! একজন পুলিশের সার্জেন্ট যাকে তাকে ধরে যেমন তেমন করে যখন তখন অপমান অপদস্থ করবে! একজন শিক্ষককে হাত বেঁধে রাস্তায় বসিয়ে রাখবে। থানায় নিয়ে ঝুলিয়ে পেটাবে। স্বাধীন (?) বাংলাদেশেই এমনটা ঘটতে পারে। আজকের (৩১ আগস্ট ২০১৩) ইত্তেফাক পত্রিকায় এমনি একটি রিপোর্ট ছাপানো হয়েছে। ঘটনাটি ঘটেছে তিলোত্তমা নগরী ঢাকার সবচেয়ে অভিজাত বলে কথিত উত্তরায় এলাকায়।

শিক্ষকের অপরাধ তিনি মোটর সাইকেল চালানোর সময়ে প্রয়োজনীয় কাগজ-পত্র সাথে রাখেন নি। এই অপরাধে স্কুলে যাওয়ার সময় একজন সার্জেন্ট একজন শিক্ষককে হ্যন্ডকাপ পরিয়ে রাস্তায় বসিয়ে রাখেন। লাথি মারেন। থানায় নিয়ে দড়ি দিয়ে ঝুলিয়ে হাত পা বেঁধে নির্দয় প্রহার করেন। শুধু তাই নয়।

তাঁর মানিব্যগ থেকে টাকা চুরি করেন। আরো চাঁদা দাবি করেন। এবং সাদা কাগজে স্বাক্ষর রেখে দেন। যাতে করে তিনি আর বাড়াবাড়ি না করেন। বাড়াবাড়ি করলে যেকোন মামলায় ফাসিয়ে দেওয়া হবে।

পুলিশ এখন কতটা ভয়াবহ হয়ে উঠেছে এটা তার সর্বশেষ নমুনা। একজন শিক্ষকের সাথে এ ঘটনা ঘটেছে দিনে-দুপুরে রাজধানী ঢাকায়। দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলে হর-হামেশা কত ঘটনা ঘটে তার কোন হিসাব নেই। গাড়ী চালানোর সময়ে প্রয়োজনীয় কাগজপত্র সাথে রাখা অবশ্যই উচিত। এর ব্যত্যয় ঘটালো শাস্তি হতে পারে।

শাস্তি হওয়া উচিতও। কিন্তু কী শাস্তি? সেই শাস্তি কি হাত-পা বেঁধে রাস্তায় বসিয়ে রাখা? কিংবা থানায় নিয়ে ঝুলিয়ে পেটানো? মানিব্যগ থেকে টাকা চুরি করা? চাঁদা দাবি করা? মামলায় ফাসিয়ে দেওয়ার ভয় দেখানো? বৃদ্ধ বাবাকে থানায় এনে অপমান করা? বাংলাদেশের মানুষের ট্যাক্সেও টাকায় যে পুলিশের রুটি-রুজি চলে সেই পুলিশ দেশের সম্মানিত শিক্ষককে এভাবে হেনস্তা করবে তা কোনভাবেই মেনে নেওয়া যায় না। শিক্ষক কেন, যেকোন নাগরিক কোন অপরাধ করলে তার শাস্তি হওয়া উচিত। সেই শাস্তির একটা প্রক্রিয়া আছে। পুলিশকে অবশ্যই সেই প্রক্রিয়া অনুসরণ করতে হবে।

প্রয়োজনীয় কাগজপত্র না পুলিশ তার মোটর সাইকেল জব্দ করতে পারত, তার বিরুদ্ধে মামলা করতে পারত। কিন্তু তাঁকে নির্দয় প্রহার করে আইনের রক্ষক হয়ে পুলিশ নিজেই আইন ভঙ্গ করেছে। এই ঘটনা নিন্দনীয়। আমি এর নিন্দা জানাই। আমি এর প্রতিবাদ করি।

রাষ্ট্রের নাগরিকের টাকায় পুলিশের বেতন হয়, পুলিশের রুটি-রুজি হয়। যে বুট দিয়ে পুলিশ লাথি মারে সেই বুট জুতা কেনা হয় এদেশের মানুষের টাকায়। পুলিশকে রাষ্ট্রের আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতির উন্নয়নের জন্য, মানুষের সেবার জন্য নিয়োগ দেওয়া হয়। পুলিশ মানুষের বন্ধু হবে এমনটাই কাম্য। কিছু সংখ্যক অপদার্থ, লোভী, দুর্নীতিবাজ, অমানুষ পুলিশের কারণে সমগ্র পুলিশ বাহিনীর উপর মানুষের আস্থা চলে যাচ্ছে।

পুলিশ মানুষের বন্ধু না হয়ে শত্রুতে পরিণত হতে শুরু করেছে। এই ধরনের ঘটনার সুষ্টু তদন্ত এবং যথাযথ শাস্তি না হলে এমনটা আরো ঘটবে। পুলিশ আরো বেপরোয় হয়ে উঠবে। পুলিশ বাহিনীর উপর মানুষের আস্থা সম্পূর্ণই চলে যাবে। তাই এই ঘটনার যত দ্রুত তদন্ত হয়, দোষী পুলিশের শাস্তি হয় ততই পুলিশের জন্য মঙ্গল।


অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.