আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

পৃথিবী, তুমি আমায় দিও একটুকু ভালবাসা। মৃত্যুর অনুভূতি ।

প্রদীপ হালদার,জাতিস্মর। পৃথিবী, তুমি আমায় দিও একটুকু ভালবাসা। হে পৃথিবী, তুমি আমায় দিও একটুকু ভালবাসা। ঠাঁই দিও আমাকে তোমার বুকে। তোমার বুকে কত না দাপাদাপি করেছি, কত না জল কাদা মেখে খেলা করেছি।

তোমার বুকে বেড়ে ওঠা গাছে কতবার না উঠে খেলা করেছি,কতবার না খেয়েছি কত রকমের ফল। তোমাকে ভালবেসে জীবনের শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করতে চাই। তুমি ছাড়া আমার আপন কে আছে বলো ? আমি বার বার তোমার কাছে ফিরে আসতে চাই। তোমার অপরূপ রূপে আমি মুগ্ধ। মানুষকে ভালবাসলে দুঃখ আছে, তেমনি আনন্দ আছে।

তোমাকে ভালবাসলেও দুঃখ আছে। যখন তুমি খরা হয়ে দেখা দাও, তখন কি তুমি মানুষের কষ্ট বোঝ না ? আবার যখন বন্যা হয়ে মানুষের ক্ষয় ক্ষতি করো , তোমার কি ব্যথা লাগে না ? তুমি এসব করে আনন্দ পাও ? তুমি ছিটেফোঁটা ভালবাসা দিও আমায়। মৃত্যুর অনুভূতি । মৃত্যু প্রত্যেকের জীবনে আসবে । মৃত্যুকে আমরা প্রত্যেকে ভয় করি ।

আসলে আমরা কেউ জানি না মৃত্যু কেমন ? মৃত্যুর অনুভূতি আমাদের জানা থাকলে , আমাদের মধ্যে আর কোন ভয় কাজ করবে না। আমরা সবাই চেষ্টা করে চলেছি অজানাকে জানতে । আর এই জানার শেষ নেই । একদিন মানুষের লেখাপড়া ছিল না । আজ সেই মানুষ অনেকদূর এগিয়ে চলেছে।

আমরা ঘুমটাকে ধরতে পারি না । স্বপ্ন যখন দেখি , তখন বুঝতেই পারি না যে , স্বপ্ন দেখছি। স্বপ্নের বাস্তবরূপ -ভূত। মৃত্যু কষ্টদায়ক নয় , যন্ত্রণাদায়ক নয়। আমি ছিলাম রমেশ সাহা ।

তিন বছর বয়স আমার । অগ্রহায়ণমাসের সকালবেলা । মা আমাকে পুকুরঘাটে রেখে চলে যায় । শান বাঁধানো ঘাট । সকাল নয়টা ।

আমি একাকী সিঁড়ি বেয়ে জলের দিকে নামতে থাকি । শানের ঘাট শেওলার পিচ্ছিলে ভরা । আমি সেই পিচ্ছিলে পা রেখে নীচু হয়ে বাঁ হাত দিয়ে জল স্পর্শ করি । সঙ্গে সঙ্গে স্লিপ করে জলে পড়ে যাই। দুই হাত , দুই পা নাড়াতে থাকি , আর মা মা বলে চীৎকার করতে থাকি।

মুখের মধ্যে জল ঢুকে গেলো । গলার কাছে একটা কট করে আওয়াজ হলো। আমার বাঁ হাতটার দিকে চেয়েছিলাম। হঠাৎ করে দেখলাম , বাঁ হাতটা নিস্তেজ হয়ে গেছে , আর নাড়াতে পারছি না । সঙ্গে সঙ্গে আমার দুটি চোখ বন্ধ হয়ে গেলো ।

শক্তিশালী কিন্তু স্পঞ্জের মতোন নরম কি একটা জিনিস আমার মুখের মধ্যে হাজির হলো । আমি ভাবলাম -আমার মুখতো বন্ধ , ওটা বের হবে কি করে ? ওটা আমার মুখটাকে ফাঁক করে বের হয়ে গেলো। তারপর সঙ্গে সঙ্গে আমি দুটো চোখ থেকে বের হয়ে এক বিন্দুতে মিলিত হয়ে তীব্র গতিতে ছুটতে লাগলাম । তারপর হঠাৎ থেমে গিয়ে আমি দুটি চোখ মেললাম । দেখি আমার দুটি হাত তৈরী হচ্ছে , আমার দুটি পা তৈরী হয়ে গেলো ।

আমি আছি জল থেকে অনেক ওপরে । আমি ভূত হয়ে গেলাম। আমার শ্বাস-প্রশ্বাস ছিল না , ক্ষুধা-তৃষ্ণা ছিল না , কেবল দেখতে পেতাম, শুনতে পেতাম , ঘুম ছিল , স্বপ্ন ছিল না । আমি থাকতাম গাছের ওপর। আমার শরীরের রে দেখতে পেতাম ।

বৃষ্টির জল আমার শরীর ভেদ করলেও আমার আকার একই ছিল। আমার শীত বা গরম লাগতো না। আমি ভূত ছিলাম। আজ জাতিস্মর। মৃত্যু সুন্দর।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.