আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

অসুর দেবতার রূপ ধরে এসেছিল!

আমার কথা সিরিয়াসলি নিয়া বাঁশ খাইলে নিজ দায়িত্বে বাঁশ খাইয়েন ঘুম থেকে উঠে মেইল চেক করা অভ্যেসে পরিণত হয়ে গিয়েছে। বিদেশের বাড়িতে আত্মীয় স্বজনের সাথে যোগাযোগের মাধ্যম বলতে তো এই মেইলটাই। শীলা বাংলাদেশ থেকে মেইল করেছে। শীলা আমার ভার্সিটির সব থেকে ভাল বন্ধু ছিল। সব সময় কেমন একটা শিশুসুলভ ভাব নিয়ে থাকত।

ভার্সিটির মাঝ পথেই এক ডাক্তারের সাথে বিয়ে হয়ে গেল। বিয়ের আগে বেশ কান্নাকাটি করেছিল বিয়ে না করার জন্য। কিন্তু বিয়ে হয়ে যেতেই স্বামী বলতে অজ্ঞান হয়ে গেল। প্রায় এক যুগ আগে কানাডায় সেটেল্ড হলেও শীলার সাথে যোগাযোগটা এক মুহূর্তের জন্য বন্ধ হয়নি। শীলার মেইলটা ওপেন করলাম।

ও লিখেছে, সেই দেবদূতরূপী শয়তানটার সাথে আবার দেখা হল। বিস্তারিত জানতে হলে কল করিস। লং-ডিস্টেন্স কল করে টাকা খসাতে পারব না। শীলাটা বরাবরই এমন। কোনো কথাই রেখে ঢেকে বলেনা।

কিন্তু কথার ভিতর একটা রহস্য রেখে দেয়। কার সাথে দেখা হয়েছে কে জানে? ছেলেটাকে স্কুলে ড্রাইভ করে শীলাকে কল করলাম। -হ্যালো শীলা,কেমন আছিস? -খুবই ভালো আছিরে। শয়তানটার সাথে দেখা হয়ে যাওয়াতে আর শয়তানটার করুন দশা দেখে আরো বেশী ভালো আছি। -আচ্ছা শীলা,তোর বয়স তো কম হলনা।

এই ছ্যাড়াব্যাড়া করে কথা বলার অভ্যাসটা ছাড়তে পারিস না? -আহা,রেগে যাচ্ছিস কেন?আগে তো তোর রাগ নামক ব্যাপারটাই ছিল না। শীলার কথা শুনে আমি হেসে ফেললাম। -আচ্ছা বাবা,কি হয়েছে সেটা বল। -আমার বরের কাছে একজন ক্যান্সারের পেসেন্ট এসেছিলেন। -তোর বরের কাছে ক্যান্সারের পেসেন্ট আসবে না তো কি ডায়ারিয়ার পেসেন্ট আসবে?তোর বরের কাজই তো ক্যান্সার নিয়ে।

-তা বটে। তবে পেসেন্টের নামটা শুনলে চমকে যেতে পারিস। নামটা শুনবি? -কে?নাম কি? -বিশ্বজিৎ সাহার কথা মনে আছে? বিশ্বজিৎ নামটা শুনে আমার মেরুদন্ড বেয়ে একটা শীতল বাতাস চলে গেল। এই মানুষটা তো আমার সহজ জীবনের একটা ভয়াবহ বিভীষিকার নাম। কি ভীষন ভাবে আমি প্রতারিত হয়েছিলাম!এই মানুষটার কারনেই আস্থা-বিশ্বাস আর ভালবাসা নামক শব্দগুলোর উপর থেকে আমার ঘৃণা ধরে গিয়েছিল।

শীলার মুখে বিশ্বজিৎ নামটা শুনে আমি এক দৌড়ে ষোল বছর আগের সেই ভার্সিটির প্রথম দিনগুলোতে ফিরে গেলাম। কত সরল ছিলাম। অন্য সব মেয়েদের মত চটজলদি সবার সাথে মিলে যেতে পারতাম না। ছেলেদের দিকে তাকিয়ে কথা বলতে পারতাম না। সবসময় জড়সড় হয়ে থাকতাম।

ঐ সময় শীলার সাথে পরিচয়। ওর কল্যানেই সবার সাথে একটু একটু করে খাতির জমছিল।   বলতে বাধা নেই,আমি বরাবরই সুন্দরী ছিলাম। সাজগোজের ধার কাছ দিয়েও কখনও যেতাম না। তবু বুঝতাম আশে-পাশের কিছু চোখ আমার দিকে মুগ্ধ দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে।

শীলা ব্যাপারগুলো নিয়ে মজা লুটতো। কিন্তু আমার কাছে ব্যাপারগুলো খুব বিরিক্তিকর লাগত। শীলা প্রেম সংক্রান্ত কোনো কথা আমার কাছে বলতে আসলেই মুখ ভার করে বলতাম, “আমি জীবনেও বিয়ে করব না,প্রেম তো অনেক দূরের কথা”। আমার কথা শুনে শীলা বলত, “যারা এসব বলে,তারাই সবার আগে ওসব করে”। শীলার কথাই ঠিক ছিল।

আমি প্রেমে পড়েছিলাম। এবং একটা ভুল মানুষের প্রেমে পড়েছিলাম। আর সে হল এই বিশ্বজিৎ সাহা। আমার চেয়ে এক বছরের সিনিওর। ভার্সিটর ছয় মাস পার হতে না হতেই মানুষটা আমার পিছু নিল।

আমি বরাবরের মতই তার প্রস্তাব প্রত্যাখান করলাম। কিন্তু তাতে এই লোকটাকে তাড়ানো গেল না। সারাটা দিন আমার মোবাইলে একের পর এক ম্যাসেজ পাঠেতে লাগল। ম্যাসেজগুলোর ভাষা ছিল ভালোবাসায় ভরপুর। রাতের বেলা একটু পর পর ফোন দিয়ে সেকি কান্না-কাটি!একটা সময় সে আত্মহত্যার হুমকি দিল।

বলল,আমি যদি পরের দিন তার সাথে ভার্সিটিতে দেখা না করি তাহলে সে আত্মহত্যা করবে। আমি তার কথায় ভয় পেয়ে গেলাম। পরদিন ভার্সিটিতে তার সাথে দেখা করলাম। সে আমার সাথে সেদিন তেমন কোনো কথা বলল না। কেবল একটা খাম হাতে দিয়ে বলল,আমি যেন বাসায় গিয়ে ওটা পড়ি।

বাসায় ফিরে খাম থেকে চিঠিটা বের করে পড়লাম। রক্ত দিয়ে বিশাল একটা A লিখেছে। তার উপর অনেক কথা লিখে দিয়েছে। সব কথাই হল,আমাকে সে কতটা ভালবাসে এবং আমাকে না পেলে সে কি কি করবে এই স্নংক্রান্ত!আমি বারবার চিঠিটা পড়লাম। আমার জন্য কেউ নিজের রক্ত দিয়ে চিঠি লিখেছে-এটা ভাবতেই আমার খুব অদ্ভুত একটা অনুভূতি জন্ম নিল।

হ্যা,এটা সত্য যে আমার জন্য অনেকে ছুটেছে। কিন্তু তাদের কেউ তো কখনও এমন করে চিঠি লেখেনি!যে মানুষটা নিজের জীবনের বিনিময়ে আমাকে চাইছে তাকে আমি ফিরিয়ে দেব নাকি দেব না-সেটা নিয়ে আমি চরম দোনোমনায় পড়ে গেলাম। তার উপর প্রতি রাতে লোকটা ফোন দিয়ে এত কাদত যে আমার মনে হত,এর চেয়ে বেশী ভাল আর কেউ আমাকে বাসতে পারবে না। তবু আমি আগাতে পারছিলাম না। এর কিছুদিন একদিন শুনলাম বিশ্বজিৎ হাসপাতালে।

কেন হাসপাতালে গিয়েছে জানতে চাইলে সে প্রথমে কিছু বলল না। পরে জোরাজুরির পর বলল-ওর নাকি লিভার সিরোসিস হয়েছ। আর মাত্র পাচ বছর বাচবে। কথাটা শোনার পর মনে হল,আমার সারা পৃথিবীটা যেন চার দিক থেকে চেপে এসেছে। এই প্রথম অনুভব করলাম,আমি মানুষটার প্রতি দূর্বল হয়ে গিয়েছি।

মনে হল,হয়তো মানুষটা পাচ বছর বাচবে কিন্তু এই পাচ বছরে আমাকে তার প্রয়োজন আছে। এক রাতে বিশ্বকে ফোন দিলাম। -হ্যালো বিশ্ব,আমি আনুশকা। -নাম বলতে হবে না আনুশকা। তোমার ব্যাপারে আমার খানিকটা টেলিপ্যাথি কাজ করে।

-কিরকম? -আমার কেন যেন মন বলছিল,তুমি আজ আমাকে ফোন দেবে। -চাপা মারছ কেন? -চাপা মারছিনা আনুশকা। ধরো,আমি ফ্যাকাল্টির সামনে দাঁড়িয়ে আছি,কিন্তু তোমাকে তখনো দেখিনি। তারপরও তুমি যদি আমার আশে পাশে থাকো,তাহলে আমি তোমার অস্তিত্ব অনুভব করি। -কিভাবে? -কখনো বৃষ্টি ভেজা ঘাসের ঘ্রান পেয়েছো? -নাহ।

-না পাওয়ারই কথা। তুমি তো আগাগোড়াই শহরে মানুষ হয়েছো। যা হোক,তুমি যখনই আমার আশে পাশে থেকো,আমি কেন যেন ভেজা ঘাসের ঘ্রান পাই। তুমি তো ভেজা ঘাসের মত স্নিগ্ধ-হয়তো এই কারণেই আমার এমন লাগে। মানুষটার এক কথা শুনে আমার চোখে পানি এসে গেল।

একটা মানুষ কিভাবে এতটা ভালোবাসতে পারে? তারপরের দিনগুলো ছিল,জীবনের সবচেয়ে সুখের সময়। এতটা সুখ আমার জীবনে আসবে তা কোনোদিন ভাবিনি। তারচেয়েও বড় কথা,আমি কাউকে ভালবেসে ফেলব তা ছিল আমার কল্পনার অতীত। আমার স্বপ্নে-বাস্তবতায় আমি বিশ্বজিতের অস্তিত্ব অনুভব করতে শুরু করেছি। কিন্তু সমস্যা দেখা দিল অন্য জায়গায়।

বিশ্ব আমাকে বারবার জিজ্ঞাসা করত-আমি তাকে কেবল আবেগের বশে ভালবাসছি,নাকি ভেবে-চিন্তেই সিদ্ধান্ত নিয়েছি? কথাটা জিজ্ঞাসা করার কারণ যে কেবল বিশ্বজিতের অসুখ ছিল তা না। ওর পরিবারের আর্থিক অবস্থাও অনেক খারাপ ছিল। ওর বাবার কিডনি ড্যামেজ ছিল। অন্যদিকে আমাদের পরিবার যথেষ্ট অবস্থা সম্পন্ন ছিল। দুই পরিবারের পার্থক্যকে “আকাশ-পাতাল তফাৎ” বললে ভুল হবে না।

একারণেই বিশ্ব আমাকে এসব বলত। কিন্তু আমি আমার সিদ্ধান্তে অটল ছিলাম। দিনগুলো এত ভাল কাটছিল!প্রতি সকালে এক সাথে বাসে করে ভার্সিটিতে যেতাম। কোনো কোনো দিন ও আমার জন্য অনেক চকলেট নিয়ে আসত। আমি এসবে বেশ রাগ করতাম।

ওর কাছে বেশীর ভাগ সময় টাকা থাকত না। অনেক সময় না খেয়ে আমার জন্য এটা-ওটা কিনে নিয়ে আসত। ওর এত কষ্ট দেখে এত মায়া লাগত!মাঝে মাঝে ওকে টাকা দিয়ে সাহায্য করতাম। কিছুদিন পর আমি ওকে একটা টিউশনি জোগার করে দিলাম। বেশ ভাল পরিমান টাকা পেত।

ওর জন্য এসব করতাম বলে ও আমাকে প্রায়ই বলত, “আনুশকা,তুমি আসলে দেবী। আমার সাত জন্মের ভাগ্য যে ভগবান,আমাকে একজন দেবী উপহার দিয়েছেন। ভগবানের দোহাই,তোমার মনে কষ্ট দিলে ভগবান যেন আমার জীবন ধবংস করে দেন”। বিশ্বজিতের কথায় সম্মোহনী শক্তি আছে। ওর কোনো কথাই আমি অবিশ্বাস করতে পারিনা।

ও যখন আমাকে দেবী বলল-তখন মনে হল,আমি হয়তো সত্যিই দেবী। আমার এই বোকামী দেখে হয়তো ঈশ্বরও হেসেছিলেন। হয়তো ঈশ্বর সেদিন বলেছিলেন, “দেবী হওয়া কি এত সহজ?দেবী হতে হলে যে চরম মূল্য দিতে হয়”। হ্যা,আমাকে চরম মূল্য দিতে হয়েছিল। আমি যখন,ভালোবাসায় ডানায় ভর করে আদিগন্ত উড়ে বেড়াচ্ছিলাম,তখন আমাকে যিনি দেবীর আসনে অধিষ্ঠিত করেছিলেন,তিনিই পা ধরে টেনে মাটিতে নামিয়ে দিলেন।

প্রতিরাতের মত সেদিনও বিশ্বকে ফোন দিলাম। দেখলাম,বিজি দেখাচ্ছে। সেদিন সারারাত ওর ফোন বিজি পেলাম। পরদিন ভার্সিটিতে ওকে খুজে পেলাম না। ফোন দিয়ে দেখলাম ফোন বন্ধ।

দুপুরের দিকে ও নিজেই ফোন দিল। ফোন দিয়ে জানালো-ও কাল সারা রাত ওর ছাত্রীর সাথে কথা বলেছে। ওই মেয়ে নাকি ওর প্রেমে পড়ে গিয়েছে। সে নাকি বিশ্বকে না পেলে আত্মহত্যা করবে বলে হুমকি দিয়েছে। বিশ্বর প্রতি তখনও আমার অগাধ বিশ্বাস।

একবারও মনে হল না যে তাতে সারা রাত কথা বলার দরকারটা কি? সেদিনের পর থেকে প্রায়ই বিশ্বর ফোন বিজি পাই। কিছু জিজ্ঞাসা করলেই বলে-ও নাকি মেয়েটাকে বোঝানোর চেষ্টা করছে। ও যে মেয়েটাকে কি বোঝানোর চেষ্টা করত কে জানে? একদিন রাগ করে বললাম, “ঐ মেয়ের সাথে সারারাত এত কিসের কথা। হয় ঐ মেয়ে থাকুক,অথবা আমি থাকব। তুমি কোনটা চাও?” বিশ্ব আমাকে অবাক করে দিয়ে জবাব দিল, “তুমি চলে যাও”! আমি প্রথমে আমার দুই কানকে বিশ্বাস করতে পারছিলাম না।

এই কি আমার সেই বিশ্ব যে নিজের জীবনের বিনিময়ে আমাকে চেয়েছিল? এরপর আমি এক অদ্ভুত কাজ করলাম যা আমার চরিত্রের সাথে যায় না। আমি বিশ্বর ছাত্রীর কাছে ফোন করে ব্যাপারটা জানালাম। ওই মেয়ে আমাকে যা বলল তাতে আমার মাটির সাথে মিশে যেতে ইচ্ছে হল। ঐ মেয়েকে নাকি বিশ্বই ভালবাসার প্রস্তাব দিয়েছে। মেয়েও রাজী হয়ে গিয়েছে।

আর আমার ব্যাপারে বিশ্ব ঐ মেয়েকে বলেছে,আমিই নাকি বিশ্বকে ভালবাসার জন্য চাপ দেই। সেদিনের পর থেকে আমি বিশ্বর সাথে যোগাযোগ বন্ধ করে দিলাম। আমার ভিতরে কি চলছিল তা কাউকে বুঝতে দিলাম না। তার সপ্তাহ খানেক পর বিশ্ব ফোন দিল। ফোন দিয়েই প্রশ্ন ছুড়ে দিল, “এই আনুশকা,তুমি বলতো,তোমার সাথে কি আমার কোনো প্রেমের সম্পর্ক ছিল কিনা?” আমি অবাক হয়ে গেলাম।

বুঝলাম যে তার নতুন টোপ তার পাশেই বসে আছে। আমি বললাম, “হ্যা প্রেমের সম্পর্ক আছে তো!” -আনুশকা,কাম অন!ফাজলামি করছো কেনো?সিরিয়াসলি বল। -দেখো বিশ্বজিৎ তুমি আমার সাথে যে প্রতারণা করেছো,তাতে তোমার সাথে ফাজলামি করার মত মানসিকতা আমার থাকার কথা না। তোমার সাথে আমার প্রেম ছিল-এটা অস্বীকার করার কিছু নেই। হঠাৎ বিশ্বজিতের কথার ধরন পালটে গেল।

চিৎকার করে বলল, “ঐ হারামজাদি বেশ্যা,সোজা কইরা কথা বল। বল যে তোর সাথে আমার কোনো প্রেম ছিল না”। -বিশ্ব তুমি আমাকে এসব কিভাবে বলছো?তুমিই না আমাকে একদিন দেবী বলে ডেকেছিলে? -চুপ কর বেশ্যাবেটি!তোরে আমি খুন করে ফেলব। আমি কোনো কথা না বলে ফোন রেখে দিলাম। আমার চোখে পানি এসে যাচ্ছিল।

চেষ্টা করলাম,কান্না না করার। কিন্তু হঠাৎ চিৎকার দিয়ে কাদতে শুরু করলাম। আমার কান্না শুনে মা ছুটে আসল। বারবার জানতে চাইল আমার কি হয়েছে। আমি কিছু না বল কেবল কাদতে লাগলাম।

রাতের বেলা আবার বিশ্ব ফোন দিল। -আনুশকা,তুমি কেন বুঝতে পারছো না যে আমি শুভাকে ভালোবেসে ফেলেছি। তুমি প্লিজ ওকে বল যে আমার সাথে তোমার কোনো রিলেশন ছিল না। তুমি যা করেছো সব ফাজলামি করে বলেছ। -তোমার লজ্জা করেনা এসব বলতে?তুমি তো আমাকে কত মিষ্টি কথা বলে ভালবাসার ফাদে ফেলেছিলে।

তাছাড়া তোমার না লিভার সিরোসিস?এই অবস্থায় তুমি কেন অন্য একটা মেয়েকে তোমার জীবনে জড়াতে চাচ্ছো? -ঐ হারামজাদি তোর মাথায় কি ঘিলু নাই নাকি?তুই এখোনো বুঝোস নাই যে ঐ রোগের নাম বলছিলাম জাস্ট তোর সমবেদনা পাওয়ার জন্য?শালি তুই তো একটা আস্ত বেকুব। তোর মত বলদা মাইয়ার ভালবাসা পাওয়ার কোনো যোগ্যতা আছে নাকি?তুই কি ভাবছোস,তোর গায়ের ধলা রঙ দেইখা আমি তোর পায়ের তলায় পইড়া থাকমু? -বিশ্ব,তোমাকে আমি কখনও ভালবাসার জন্য ফোর্স করিনি। তুমিই জোর করে ভালবাসা আদায়ের জন্য নানান নাটক করেছিলে। আর ঐ যে বললে,আমি বোকা!আমি আসলেই বোকা!একারনেই তোমাকে বিশ্বাস করেছিলাম। তোমার চিন্তা নাই।

আমি তোমার সাথে যোগাযোগ করব না। -যাবি তো যাহ!কিন্তু প্লিজ,যাওয়ার আগে একটাবার শুভাকে বল যে তোর সাথে আমার কোন প্রেম নাই। -প্রশ্নই ওঠে না। -ঐ কুত্তাবেটি তোরে আমি খুন করমু! আমি আর কোনো কথা না বলে ফোনটা রেখে দিলাম। শীলার খুব ইচ্ছা ছিল-ও বিশ্বর উপর প্রতিশোধ নেবে।

হয়তো চেষ্টা করলে শীলা সেই কাজটা করতেও পারত। কিন্তু আমি করতে দিলাম না। ঈশ্বরের হাতে সব কিছু বিচারের দায়িত্ব তুলে দিলাম। তার বছর তিন পর আমার বিয়ে হয়ে গেল কানাডায় সেটেল্ড এক বাঙ্গালীর সাথে। আমার বর কানাডার একটা বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ান।

বিশ্বকে দেখার পর পুরুষ জাতটার প্রতি যে ঘৃণা জন্মেছিল,তা এই লোকটাকে দেখে কেটে গেল। বিশ্বর কথা ওকে বলেছিলাম। সব কাহিনী শুনে আমার বর আমাকে বুকে চেপে ধরেছিল। আমি ওর চোখের দিকে তাকিয়ে দেখলাম,ওর চোখ ছল-ছল করছে। আমার মনে হল,বিশ্ব আমাকে কষ্ট না দিলে আমি এত ভাল মানুষটার দেখা পেতাম না।

ঈশ্বরের প্রতি আর কোনো অভিযোগ নেই। কারো প্রতিই আজ আর কোনো অভিযোগ নেই। ঈশ্বর সব কিছু দেখছেন। আজ কেবল,একটাই প্রার্থনা, “ঈশ্বর যেন সবাইকে ভাল রাখেন। এমনকি যে বিশ্ব আমার জীবনকে এলোমেলো করে দিয়েছিল,তাকেও যেন ঈশ্বর ক্ষমা করেন”।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।