আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

বোবা দেবতা , বোবা পশু , সবাক অসুর

ঈশ্বরই জ্ঞান , জ্ঞানই আত্মা। মানুষ মাত্রই জ্ঞানী। আমি মানুষ,আমার ঔরসে জন্মায় দেবতার কারিগর।

মানুষ মানুষের মানবতা । অসুর অসুরের পশুত্ব ।

পৃথিবীতে জীবের টিকে থাকার কিছু কৌশল । টিকে থাকা অর্থ কি ? বেঁচে থাকা ? নাকি মানুষ রূপি জীবগুলোর ভাষায় নিজের অধিকার স্বার্থ রক্ষা করা । মানুষ নামের এই জীবটির প্রধান বৈশিষ্ট্য এটি নিজের মনের ভাষা প্রকাশ করতে মুখের বিভিন্ন অংশ খুব সুক্ষ ভাবে প্রয়োগ করতে পারে যে প্রক্রিয়াটিকে এই জীবটি বলে কথা বলা । আবার এরা তা হাতের আঙ্গুলের সুক্ষ ব্যবহারে লিখে সংরক্ষণ করতে পারে। অর্থাৎ মানুষ নামের জীবটি মনের ভাষা বলতে ও লিখতে পারে।



অসুরের পরিচয় কি? অসুর কি ? মানুষের ভাষায় যার মানবতা নেই যে পশুর ন্যায় আচরন করে । পশু কি করে ? কেবল বেঁচে থাকার জন্য যত টুকু প্রয়োজন তাই প্রকৃতি থেকে নেয় এর এক বিন্দু বেশিও নেয়না কমও নেয়না । লড়াই করে কেবল টিকে থাকার জন্য । অন্যকে বা সগোত্রীয় অন্য প্রাণীকে শেষ করার কোন প্রয়াস পশুর মাঝে নেই ।

মানুষ নামের এই জীব আরেকটি শব্দ বলে দেবতা ।

যার প্রকৃত কোন অস্তিত্ব মানুষ এখনো বাস্তবে আবিস্কার করতে পারেনি কিন্তু দেবতার একটি রূপ এই জীবের ভাবনায় আছে । দেবতা হচ্ছে ত্রাণকর্তা যে কেবল মঙ্গল করে , যে কেবল ভালো করে ,শক্তিশালী দুষ্টের বিনাশ করে , নিজের কোন চাহিদা নেই , কেবল অন্যের উপকার করে , মানবতার পক্ষে কাজ করে ।
মানবতা – মানুষরূপী জীবের এক আশ্চর্য মনের কথা এই মানবতা । এর অর্থ এই জীবটি এভাবে ব্যখ্যা করে যা কিছু কেবল মানুষের জন্য ভালো তাই মানবতা । দেবতাকে এরা রেখেছে কেবল মানবতার জন্য মানুষের কল্যানের জন্য।

যা কিছু মানুষের জন্য মন্দ তা মানুষ বলে অসুরতা ।

মানুষ কেবল এই জীবটি প্রকৃতি থেকে তার প্রয়োজনের অতিরিক্ত গ্রহণ করে । অন্য প্রাণী এবং বিশেষ করে সগোত্রীয় অন্য জীবের কাছ থেকে ছিনিয়ে নেয় । নিজের সুখের জন্য এই জীবটি তার নিজের বানানো মানবতা ছুড়ে ফেলে । নিজের স্বার্থের জন্য এই জীবটি যে কোন কিছুই করতে পারে ।


প্রকৃতিতে টিকে থাকতে হলে প্রাণী মাত্রেরই লড়াই করতে হয় ছিনিয়ে নিতে হয় । অন্য কোন উপায় নেই পৃথিবীতে টিকে থাকার ।

মানুষের দাবী মানবতাই মানুষের ধর্ম কিন্তু মানুষ মানবতাকে কেবল দেবতার মাঝেই রেখে দিয়েছে । নিজে মানবতার ধারও ধারেনা । মানুষের মধ্যে যারা সত্যিকার মানবতার পথে চলে তাদের মানুষ দুর্বলভাবে এবং অত্যাচার করে বা তাদের কাছ থেকে সব ছিনিয়ে নেয় ।

অর্থাৎ অসুরের রূপ ধারন করে।
অবাক বিষয় হচ্ছে মানুষ মানবতাকে দেবতার কাছে এবং অসুরতাকে পশুর কাছে দিয়ে দেয় । নিজের কাছে রাখে কেবল স্বার্থ । এই স্বার্থের জন্য মানুষ যে কোন কিছুই করে । পশুর মাঝে যে প্রবৃত্তি মানুষ অঙ্কন করে তা তার নিজের মাঝেরই রূপ ।

দেবতার মাঝে যা অঙ্কন করে তা তার কল্পনা বিলাস যার বাস্তব কোন রূপ নেই। অথচ মানুষ ব্যতীত অন্য কোন জীব পৃথিবী থেকে তার প্রয়োজনের বেশী এক বিন্দু নেয়না ।

টিকে থাকার এই অসম লড়াই মিথ্যের আড়ালে ঢাকা মানুষের প্রবৃত্তি সৃষ্টির শুরু থেকেই । মানুষের মাঝেই মানুষ বিভ্রান্ত হয় যখন কিছু মানুষ দেবতা হতে চায় মানবতার পথে যেতে চায় । তখন অন্য মানুষরূপী অসুর তাকে খাবলে ধরে।

তখনই খোলস পাল্টে ফিরে যেতে হয় পুরনো রূপে অসুর । সবই হওয়া হয় কিন্তু দেবতা আর হওয়া হয়না । আসলে মানুষ নামের জীবটি যাকে দেবতা বলে ওটাই মানুষ যার অস্তিত্ব পৃথিবীতে নেই আছে কেবল মানুষ নামের জীবটির ভাবনায় ।

টিকে থাকতে হলে এ ছাড়া আর কোন উপায় নেই হতে হয় অসুর । যারা পারেনা তারা ঠকে যায় লুপ্ত হয়।



আসলে অসুর একটি জীব যা পশুর উন্নত সংস্করণ পার্থক্য কেবল পশু বোবা আর অসুর সবাক । অথবা এমন হতে পারে পশুরা অসুরের চেয়েও অনেক জ্ঞানী যাদের মনের ভাব আদান প্রদান বা প্রকাশে কথার প্রয়োজন নেই । পশুরা মনের ক্ষমতা দিয়েই ভাব প্রকাশের পর্যায়ে চলে গেছে বহু আগে। পশুরা আরও উন্নত জ্ঞানের অধিকারী তার আরো প্রমাণ তারা প্রকৃতির সম্পদ নিয়ে লড়াই করেনা অযথা এই সম্পদ নিতে মেধা শক্তি ব্যয় করেনা। কারণ হয়ত পশুরা জানে মৃত্যু মানেই প্রকৃতির সাথে সকল লেনদেন শেষ তাই অযথা এই সম্পদ দখলে শক্তি ব্যয় প্রকৃতভাবেই নির্বুদ্ধিতা ।



সবাক পশুটি বা অসুরের সুন্দর একটি নাম এরা নিজেরাই দিয়েছে যাকে বলে মানুষ। আবার মানুষের মাঝে সবাক অসুরটি নিজর যে আদর্শ চিত্র আঁকে তাকে বলে মানবতা । যা এই সবাক অসুর বা মানুষর নামক জীবটির মাঝে নেই । যা আছে কেবল দেবতার মাঝে ।

মজার বিষয় হচ্ছে অসুর নিজে সবাক হলেও মন্দের রূপ এবং ভালোর রূপ এই জীবটি আঁকে বা সগোত্রীয় অন্য জীবকে বোঝায় বোবা দুটি প্রাণী দিয়ে মন্দকে পশু এবং ভালকে দেবতা দিয়ে ।

আসলে পশু বা দেবতার কেউই এই অসুর নামক সবাক জীবটির সাথে মনের ভাবের কোন আদান প্রদান করেনা । বোবাকে ভালো মন্দের ভার দিয়ে সকল মন্দ নিজের কাছে নিয়ে সর্বোচ্চ কুটিলতার প্রতীক সবাক এই অসুরটি যে নিজের পরিচয় দেয় “মানুষ” ।

নিজের শ্রেষ্ঠত্বের যে দাবী এই দুর্বলতম জীবটি করে তার পক্ষে বা একমাত্র প্রমাণ বলতে কেবল ধর্মগ্রন্থ। যেখানে বলা হয় মানুষ আশরাফুল মাখলকাত অর্থাৎ সৃষ্টির সেরা জীব।

মানুষ মাত্রই জ্ঞানী


অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।