আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

মৌসুমী দেশপ্রেমিক !!!

আমি একজন অতি সাধারন বাংলাদেশের নাগরিক যে সপ্ন দেখে একটি সুখি সমৃদ্ধ বাংলাদেশের । কতিপয় লোক ২৬ মার্চ লাল সবুজ পাঞ্জাবি পড়িয়া এদিক সেদিক প্রেমিকা লইয়া ঘুরিয়া ফিরিয়া নিজেদেরকে খাঁটি দেশপ্রেমিক হিসেবে সাব্যস্ত করিতে চাইবে । তাহারা তাহাদের পোষাক আশাক কে প্রদর্শন এমন ভাবে করিবে তাহাদিগকে দেখিয়া এবং তাহাদের কথা বার্তা শুনিয়া কিছু কিছু লোক গর্বে উচ্ছসিত হইয়া বলিবে দেখ দেখ খাঁটি দেশপ্রেমিক তরুণ প্রজন্ম দেখ তাদের দেখিয়া কিঞ্চিত দেশপ্রেম শিখিবার চেষ্টা কর । কিন্তু এই সব তরুণেরা আসলেই কি দেশপ্রেমিক ? দেশপ্রেমিক কে, তাহা কি পোষাক আশাক সত্যায়ন করিবে ? নাকি তাহাদের কাজের মধ্যে দিয়া তাহা প্রমাণিত হইবে ? একটা বছর ৩৬৫ দিনে গুজরান হয়, বিশেষ বিশেষ কিছু দিন তাহারা খাটী দেশপেমিক হইবার চেষ্টা করিলেও সেই চেষ্টা খুব সহসাই মেয়াদউত্তীর্ন হইয়া যাই সেই বিশেষ বিশেষ দিনগুলোর স্তায়িত্বকালের সমাপ্তির মধ্য দিয়া । ২১ ফেব্রুয়ারি থেকে শুরু হয় সেই সব কথিত দেশপ্রেমিকের আনাগোনা তারপর ২৬ মার্চ, পহেলা বৈশাখ, বাসন্তি বরন , ১৬ ডিসেম্বর এই কয়দিন চলে সেই সব কথিত দেশপ্রেমিকের আস্ফালন ।

তারপর ইহাদের বেশিরভাগেরই আর কোন হদিস পাওয়া যায়না । বছরের বাকি দিনগুলা তাহারা ডিস্কো নাচ নাচিয়া, হেভি মেটাল শুনিয়া বাংলিশ কথাবার্তা বলিয়া বাঙালী জাতিসত্তার ১২ টা বাজানোর মহান গুরু দায়িত্ব নিজ নিজ স্কন্ধে তুলিয়া নেয় । তখন দেশপ্রেমের কথা তাহাদের কর্ণকুহরে প্রবেশ করাইবার চেষ্টা করিলে এইসব কথা বার্তা তাহাদের নিকট চিরতার পানির থেকেও তেতো স্বাদ বিশিষ্ট বলিয়া গণ্য হয় । কিছু কিছু বুদ্ধিজীবী লোককে বলতে শুনিয়া থাকি বিশ্বায়নের এই যোগে দেশ বেদেশের সংস্কৃতি না জানিলে আমরা অতিমাত্রায় পিছাইয়া পড়িব কথা সত্য এই কথায় আমার কোন দিমত নাই । তবে যাহারা এই সব সংস্কৃতি আমাদিগকে পালন করিবার কথা প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ ভাবে বলিয়া উৎসাহিত করিবার চেষ্টা করে তাহাদের সাথে আমার মত বিরোধ আছে ।

তাহাদের ভাষায় এই সব সংস্কৃতি পালন না করিলে আমরা নাকি আধুনিক হইতে পারিবনা !!! তাহাদিগকে জিজ্ঞাসা করিতে চাই যাহারা এই সব উদ্ভট কথা বার্তা বলিয়া থাকেন, ধার করা সম্পত্তি দিয়া কি ধনী হওয়া যায় ? বেশিরভাগই বলিবে যাহারা বাস্তব জীবনের কাছাকাছি বসবাস করিয়া থাকেন "না ধার করা সম্পত্তি দিয়া ধনী হওয়া যায়না আর যদি কেউ হয়োও তবে তাহাতে আত্ন সম্মান বোধ বলিয়া কিছু অবশিষ্ট থাকেনা " ঠিক তেমনি নিজস্ব স্বকিয়তা বিসর্জন দিয়া ধার করা সংস্কৃতি দিয়া আমারা কিভাবে আধুনিক হইবো ? আমাদের আধুনিক হইতে হইলে সর্বপ্রথম আমাদের সংস্কৃতি কে আধুনিক মানিয়া সে অনুযায়ি আমাদের জীবন কে চালিত করিতে হইবে আর এই ক্ষেত্রে আমাদের যার যার ধর্মীয় সংস্কৃতিরো একটা বড় অবস্থান থাকিবে । আর আমি মনে করি ইহাতেই আমাদের স্বকিয়তা তাহার নিজ অবস্থান ধরিয়া রাখিতে পারিবে । তাই সর্বশেষ একটা কথাই বলিয়া যাইবো আসুন ধার করা সংস্কৃতি বর্জন করিয়া নিজেদের সংস্কৃতি বুকে লালন করিয়া দেশ ও দশের কল্যান স্বাধনে আগাইয়া আসি । যে মানুষ নিজেদের সংস্কৃতিকে ধারন করিতে পারেনাই সেই মানুষ কদাচিতই সাফল্যের মুখ দর্শন করিয়া থাকে । মাইকেল মধুসূদন দত্ত কিন্তু এই কথাটি হারে হারে বুঝিয়া ছিলেন ।

তিনি পর সংস্কৃতি ছাড়িয়া নিজের সংস্কৃতি আপন করিয়া লইয়াই জশ, খ্যাতি অর্জন করিয়া ছিলেন । তাই বলিব মৌসুমি দেশপ্রেমিকের ভেক না ধরিয়া আসুন আমরা সবাই সত্যিকারের দেশপ্রেমিক হইবার চেষ্টা করি । ইহাতে দেশ ও জাতির কল্যাণ বৈ অকল্যাণ হইবেনা । আজ এই পর্যন্তই লিখিয়া খান্ত দিলাম । সবাই ভালো থাকবেন ।

আল্লাহ হাফেজ । ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।