আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

রহস্যময় সূর্য

সূর্য নাকি আর মাত্র পাঁচশ কোটি বছর আমাদের আলো দেবে! এমনটাই জানিয়েছে ব্রিটিশ বিজ্ঞান পত্রিকা 'নেচার'। সূর্যের রহস্যময়তা বছরের পর বছর ধরে বিজ্ঞানীদের কেবল ভাবিয়েছে। কিন্তু একে ঘিরে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত বা ভেতরের চূড়ান্ত রহস্য আজো উন্মোচিত হয়নি। এরপরও বিজ্ঞানীদের ধারনা পৃথিবীর আয়ুর শেষ দিকে এসে সূর্যই হয়ে ওঠবে অন্যতম নিয়ন্তা। তখন পৃথিবীর নাটকীয় পরিবর্তন হবে।

বাড়বে এখানকার গড় তাপমাত্রা। আবহাওয়ার ভারসাম্যতা থাকবে না। নদী-সমুদ্রের পানি তীব্র তাপ বিকিরণে বাষ্পীভূত হয়ে যায় স্বাভাবিকভাবেই। দুনিয়ার তাবৎ প্রাণ ধ্বংস হবে। সূর্য যে পরিমাণ শক্তি ছড়ায়, তার পরিমাণ ৪০ হাজার বিলিয়ন।

এক বিলিয়নের অর্থ ১০০ কোটি। আমাদের পৃথিবীতে এই শক্তির মাত্রা কয়েক ভগ্নাংশ এসে পেঁৗছায়। তবে সে পরিমাণও নেহাত কম নয়। ৭৮ হাজার বিলিয়ন পরমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র থেকে উৎপাদিত শক্তির সমান। এ শক্তি সূর্য উৎপন্ন করে পারমাণবিক ফিউশন প্রক্রিয়ায়, কাজেই জ্বালানি হিসেবে হাইড্রোজেন ও হিলিয়মের ভাগাড়ে যেদিন টান পড়বে, সেদিনই সূচিত হবে সূর্যের অন্তিম লগ্ন।

হাইড্রোজেন জ্বালানির ভাণ্ডার বাড়ন্ত হওয়ার সময় সূর্যের আকার কি রকম হতে পারে, সে বিষয়েও বিজ্ঞানীরা একটি খসড়া অনুমান করেছেন। সূর্য থেকে প্রায় সাতশ আশি কোটি কিলোমিটার দূরে থাকা বৃহস্পতি তখন কি করবে, সেটাও কিছুটা আন্দাজ করা গেছে। ক্রমবর্ধমান সূর্যের পৃষ্ঠতলের ওপর বৃহস্পতি এমনই এক প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করবে, যার পরিণামে পারমাণবিক চাজরাক্ত কণিকা মহাকাশে এক ভয়াবহ সৌর-ঝড়ের জন্ম দিতে পারে। এই কণিকাগুলো ধীরে ধীরে বাড়াতে থাকবে তাদের ঘূর্ণনগতি। কণিকার সূক্ষ্মাতিসূক্ষ্ম অণুর সঙ্গে সূর্যকে ঘিরে থাকা নানা গ্যাসের বিক্রিয়ায় আকাশ হয়ে উঠবে অসম্ভব উজ্জ্বল।

কিন্তু এ উজ্জ্বলতা হবে ক্ষণস্থায়ী। দ্রুত শীতল ও নিষ্প্রভ হয়ে সমস্ত কণিকা ঘনীভূত এক কঠিন পদার্থে রূপান্তরিত হয়ে যাবে। এদিকে সূর্যে তখনও অবশিষ্ট সামান্য পরিমাণ হাইড্রোজেন ও হিলিয়ম সূর্যের বাইরের স্তরকে আচ্ছাদিত করে ফেলবে। পারমাণবিক বিক্রিয়ার ফলে যে বিপুল পরিমাণ ছাই উৎপন্ন হবে, তা মিশে মহাকাশে হাইড্রোজেন ও হিলিয়মের এ আচ্ছাদনের ফলে সূর্যের তাপ হবে কম, সঙ্কোচন হবে আকারেরও। আকারটা এতটাই ছোট হবে যেটা আমাদের এ পৃথিবীর বর্তমান আকারের সঙ্গে প্রায় তুলনা করা যায়।

তাপ কমে যাওয়া এবং আকারে ছোট হয়ে যাওয়ার ফলে স্বাভাবিকভাবেই সমগ্র সৌরমণ্ডল অসম্ভব ঠাণ্ডা ও আঁধারে ডুবে যাবে। সূর্যের মহাস্থান হবে দর্শনীয়। তবে এর থেকেও নাটকীয় ঘটনা ঘটবে মহাকাশে। বস্তুত এ ঘটনাই নাকি আমাদের সৌরজগতেরও মৃত্যুঘণ্টা বাজিয়ে দেবে। এক ধরনের বিবর্তনেই মহাকাশে সেসময় এসব ঘটনা ঘটতে পারে বলে বিজ্ঞানীদের অনুমান।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।