আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

চীনে বাড়ছে বিবাহ বিচ্ছেদ, ভোগবাদী তারুণ্য

দ্য বেঙ্গলি টাইমস ডটকম সমাজতান্ত্রিক চীনা সংস্কৃতিতে সাম্প্রতিককালে লোকজন ক্রমেই ভোগবাদী হয়ে উঠছেন। তরুণ-তরুণীদের এখনকার প্রধান চাওয়া হলো সম্পদ, বিশেষ করে মাথা গোঁজার ঠাঁই_বাড়ি কিম্বা অ্যাপার্টমেন্ট। বিয়ের বাজারে পুরুষের যোগ্যতার প্রধান নিয়ামক হয়ে দাঁড়িয়েছে তার বাড়ি কিংবা অ্যাপার্টমেন্ট আছে কি না। এমন আর্থিক সম্পর্কের ভিত্তি পরিবারগুলোতে বিচ্ছেদের ঘটনাও বাড়িয়ে দিয়েছে। ভালোবাসার পরিবর্তে সম্পত্তির লোভে নারীদের বিয়ের পিঁড়িতে বসার প্রবণতা রোধে সরকার এখন উঠেপড়ে লেগেছে।

এমন বিয়ে বন্ধে সুপ্রিম কোর্ট এক নির্দেশনা জারি করেছেন। বাড়িঘর নেই অথচ বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হচ্ছেন, এমন যুগলের বিয়েকে চীনে রসিকতা করে 'ন্যাকেড ম্যারেজ' বলা হয়। এ ধরনের বিয়েকে ব্যাপকভাবে ঝুঁকিপূর্ণও মনে করা হচ্ছে। কেননা, এ ধরনের বিয়ে শেষ পর্যন্ত টিকছে না। সর্বশেষ পরিসংখ্যানে দেখা গেছে, গত বছর দেশটিতে ২৬ লাখ ৮০ হাজার বিবাহ বিচ্ছেদের ঘটনা ঘটেছে।

এই হার দেশটির ক্রমবর্ধমান অর্থনীতির মতোই বর্ধনশীল। গত পাঁচ বছরে এটি ৭ শতাংশ করে বেড়েছে। বিশেষ করে বেইজিং, সাংহাই ও গুয়াংজুতে এক-তৃতীয়াংশেরও বেশি বিয়ের শেষ পরিণতি হয় বিচ্ছেদ। এই বিচ্ছেদ ঘটানো নারী-পুরুষের গড় বয়স ২৫ থেকে ৩৪ বছর। প্রায় অর্ধেক বিচ্ছেদের ঘটনা আদালত পর্যন্ত গড়ায়।

কারণ, পারিবারিক সম্পদের মালিকানা নিয়ে লড়াই। বিবাহ বিচ্ছেদের ব্যাপারটি চীনা ঐতিহ্যের পরিপন্থী। আট বছর আগেও কোনো দম্পতিবিচ্ছেদ ঘটাতে চাইলে তাঁদের কর্মক্ষেত্রের প্রধানের অনুমতি বা প্রতিবেশীদের নিয়ে গঠিত কমিটির অনুমোদন নিতে হতো। সম্পদের প্রতি চীনা নারীদের ক্রমবর্ধমান আকাঙ্ক্ষার পরিপ্রেক্ষিতে এসব বিবাহবিচ্ছেদের ঘটনা ঘটছে। এ পরিস্থিতিতে চীনা সুপ্রিম কোর্ট এক আদেশ জারি করেছেন_যে ব্যক্তি পরিবারের জন্য বাড়ি কিনেছেন অথবা যেসব বাবা-মা সন্তানের বাড়ির জন্য অর্থ দিয়েছেন, ওই সন্তানের যদি বিবাহবিচ্ছেদ ঘটে, তবে যিনি বাড়ি কিনেছেন বা যাঁরা টাকা দিয়েছেন, মালিকানা তাঁর বা তাঁদের থাকবে।

হুনান প্রদেশের আইনজীবী হু জিয়াচু আশা করেন, আদালতের এ রুল জারির ফলে তরুণ প্রজন্ম বিশেষ করে নারীরা অর্থের প্রতি কম ঝুঁকবেন। বিপরীতে বিয়েতে ভালোবাসার মতো ব্যাপারটিকেই বেশি প্রাধান্য দেবেন। বেইজিংভিত্তিক একটি ঘটক সংস্থার ওয়েবসাইটের কনসালট্যান্ট ওয়াং ঝিগো বলেন, 'বেশির ভাগ নারী ধনবান পুরুষকে বিয়ে করে নিজেদের আর্থিক অবস্থান সুদৃঢ় করতে চান। এই শ্রেণীর নারীর সংখ্যা দিন দিন বাড়ছে। ' তিনি বলেন, 'অধিকাংশ সুন্দর মেয়ে তাঁর সৌন্দর্যের বাণিজ্য করতে চান।

এটা মোটেও ভালো কিছু নয়। ' সরকার এই 'অসুস্থ' ধারার ওপর নিয়ন্ত্রণ আরোপের চেষ্টা করছে। সূত্র : টেলিগ্রাফ।  ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।