আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

বিজ্ঞানের আশির্বাদ সহজ ও কম খরচের যোগাযোগ মাধ্যম 'স্মার্টফোন' পরিবর্তন করছে অভ্যাস বাড়িয়ে দিচ্ছে বদঅভ্যাস

আমি সত্য জানতে চাই বিজ্ঞানের চরম উৎকর্ষতার দিনে মোবাইল ফোন একটি অত্যাবশ্যকীয় প্রয়োজনীয় উপকরণ। বর্তমান যান্ত্রিক যুগে সময় ও খরচ বাঁচিয়ে জরুরী প্রয়োজনে ব্যাবসায়িক কিংবা আত্মীয় স্বজনের খোঁজ খবর নিতে এটি তুলনাবিহীন। এটি মানব কল্যানে বিজ্ঞানের আশির্বাদ বলে গন্য। তবে প্রতিটি কাজের ইতিবাচক দিক যেমন থাকে তেমনি থাকে তার কিছু নেতিবাচক দিক। সহজে ও কম খরচে ডিনামাইট দিয়েপাহাড় ভাঙা, টানেল তৈরি ও খনিতে ডিনামাইট ব্যবহার করে কাজ সহজীকরণ করা হয়।

তা ছাড়া যুদ্ধের কাজে সেতু, শত্রুপক্ষের ভবন, রেললাইন ইত্যাদি উড়িয়ে দিতে ডিনামাইট অদ্বীতিয়। ডিনামাইট আবিস্কারক বিজ্ঞানী আলফ্রেড নোবেল যদি জানতেন ডিনামাইট দিয়ে একদিন মানুষ হত্যা করা হবে তা হলে হয়তো তিনি এ নিয়ে গবেষণা করতেন না বা ডিনামাইট আবিস্কার করতেন না। তেমনি ভাবে আজকের আশির্বাদ সেলফোনে সহজে ও কম খরচে যোগাযোগ রক্ষা করা সম্ভব হলেও এর রয়েছে কিছু নেতিবাচক দিক। হয়তো মানুষ ততটা বড় হয়ে উঠেনি, যতটা সে ভাবত। একটি আইফোনই তার অনেক খারাপ দিক তুলে আনার জন্য যথেষ্ট।

স্মার্টফোন ব্যবহারের ক্ষেত্রে বেশির ভাগ মানুষই তাদের কিশোর বয়সের মতো আচরণ করে। উচিত-অনুচিত ভাবনার চেয়ে মনের স্বাধীন ইচ্ছাগুলো বেশি গুরুত্ব পায়। নিয়ম ভাঙা যেন আরেকটি নিয়ম হয়ে দাঁড়ায়। এমনকি প্রাপ্তবয়স্করাও এসব নিয়ে কমই ভাবেন। বিশ্বের নয় হাজার সেলফোন ব্যবহারকারী আচরণের ওপর ট্রুথ অ্যাবাউট ইউ শীর্ষক এক গবেষণা প্রতিবেদনে এমন মতই দিয়েছে ভোক্তা গবেষণা প্রতিষ্ঠান ম্যাককেইন ট্রুথ সেন্টার।

We're All Just Teenagers When It Comes To Mobile ১ মার্চ প্রকাশিত প্রতিবেদনটি প্রকাশের সময় প্রতিষ্ঠানটির গ্লোবাল ডিরেক্টর লরা সিম্পসন বলেন, ‘আমরা অনেক ক্ষেত্রেই কিশোর-কিশোরীদের মতো নতুন কিছু পেতে অনেক বেশি ঝুঁকি নিচ্ছি। ’ তিনি আরো জানান, বিগত ১২ বছরে একজন ভোক্তা গড়ে ৬ দশমিক ৪টি করে ফোন কিনেছেন এবং প্রতি ২২ মাস পর পর নতুন একটি ফোনসেট বা সেবাদানকারীর গ্রাহক হয়েছেন। অভিজ্ঞতার অভাব কিংবা নিয়ম ভাঙার রোমাঞ্চের নামে বেশির ভাগ মোবাইল ব্যবহারকারী আচরণে কোনো না কোনোভাবে নৈতিক বা আইনি সীমা অতিক্রম করে যান। দৈনন্দিন জীবনে স্মার্টফোন ব্যবহারকারীদের খুঁটিনাটি এসব স্খলনকে ম্যাককেইন নাম দিয়েছে ‘সেভেন ডেডলি সিনস অব মোবাইল’। ১।

অনিয়ন্ত্রিত যৌনাকাঙ্ক্ষাঃ ফোন হাতে নিয়ে উত্তেজক ছবি কিংবা বার্তা পাঠানোর লোভ সংবরণ করতে পারেন না অনেক ব্যবহারকারী। ১০ শতাংশেরও বেশি ব্যবহারকারী জানিয়েছেন তারা অনেকবার কথিত সেক্সট (উত্তেজক বার্তা) পেয়েছেন অন্যদের কাছ থেকে। এমনকি অবসরপ্রাপ্ত মার্কিনদের সংগঠনও উত্তেজক বার্তা প্রদানের কলাকৌশলের ওপর প্রশিক্ষণের প্রস্তাব করে থাকে। ২। অতিভোজনঃ খাবার টেবিলে ফোন ব্যবহার করে খেতে থাকলে অজান্তেই বেশি খাওয়া হয়ে যায়।

এতে স্বাস্থ্যের ওপর ক্ষতিকর প্রভাব পড়ে। অনেক ব্যবহারকারীই জানিয়েছেন তারা খেতে বসে প্রিয় ফোনটি ফেলে রাখতে চান না। এমনকি ৩৮ শতাংশ স্মার্টফোন ব্যবহারকারী বাথরুমেও ফোন ব্যবহার করেন। ৩। লোভঃ অনলাইনে বিনামূল্যে অনেক বৈধ বিনোদনের ব্যবস্থা রয়েছে।

কিন্তু অনেকেই আরো চান। প্রায় ২৯ শতাংশ ব্যবহারকারী মেধাস্বত্ব আইন ভঙ্গ করে ফাইল ডাউনলোড করতে দ্বিধাবোধ করেন না। চীনা ব্যবহারকারীদের মধ্যে এ হার প্রায় ৫০ শতাংশ। ৪। আলস্যঃ হয়তো কথা বলতে ইচ্ছা করছে না কিংবা ক্ষুদে একটি বার্তা পড়তে বা পাঠাতে ইচ্ছা করছে না।

এমন ক্ষেত্রে অর্ধেকেরও বেশি ব্যবহারকারী জানিয়েছেন তারা ইচ্ছাকৃতভাবেই ফোনকল বা বার্তা উপেক্ষা করে থাকেন। এক্ষেত্রে প্রয়োজনের চেয়ে আলস্যই তাদের কাছে প্রাধান্য পায়। ৫। ক্রোধঃ ফোন ব্যবহার করে সহজেই তত্ক্ষণাৎ রাগ প্রকাশ করে দেয়া সহজ হয়ে যাওয়ায় আন্তঃসম্পর্কের ক্ষেত্রে খুব নেতিবাচক প্রভাব পড়ছে। বিভিন্ন অভিব্যক্তি প্রকাশ করতে ফোনে মোফেনিটি বা ইমোজিসের মতো সুবিধাগুলো বেশির ভাগ ব্যবহারকারীই কাজে লাগান।

প্রতি ১০ জনে অন্তত দুজন জানিয়েছেন, তারা এভাবে তীব্র রাগ বা ঘৃণা প্রকাশ করতে ভালোবাসেন। ৬। ঈর্ষাঃ কথায় ছিল, মানুষের জুতোয় তার সামাজিক অবস্থান বোঝা যায়। ডিজিটাল যুগে এখন এ স্থান দখল করেছে সেলফোন। লাখ লাখ গ্রাহকের আইফোন ৪ ছেড়ে বাজারে নতুন আসা আইফোন ৫ কেনার পেছনে এ মনস্তত্ত্বও কাজ করে।

অপরের হাতে উন্নততর ডিভাইস দেখে অনেকে যেমন ঈর্ষান্বিত হন, আবার নিজেরটি দেখিয়েও অনেকে সম্মানিত বোধ করেন। এ জরিপে অংশ নেয়া ৫৫ শতাংশ মানুষ জানান, তারা হাতের ফোনটি দেখে অন্যের সামাজিক মর্যাদা বিচার করতে অভ্যস্ত। ৭। অপরের বিরক্তির উদ্রেক করাঃ হাতের দামি যন্ত্রটির গর্বেই হোক কিংবা অধিকার চর্চার অংশ হিসেবেই হোক অনেকেই ফোন ব্যবহার করতে গিয়ে অন্যের বিরক্তির কারণ হন। রেস্টুরেন্টে ফ্লাশ ব্যবহার করে ছবি তোলা, মৃদু আলোর পরিবেশে ফোনের আলো জ্বালিয়ে রেখে বার্তা আদান-প্রদান করা, উচ্চস্বরে কথা বলা, সবার মাঝে বসে ফোন নিয়ে ব্যস্ত থাকা— এসব কাজে আশপাশের মানুষ বিরক্ত হলেও অনেকেই দিব্যি তা চালিয়ে যান।

এবার ভেবে দেখুন এ সাতটির মধ্যে আপনি কয়টি ভুল করেছেন। সূত্রঃ The Desert News The 7 deadly mobile device sins users often commit  ।

সোর্স: http://www.somewhereinblog.net     দেখা হয়েছে বার

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.