আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

চিকিত্সা নিয়ে বিভ্রান্তি লেজার স্থায়ী সমাধান নয়

লেজার এন্ড কসমেটিক সার্জনচুলপড়া, চর্মরোগ ও এলার্জি এবং ডাক্তারী ভাষায় ব্রণের নানা শ্রেণীবিন্যাস আছে। এসব শ্রেণীবিন্যাস নিয়ে আর একদিন আলোচনা করবো। তবে এ কথাটি বলতে পারি হালকা, মাঝারী বা তীব্র যে কোন ধরনের ব্রণ ওষুধের মাধ্যমে চিকিত্সা সম্ভব। ব্রণের ধরন অনুযায়ী চিকিত্সা দিতে হবে। এ ক্ষেত্রে এন্টিবায়োটিক লোশন, রেটিনয়েড, এ্যাজিলিক এসিডসহ নানা ক্রিম লোশন ও এন্টিবায়োটিক রয়েছে যা ব্রণের চিকিত্সায় কার্যকর।

তবে ব্রণ চিকিত্সায় আমি ব্যক্তিগতভাবে যে সমস্যাটি বেশী দেখি তা হচ্ছে বেশীরভাগ ক্ষেত্রে রোগীরা নিয়ম মেনে চিকিত্সা করে না। কিছুদিন চিকিত্সার পর ব্রণ ভালো হলে আর ডাক্তারের কাছে আসে না। বার বার ডাক্তার পরিবর্তন করে ইত্যাদি। তবে এজন্য আমি শুধু রোগীদের দোষ দেব না। বেশীর ভাগ স্কিন স্পেশালিস্ট রোগীদের পর্যাপ্ত সময় দেন না।

রোগীদের কাউন্সিলিং করেন না। ফলে রোগীরা বিভ্রান্তিতে পড়ে। বার বার ডাক্তার পরিবর্তন করে। ওষুধ সেবনে অনিয়ম করে, অমনযোগী থাকে। তাই রোগীদের যেমন ব্রণ চিকিত্সার ক্ষেত্রে ধৈর্যের পরিচয় দিতে হবে তেমনি চিকিত্সকদেরকেও রোগীকে পর্যাপ্ত সময় দিতে হবে।

প্রথমেই রোগীকে লেজার, এমসিডি, ক্রায়ো, কেমিক্যাল পিল এসবের প্রতি প্রলুব্ধ না করে মনযোগ দিয়ে ব্রণ বা ত্বকের চিকিত্সা করা উচিত। এতে রোগী সুচিকিত্সার পাশাপশি অকারণে অর্থদন্ডের হাত থেকে রেহাই পাবেন। তাই লেজার করার আগে রোগীকে অবশ্যই ভাবতে হবে। আমি এতটুকু বলতে পারি ইউরোপ, আমেরিকা, সিঙ্গাপুরসহ বিভিন্ন উন্নত দেশে ব্রণ চিকিত্সায় লেজার ব্যবহার করা হয়না বললেই চলে। মুখের ব্রণ নিয়ে আলোচনা করছিলাম।

লেজার দিয়ে ব্রণের চিকিত্সা সম্ভব কিনা। আসলে আমার মতে ব্রণের চিকিত্সায় লেজার পরিহার করা ভালো। আমি সাধারণত মুখের যে কোন ধরনের ব্রণ চিকিত্সায় লেজারের পরিবর্তে ওষুধের মাধ্যমে চিকিত্সা দেয়ার পক্ষে। তবে অনেক সময় রোগীদের চাপে পড়ে লেজারের পরামর্শ দিতে হয়। পাশাপাশি মুখের ব্রণ চিকিত্সা ও ব্রণের দাগ তুলতে অনেক সময় কেমিক্যাল পিল ব্যবহার করা হয়।

তবে ব্রণ চিকিত্সার সবচেয়ে উত্তম ও কার্যকর পদ্ধতি হচ্ছে ওষুধের মাধ্যমে চিকিত্সা। মুখের ব্রণ এখন একটি বড় সমস্যা। হাজার হাজার তরুণ-তরুণী, নারী-পুরুষ ব্রণ নামের তৈলাক্ত গ্রন্থির এ সমস্যায় ভুগে থাকেন। আজকাল ব্রণ চিকিত্সার ক্ষেত্রে লেজারসহ নানা পদ্ধতির কথা বলা হয়। অনেক রোগী প্রশ্ন করেন ব্রণের লেজার করা যায় কিনা।

আমি নিজে এ ধরনের প্রশ্নের জবাব দিতে পারি না। রোগীদের একটাই প্রশ্ন ডাক্তার সাহেব টিভিতে, পত্র-পত্রিকায় দেখি লেজার চিকিত্সায় ব্রণ ভালো হয়। আসলে কি লেজার দিয়ে ব্রণের চিকিত্সা হয় কি? আমি আগে একাধিকবার বলেছি, লেজার দিয়ে কখনোই ব্রণের স্থায়ী চিকিত্সা সম্ভব নয়। লেজার দিয়ে ব্রণের সাময়িক নিরাময় হতে পারে। তবে স্থায়ীভাবে বা দীর্ঘ সময় ব্রণ নিরাময় সম্ভব নয়।

যেসব লেজার সেন্টার থেকে বলা হয় লেজার দিয়ে ব্রণের চিকিত্সা সম্ভব তাদের কাছে অবশ্যই জেনে নিবেন হাজার হাজার টাকা ব্যয় করে লেজার করার পর মুখের ব্রণ আবার হবে কিনা। কোন লেজার সেন্টারের বিশেষজ্ঞগণ যদি নিশ্চয়তা দেন লেজার দিয়ে ব্রণের স্থায়ী চিকিত্সা দিতে পারবেন তাহলে লেজার-এর পিছনে অর্থ ব্যয় নিশ্চয়ই করতে পারেন। তবে আমি কখনই বলি না লেজার দিয়ে ব্রণের স্থায়ী সমাধান সম্ভব। শুধু মুখের ব্রণ না যে কোন সমস্যায় লেজার করার আগে রোগী হিসেবে অবশ্যই আপনার জানার অধিকার আছে কতদিনে আপনি ফল পাবেন। যদি চিকিত্সক আপনার প্রশ্নের সন্তোসজনক জবাব দিতে না পারেন তাহলে কেন আপনি কাড়ি কাড়ি টাকা খরচ করবেন।

ডা: মোড়ল নজরুল ইসলাম বাড়ী-৩৯ (আম্বালা কমপ্লেক্স), রোড-২ ধানমন্ডি, ঢাকা ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.