আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

ও প্রিয়া, ও প্রিয়া তুমি কোত্থায়!

পুনর্জনমের প্রত্যাশায়... এই তুই সন্ধ্যাতে কি করছিস, আমার প্রানপ্রিয় বন্ধু রুস্তম মুঠোফোনে সুধায়। কিচ্ছুনা, বলি আমি। তাহলে রেডি হয়ে বসে থাক আমি আসছি, ওর ঝটপট উত্তর এবং বিদায়। সন্ধ্যায় ওর গাড়িতে উঠে জিজ্ঞাসু দৃষ্টিতে তাকাতেই রুস্তম বলে, আজ প্রিয়ার সাথে আমার প্রথম ডেট। একলা যেতে কেমন কেমন করছে।

তাই তোকে সাথে নিলাম। একালের এই রুস্তমের বীরত্ব নিয়ে আমার কিছুটা ধারনা আগেই ছিল, এখন সেটা বদ্ধমুল হল। কোথায় যাচ্ছি বা কে প্রিয়া তার কিছুই জিজ্ঞাসা করতে হলনা। রুস্তম এক টানে সব বলে যাচ্ছে। প্রিয়া সদ্য আমেরিকা ফেরত তার অনেক দিনের প্রেমিকা।

ফোনে দিনের পর দিন, রাতের পর রাত তারা কি কি কথা বলেছে তা আমি অনেক কষ্ট করে হু হু করে শুনলেও পাঠকদের সেই যন্ত্রনা থেকে মুক্তি দিচ্ছি। অ্যাত্তোদিন পরে তাদের প্রেমের মিলন হচ্ছে, সেই খুশিতে রুস্তম নাকি তিন দিন ধরে ঘুমাতে পারেনি। সেটা অবশ্য তার শীর্নকায় দেহের আরও শুকিয়ে যাওয়া মুখ আর কালি পড়া চোখ দেখে বুঝতে পারছি। হোটেল শেরাটনের ডিনার লাউঞ্জে বসে আছি প্রিয়ার অপেক্ষাতে। কিছুক্ষন পর আমাদের দিকে এগিয়ে আসা যুবতীকে দেখে আমার কেবল এটাই মনে হল, এই কি প্রিয়া! নাকি আমি হঠাত চলে গেছি স্বর্গের কোন পানশালায়, আর নৃত্যের তালে হেটে আসা কোন হুর পরী এসে সুধাবে কি পান করতে চাই।

কিন্নর কন্ঠের আপনি কি রুস্তম ডাক শুনে স্বর্গ থেকে মর্ত্যে নেমে আসি আমি। আবারও আপনি কি রুস্তম শুনে তাকিয়ে দেখি প্রিয়া রুস্তম ভেবে আমার দিকে তাকিয়ে আছেন। চকিতে রুস্তম এর দিকে তাকিয়ে বুঝে নেই, বেচারা এখনো স্বর্গ থেকে নামার রাস্তা খুজে পাচ্ছেনা। আমি বেশ সামলে নেই পরিস্থিতিকে। আমিযে রুস্তম না এই ভুল ভাংগিয়ে প্রিয়াকে বসাই সাদর সম্ভাষনে।

তুরন্ত প্রিয়ার বাংলাদেশ ভ্রমনের ক্লান্তিকর পথের সমস্ত যাতনার খবর নিয়ে নেই। রুস্তমের হতবিহবল ভাব কাটানোর জন্য তাকে বলি, ওই দেখতো ওয়েটার বেটা আসছেনা কেন এখনো। ও যেন এটারই অপেক্ষাতে ছিল। এক ছুটে গেল খোজ করতে। ঝাড়া ১০ মিনিট পর ও ফেরত এলো, সম্ভবত বাথরুমে বসে মাথায় পানি ঢেলে আর কি কি বলবে তার পুনঃরিহারস্যাল করে।

বেচারা বোধ হয় আমার আর প্রিয়ার হাস্যজল ঢলে ঢলে পড়া টাইপ আলাপ দেখে আবার থমকে গেছিল। তার জীবনের প্রথম ডেট অনেক বেশী দীর্ঘ হয়েছিল অবশ্য। কিন্তু পুরোটা সময় আমার সাথে প্রিয়ার সুমধুর কথপোকথন শুনে এবং প্রিয়ার মুখে, রুস্তম তোমার এই বন্ধুটা অনেক ফানি। রুস্তম এ তুমি কাকে এনেছ সাথে। রুস্তম তোমাকে আমার অন্তরের গভীর থেকে ধন্যবাদ সুন্দর একজন মানুষকে সাথে এনে ডিনারটাকে দারুন করে তোলার জন্য।

শুধু হু হু করে উত্তর দেওয়া ছাড়া বেচারা আর কোন শব্দ খুজে পায়নি। ডিনার শেষে হাসি মুখে প্রিয়া বিদায় নিল। প্রিয়াকে ঢাকা শহরে ঘোড়াঘুড়ি করার যেকোন সাহায্যের ওছিলায় ফোন নাম্বার দেওয়া হাস্যজল আমি আর চোখমুখ শক্ত করে বের হওয়া রুস্তম গাড়িতে উঠলাম। শুরু হল তার কথামালার বর্ষন। কেন সে বোকার মত আমার মত একজন সুপুরুষ কে সাথে এনেছে।

আমি কেন অ্যাত্ত সুন্দর ড্রেসআপ করেছি, ইত্যাদি ইত্যাদি। প্রিয় পাঠক, আমি এই লেখাটা আমেরিকার আমার বাসা থেকে লিখছি। প্রিয়া আমার জন্য আজ পায়েস রাধছে রান্নাঘরে। ইসশ রুস্তমটা এখানে থাকলে ওকে দাওয়াত দেওয়া যেত। সেও যে পায়েস বড্ড পছন্দ করে।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।