আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

অস্থির সময়,অস্থির ভাবনা!!!

নিঃসঙ্গতায় একশ বছর :( :( :( ভয়াবহ দুঃস্বপ্ন দেখে ঘুমটা ভাঙলো। সিলিঙের দিকে তাকিয়ে শুয়ে আছি। শুয়ে শুয়ে দুঃস্বপ্নটার মানে বোঝার চেষ্টা করে যাচ্ছি। জলজ্যান্ত দুটো মানুষ খুন করে বসেছি!!!কি অপরাধ ছিলো মানুষগুলোর। নিষ্পাপ মানুষকে খুন করে ফেললে বিবেক আমাকে কখনো মুক্তি দিবে না।

কিন্তু হাসান সাঈদ কিংবা পরিমলকে খুন করতে পারলে হয়তো একটা মানসিক শান্তি পাবো। অস্থির সময়,অস্থির ভাবনা গত কয়েকদিন ধরেই সময়টা ভালো যাচ্ছে না। কেমন যেন সবকিছু এলোমেলো!পরিমলের ঘটনাটা প্রথম শুনলাম রাজুর মুখে। অনেকক্ষণ বিষোদাগার করে হঠাৎ করে বলে উঠলো,পরিমল হারামজাদা কি মাস্তিটা করসে একবার চিন্তা করে দেখ?এসব বাল-সাল চাকরী না কইরা ভাবতেসি গার্লস স্কুলের মাস্টারী করমু(মুখে ক্রুর হাসি)। আমার মনে হচ্ছিলো পরিমল আমার সামনে দাড়িঁয়ে আছে! দাঁত ব্রাস করে আয়নার সামনে দাড়িঁয়ে আছি।

আয়নার দিকে স্থির দৃষ্টিতে তাকিয়ে ভাবছি....মেয়েটার রেপ হওয়ার পুরো সিন। বাচ্চাটার অসহায়ত্ব এবং পরিমলের বিজয়োল্লাস। আবার রাজুর কথা মনে পড়ে গেলো। তাইতো গার্লস স্কুল কিংবা কলেজের মাস্টারী করলে এরকম অনেক ইজি চান্স পাওয়া যাবে। এবার আয়নার নিজের প্রতিবিম্বটাকে পরিমলের প্রতিবিম্ব হয়ে যেতে দেখছি।

মনুষ্যত্ব এবং পশুত্ব মাঝে মাঝে খুব বাজে ভাবে নিজের পশুত্বটাকে মাথা চাড়া দিয়ে উঠতে দেখি। কিংবা নিয়ম ধরে চলা মধ্যবিত্ত ঘরের ছেলে বলেই হয়তো একপ্লোর করতে পারিনি। এর সবচে বেসিক কারণ খুজঁতে গেলে যেটা তা হলো একটার মহিলার জন্য পশুত্বটাকে একপ্লোর করা শিখতে পারিনি। সে মহিলাটা হচ্ছেন আমার জন্মদাত্রী। আমার মা।

আচ্ছা পরিমলের মা কি বেচেঁ আছেন?উনি কি ছেলের অপকর্মের কথা শুনেছেন?আমার মা কিংবা পরিমলের মা কি ভিন্ন কিছু?মা অসম্ভব আবেগের জায়গা। কোনো ছেলেকে ইনসাল্ট করতে ঝেড়ে বলে ফেলো "তোর মা....."। আমার ধারণা পরিমলকে এ গালি দিলে তার মতো পশু ক্ষেপে উঠবে। পৃথিবীতে এমন কোনো ছেলে পাওয়া যাবে যে মা'কে নিয়ে গালি শুনতে চায়। কিন্তু ছেলেদের প্রধান গালি শুত্রুপক্ষের মা'কে জড়িয়ে....হা হা হা....কি অদ্ভুদ!!!সব দোষ মায়েদের কারণ সে এরকম পশুদের জন্ম দিয়েছে।

হিপোক্রেসীর মাত্রা পৃথিবীর সব মানুষ কম-বেশী হিপোক্রেট। কেউ কম আবার কেউ হয়তো একটু বেশী। কারো হিপোক্রেসী হয়তো হার্মলেস আবার কারোটা হয়তো হার্মফুল। সবকিছু একঘেয়ে লাগে। তাই ভেরিয়েসনের জন্য সবকিছুর কাছ থেকে সাময়িক স্বেচ্ছা নির্বাসন।

তবু ও হট ইস্যু গুলোতে হিপোক্রসী দেখার লোভ সামলাতে না পেরে ঢু মারি সোসাল সাইট গুলোতে। নিঃসঙ্গ জীবনে পাব্লিক মেনটালিটি বোঝার এরচে ভালো কোনো উপায় নেই। কিছু মানুষের পরিমলকে গালি দেওয়া পোস্ট এবং পোস্টের কমেন্ট দেখে মনে হচ্ছিলো "পরিমল নিজেই নিজের স্যাটায়ার লিখেছে!!!"। পোস্টের কিংবা স্ট্যাটাসের কিংবা কমেন্টের প্রতিটি অক্ষরে লেপ্টে আছে বিকৃত যৌন সুখানুভূতি। মানুষ হওয়া পরিচিত সুন্দরী এক মেয়ে বলছিলো--জীবনে খুব বড় একটা আফসোস রয়ে গেলো "মানুষ হতে পারলাম না,মেয়ে হয়েই থাকলাম।

"সে যখন বলছিলো তখন তার মুখশ্রী সুস্পষ্ট অদৃষ্য যন্ত্রণার ছাপ। -সৌন্দর্যটাই আমার কাল হলো। কোনোদিন ভালো বন্ধু পাওয়া হয়নি। কোনোদিন সত্যিকারের ভালোবাসা পাওয়া হয়নি। সবাই শুধু আমার শরীরটাই চেয়েছে।

আমি এখন কনফিউসড "ভালোবাসা মানে কি আসলেই কোনো মনের ব্যাপার নাকি পুরোটাই শারীরিক?!" অফিস একটু আগে ভাগেই শেষ হয়েছে তাই একা পা ঝুলিয়ে বসে আছি ধানমন্ডি লেকের পাড়ে। ভাবছি,আমি ও মানুষ হতে পারিনি!হয়েছি ছেলে। সেই সকাল বেলা সাইট থেকে মেয়ে কলিগের কার্বটা দেখেছিলাম কিন্তু এখনো ছবির মতো সেটা চোখে ভাসছে। ও নো!!!আবারো পরিমল আমার উপর ভর করছে। আবার নিজের মনকে বোঝাতে শুরু করি---"আমি ইনোসেন্ট কারণ আমি এখনো পশুত্ব এক্সপ্লোর করতে পারিনি।

" রাত ১২টার সময় সিগারেট নিতে বের হলাম। বাসার আশে-পাশের দোকান গুলো খুব তাড়াতাড়ি বন্ধ হয়ে যায়। কোনোদিন ভূল করে করে সিগারেত নেয়া না হলে হেটেঁ অনেকদূর গিয়ে নিঃসঙ্গতার একমাত্র সঙ্গীটাকে নিয়ে আসতে হয়। শূণ্য রাজপথে হাঁটতে আমার ভালোয় লাগে। শুধু ফুটপাতের বিব্রতকর,অস্বস্তিকর দৃশ্য গুলোয় মজাটা মাটি করে দেয়।

এই ছোটো লোক গুলোকে মেরে ফেললেই হয়। এদের ফুটপাতে শুয়ে থাকা এবং ডাস্টবিনের ময়লা তুলে খাওয়ার দৃশ্যে আমাকে আবার "নিজের মানুষ হয়ে ওঠা না ওঠা বিষয়ক বিতর্কের দিকে ঠেলে দেয়!!" সিগারেট নেয়া শেষে বাসায় ফেরার সময় কানের কাছে ঐ মাল মেয়েটার কথা মনে পড়ছে এবং বার বার কানে বেজে চলেছে "আমি মেয়ে হলাম,মানুষ হতে পারলাম না"। বাসার গেটে এসে নিজের অজান্তেই মুখ ফসকে বলে ফেললাম "আমি পুরুষ হলাম কিন্তু মানুষ হতে পারলাম না!!!" ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।