আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

শাহবাগ গনজাগরন মঞ্চের অবস্থান সঠিক ছিল

শাহবাগ গনজাগরন মঞ্চের অবস্থান ও দাবিসমুহ সঠিক প্রমানিত হয়েছে। অ্যামিকাস কিউরি হিসেবে প্রখ্যাত আইনজীবী রফিক-উল হক ও এম আমীর-উল ইসলাম, রোকনউদ্দিন মাহামুদ সহ কয়েকজনের আদালতে দাখিল করা লিখিত বক্তব্যে এ মত উঠে এসেছে। গনজাগরন মঞ্চের মুল দাবি ছিল কাদের মোল্লার সর্বচ্চ শাস্তি (ফাসি) এর জন্য যা যা দরকার তা করতে হবে। অর্থাৎ প্রয়োজনিয় আইন প্রনয়ন, সংশোধন করে সরকারের আপিল ক্ষমতা অর্জন ও এই আইন কাদের মোল্লার উপর প্রয়োগ করে সর্বচ্চ শাস্তি নিশ্চিত করা। সরকার দ্রুততার সাথে একমাসের মধ্যে আইনগুলো প্রনয়ন ও সংশোধন করে।

কিন্তু উচ্চ আদালত এই আইন কাদের মোল্লার উপর এই আইন প্রয়োগ করতে দ্বিধাগ্রস্থ হয়। এব্যাপারে পরামর্শ চাইতে আদালত ৭ জন অ্যামিকাস কিউরি নিয়োগ দেন। যাদের দুজন বাদে প্রায় সবাই আওয়ামী বিরোধী, কিছু বিএনপি-জামাত সমর্থক হিসেবে পরিচিত। এরা রফিকুল হক, টি এইচ খান, হাসান আরিফ .. ইত্যাদি। ৭ জন অ্যামিকাস কিউরিদের কাছে দুটি প্রশ্ন করা হয় - ১।

দণ্ড ঘোষণার পর আইনে আনা সংশোধনী কাদের মোল্লার ক্ষেত্রে প্রযোজ্য কি না? ২। আন্তর্জাতিক অপরাধ (ট্রাইব্যুনালস) আইন, ১৯৭৩-এর অধীনে গঠিত আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে প্রথাগত আন্তর্জাতিক আইন প্রযোজ্য হবে কি না? কিন্তু সবাইকে অবাক করে দিয়ে প্রখ্যাত আইনজীবী ব্যারিষ্টার রফিক-উল হক এই আইনটির প্রশংসা করেন এবং কাদের মোল্লার উপর এই নতুন আইন প্রয়োগ করতে কোন বাধা নেই বলে মত দেন। রফিক-উল হকের বক্তব্যে বলা হয়, ২০১৩ সালে আন্তর্জাতিক অপরাধ (ট্রাইব্যুনালস) আইনের ২১ ধারায় যে সংশোধনী আনা হয়েছে। তা বৈধ ও সংবিধানসম্মত। এই সংশোধনী ২০০৯ সালের ১৪ জুলাই থেকে তা কার্যকর বলে গণ্য হবে।

সংবিধানের ৪৭(৩) অনুচ্ছেদে আইনটিকে সুরক্ষা দেওয়া আছে। নতুন ধারা অনুসারে, কাদের মোল্লার দণ্ডাদেশের বিরুদ্ধে অধিকার হিসেবে সরকার আপিল করতে পারে। রফিক-উল হক এর মত প্রখ্যাত আইনজীবীর মত প্রকাশের পর অন্য অ্যামিকাস কিউরিদের ভিন্ন মত দিবেনা বলেই মনে হয়েছিল। অ্যামিকাস ব্যারিষ্টার আমিরুল ইসলাম ও মাহামুদুল ইসলাম আদালতে একই মত দিলেন। বললেন, পৃথিবীতে এ পর্যন্ত যত ট্রাইব্যুনাল আইন হয়েছে, সেসব ক্ষেত্রে ভূতাপেক্ষ কার্যকারিতা দেওয়া হয়েছে।

অর্থাৎ আইন তৈরি হয়েছে অপরাধ সংঘটনের পরে। গতকাল ব্যারিষ্টার রোকনউদ্দিন মাহামুদও অন্যদের মত একই মত প্রকাশ করলেন। কিন্তু আশ্চর্যের ব্যাপার অ্যামিকাস ব্যারিষ্টার টি এইচ খান সবাইকে অবাক করে দিয়ে ভিন্নমত প্রকাশ করলেন, দলবাজির উর্ধে উঠতে পারলেন না ব্যারিষ্টার সাহেব! তিনি বললেন - "কাদের মোল্লার বিরুদ্ধে ট্রাইব্যুনাল রায় ঘোষণা করে ৫ই ফেব্রুয়ারি। তার মৃত্যুদণ্ড চেয়ে শাহবাগে আন্দোলন শুরু হয়। প্রবল আন্দোলনের প্রেক্ষিতে ১৮ই ফেব্রুয়ারি ট্রাইব্যুনাস আইন সংশোধন আনা হয়।

এ সংশোধনে যে কোন দণ্ডের বিরুদ্ধে সরকারকে আপিল দায়েরের সুযোগ দেয়া হয়। কিন্তু এর আগেই কাদের মোল্লার মামলার বিচারিক কার্যক্রম শেষ হয়ে যাওয়ায় তার বিরুদ্ধে এ সংশোধনী প্রয়োগের সুযোগ নেই"। এটা প্রতিষ্ঠিত নীতি যে, দেশীয় এবং আন্তর্জাতিক আইনের ক্ষেত্রে বিভেদ দেখা দিলে দেশীয় আইনই প্রাধান্য পাবে। সাধারণত দেশীয় আদালত দেশীয় আইন অনুসরণ করে। কিন্তু যেসব ক্ষেত্রে দেশীয় আইন পূর্ণাঙ্গ নয়, যেসব ক্ষেত্রে দেশীয় আইনে অস্পষ্টতা রয়েছে সেসব ক্ষেত্রে দেশীয় আদালত আন্তর্জাতিক অঙ্গনের মীমাংসিত সিদ্ধান্ত অনুসরণ করতে পারে।

গত বিএনপি-জামাত সরকারের এটর্নি জেনারেল এডভোকেট হাসান আরিফও টি এইচ খানের সাথে সুর মিলিয়ে এর বিরোধিতা করলেন! সমস্যা নেই, যেহেতু বেশীরভাগ (৫ জন) অ্যামিকাস পক্ষে মতামত ব্যক্ত করেছে তাই সংশোধনিটি বহাল হয়ে আইনে পরিনত হবে নিশ্চিত। এই সংশোধনি আইনটি নিয়ে উচ্চ আদালত একটু দ্বিধাগ্রস্থ ছিল, পরে যাতে কোন বিতর্ক না উঠে এবং আরো স্বচ্ছতার জন্য এক্সপার্ট অভিমত চেয়েছিল। তাই অ্যামিকাস কিউরি হিসেবে গত ২০ জুন ৭ জন সিনিওর আইনজিবী নিয়োগ দেয় আপিল বিভাগ। এরা হচ্ছেন ব্যারিস্টার টিএইচ খান, ব্যারিস্টার রফিক-উল হক, ব্যারিস্টার এম আমীর-উল ইসলাম, এডভোকেট মাহমুদুল ইসলাম, ব্যারিস্টার রোকনউদ্দিন মাহমুদ, ব্যারিস্টার আজমালুল হোসেন. কিউসি, এডভোকেট এএফ হাসান আরিফ। গনজাগরন মঞ্চের দাবির আগে কোনো অভিযোগে আসামির অপর্যাপ্ত সাজা হলে তার বিরুদ্ধে আপিলের কোন সুযোগ ছিল না সরকারপক্ষের।

ধন্যবাদ গনজাগরন মঞ্চ। সাপোর্টিং লিঙ্ক http://www.prothom-alo.com/detail/news/366485 http://www.mzamin.com/details.php? http://www.prothom-alo.com/detail/news/366631 http://www.mzamin.com/details.php?nid=NjM2MzQ=&ty=MA==&s=Mjc=&c=MQ== ।

সোর্স: http://www.somewhereinblog.net     দেখা হয়েছে বার

এর পর.....

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.