আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

আনন্দবাজার পত্রিকা : হাসিনা সরকারের জনপ্রিয়তার পারদ নিম্নমুখী : নির্ভরতা বাড়ছে ভারতের ওপর

ক্ষমতার আড়াই বছর পার না হতেই শেখ হাসিনা সরকারের জনপ্রিয়তার পারদ যে নিম্নমুখী, এটা সবাই স্বীকার করেন। এই প্রতিকূল পরিস্থিতিতে হাসিনা সরকার ভারতের ওপর আরও নির্ভরশীল হয়ে পড়েছে। গতকাল ভারতের পশ্চিমবঙ্গের সর্বাধিক প্রচারিত বাংলা দৈনিক আনন্দবাজার এই খবর দিয়েছে। আনন্দবাজার পত্রিকা জানায়, মসৃণতার ঠিক উল্টোপথে হাঁটছে শেখ হাসিনার রাজনৈতিক জীবন। সেখানে ভরপুর খানাখন্দ, যা হরতালে আরও একবার স্পষ্ট।

বস্তুত আড়াই বছর পার না হতেই হাসিনা সরকারের জনপ্রিয়তার পারদ যে নিম্নমুখী, তা এক কথায় সবাই স্বীকার করছেন। খুব সুখে নেই হাসিনা সরকার। আনন্দবাজারের প্রথম পাতায় ‘হরতালে ঢাকায় নেমে সমস্যায় জেরবার হাসিনাকে আশ্বাস কৃষ্ণের’ শীর্ষক প্রকাশিত রিপোর্টে বলা হয়েছে, বিরোধীদলীয় নেত্রী বেগম খালেদা জিয়া ক্রমেই আক্রমণাত্মক হয়ে উঠছেন। গত বছর ১৩ নভেম্বর হাইকোর্টের এক রায়কে হাতিয়ার করে খালেদা জিয়াকে সেনানিবাসের বাড়ি থেকে রাতারাতি বের করে দিয়েছে সরকার। এক কাপড়ে সেখান থেকে চলে গিয়েছিলেন তিনি।

তার দুই ছেলেকেও কাঠগড়ায় তুলেছে হাসিনা সরকার। ২১ আগস্টের মামলায় খালেদার বড় ছেলে তারেক রহমানকে অভিযুক্ত করেছে সরকার। ছোট ছেলে আরাফাত রহমানের বিরুদ্ধে নানা অভিযোগ তুলে দেয়া হয়েছে ৬ বছরের সাজা। খালেদার নিজের বিরুদ্ধেও ঝুলছে কুড়িটির মতো মামলা। এ অবস্থায় ক্ষিপ্ত বিএনপি সংসদ-বয়কট প্রত্যাহার করতে রাজি নয়।

শুধু তা-ই নয়, সরকারের ওপর চাপ বাড়াতে রাস্তায় নেমে পড়েছেন তারা। পাশাপাশি সম্প্রতি নিরপেক্ষ তদারকি সরকারের (তত্ত্বাবধায়ক সরকার) তত্ত্বাবধানে ভোটগ্রহণ বাতিল করে দিয়েছে হাসিনা সরকার। আর তাই নিয়ে হরতালের ডাক দিয়েছে বিএনপি ও সহযোগী দলগুলো। তাদের আশঙ্কা, এ নিয়ম উঠে গেলে তাদের হয়তো আগামী ভোটে অংশ নেয়াই অসম্ভব হয়ে পড়বে। বিএনপির বক্তব্য, এভাবে রাজনৈতিক নিরপেক্ষতাকে বিসর্জন দেয়া হয়েছে।

আমজনতার মধ্যে এই তদারকি সরকারের নেতৃত্বে ভোট করার ব্যাপারে সমর্থন রয়েছে। বিরোধী দলের আন্দোলনই শুধু নয়, হাসিনা সরকারের মাথাব্যথার আরও কারণ রয়েছে। আওয়ামী লীগের আড়াই বছরের শাসনকালে শেয়ার কেলেঙ্কারির মতো ঘটনা হয়েছে, টেন্ডার নিয়ে দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে, দলীয় কোন্দল দেখা দিয়েছে। আওয়ামী লীগের কাউন্সিলে বাঘা বাঘা নেতাদের ওয়ার্কিং কমিটি থেকে বের করে যে ‘নতুনের জয়ধ্বনি’ দেয়া হয়েছিল, দু’বছরের মধ্যে তা-ও যথেষ্ট জট পাকিয়েছে। প্রবীণ এবং নবীনের সংঘাত ঘোচাতে হাসিনা ব্যস্ত হয়ে পড়েছেন।

বাংলাদেশকে ধর্মনিরপেক্ষ রাষ্ট্র করার নির্দেশ দিয়েছিল দেশের সুপ্রিমকোর্ট। কিন্তু সেই নির্দেশ কার্যকর করার রাজনৈতিক সাহস দেখাতে পারেননি হাসিনা। উল্টো বাংলাদেশকে ইসলামী রাষ্ট্র রাখার কথাই ঘোষণা করেছেন তিনি। এর মধ্যে সরকার এবং দলের মধ্যেও দূরত্ব বেড়েছে। সব মিলিয়ে দিল্লিতে মনমোহন সিংহের ইউপিএ-২ সরকার যেমন গত দু’বছরে হাজার সমস্যায় জর্জরিত, ঢাকায় হাসিনা সরকারেরও তেমনই অবস্থা।

এই প্রতিকূল পরিস্থিতিতে হাসিনা সরকার যে ভারতের ওপর আরও নির্ভরশীল হয়ে পড়েছে, সেটা বুঝতে অসুবিধা হয় না। রিপোর্টে আরও বলা হয়েছে, ২০০৮-এর জাতীয় নির্বাচনে তিন-চতুর্থাংশ ভোটে বিজয়ী আওয়ামী লীগ বিগত পৌর ও উপনির্বাচনে বড় ধরনের হোঁচট খেয়েছে। এই দুটি ভোটের চোট সামলাতে না সামলাতে ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনেও বড় ধরনের বিপর্যয়ের মুখে পড়তে হয়েছে তাদের। দলীয় ও প্রশাসনিক শক্তি কাজে লাগিয়ে আশানুরূপ ফল আওয়ামী করতে পারেনি। এ অবস্থায় ভারতের ওপর তাদের অসন্তোষ ও অভিমান বেড়েছে।

ভারতের প্রশাসনিক লালফিতার ফাঁস বাংলাদেশ সরকারের অসহিষ্ণুতাও বাড়িয়েছে। ভারতের প্রতি বাংলাদেশের উষ্মার সঙ্গে যোগ হয়েছে জামায়াত সম্পর্কে প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিংহের সাম্প্রতিক মন্তব্য নিয়ে বিতর্কও। ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.