আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

আনন্দবাজার মার্কেট দখল নিয়ে ত্রিমুখী সংঘর্ষ গুলিবিদ্ধ ১০

রাজধানীর চানখাঁরপুলে আনন্দবাজার মার্কেট দখলকে কেন্দ্র করে গতকাল ত্রিমুখী সংঘর্ষে রণক্ষেত্রে পরিণত হয় ওই এলাকা।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) শিক্ষার্থী, যুবলীগ-শ্রমিক লীগ নেতা-কর্মী ও পুলিশের মধ্যে দফায় দফায় হামলা পাল্টা হামলার ঘটনা ঘটে। উত্তেজিত শিক্ষার্থীরা একটি বাসে আগুন দেওয়া ছাড়াও বেশ কয়েকটি গাড়িতে ভাঙচুর চালান। পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে টিয়ার গ্যাস শেল ও রাবার বুলেট ছোড়ে। অন্তত ১০ শিক্ষার্থী গুলিবিদ্ধসহ ২৫ জন আহত হয়েছেন।

পুলিশ জানায়, বেলা সাড়ে ১১টা থেকে আড়াইটা পর্যন্ত থেমে থেমে সংঘর্ষ চলে। আহতদের ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

গুলিবিদ্ধরা হলেন উদ্ভিদ বিজ্ঞানের ছাত্র সোহাগ, রাশেদ, মাসুদ ও রিফাত, ভূতত্ত্ব বিভাগের শিবলী জামান, পরিসংখ্যান বিভাগের সজীব, ফলিত রসায়ন বিভাগের সুমন এবং অন্যান্য বিভাগের রনি, মুরাদ ও মোতালেব। সংঘর্ষের সময় ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের জরুরি বিভাগের গেট প্রায় আধাঘণ্টা বন্ধ রাখা হয়। এতে রোগী ও তাদের স্বজনরা চরম দুর্ভোগে পড়েন।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, রেলওয়ের জমির ওপর অবৈধভাবে প্রতিষ্ঠিত আনন্দবাজার মার্কেটের দখল নিতে ৩৪ নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগ সভাপতি মীর ছমিরের লোকজন অবস্থান নেন। ফুলবাড়িয়া বাসস্ট্যান্ড শ্রমিক লীগের সভাপতি খায়ের হোসেন বাচ্চুর নেতৃত্বে শ্রমিক লীগ ও যুবলীগের কর্মীরাও অস্ত্রশস্ত্রে সজ্জিত হয়ে তাদের সঙ্গে যোগ দেন। দোকান মালিকদের সঙ্গে একপর্যায়ে তাদের সংঘর্ষ শুরু হয়। এ সময় অমর একুশে হলের সামনের একটি রেস্তোরাঁয় শহীদুল্লাহ হলের শিক্ষার্থী ও ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় বিজ্ঞান ও তথ্য-প্রযুক্তি সম্পাদক রাশেদসহ কয়েকজন খাচ্ছিলেন। হোটেল থেকে বের হওয়ার পর শ্রমিক লীগ ও যুবলীগ কর্মীরা তাদের দোকান মালিক ও দোকানদারদের পক্ষ মনে করে পরিচয় জানতে চান।

কথা কাটাকাটির একপর্যায়ে যুবলীগ কর্মী বাচ্চু রাশেদের কলার ধরে টানাহেঁচড়া করলে হাতাহাতি হয়। বাচ্চু রাশেদকে চলে না গেলে অস্ত্র উঁচিয়ে গুলি করার হুমকি দেন। খবর পেয়ে শহীদুল্লাহ হল ও অমর একুশে হল থেকে শিক্ষার্থীরা লোহার রড-লাঠি নিয়ে জড়ো হয়ে শ্রমিক ও যুবলীগ কর্মীদের ধাওয়া দেন। উভয় পক্ষের মধ্যে ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া ও সংঘর্ষ শুরু হয়। পরে শিক্ষার্থীরা হামলার প্রতিবাদে একুশে হলের সামনে ও চানখাঁরপুল মোড়ে সড়ক অবরোধ করেন।

পুলিশ অবরোধ তুলে নিতে বললে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে তাদের বাকবিতণ্ডা হয়। পরে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রক্টর এ এম আমজাদ অবরোধ তুলে নেওয়ার জন্য শিক্ষার্থীদের সঙ্গে আলোচনা করেন। কিন্তু প্রক্টরের সামনেই পুলিশ হঠাৎ শিক্ষার্থীদের ওপর লাঠিচার্জ শুরু করে এবং নির্বিচারে রাবার বুলেট ছোড়ে। শিক্ষার্থীরা হলের ভেতরে ঢুকে পড়েন। পরে তারা দোয়েল চত্বর মোড়, চানখাঁরপুল মোড় ও আনন্দবাজার মোড় অবরোধ করেন।

উত্তেজিত শিক্ষার্থীরা চানখাঁরপুল এলাকায় ডি-লিংক পরিবহনের একটি যাত্রীবাহী বাসে আগুন ধরিয়ে দেন।

ভারপ্রাপ্ত প্রক্টর আমজাদ আলী বলেন, 'পরিস্থিতি শান্ত থাকার পরও পুলিশ অনুমতি ছাড়াই শিক্ষার্থীদের ওপর রাবার বুলেট ছুড়েছে। তারা পরিকল্পিতভাবে এ কাণ্ড ঘটিয়েছে। এ ধরনের ঘটনার জন্য পুলিশের ঊধর্্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আমরা কথা বলেছি। তারা জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন।

'

শাহবাগ থানার পরিদর্শক (তদন্ত) এম এ জলিল বলেন, 'রেলওয়ের কর্মচারীরা আনন্দবাজার মোড়ে সাইনবোর্ড বসাতে যায়। স্থানীয় লোকজন বাধা দেয়। এ সময় সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। স্থানীয় লোকজনের সঙ্গে শিক্ষার্থীরাও যোগ দিলে ত্রিমুখী সংঘর্ষ শুরু হয়। পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে টিয়ার শেল ও রাবার বুলেট ছোড়ে।

কাউকে আটক করা হয়নি। '

 

 

সোর্স: http://www.bd-pratidin.com/

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.