আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

মানুষের চাহিদা ও প্রত্যাশা-

মানুষের চাওয়া-পাওয়ার শেষ নেই-একথা ঠিক, তারপরও বলতে হয়, একজন মানুষের কত লাগে? তার চাওয়া-পাওয়ার কি শেষ নেই? সে কত ভোগ করতে পারে? যারা অতি ভোজন করে তাদের সম্পর্কে আল্লাহ তা‘আলা বলেন: “কিন্তু যারা কুফরী করে তারা ভোগ-বিলাসে মত্ত থাকে এবং জন্তু-জানোয়ারের ন্যায় উদরপূর্তি করে, জাহান্নামই তাদের ঠিকানা”। (সূরা মুহাম্মদ : ১২) মহানবী (সা.) বলেছেন: ‘‘মানুষ পেটের চেয়ে নিকৃষ্ট কোন পাত্র ভর্তি করে না। মেরুদণ্ড সোজা করে রাখার মত কয়েক গ্রাস খাদ্যই আদম সন্তানের জন্য যথেষ্ট। তার চেয়েও বেশী যদি দরকার হয় তবে পাকস্থলীর এক তৃতীয়াংশ খাদ্যের জন্য, এক-তৃতীয়াংশ পানীয়ের জন্য এবং এক-তৃতীয়াংশ শ্বাস-প্রশ্বাসের জন্য রাখবে”। (তিরমিযী) মানুষের বেশী পাওয়ার আশা-আকাক্সক্ষা তাকে পথভ্রষ্ট করে, আল্লাহকে ভুলিয়ে দেয়।

কেননা মহানবী (সা.) বলেছেন: “বকরীর পালে দুটি ক্ষুধার্ত নেকড়ে বাঘ ছেড়ে দিলে তা যতটুকু না ক্ষতি করে, কারো সম্পদ ও প্রতিপত্তির লোভ এর চেয়েও অনেক বেশী তার দীনের ক্ষতি সাধন করে”। (তিরমিযী) অধিক উপার্জনের তীব্র লালসা অধিকাংশ ক্ষেত্রে মানুষকে বিপদগ্রস্ত করে তোলে। কারণ লোভের কারণে অনেক সময় হালাল-হারামের বাছ-বিচার করা সম্ভব হয় না। এর ফলে কেবল পরকালে শাস্তির সম্মুখীন হতে হবে তাই নয়, কখনো কখনো দুনিয়াতে জেল-জরিমানা ইত্যাদির মাধ্যমে সম্মান হানিকর পরিস্থিতিরও সম্মুখীন হতে হয়। হারাম উপার্জনের অনিষ্টতা সম্পর্কে মহানবী (সা.) বলেছেন: “এ পার্থিব ধন-সম্পদ হলো সবুজ-শ্যামল, মনোরম ও মধুময়।

যে ব্যক্তি বৈধ উপায়ে তার প্রয়োজন মাফিক তা গ্রহণ করে তার জন্য তাতে বরকত দেয়া হয়। এমন অনেক লোক আছে যারা আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের দেয়া এই সম্পদ স্বেচ্ছাচারী পন্থায় ভোগ-ব্যবহার করে কিয়ামতের দিন তাদের জন্য জাহান্নাম ছাড়া আর কিছুই নেই। ” (তিরমিযী) কিছু কিছু ক্ষেত্রে মানুষ বুঝে ওঠতে পারে না যে, এক শ্রেণীর লোক ইবাদতও করছে আবার তারাই হারাম-হালাল বাছ-বিচার না করে দুই হাতে টাকা-কড়ি হাতিয়ে নিচ্ছে। বিষয়টি বিষ্ময়করই বটে। এর কারণ হচ্ছে, এ শ্রেণীর লোক ইবাদত বলতে নির্দিষ্ট কিছু কাজ-কর্মকে বুঝাতে চায়, তারা দুনিয়া ও আখিরাতকে অভিন্ন করে দেখে না, তারা দীনদারী ও দুনিয়াদারী ভিন্ন ভিন্ন মনে করে।

অথচ একজন লোক মুসলিম হিসাবে যে সব কাজ করে তা সবই ইবাদত হিসাবে গণ্য। হাদীসে বলা হয়েছে: “রাসূলুল্লাহ (সা.) আবু হুরায়রা (রা.)-কে লক্ষ্য করে বলেছেন: “তুমি হারামসমূহ ত্যাগ করলে লোকদের মধ্যে সর্বাপেক্ষা বড় আবিদ (ইবাদতকারী) হিসাবে গণ্য হবে; আল্লাহ তোমার অদৃষ্টে যা নির্ধারিত করে রেখেছেন তাতে সন্তুষ্ট থাকলে লোকদের মধ্যে সবচেয়ে স্বনির্ভর হতে পারবে; প্রতিবেশীর সাথে সৌজন্যমূলক আচরণ করলে প্রকৃত মুমিন হতে পারবে; নিজের জন্য যা পছন্দ কর, অপরের জন্যও তা-ই পছন্দ করলে প্রকৃত মুসলমান হতে পারবে এবং বেশী হাসবে না। কেননা অতিরিক্ত হাসি-কৌতূক অন্তরকে মেরে ফেলে”। (তিরমিযী) কাজেই লোভ-লালসা পরিহার পূর্বক হালাল পন্থায় সম্পদ উপার্জন করা দূষণীয় নয় বরং ইবাদত এবং এ জন্য ইসলাম বিশেষভাবে উৎসাহিতও করে। কিন্তু হারাম যেন আমাদেরকে কোন অবস্থায় স্পর্শ করতে না পারে সে ব্যাপারে অবশ্যই সতর্ক থাকতে হবে।

কেননা মহানবী (সা.) সতর্ক করে দিয়ে বলেছেন: ‘‘যে দেহের গোশ্ত হারাম মাল দ্বারা গঠিত তা জান্নাতে প্রবেশ করবে না এবং হারাম মালে গঠিত প্রত্যেক দেহের জন্য জাহান্নামই সর্বাধিক উপযুক্ত (স্থান)”। (আহমাদ) ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.