আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

TREND নাকি অজ্ঞতা ?

সম্প্রতি কিছু ব্যাপার আমাদের দেশে বেশ আলোচিত সমালোচিত হচ্ছে। যারা ব্যাপারগুলো অপছন্দ করেন তারা বলছেন দেশীয় সংস্কৃতিকে পাশ কাটিয়ে অপসংস্কৃতির চর্চা হচ্ছে । আর যারা এসব ব্যাপারের সমর্থক তারা নিন্দুকের নিন্দা শুনে কে, এমন ভাব নিয়ে চলছেন। এরকম অনেক ব্যাপারের একটি হচ্ছে হিপহপ বা র‌্যাপিং । যদিও হিপ হপ এবং র‌্যাপিং সমার্থক হিসেবে ব্যবহৃত হয় কিন্ত এদের মধ্যে কিছুটা পার্থক্য আছে ।

যাহোক পার্থক্য সূচিত করা আমাদের মূল লক্ষ্য নয় ,আমাদের আজকের লেখার কাহিনী অন্য জায়গায়। সাম্প্রতিক সমযে আমাদের দেশে অনেক র‌্যাপ ক্রু এখন গড়ে উঠেছে। এমন একটা সময় ছিল যখন ধানমন্ডির কিছু ছেলেরাই বিদেশী র‌্যাপ গান শুনতো , সেখানে স্তোয়িক ব্লিস এর পথ ধরে র‌্যাপিং করছে । র‌্যাপিং বা এমসিইং এর সাথে সাথে কিছু ভালোমানের ডিজেইং ও হচ্ছে । মোটামুটি ভাবে অল্প সময়ের ব্যবধানে যে বাংলাদেশী হিপ-হপ কালচার তৈরী হবে তাতে আমরা যথেষ্ঠ আশাবাদী।

আমরাও চাই আমাদের হিপ-হপ কম্যুনিটি দি লাস্ট পয়েটদের মতো একটা গণজাগরণ সৃষ্টি করবে। তবে যে জিনিসটা আমার সবচেয়ে বেশী খারাপ লাগে তা হলো যে অধিকাংশ র‌্যাপক্রু আসলে জানেনা ল্যাপ করা বা এমসিইং বলতে আসলে কি বুঝায় ? অনেকেই বুঝেনা হিপ-হপ কম্যুনিটির দর্শনটা কোন ভিত্তির উপর দাড়ানো। কোন কিছু না বুঝে শুধুমাত্র হলিউড নির্ভর সিনেমা আর মিউজিক ভিডিও দেখে এমন কিছু আনুষঙ্গিক কর্মকান্ড করছে যা দেখে হিপহপের আদি গুরু “দি লাস্ট পয়েট” যে চারবার করে অজ্ঞান হতো এতে কোন সন্দেহ নেই। বস্তুত হিপহপ সংস্কৃতির বীজবপন করে দি লাস্ট পয়েটরা । হিপ-হপ বুঝতে হলে আমাদেরকে ষাটের দশকের আমেরিকায় ফিরে যেতে হবে।

য়খন সবে মাত্র কালোরা তাদের অধিকার সম্বন্ধে সচেতন হওয়া শুরু করছে । যখন মার্টিন লুথার কিং তার March on Washington for Jobs and Freedom পরিচালনা করেন ,যখন ম্যালকম এক্স তার তেজস্বী ভাষণের মাধ্যমে আফ্রো-মার্কিন জনগোস্ঠীর মাঝে ক্রীতদাসের মানসিকতা পরিহার করার জন্য প্রচেষ্টা চালাচ্ছেন এমন প্রেক্ষাপটে দি লাস্ট পয়েট গঠিত হয় । যদিও লাস্ট পয়েট গঠন করেন Felipe Luciano, Gylan Kain, ও David Nelson কিন্তু একে জনপ্রিয় করে তোলে Jalal Mansur Nuriddin, Umar Bin Hassan, ওAbiodun Oyewole । এটা হচ্ছে সেই লাস্ট পয়েট যারা ব্যাপক জনপ্রিয়তা নিয়ে তাদের যাত্রা শুরু করে । তারা যে নতুন ধারা সৃষ্টি করে তা ছিল কবিতা আর আঘাত করে বাজানো হয় এমন বাদ্যযন্ত্রের সমন্বয়ে এক তালের সুরে ল্যাপ করা শুরু করে ।

এদের সংগীত অনেকটা মুসলিম নীতি মেনে চলে । যেহেতু ইসলাম বহুতাল বিশিষ্ট বাদ্যযন্ত্র বাজানোকে অপছন্দনীয় করে তাই এরা একতালই ব্যবহার করতে থাকে । যাহোক এই গ্রুপ আফ্রো-মার্কিন জনগোস্ঠীর মাঝে ব্যাপক রাজনৈতিক প্রভাব বিস্তার করতে থাকে । বিশিষ্ট সমালোচক জ্যাসন এন্কনে লিখেন "With their politically charged raps, taut rhythms, and dedication to raising African-American consciousness, the Last Poets almost single-handedly laid the groundwork for the emergence of hip-hop." এই গ্রুপটিকেই বলা হয়ে থাকে Grandfather of Rap । এরা সবাই মুসলিম ছিলো এবং কেউই শয়তানের পুজা করতো বলে জানা যায়ণি ।

এমন কি এরা কেউযে গাজা খেতো এমনও কেউ বলতে পারবেনা । তাহলে কেন আজকে অধিকাংশ র‌্যাপার কেন মাদক আসক্ত আর কেনই বা প্রায়ই সবাই হর্ণড গড ( ছবি দ্রষ্টব্য ) চিহ্ণ শো করে ? কেউ কি বলতে পারেন কেন? আসলে আমরা জানি মুষ্টিমেয় কয়েকজন হয়তো বলতে পারবেন কিন্তু অনেকেই জানেন না অথবা জানতে চান না। হর্ণড গড হচ্চে শয়তানের প্রতীক । এই চিহ্ণ নির্দেশ করে লুসিফারকে। আমাদের অজ্ঞতার সুযোগ নিয়ে আমাদের বানানো জিনিসকে আমাদের জন্য হারাম করা হচ্ছে আর আমরা তা বুঝতেও পারছিনা আসলেই দুঃখজনক।

আমরা বুঝতেও পাবরনা আমাদের সাথে কি হবে এটতো হতে পারেনা তাই আমাদরে অনুরোধ সারাজীবনের ভালো কাজগুলো শয়তানের জণ্য উৎসর্গ করবেন না। ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।