আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

দেহঘড়ি আর ঘড়ির কারিগর

আমার ঘরের চাবি পরের হাতে কেমনে খুলিয়ে সে ধন দেখব চক্ষেতে আপন ঘরে বোঝাই সোনা পরে করে লেনা-দেনা আমি হ'লেম জন্মকানা না পাই দেখিতে। । রাজী হ'লে দারওয়ানী দ্বার ছাড়িয়ে দেবেন তিনি তারে বা কই চিনি-শুনি বেড়াই কুপথে। । এই মানুষে আছে রে মন যারে বলে মানুষ রতন লালন বলে পেয়ে সে ধন পারলাম না চিনিতে।

। ফকির আলাউদ্দীনের গানে চাবির এনালজি : মন আমার দেহঘড়ি, সন্ধান করি কোন মিস্তিরি বানাইয়াছে একটা চাবি মাইরা দিছে ছাইড়া, জনম ভইরা চলতে আছে ....... ঘড়ি দেখতে যদি হয় বাসনা চলে যাও ঘড়ির কাছে, যার ঘড়ি সে তৈয়ার করে ঘড়ির ভিতর লুকাইছে; ঘড়ির ভিতর লুকাইছে... ঘড়ির মেকার ঘড়ি বানাইয়া নিজেই ঘড়ির ভেতর লুকাইছে। পাশ্চাত্যের রিচার্ড ডকিন্সের ভাষায় 'The blind watch maker', ডকিন্স যার কাছ থেকে ধার করছেন তার নাম উইলিয়াম প্যালি। তাঁর বক্তব্য হল কেউ একজন উদ্দেশ্যমূলকভাবে এরকম জটিল ডিজাইনের ঘড়ি বানিয়েছে। প্যালির ভাষায় - "that the watch must have had a maker: that there must have existed, at some time, and at some place or other, an artificer or artificers, who formed it for the purpose which we find it actually to answer, who comprehended its construction, and designed its use." এরকমই কোন খায়েশে হয়ত আইনস্টাইন নিজেও ঘড়ির কারিগর হতে চেয়েছিলেন, পারমাণবিক বোমার ধ্বংসযজ্ঞ দেখে তিনি বলেছিলেন আগে জানতে পারলে এতসব বাদ দিয়ে ঘড়ির কারিগর হতেন ! "The release of atom power has changed everything except our way of thinking...the solution to this problem lies in the heart of mankind. If only I had known, I should have become a watchmaker." এমনও হতে পারে আইনস্টাইনের সাথে রবীন্দ্রনাথের দেখা হলেও, ফকির আলাউদ্দীনের সাথে নিশ্চিত দেখা হয়নি, প্যালির নামও হয়ত জীবনে শুনেন নাই।

রবীন্দ্রনাথের কাছে ঘড়িতত্ত্ব শুনলেও ঠাকুর যেমন শুনে 'থিওরী অফ রিলাটিভিটি' ঠিকমত বুঝতে পারেন নাই, আইনস্টাইনও তেমনি হয়ত ঘড়ি, ঘড়ির কারিগর এতসব আধ্যাত্মিক ব্যাপার স্যাপার বুঝবার পারে নাই। পাশ্চাত্যের বুদ্ধিজীবিদের চেয়ে কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর এককাঠি বাড়া, খুবই ঈমানদার, কোন ডিজাইনার তর্কে নাই। সরাসরি তাঁর কাছে আবেদন, ঘরের ভেতর থেকে আমাকে বের করে নিয়ে যাও। মুমুক্ষু কবির আশা একবার যদি বের হওয়া যায় তাহলে যেন চাবি ভেঙে ফেলা হয়, বারেবারে যাতে আর ফিরে আসতে না হয়। দেহরুপ তালার মধ্যে ঢুকিয়ে চাবি নিয়ে আরেকজন ঘুরাঘুরি করবে এটা কি কবির পক্ষে মানা সম্ভব ? ভেঙে মোর ঘরের চাবি নিয়ে যাবি কে আমারে ও বন্ধু আমার না পেয়ে তোমার দেখা দিন যে আমার কাটে না রে বুঝিগো রাত পোহালো, বুঝি বা রবির আলো আভাসে দেখা দিলো গগনপারে সমুখে ঐ হেরি পথ, তোমার কি রথ পৌঁছাবে না মোর দুয়ারে ।

। আকাশের যত তারা চেয়ে রয় নিমেশ হারা বসে রয় রাত প্রভাতের পথের দ্বারে তোমারি দেখা পেলে সকল ফেলে ডুববে আলোক পারাবারে । । প্রভাতের পথিকসবে এলো কি কলরবে গেল কি গান গেয়ে ঐ সারে সারে বুঝিবা ফুল ফুটেছে সুর উঠেছে অরুন বীণার তারে তারে । ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।