আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

ইতিবাচক পরিবর্তনে প্রশিক্ষণ

রহস্যময় গ্যালাক্সি ঘুরে, অসীম আকাশে উড়ে আর সাগরের অতল গভীরে ডুবে আমৃত্যু পান করতে চাই ভালোবাসার অমৃত সুধা... ইতিবাচক পরিবর্তনে প্রশিক্ষণ প্রশিণের ভূমিকা নিঃসন্দেহে অপরিসীম। সাধারণ প্রক্রিয়ায় গৃহীত শ্রেণীকক্ষে পাঠদানের চেয়ে প্রশিক্ষণ প্রক্রিয়া হচ্ছে উন্নততর। সমগ্রবিশ্বে প্রশিক্ষণের তাৎপর্যকে সর্বজনগৃহীত একটি যুগোপযোগী অনুশীলন বলা হচ্ছে। যে কোন কাজের ক্ষেত্রে ঐ কাজের যথাযথ প্রশিক্ষণ হতে পারে একটি গুরুত্বপূর্ণ কার্যনিয়ামক। নিম্নে প্রশিক্ষণের গুরুত্বসমূহ পরিপূর্ণভাবে আলোচনা করা হলো- কর্মপ্রক্রিয়ার উন্নয়ন প্রশিক্ষণের মাধ্যমে যে কোন কর্মপ্রক্রিয়ার যথাযথ ও তাৎপর্যপূর্ণ উন্নয়ন সম্ভব।

মানুষ তার বাস্তবতার ভিত্তিতে কাজ করতে করতে অভিজ্ঞতা প্রাপ্ত হয়। অভিজ্ঞতা অর্জিত হয় বিভিন্নভাবে নিজেকে কাজে জড়িয়ে রেখে সঠিকভাবে সব দায়িত্ব পালনের মাধ্যমে। এই অভিজ্ঞতা অর্জিত হয় কাজের পাশাপাশি যথাযথ প্রশিক্ষণের মাধ্যমে। সঠিক প্রশিক্ষণই পারে যে কোন মানুষকে তার অভীষ্ট্য লক্ষ্যে পৌঁছে দিতে। প্রশিক্ষণহীন কোন কাজ যেমন সঠিকভাবে সম্পন্ন হওয়ার নিশ্চয়তা দেয়া দূরূহ তেমনি প্রশিক্ষণের মাধ্যমে তা সর্বোচ্চ সঠিক ভাবে করা সম্ভব।

মানবিক উন্নয়ন প্রশিক্ষণ শুধুমাত্র কর্মপ্রক্রিয়ার উন্নয়নই ঘটায় না পাশাপাশি মানবিক উন্নয়নে রাখে অপরিসীম ভূমিকা। যথাযথ ও সঠিকমাত্রার প্রশিক্ষণই পারে মানুষের মানবিক সূচকগুলোর উন্নয়ন ঘটাতে। এতে করে মানুষ তার ভেতরকার মানবিক মূল্যবোধগুলো সম্পর্কে অবগত হয়। নিজে সচেতন হয়ে একেকজন ইতিবাচক মানুষে পরিণত হয় এবং নৈতিক দিক থেকে সফল মানুষ হিসেবে গড়ে ওঠে। নেতৃত্বের মানসিকতার জাগরণ প্রশিক্ষণ মানুষকে গণতান্ত্রিক করে।

তাইতো প্রশিক্ষণের মূল ভিত্তি হয়ে ওঠে নিজেকে বিলিয়ে দেবার মধ্যে। বিশাল সাগরের কাছে বিদ্যাসাগরের যেমন ছোট হিসেবে নিজেকে প্রকাশ করার অনুভূতি বিধৃত হয় তেমনি আবার এই উদারতা দিয়ে বিশালতার প্রমাণ পাওয়া যায়। ঠিক এমন করেই প্রশিক্ষণ যুগে যুগে মানুষকে গণতান্ত্রিক করে নেতৃত্বের সুযোগ করে দেয়। হয়ে ওঠে মানুষ নেতা বা নেত্রী বা স্বউদ্যোগী বা স্বচালক। সবার সববিষয়কে শ্রদ্ধাভরে গ্রহণ করে সঠিক ও কার্যকর সিদ্ধান্ত নিয়ে প্রতিষ্ঠান বা কার্যক্রমকে বাস্তবায়ন করার প্রয়াসে মানুষ হয়ে ওঠে একেকজন প্রতিনিধি।

সহজবোধগম্যতা প্রশিক্ষণ যে কোন কাজ বা বিষয় বা তথ্য বা আলোচনা বা ঘটনা বা নির্দেশিকাকে করে তোলে প্রাণবন্ত, সহজ ও সরল। প্রশিক্ষণের মাধ্যমেই অংশগ্রহণকারীগণ নির্ধারিত বা আলোচিত বিষয়টিকে সহজ করে বোঝার বা ভাবার সুযোগ পায়। ভয়ভীতিহীন এই পদ্ধতি মানুষকে করে তোলে আত্মপ্রত্যয়ী ও কর্মনিষ্ঠ। অংশগ্রহণকারীগণের পটভূমি বুঝে প্রশিক্ষণের সামগ্রিক বিষয়টিকে করে তোলা হয় সাবলীল। যার ফলশ্রুতিতে প্রশিক্ষণ হয় জনপ্রিয় ও সহজবোধ্য।

বিভিন্ন প্রশিক্ষণপদ্ধতি ও প্রক্রিয়ার মাধ্যমে প্রশিণার্থীগণ প্রশিক্ষণ গ্রহণ করেন বলে দুর্বোধ্য বিষয়ও সহজ ও সাবলীলভাবে বুঝে নেয়া সম্ভব হয়। মৌলিক ধারনার উন্নয়ন প্রশিক্ষণ মানুষের যে কোন আলোচ্য বিষয়ের মূল, গোঁড়া বা ভিত্তির মৌলিক তথ্য প্রদান করে। ফলে বিষয়টি নিয়ে কোন রকম সন্দেহ বা অস্পষ্টতা থাকে না। স্পষ্ট ও পরিষ্কার ধারনা অর্জিত হবার কারনে আলোচ্য বিষয় নিয়ে কোন ভ্রান্ত ধারনার জন্ম নেয় না। প্রশিক্ষণ অংশগ্রহণকারীগণের মতামত ও প্রশ্ন করার সমস্ত অধিকার স্পষ্ট করে সুতরাং যে কোন বিষয় নিয়ে যৌক্তিক আলোচনার মাধ্যমে আলোচ্য বা প্রত্যাশিত বিষয়টিকে করে তোলে তথ্য নির্ভর ও গ্রহণযোগ্য।

বাস্তবতার আয়না প্রশিক্ষণ হচ্ছে কোন বিষয়ের বাস্তবতার আয়না। বাস্তবতার নিরিখে যে কোন প্রশিক্ষণ প্রক্রিয়া পরিচালিত হয়। সংযোজন বিয়োজনও হয় কার্যক্রমের বাস্তব অবস্থার ভিত্তিতে। শুধুমাত্র বইয়ের গৎবাঁধা কোন ভাষ্য নয়, প্রশিক্ষণ যে কোন কাজকে সঠিক মাত্রায় পৌঁছানোর জন্য মাঠের বাস্তবতার নিরিখে ভাবে। প্রশিক্ষণ শুরুর পূর্বেই তাই প্রশিক্ষণ প্রয়োজনের সম্ভাব্যতা সাচাই করা হয়।

কী কী বিষয়গুলো নিয়ে প্রশিক্ষণ হবে তাও চাহিদার নিরিখে যাচাই করা হয়। এতো কিছুর পরও প্রশিক্ষণের কোন হালনাগাদ করণের সমাপ্তির শেষ হয় না। কারন, যে কোন প্রয়োজনে প্রশিক্ষণকে হালনাগাদ করা হয় এবং প্রশিক্ষণ প্রতিনিয়ত সর্বশেষ তথ্যে সমৃদ্ধ থাকে। এছাড়া প্রশিক্ষণ শেষে প্রশিক্ষণে আলোচিত বিষয়সমূহ কার্যকর হচ্ছে কিনা তা যাচাই, মূল্যায়ন, পরীবিক্ষণ ও শুদ্ধকরণ করা হয়। যোগাযোগ সম্পর্ক উন্নয়ন প্রশিক্ষণের মাধ্যমে যে কোন তথ্য বা উপাত্ত খুব সহজেই অবগত করানো সম্ভব।

একসাথে একটি দলের মাধ্যমে কিছু অংশগ্রহণকারীগণ তাদের মতামত প্রদান করতঃ সঠিক ভাবনাটি তুলে নেবার সাথে সাথে বিশেষজ্ঞের অভিব্যক্তি বা সংজ্ঞা থেকে সঠিক ও মোদ্দা বিষয়টি সম্পর্কে নিশ্চিত হওয়া যায়। এছাড়া বিশেষ কোন কার্যক্রমের সঠিক চিত্রটি একসাথে জেনে নেয়া সম্ভব হয়। এতে করে একে অপরের মাঝে বোঝাপড়া বৃদ্ধি পায়। পরস্পরকে জানার সুযোগ তৈরী হয়। একটি নির্দিষ্ট মেয়াদে সবাই একসাথে প্রশিক্ষণে অংশ্রগ্রহণের মাধ্যমে একে অপরের মধ্যে ভ্রাতৃত্যবোধ জাগ্রত হয়।

সহযোগিতার মন-মানসিকতা জন্ম নেয়। যোগাযোগ সম্পর্কের উন্নতি ঘটে। সর্বসাকুল্যে বলা যায় প্রশিক্ষণ হচ্ছে এমন একটি যথাযথ পদক্ষেপ বা বৈজ্ঞানিক প্রক্রিয়া যার মাধ্যমে শুধু কার্যক্রমের লক্ষ্য বা উদ্দেশ্যই হাসিল হয় তাই নয় এর মাধ্যমে মানুষের নৈতিক অবস্থার ইতিবাচক উন্মেষ ঘটে। *** ।

সোর্স: http://www.somewhereinblog.net     দেখা হয়েছে বার

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।