আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

লালনের গান: রবে না এ ধন জীবন যৌবন

মন আমার গেল জানা । কারো রবে না এ ধন জীবন যৌবন তবেরে কেন এত বাসনা; একবার সবুরের দেশে বয় দেখি দম কষে উঠিস নারে ভেসে পেয়ে যন্ত্রণা । । যে করল কালার চরণের আশা জানোনারে মন তার কী দুর্দশা ভক্তবলী রাজা ছিল, সর্বস্ব ধন নিল বামুনরুপে প্রভু করে ছলনা। ।

প্রহ্লাদ চরিত্র দেখ চিত্রধামে কত কষ্ট হল সেই কৃষ্ণনামে তারে অগ্নিতে জ্বালালো জলে ডুবাইল তবু না ছাড়িল শ্রীরূপসাধনা । । কর্ণরাজা ভবে বড় দাতা ছিল অতিথিরূপে তার সবংশ নাশিল তবু কর্ণ অনুরাগী, না হইল দুখী অতিথির মন করল সান্ত্বনা । । রামের ভক্ত লক্ষণ ছিল সর্বকালে শক্তিশেল হানিল তার বক্ষস্হলে তবু রামচন্দ্রের প্রতি, লক্ষণ না ভুলিল ভক্তি লালন বলে কর এ বিবেচনা ।

। লালন দর্শনের সাধকদেশ পর্যায়ের গান। জগতে আমাদের বাসনার শেষ নেই, একটা শেষ হয় তো আরও কয়েকটা বাসনার জন্ম হয়। এ বাসনার কারণেই মানুষ কর্মের বন্ধনে জড়িয়ে সব হারায়। দক্ষিণেশ্বরের শ্রীমা তাই বলেছেন ঈশ্বরের কাছে যদি চাইতেই হয় তাহলে বলতে হবে , 'নির্বাসনা করে দাও'।

অভিজ্ঞতা থেকে আমরা জানি দুনিয়ার ধন, জীবন, যৌবন এসব কিছুই থাকবে না। লালন তাই বলছেন, একবার নির্বাসনা হয়ে ব্রক্ষ্মসাগরে ডুব দিয়ে দেখ, ভেসে উঠলেই যত যন্ত্রণা। সাধকের জীবন খুবই কঠিন। নানারকম পরীক্ষা-নিরীক্ষার মধ্য দিয়ে যেতে হয়, কখনও বা সর্বস্ব খোয়াতে হয়, কিন্তু সাধু তখনও অবিচল থাকেন। প্রহ্লাদের নাতির নাম ছিল বালি, যার নামে ইন্দোনেশিয়ায় একটি দ্বীপ আছে।

বিষ্ণু বামনরুপে বালির কাছে ভিক্ষা চায়। এতে বালি রাজি হলে বামনরুপী ভগবান তিন পদক্ষেপে তার রাজ্যের সব নিয়ে নেয়। বালি বুঝতে পেরে শেষ বারে তার মাথায় পা রাখতে বলেন। দৈত্যকূলের প্রহ্লাদকে তার বাপ হিরণ্যকশিপু আগুনে পুড়িয়ে, পানিতে ডুবিয়ে বিভিন্নভাবে মারতে চেয়েছিল তবু সে ঈশ্বরের সাধনা ছাড়ে নাই। প্রতিবারেই বিষ্ণুর কৃপায় প্রহ্লাদ মুক্ত হন, ভগবান সবসময় তাঁর অনুরাগীকে রক্ষা করেন।

দেবতা ইন্দ্র ভিক্ষুকের বেশে এসে ভিক্ষা চাইলে দাতাকর্ণ তাকে তার একমাত্র বর্ম দিয়ে দেন, ফলে বর্ম ছাড়া যুদ্ধক্ষেত্রে সে দূর্বল হয়ে পড়ে। কর্ণ মহাভারতের আকর্ষণীয় একটা চরিত্র, তাঁর জীবন নিয়ে দেবতারা অনেক ছিনিমিনি খেলছে, কিন্তু সে আজীবন একনিষ্ঠভাবে আদর্শে অটল থেকে তার ক্ষত্রিয় মর্যাদা প্রতীষ্ঠা করে গেছে। রাম মানে হল এক,রহস্যময়, রাবণ বা অহংকার নাশের জন্য জগতে এসেছেন। একেশ্বরের ভক্ত মনের অবস্হা হল ভাই লক্ষণ, রাম লক্ষণ এজন্য সবসময় পাশাপাশি থাকে। প্রয়োজনে রাম তো লক্ষণকে সাইজ করবেই, পূরাণাকাররা এ বিষয়গুলো গল্পের আকারে খুব সুন্দর করে সাজিয়েছেন।

সোর্স: http://www.somewhereinblog.net     দেখা হয়েছে ১৯ বার

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।