আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

আওয়ামী লিগ এবং বি.এন.পি-র আরো যেসব অঙ্গসংগঠন থাকতে পারত (অনুর্বর মস্তিষ্কপ্রসূত ফানপোস্ট)

আমাদের দেশে প্রধান দুটি রাজনৈতিক দল আওয়ামী লিগ এবং বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বি.এন.পি.)। এই দলগুলোর আবার বেশ কিছু অঙ্গসংগঠন আছে, যেমন- ছাত্র দল, ছাত্র লিগ, যুব দল, যুব লিগ, শ্রমিক দল, শ্রমিক লিগ ইত্যাদি ইত্যাদি। এই অঙ্গসংগঠনগুলো নিজেদের দলের পক্ষে অনেক কাজ করে থাকে; মূলত আওয়ামী লিগ ও বি.এন.পি. টিকে আছে তাদেরই বদৌলতে। এক্ষেত্রে ছাত্রলিগ আর ছাত্রদলের ভূমিকাতো মাশা আল্লাহ! তাদের মত দলের নিবেদিতপ্রাণ কর্মী অন্যকোন অঙ্গসংগঠনে নেই। সম্প্রতি ছাত্র লিগের কর্মকাণ্ডত দেশ-বিদেশে অনেক সুনাম কুড়িয়েছে! আওয়ামী লিগ এবং বি.এন.পি. আরো কিছু অঙ্গসংগঠন তৈরি করতে পারে, যারা হবে ছাত্র দল এবং ছাত্র লিগের মত নিবেদিতপ্রাণ।

এ সম্পর্কে এই অধমের কিছু সুপারিশ আছে, আশা করি সামুর সকল ব্লগার ভাই আমার সাথে একমত পোষণ করবেনঃ অঙ্গসংগঠন এবং তাদের কার্যাবলী ১) আওয়ামী ইটভাটা শ্রমিক লিগ এবং জাতীয়তাবাদী ইটভাটা শ্রমিক দলঃ এই সংগঠনের সদস্যরা মূলত ইটভাটায় কাজ করেন। তাদের কাজ হবে মাটি দিয়ে ঢিল আকারের চোখা, তেকোণা, চারকোণা ইট তৈরি করা এবং বস্তা করে বিভিন্ন এলাকায় সরবরাহ করা। এগুলো হরতাল পিকেটিংয়ে, জনসভা, মিছিলে দলের মহান কর্মিরা অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করবেন। প্রায়ই দেখা যায় মিছিলে যখন পুলিশ বেধড়ক লাঠি পেটা করে তখন আমাদের নেতা-কর্মিরা পাকা রাস্তায় ইট পাথর খুঁজে পেতে হিমশিম খান। এই অঙ্গসংগঠনটি গঠিত হলে আমাদের মহান নেতা-কর্মিরা ধড়িবাজ পুলিশদের আচ্ছামত শায়েস্তা করতে পারবেন।

২) আওয়ামী টোকাই লিগ এবং জাতীয়তাবাদী টোকাই দলঃ টোকাইরা এমনিতেই সমাজে মহান কাজে নিয়োজিত। আমরা যা উচ্ছিষ্ট হিসেবে ফেলে দেই তারা তা কুড়িয়ে নেয় এবং এগুলোই বিক্রি করে তারা জীবিকা নির্বাহ করে। টোকাইরা বাংলাদেশের হরতালের রাজনীতির গুরুত্বপূর্ণ অংশ। হরতালে মিছিলে, পিকেটিংয়ে, ঢিল মারা, গাড়ি ভাঙ্গা, টায়ারে আগুন ধরানো ইত্যাদি গুরুত্বপূর্ণ কাজে টোকাইদের ভূমিকা বলে শেষ করা যাবেনা। কিন্তু দুঃখের বিষয় হল টোকাইরা কোন সংগঠিত দল নয়, তারা সব দলের হয়ে কাজ করে।

আওয়ামী লিগ এবং বি.এন.পি. যদি টোকাইদের নিয়ে আলাদা আলাদা অঙ্গসংগঠন তৈরি করে তবে তাদের কাজে আরো গতির সঞ্চার হবে, দলীয় আদর্শে উদ্বুদ্ধ হয়ে জান-প্রাণ ঢেলে কাজ করবে। মিছিলের জন্য তাদের আর ভাড়াও করতে হবেনা। এতে দলের অনেক টাকা বেঁচে যাবে। ৩) আওয়ামী রিকসা মালিক লিগ এবং জাতীয়তাবাদী রিকসা মালিক দলঃ এই সংগঠনটি মূলত দলীয় প্রচারণার কাজে নিয়োজিত থাকবে। রিকসা মালিকরা তাদের রিকসার পেছনে দলের নেতা-নেত্রীদের ছবি এবং শ্লোগান কিংবা বিরোধী দলের নেতা-নেত্রীদের ব্যাঙ্গাত্মক কার্টুন এবং নেতিবাচক মন্তব্য লিখে রাখবেন।

যেমন- 'জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু, জাতির ভগ্নি শেখ হাসিনা', 'অন্তরে প্রেসিডেন্ট জিয়া, মাথার তাজ খালেদা জিয়া'। বিরোধী দলকে ব্যাঙ্গ করে লিখবেন, 'হায় হায় হাসিনা, লজ্জায় বাঁচিনা'। সাথে শেখ হাসিনা এক মহিলার সাথে চুলাচুলি করছেন এরকম কার্টুন থাকবে। কিংবা লিখবেন, 'খালেদা জিয়া এইট পাস, বাংলাদেশের সর্বনাশ'। সাথে খালেদা জিয়া গভীর মনযোগ দিয়ে বাংলা বর্ণমালার বই পড়ছেন এরকম কার্টুন থাকবে।

৪) আওয়ামী বুদ্ধিজীবী লিগ এবং জাতীয়তাবাদী বুদ্ধিজীবী দলঃ বুদ্ধিজীবীরা সমাজ ও সংস্কৃতি সচেতন এবং জ্ঞান বিজ্ঞানে দক্ষ সুশিক্ষিত মানুষ। তারা জাতির বিবেক। তাদের লেখনি, বক্তৃতায় দেশের সমস্যা, সম্ভাবনা ইত্যাদির চিত্র ফুটে উঠে। বুদ্ধিজীবীরা দলীয় আদর্শের চাইতে জাতীয় আদর্শকেই প্রাধান্য দিয়ে থাকেন। তবে কিছু কিছু বুদ্ধিজীবী আছেন যারা কোন না কোন দলের সমর্থক।

তারা মূলত বুদ্ধি বিক্রি করে জীবিকা নির্বাহ করেন। তবে এই শ্রেণীর বুদ্ধিজীবীরা ধরা পড়ার ভয়ে তাদের দলীয় সমর্থনের কথা সারাসরি বলতে পারেন না; একটা খোলসের আড়ালে থেকে তাদের কাজ চালিয়ে যেতে হয়। এই সমস্যার সমাধানের জন্য আওয়ামী লিগ এবং বি.এন.পি. এই বুদ্ধিজীবীদের নিয়ে অঙ্গসংগঠন তৈরি করতে পারে। এতে বুদ্ধিজীবীরা সার্টিফিকেটপ্রাপ্ত দলীয় বুদ্ধিজীবী হিসেবে নিজ দলের হয়ে খোলেআম কাজ করে যেতে পারবেন। ৫) বাংলাদেশ আওয়ামী ওলামা লিগ এবং জাতীয়তাবাদী ওলামা দলঃ বাংলাদেশের অধিকাংশ জনগণ মুসলমান।

এদের মধ্যে হাজার হাজার আলেম-ওলামা রয়েছেন। আলেম-ওলামাদের বেশ কয়েকটা সংগঠনও এদেশের রাজনীতিতে সক্রিয়। কিছু কিছু আলেম আছেন যারা কিছু পারেন বা না পারেন, প্রত্যেকেই ফতোয়া দিতে ওস্তাদ! মাঝে মধ্যেই দেখা যায় শেখ হাসিনা কিংবা খালেদা জিয়া দেশের বিভিন্ন আলেম-ওলামাদের নিয়ে বৈঠক করছেন। এই আলেম-ওলামাদের মধ্যে আবার অনেকেই আওয়ামী লিগ কিংবা বি.এন.পি.-র সমর্থক, কিন্তু তাদের লেবাছের কারণে তারা সেটা প্রকাশ করতে পারেন না, ফলে দলগুলোর মহান কর্মকাণ্ডে তারা সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণ করতে পারেন না। এ সমস্যা দূর করার জন্য আওয়ামী লিগ এবং বি.এন.পি. দলের সমর্থক আলেমদের নিয়ে অঙ্গসংগঠন তৈরি করতে পারে।

এই আলেমরা বিভিন্ন সময়ে নিজ নিজ দলের পক্ষে কিংবা বিরোধী দলের বিপক্ষে ফতোয়া দিয়ে দেশের ধর্মপ্রাণ লোকদের সঠিক পথের দিশা দিতে পারবেন। উদাহরণসরূপঃ পক্ষে ফতোয়া- 'মুসলমানদের দ্বিতীয় কেবলা হল প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের মাজার' কিংবা 'নামাজে সালাম ফিরানোর সময় আসসালামু আলাইকুম ইয়া বঙ্গবন্ধু না বললে নামাজ সহি হবেনা'। বিপক্ষে ফতোয়া- 'শেখ হাসিনার নাম যতবার কানে আসবে ততবার নাউযুবিল্লাহ পড়া ওয়াজিব' কিংবা 'খালেদা জিয়ার চেহারা যতবার চোখে পড়বে ততবার আসতাগফিরুল্লাহ পড়া ফরযে আইন'। এ তো গেল আওয়ামী লিগ এবং বি.এন.পি-র প্রকাশ্য অঙ্গসংগঠেনের বর্ণনা। আগামীতে দলগুলোর গোপন অঙ্গসংগঠন নিয়ে আলোচনা করব।


এর পর.....

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.