আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

একজন আওয়ামী লীগার আজীবন আওয়ামী লীগার (একটি কাল্পনিক আলোচনার টেবিল)

ভাই, অফ যা, আর কান্দিস না। সংলাপ নিয়া বহুত ক্যাচাল চলিতেছে সম্প্রতি। রাজনৈতিক নেতাদের মাথাব্যাথা নাই। নাগরিক সমাজ তাই সংলাপ এর আয়োজন করিয়াছেন, আলোচনাই নাকি গনতন্ত্রিক পদ্ধতি। যেহেতু, এই দেশে বৃষ্টি পড়িলেও লোকজন ২ ভাগ হয়ে যায়, আলোচনা কি আর তাই নিরপেক্ষ থাকতে পারে?? আলোচনা তবে ২ ভাগ না, ভাগভাগ হইয়া গেছে।

(একটি কাল্পনৈক আলোচনা, অংশ নিয়েছেন যদু, মধু, রাম, শাম, শুশীল আর কতিপয় দুস্টু লোক) যদুঃ খবর পেয়েছেন ভাই? বিএনপির সমাবেশে নাকি বোম ফুটছে, আপিসে নাকি বোম পাওয়া গেছে। মধুঃ বোম কি জিনিষ চিনেন ভাই? বোম না ককটেল; এইডা ফুটলে কিছু হয়না। সব হাম্বালীগ এর কাম। জাতীয় নেতাদের গ্রেপ্তার করবার লাইগা। রামঃ উহু; ককটেল বিম্পি নিজেই ফুটাইছে।

হরতাল দেওনের উছিলা খুজতাছে। শামঃ কেষ্ট বেটাই চোর। সুশীলঃ দেশটা গোল্লায় যাচ্ছে। এইভাবে দেশটা চলতে পারেনা। দুষ্টূ লোকঃ রাম ভাই? আপনি কেমনে জানেন বিম্পি ফুটাইছে?? তাইলে কি আপনাগো এই কাম করনের অভ্যাস আছে নাকি?? ২১ আগস্ট গ্রেনেড আপনেরা ফুটান নাইতো ভাই?? মধুঃ এইডা আবার কওয়া লাগে নাকি? রামঃ যদুঃ এই যে হরতাল দিল।

তাতে কিন্তু, আমগো জনগনের ক্ষতি। জিনিষপত্রের দাম বাইড়া যাইবো, ব্যাবসা বাণিজ্যের ক্ষতি হইব। মধুঃ সরকার নিজের পিঠ বাচানোর লাইগা সবাইরে অত্যাচার করতাছে। কাউরে রাস্তায় নামবার দিতাছেনা। সবাইরে ধইরা পিডাইতাছে, গুলি মারতাছে।

রামঃ বগলে জামায়াত-শিবির লইয়া তান্ডব করলে সরকার কি বইসা বইসা আঙ্গুল চুষবো? তারা, দেশে ভাংচুর-জ্বালাও পোড়াও করব, সরকার কি একশন লইব না? শাহবাগে তো পোলাপাইন আন্দোলন করতাছে ওদের মত অহিংস আন্দোলন করতে পারেন না? শামঃ সব শালা কেষ্ট বেটার দোষ। মধুঃ রাস্তায় নামনের কোন উপায় আছে? সরকার তো সবাইরে পিডাইতাছে। শাহবাগের কথা বললেন, এমনি কি সরকারের পৃষ্টপোশকতায় কি আন্দলন হয়? রামঃ তাইলে, ভাংচুর কইরা আন্দোলন হয়? মধুঃ তাই বইলা কি পুলিশ গোলাগুলী করব? রামঃ গুলি কি বাড়িতে গিয়া করতাছে? রাস্তায় নামতাছে কেন? মধুঃ তাগো কথা বাদ দেন, আপনেরা তো বিম্পির মিছিলেও গুলি করছেন। হুজুরদের উপরও গুলি করছেন। শিক্ষকদের উপর পিপার স্প্রে মারছেন।

রামঃ জামায়াত-শিবির দেশে ষড়যন্ত্র করতাছে, তাই পুলিশ একশন নিতে বাধ্য হইছে। শামঃ এই শালারা সব নস্টের মূল। যদুঃ হুজুর রা যে তাইলে জামায়াত বিরোধী বক্তব্য দিল? আপনেরা তো তাদেরও গুলি করলেন? আবার তারা যখন রাস্তায় নামল আবার পিটালেন। মধুঃ রামঃ শামঃ তারাই সব নস্টের মূল। দুষ্টু লোকঃ রাস্তায় নামলে জামায়াত শিবির-ঘরে থাকলে হুজুর।

যদুঃ এই যে তরুন প্রজন্ম আন্দোলন করতাছে, তারা সরকারের অন্যান্য অত্যাচার-দূর্নীতির বিরুদ্ধে কথা বললেও তো পারে? তাই না? মধুঃ না, এই কথা বলা নিষেধ। রামঃ খবরদার, এখন বাংলা পরীক্ষা চলতাছে। ইংরেজী-গনিত নিয়া আলোচনা করা নিষেধ। শামঃ কেষ্ট বেটারা ঝামেলা করতাছে। সুশীলঃ আরও অনেক চত্বর আছে, সেখানে যান।

আগে জাতিকে শাপমোচন করতে দেন। দুষ্টু লোকঃ বলি কি, ছেলে যদি ইংরেজী আর গনিতে কাচা হয়, সারাজীবন বাংলা পরীক্ষা দিয়া পাশ করিতে চাইবে। রামঃ চুপ শালা, অফ যা। রাজাকার। সুশীলঃ আগে দেশে মুক্তিযুদ্ধের চেতনা বাস্তবায়ন করতে হবে।

যদুঃ খালি বাংলা পরীক্ষা দিয়া এসএসসি পরীক্ষা পাস করন যাইব না। অন্যান্য পরীক্ষাও দেওন লাগবো। জিনিস পত্রের যে দাম, আমরা মধ্যবিত্তরা বাচতে পারতেছিনা। শেয়ার ব্যাবসা কইরা ২-৪ পয়সা ইনকাম করুম, সেই অবস্থা নাই। ডেস্টিনি-ইউনিপে কইরা আমাদের কে পথে বসাইছে প্রতারকরা।

কুইক রেন্টাল কইরা দেশের বারোটা বাজাইছে, এগুলার কথা বলতে হইবে। মধুঃ আপনে মিয়া বেকুব, এইসব অকামের রেকর্ড ঢাকবার লাইগাই তো খালি বাংলা পরীক্ষা নিয়া চিল্লা চিল্লি করতাছে। রামঃ সব শালা পাকি পয়দা, ছাগু। শামঃ কেষ্ট বেটাদের দোষ। সুশীলঃ কবি নীরব।

দুষ্টু লোকঃ হে হে হে, আশায় আশায় দিন গেল, দশ টাকার চাল খাওয়া হইল না। যদুঃ আর খালি এক দলের রাজাকার দের বিচার চাইলে হইব না, সব রাজাকার এর বিচার চাওন লাগবো। । শুনছি, মখা সাহেব নাকি রাজাকার? বংগবীর নিজে নাকি সাক্ষি দিবে? বেয়াই সাহেব ও নাকি রাজাকার? এগুলা সবগুলার বিচার করা লাগবো। মধুঃ হেহেহে যদু ভাই, এখনো বুঝেন নাই? এগুলো সব খেলা।

দরকার পড়লে এইগুলা "পা ধইরা সালাম করে" আবার দরকার পরলে "ল্যাং মারে"। রামঃ এইগুলা কবে পয়দা হইছে? আগে তো শুনিনাই? আপনেরা আছেন খালি কেমনে গেঞ্জাম লাগাইবেন সেই ধান্ধায়। শামঃ আগে কেষ্ট বেটাদের বিচার করতে দেন। তারাই সব গন্ডগোল এর মূল। সুশীলঃ সকল যুদ্ধপরাধীর বিচার চাই।

মুক্তিযুদ্ধের চেতনার বাস্তবায়ন করতে হলে এই বিচার হওয়া উচিত। দুষ্টু লোকঃ যদুঃ আপনি যে চেতনার কতা বললেন, সুশীল ভাই; চেতনা বিশুদ্ধ হলেতো মখার নামে স্লোগান দিতো; উলটা বংগবীর এর নামে স্লোগান দিতাছে, আর মখার কাছে গিয়া স্বারক লিপি দিতাছে; এইডা কেমন কথা। সে তো বীর উত্তম মুক্তিযোদ্ধা। মধুঃ নস্ট মুক্তিযোদ্ধা, ভালা নাম দিছে। রামঃ সে তো, নস্ট মুক্তিযোদ্ধা।

সে দিগন্ত টিভিতে টক শো করে। সে ঈমান বেইচা দিছে। তার মত মুক্তিযোদ্ধা দরকার নাই। "একজন রাজাকার আজীবন রাজাকার, একজন মুক্তিযোদ্ধা আজীবন মুক্তিযোদ্ধা থাকেনা" -- শুনেন নাই?? শামঃ উনারা পথভ্রস্ট। কেষ্ট বেটাই চোর।

সুশীলঃ কি বলব বুঝতে পারছিনা। দুষ্টু লোকঃ "একজন রাজাকার আজীবন রাজাকার, একজন মুক্তিযোদ্ধা আজীবন মুক্তিযোদ্ধা থাকেনা" ------- আওয়ামী লীগ বিরোধিতা করলে মুক্তিযোদ্ধারাও রাজাকার, আর আওয়ামী লীগ করলে রাজাকার রাও পূতপবিত্র। যদুঃ কেষ্ট বেটারা এতই যদি ঝামেলা করে, তাইলে তাগোরে নিষিদ্ধ কইরা দেন। তাইলেই তো ল্যাঠা চুকে যায়। ঝামেলা শেষ।

রামঃ কোর্টে মামলা দিছি। দেখি কি হয়। সুশীলঃ স্বাধিনতা বিরোধী শক্তির রাজনীতি করার কোন অধিকার নেই। দুষ্টু লোকঃ এই কাম করন যাইব না। তাইলে, তেনারা রাজনীতি করব কি লইয়া? যদুঃ আইচ্ছা আপনে যে চেতনার কথা বললেন, এই চেতনা জিনিষ টা কি বলবেন একটু? আমরা পাকিস্তানের বিরুদ্ধে আন্দোলন করছিলাম অত্যাচার আর শোষন এর বিরুদ্ধে।

মুক্তিযুদ্ধের চেতনা কি শোষনমুক্ত-বৈষম্যহীন সমাজব্যাবস্থা না? মধুঃ বাকশালী রা নিজেরাই এখন পাকিদের মত আচরন করতাছে। মিছিল করতে দিতেছেনা, সমাবেশ করতে দিতেছেনা, মানব বন্ধন করতে দিতেছেনা, এখন তারা গুলি মারতাছে, তাদের লগে উর্দি পড়া খানদের কোন পার্থক্য নাই। রামঃ মুক্তিযোদ্ধের চেতনার ধারক বাহক হইল একমাত্র আওয়ামী লীগ। এইবার তোরা সব রাজাকার এর ছা রা অফ যা। শামঃ কেষ্ট বেটাদের লগে যারা জোট করে, তারা পাকিস্তানের দালাল।

দুষ্টু লোকঃ সুশীলঃ মধু ভাই, এসব অত্যাচার কিন্তু আপনারাও করেছেন। কেষ্ট বেটাদের ছাইড়া দেন, চলেন সবাই এক সাথে মিলে মুক্তিযুদ্ধের চেতনা বাস্তবায়ন করি। দুষ্টু লোকঃ হে হে হে, সুশীল ভাই; অনেক খন মুখোশ পইড়া রাখছেন। এই কথা আগে কইলেই তো পারতেন। যদুঃ মধুঃ একজন আওয়ামী লীগার আজীবন আওয়ামী লীগার।

যে কোন পরিস্থিতিতে আওয়ামী লীগার। রামঃ ।

সোর্স: http://www.somewhereinblog.net     দেখা হয়েছে বার

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.