আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

আমরা মিটার, আমাদেরও আছে অধিকার

smasad.bp@gmail.com

ধুর! এইভাবে বেঁচে থাকা যায় নাকি? কাজকর্ম ছাড়া সিএনজির ভেতরে দিনরাত ঘাপটি মেরে বসে থাকার কোনো মানে আছে? আমরা মিটার হয়েছি বলে যার যা ইচ্ছা তাই করবে এটা মেনে নেওয়া যায় না। আরে আমাদেরও তো একটা লাইফ আছে। ঝিম মেরে বসে থাকার জন্য আমাদের এই দেশে পাঠানো হয়নি। সিএনজি বা ট্যাক্সিওয়ালা যাতে ভাড়া নিয়ে কোনো ধরনের তেড়িবেড়ি করতে না পারে, সে জন্য সিএনজি বা ট্যাক্সির সঙ্গে আমাদের অ্যাটাস্ট করে দেওয়া হয়েছে। কিন্তু তাতে লাভটা কী হলো? সিএনজিওয়ালারা তো শুধু সিএনজিটাই চালায়, আমাদের আর চালায় না।

তারা যাত্রীদের কাছ থেকে ইচ্ছেমতো টাকা নিয়ে নিশ্চিন্তে রাস্তায় ঘুরে বেড়ায়, আর আমরা চেয়ে চেয়ে দেখি। মনের খুশিমতো যে একটু ভাড়া উঠাব সেটাও করতে পারছি না। কাজ না করতে করতে আমাদের সবার ভেতরে একেবারে জং ধরে গেছে। অনেকের তো শরীরে চর্বিটর্বি জমে একেবারে যা-তা অবস্থা। ইশ! কতদিন আমাদের সুইচে চালকের স্পর্শ পড়ে না।

জ্যামে আটকা পড়ে তড়তড় করে ভাড়া ওঠানোর ঘটনা তো এখন শুধুই স্বপ্ন। যাত্রী যখন চালককে বলে, মিটারে যাবেন? আমরা তখন মনপ্রাণ দিয়ে প্রার্থনা করি, টান টান উত্তেজনা নিয়ে অপেক্ষা করি—যদি চালক রাজি হয়! কিন্তু আফসোস! নিষ্ঠুর-পাষাণ চালকেরা কিছুতেই রাজি হয় না। আশপাশে সার্জেন্ট দেখলে কালেভদ্রে চালকব্যাটা আমাদের অন করে। আহা! সার্জেন্ট পেশাটার প্রতি কৃতজ্ঞতায় তখন মনটা ভরে যায়। কিন্তু এভাবে আর কতদিন? ভারতে আমাদের ভাই-ব্রাদাররা কী সুন্দর কাজ করে খাচ্ছে, আর আমরা এখানে বসে বসে অলস সময় কাটাচ্ছি।

আমাদের অবস্থা হয়েছে রোহিঙ্গা উদ্বাস্তুদের মতো। জীবিকার সন্ধানে এ দেশে এসে এখন কাজটাজ নেই, উদ্বাস্তু হয়ে বসে আছি। সরকার তো আমাদের বেকার ভাতাও দিচ্ছে না। ভাতা দিলে না হয় ব্যাপারটা মেনে নেওয়া যেত। এই দুর্বিষহ অলস জীবন আমাদের আর ভালো লাগছে না।

দেশে আমাদের আত্মীয়-স্বজনেরা আমাদের নিয়ে রীতিমতো হাসাহাসি করে। কারও কাছে মুখ দেখানোর উপায় নেই। এসবের মানে কী? বিদেশে কাজ করতে এসে এ রকম বিপদে পড়ব জানলে সিএনজির মিটারই হতাম না। বৈদ্যুতিক মিটার হয়ে কোনো একটা বাড়িতে ঝুলে পড়তাম, টিভি-ফ্রিজের রিডিং দিতে দিতে জীবনটা চমত্কারভাবে কেটে যেত। কিন্তু এই অন্যায় মুখ বুজে সহ্য করা ঠিক হবে না।

কাঁটাবিহীন মাছের কথা কল্পনা করা যায়, কিন্তু রিডিং ছাড়া মিটারের কথা কল্পনাও করা যায় না। তাই, আমাদের একটাই দাবি—হয় মিটারগুলো চালু করে আমাদের কাজ করার সুষ্ঠু পরিবেশ ফিরিয়ে দিন, তা না হলে অবিলম্বে আমাদের জন্মভূমি চীনে, ভারতে পাঠিয়ে দেওয়া হোক। ঘরের মিটার ঘরে ফিরে যাব। ব্যাক টু দ্য প্যাভিলিয়ন।


অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.