আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

সংস্কৃতি ধ্বংসকারী ইসলাম ??

একজন সুখী মানুষ

মুসলিমরা সর্বজনীনভাবে বিশ্বাস করে যে, ইসলামে একটি পূর্ণাঙ্গ জীবন বিধান’ । সুতরাং ইসলাম স্বর্গীয় প্রকৃতির একটা পূর্ণাঙ্গ সভ্যতা পর্যায়ের ধর্ম। মোহাম্মদ ও তার প্রাথমিক উত্তরাধিকারীগণ, অর্থাৎ মদীনার ‘যথার্থরুপে পরিচালিত খলিফাগণ’, (৬২২-৬৬১) কর্তৃক প্রতিষ্ঠিত ‘বিশ্বাসীদের সমাজ’ ছিল সভ্যতা, যাকে বিশ্বের সর্বত্র ছড়িয়ে দিতে হবে। আল্লাহ কর্তৃক ঘোষিত বিশ্বের সমস্ত ধর্ম ও মানুষের উপর ইসলামের প্রাধান্য বা আধিপত্য অর্জিত হবে বিশ্বাসীদের পেশি শক্তির দ্বারা জিহাদের মাধ্যমে। কোরানে বলা আছে যে, তিনি ধর্ম হিসাবে ইসলামকে পূর্ণতা দিয়েছেন এবং সেটাকে সমগ্র মানবজাতির জন্য তাঁর অনুগ্রহরুপে নির্দিষ্ট করেছেন ও অন্য সকল ধর্মের উপর এর প্রাধান্য ঘোষণা করেছেন এই রুপেঃ “আজ আমি তোমাদের জন্য তোমার (নবীর) ধর্মকে পূর্ণতা দিচ্ছি, তোমাদের উপর আমার কৃপা অর্পণ করছি ও তোমাদের ধর্মরুপে ইসলামকে নির্দিষ্ট করছি।

(কোরান ৫:৩)’’ “ এটা তিনিই যিনি পথ নির্দেশনা ও সত্য ধর্মসহ তাঁর বার্তাবাহককে প্রেরণ করেছেন, সকল ধর্মের উপরে এর আধিপত্য ঘোষণার জন্যঃ এবং আল্লাহই এর সাক্ষী হিসাবে যথেষ্ট। (কোরান ৪৮:২৮)’’ মোহাম্মদ এর অধীনে ইসলামের আবির্ভাবে ইসলাম-পূর্ব সংস্কৃতি, রীতি-প্রথা ও ধর্ম সমষ্টির সভ্যতা গুলো বিবেচিত হয়, ‘আইয়ামের জাহেলিয়া’ বা অন্ধকার যুগ নামে। নবী মোহাম্মদের কোরানের ৯:৫ নং আয়াতে আল্লাহর নির্দেশ মোতাবেক পৌত্তলিকদেরকে ‘হয় ইসলাম গ্রহণ নয় মৃত্যু’-এ উপায় দুটির একটি বেছে নেওয়ার শর্ত দিয়ে তাঁর জ্ঞাতি-গোষ্ঠি সহ সমগ্র আরবাঞ্চলের ইসলাম-পূর্ব পৌত্তলিক ধর্মীয় চর্চা, সংস্কৃতি ও প্রথায় সমষ্টিগত সভ্যতাকে মুছে ফেলার জন্য একান্তচিত্তে কাজ করে যান। আল্লাহর পথে যুদ্ধ করতে ইসলামের যোদ্ধারা আরবের বাইরেও ছড়িয়ে পড়ে ও বিশ্বের বৃহত্তম পারস্য, বাইজান্টিয়াম ও ভারতীয় সভ্যতাসহ বিশাল ভূখন্ড জয় করে নিলে, পরাজিত জনগণ তাদের আদি সংস্কৃতি, রীতি-নীতি ও ধর্মীয় চর্চায় ব্যাপক ধ্বংস সাদন ভোগ করে। ইসলামের পূর্বে বিশ্ব-বিখ্যাত বিজয়ীরা - যেমন আলেক্সান্ডার দ্য গ্রেট, সাইরাস দ্য গ্রেট, ইউরোপের জার্মানরা ( ভ্যান্ডাল, ভিসিগথ, Ostrogoths,) এবং ভারতে শক, ও হুনরা- সবাই বিজিত দেশের ধর্ম, সংস্কৃতি ও সমাজের মধ্যে হয় মিশে যায়, অথবা বিজয়ী ও বিজিত সংস্কৃতির মধ্যে যুগপৎ সমন্বয় করেন।

ইসলাম পরবর্তী যুগে মোঙ্গলা দখলররাও শেষ পর্যন্ত বিজিত জনগণের সভ্যতার সঙ্গে মিশে গিয়েছেনঃ চীন ও মোঙ্গোলিয়ায় তাদের অধিকাংশই বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বী হয়, মধ্য এশিয়ায় হয় মুসলিম, এবং রাশিয়া ও হাঙ্গেরিতে তাদের কিছু অংশ খ্রিশ্চান ধর্ম গ্রহণ করেছে। কিন্তু মুসলিম বিজয়ীরা একনিষ্ঠভাবে বিধর্মী বিজিতদের সংস্কৃতি ধ্বংসের কাজে লিপ্ত হন- এ বিশ্বাস যে, ইসলামপূর্ব ‘জাহেলিয়া’ যুগের সমস্ত চিহ্ন বা সাক্ষ্য মুছে ফেলে তদস্থলে ইসলামের বিশুদ্ধ ধর্মীয়, রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক সভ্যতা প্রতিষ্ঠিত করতে হবে। ভারত থেকে স্পেন পর্যন্ত অসংখ্য পৌত্তলিক মন্দির, বৌদ্ধ সন্ন্যাসী মঠ, খ্রিষ্টান চার্চ, ও ইহুদি সিনাগগ এর ব্যাপক ধ্বংসলীলা মুসলিম দখলদারদের দ্বারা অনৈসলামিক সংস্কৃতির বেপরোয়া ধ্বংসের সাক্ষ্য বহন করে। শাসিতদের সভ্যতা ও সংস্কৃতির উপর ইউরোপীয় ও আরব-ইসলামি শাসনের তুলনামূলক প্রভাব আলোচনা করতে গিয়ে ইবনে ওয়ারাক আফসোস করে লিখেনঃ “ ইউরোপীয়রা যদিও তৃতীয় বিশ্বে তাদের প্রতারণাপূর্ণ ও অধঃপতিত মূল্যবোধ, সংস্কৃতি ও ভাষা চাপিয়ে দেওয়ার জন্য অবিরাম তিরস্কৃত, কিন্তু কেউই উল্লেখ করবে না যে, ইসলাম কর্তৃক উপনিবেশিত দেশগুলো ছিল অগ্রগামী প্রাচীন সভ্যতার লীলাক্ষেত্র, আর এটা করতে গিয়ে ইসলামি উপনিবেশবাদ বহু সংস্কৃতিকে পদদলিত ও চিরতরে ধ্বংস করে’’।


অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.