আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

অপহরণ আতঙ্ক দেশজুড়ে : কারও লাশ মেলে, কারও খোঁজ মেলে না



অপহরণ আতঙ্ক দেশজুড়ে! ব্যবসায়ী, রাজনীতিক, ধনাঢ্য ব্যক্তি থেকে শুরু করে নারী-শিশু কেউই এ আতঙ্কের বাইরে নয়। মুক্তিপণ ও চাঁদা দাবি, পূর্বশত্রুতার জের ধরে পরিকল্পিতভাবে ঘটছে এসব ঘটনা। অপহরণের ক্ষেত্রে নতুন আতঙ্ক আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর পরিচয়ে মানুষকে তুলে নিয়ে যাওয়ার ঘটনা। এ ধরনের অপহরণের পর গুম-নিখোঁজ হওয়ার ঘটনা আতঙ্কের মাত্রা বাড়িয়ে দিয়েছে। নিখোঁজের পর কারও লাশ পাওয়া যায় আবার কারও খোঁজ মেলে না।

সম্প্রতি বেশ ক�জন রাজনৈতিক নেতা ও ব্যবসায়ী অপহৃত হন। দীর্ঘদিন গত হওয়ার পরও তাদের খোঁজ পাওয়া যায়নি। ওইসব পরিবারের অভিযোগ, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর পরিচয়ে সাদা পোশাকধারী সদস্যরা এসব ব্যক্তিকে আটক করে নিয়ে গেছে। রাজশাহীতে এক ব্যবসায়ীকে অপহরণের তিন দিন পর তার ৯ টুকরো লাশ পাওয়া যায়। এসব ঘটনায় স্বজনহারা পরিবারগুলো চরম উদ্বিগ্ন।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, চলতি বছরের প্রথম তিন মাসে রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন এলাকায় অপহরণের পর শিশুসহ ১০ জনকে নৃশংসভাবে হত্যা করা হয়েছে। ভুক্তভোগীদের পক্ষ থেকে অভিযোগ করা হয়েছে, অপহরণের পর কোথাও খুঁজে না পেয়ে থানায় মামলা বা জিডি করার পরও নিখোঁজ ব্যক্তির সন্ধান দিতে পারেনি আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। অনেকেই অভিযোগ করেন, অপহরণের পর মামলা দায়ের করা হলেও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর শিথিলতার সুযোগে দুর্বৃত্তরা হত্যাকাণ্ড ঘটায়। এমনকি সাদা পোশাকে অপহরণের কোনো ঘটনার বিষয়ে এখন পর্যন্ত আইন প্রয়োগকারী কোনো সংস্থা দায়িত্ব নেয়নি। এসব ব্যক্তির ভাগ্যে কী ঘটেছে তা কেউ জানে না।

কিছু দিন আগে ক্ষমতাসীন দলের এমপি আফজাল হোসেন তার কিশোরী কন্যা তুষাকে অপহরণের অভিযোগে রাজধানীর শাহবাগ থানায় মামলা করেছিলেন। খোদ সরকারি দলের এমপির অপহরণ মামলা দায়েরের ঘটনায় তোলপাড় শুরু হয় পুলিশ প্রশাসনে। হন্তদন্ত হয়ে তদন্তে নামে র্যাব, পুলিশ ও গোয়েন্দারা। ঘটনার ১০ দিন পর পুলিশ তুষাকে উদ্ধার এবং অপহরণকারীকে গ্রেফতার করায় স্বস্তি আসে। পুলিশের আইজি হাসান মাহমুদ খন্দকার বলেছেন, পুলিশ-র্যাবের নামে অপহরণের ঘটনা ঘটছে।

এসব ঘটনায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনী জড়িত নয়। অপরাধীরাই আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর নাম ব্যবহার করছে। এটা অপরাধীদের একটা কৌশল। যতগুলো ঘটনা ঘটেছে তার তদন্ত করা হচ্ছে। এরই মধ্যে বেশ কয়েকটি ঘটনা তদন্ত করা হয়েছে।

তাতে দেখা গেছে, এসব ঘটনায় র্যাব-পুলিশের কোনো সম্পৃক্ততা নেই। তিনি আরও বলেন, এই দুর্বৃত্তদের ধরতে একাধিক গোয়েন্দা সংস্থা কাজ করছে। র্যাব মহাপরিচালক মোখলেছুর রহমান বলেন, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর নামে অপহরণের অভিযোগ সঠিক নয়। র্যাবের নাম ভাঙিয়ে সন্ত্রাসীরা এসব ঘটনা ঘটাচ্ছে বলে তিনি মনে করেন। পুলিশের সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, গত দুই বছরে সারাদেশে ১ হাজার ৭২৮টি অপহরণের ঘটনা ঘটে।

পুলিশের হিসাবে ২০১০ সালে অপহরণ হয়েছে ৮৭০টি। ২০০৯ সালে ছিল ৮৫৮টি। আগের বছরের চেয়ে গত বছর ১২টি ঘটনা বেশি ঘটেছে। চলতি বছর জানুয়ারি, ফেব্রুয়ারি ও মার্চ তিন মাসে ১৮৬টি অপহরণের ঘটনা ঘটেছে। জানুয়ারিতে ৪৫, ফেব্রুয়ারিতে ৬৩ ও মার্চে ৭৪টি।

তবে বিভিন্ন মানবাধিকার সংস্থার জরিপ অনুযায়ী, এই চিত্র আরও ভয়াবহ। মানবাধিকার সংস্থার জরিপ অনুযায়ী তিন মাসে শুধু রাজধানী ঢাকাতেই অপহরণের ঘটনা ঘটেছে শতাধিক। খোঁজ নেই মুফতি আমিনীর ছেলের : ইসলামী আইন বাস্তবায়ন কমিটির চেয়রম্যান মুফতি ফজলুল হক আমিনীর ছেলে মাওলানা আবুল হাসনাতের সন্ধান মেলেনি ১০ দিনেও। সাদা পোশাকধারীদের হাতে আটক হওয়ার পর থেকেই নিখোঁজ আছেন হাসনাত। আবুল হাসনাত কোথায় আছেন, তিনি জীবিত না মৃত সে ব্যাপারে মেলেনি নির্ভরযোগ্য কোনো তথ্য।

এমনকি সরকারের আইন প্রয়োগকারী সংস্থাগুলো আটক কিংবা গ্রেফতারের দায়িত্ব স্বীকার না করায় হাসনাতের ভাগ্য অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে। তার পরিণতির কথা ভেবে চিন্তিত হাসনাতের স্বজনরা। গত ১০ এপ্রিল সূত্রাপুরের টিপু সুলতান রোডে একটি কনফেকশনারি থেকে আইন প্রয়োগকারী সংস্থার সদস্য পরিচয় দিয়ে ৬/৭ জন লোক আমিনীর ছেলে মাওলানা হাসনাতকে অপহরণ করে নিয়ে যায়। এরপর থেকে তার আর হদিস মেলেনি। মাওলানা হাসনাতকে যখন অপহরণ করা হয় তখন তার সঙ্গে ছিলেন দুই বন্ধু আবু রায়হান ও হুমায়ুন কবীর।

এরা পরে আমিনী ও তার পরিবারের সদস্যদের জানান, আইন প্রয়োগকারী সংস্থার পরিচয়ে হ্যান্ডকাফ পরিয়ে তাকে ছাই রংয়ের একটি গাড়িতে তুলে নিয়ে যাওয়া হয়। র্যাব, স্পেশাল ব্রাঞ্চ, জাতীয় নিরাপত্তা গোয়েন্দা ও মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) দায়িত্বশীল সূত্রগুলোতে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, এসব সংস্থার কোনো সদস্যই হাসনাতকে গ্রেফতার করেনি। আমিনী অভিযোগ করেছেন, এ ঘটনার পর ছেলের মোবাইল ফোন থেকে তাকে হুমকি দেয়া হয়েছে। ১১ দিন ধরে নিখোঁজ গার্মেন্ট ব্যবসায়ী : রাজধানীর সূত্রাপুরে র্যাব পরিচয়ে অপহৃত গার্মেন্ট ব্যবসায়ী তারিক উদ্দিন আহম্মেদ রানার (৩৪) খোঁজ মেলেনি। অপহৃতের পরিবারের সদস্যরা আশঙ্কা করছেন, অজ্ঞাত দুর্বৃত্তরা তাকে হত্যা করতে পারে।

এ ঘটনায় সূত্রাপুর থানায় একটি সাধারণ ডাইরি করেছে রানার পরিবার। রানার বড়ভাই মামুনুর রশীদ জানান, তার ছোট ভাইয়ের নামে থানায় কোনো মামলা বা অভিযোগ নেই। তিনি সদরঘাট ইস্ট বেঙ্গল মার্কেটের কালার প্লাস গার্মেন্টের মালিক। গত ৯ এপ্রিল সূত্রাপুরের লালকুঠি ফরাশগঞ্জ ক্লাব কমিউনিটি সেন্টারে অনুষ্ঠিত বড় ভাই ইয়াদ আহম্মেদ দিপুর বৌ-ভাতের অনুষ্ঠানে সে উপস্থিত ছিল। বিকেল ৪টার দিকে কমিউনিটি সেন্টারের সামনে রানা এসে দাঁড়ালে ৬/৭ জন সাদা পোশাকের অস্ত্রধারী তাকে টেনে একটি মাইক্রোবাসে তোলে।

ওই সময় স্থানীয় লোকজন অজ্ঞাত অস্ত্রধারীদের পরিচয় জানতে চাইলে তারা নিজেদেরকে র্যাবের লোক বলে দাবি করে। পরবর্তীতে র্যাব-১০-এর কার্যালয়সহ বিভিন্ন স্থানে খোঁজ নিয়ে তার কোনো সন্ধান পাওয়া যায়নি। এ ঘটনায় র্যাব-১০-এর কমান্ডিং অফিসার এসএম কামাল হোসেন বলেন, রানা নামে কাউকে তাদের কেউ ধরে আনেনি। সূত্রাপুর থানার সাব-ইন্সপেক্টর (এসআই) আল-মামুন গতকাল জানান, ঘটনার একদিন পরই তিনি ছুটি নিয়ে গ্রামের বাড়িতে গেছেন। তবে গতকাল সোমবার পর্যন্ত ব্যবসায়ী তারেককে পাওয়া যায়নি বলে জানান ওই পুলিশ কর্মকর্তা।

মতিঝিলে ব্যবসায়ী নিখোঁজ ৮ দিন : ফকিরাপুল এলাকার ব্যবসায়ী হারুন অর রশিদ হারুন বাসা থেকে বাজার করার উদ্দেশে বের হয়ে আর ফিরে আসেননি। হারুন অর রশিদের ছেলে মোস্তফা জামান ফরহাদ জানান, গত ১২ এপিল রাত ৮টার দিকে শান্তিনগর বাজারে যাওয়ার উদ্দেশে ৭৮ নম্বর ফকিরাপুলের বাসা থেকে তার বাবা বের হন। এরপর তিনি আর ফিরে আসেননি। ফরহাদ বলেন, ১০২ ফকিরাপুলে সম্পত্তি নিয়ে তার এক ফুফার সঙ্গে দীর্ঘদিন ধরে তাদের বিরোধ রয়েছে। বাজারে যাওয়ার সময় ওই আত্মীয়ও তার বাবার সঙ্গে ছিলেন।

কিন্তু তিনিও নিখোঁজের ব্যাপারে কোনো তথ্য দিতে পারছেন না। এ ব্যাপারে মতিঝিল থানায় একটি জিডি করা হয়েছে। পুলিশ সদর দফতরেও লিখিত অভিযোগ দেয়া হয়েছে। ফরহাদ আরও বলেন, ঘটনার পর সম্ভাব্য সব স্থানে তারা খোঁজ নিয়েছেন। হাসপাতাল ও মর্গে অনুসন্ধান করেছেন, কিন্তু কোথাও পাওয়া যায়নি তার বাবাকে।

চৌধুরী আলম নিখোঁজ ১০ মাস : বিএনপি জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য ও ঢাকা সিটি কর্পোরেশনের ৫৬ নম্বর ওয়ার্ড কমিশনার চৌধুরী আলমকে ২০১০ সালের ২৫ জুন ফার্মগেট এলাকা থেকে সাদা পোশাকধারী লোকজন অপহরণ করে। চৌধুরী আলমের ছোটভাই খুরশিদ আলম মিন্টু জানান, রাজনৈতিক কারণে তাকে অপহরণ করা হয়েছে। গত বছরের ২০ জুন ইউনাইটেড হাসপাতালে চিকিত্সাধীন ডিসিসি�র মেয়র সাদেক হোসেন খোকাকে দেখে ফেরার পথে র্যাব পরিচয়ে তাকে উঠিয়ে নেয়া হয়। তার ভাইকে বহনকারী প্রাইভেটকারটি কারওয়ান বাজার ওয়াসা ভবনের বিপরীতে পরিত্যক্ত অবস্থায় পাওয়া যায়। তার ছেলে আবু সাঈদ আলম চৌধুরী হিমু বলেন, এ নিয়ে শেরেবাংলা নগর থানায় একটি অপহরণ মামলা করা হয়েছে।

ভাইয়ের মতো র্যাবও আমাকে অপহরণ করার চেষ্টা করছে। ভাইকে হত্যা করা হলে তার লাশ ফেরত দেয়ার দাবি জানান তিনি। হিমু বলেন, সব চেয়ে বেশি কষ্ট, বাবার ভাগ্যে কি ঘটেছে আমরা কিছুই জানি না। রাজশাহীতে অপহৃত ব্যবসায়ীকে খুন : ২০ লাখ টাকা মুক্তিপণের দাবিতে অপহৃত রাজশাহীর ব্যবসায়ী আমিনুল হকের ৯ টুকরো লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। গত ১০ এপ্রিল একটি হোটেল থেকে নিখোঁজ হন আমিনুল।

এরপর থেকে তার ব্যবহৃত মোবাইল ফোনটি বন্ধ ছিল। পরিবারের দাবি, তাকে অপহরণ করে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করা হয়। এ ঘটনায় মহানগরীর বোয়ালিয়া মডেল থানায় সাধারণ ডাইরি ও পরে আমিনুলের স্ত্রী সালমা সুলতানা সীমা বাদী হয়ে মামলা দায়ের করেন। মামলার পরিপ্রেক্ষিতে ঘটনার ৩ দিন পর আমিনুল হকের মোবাইল ট্র্যাকিং করে নগরীর আলুপট্টি এলাকার জহির উদ্দিনের বাড়ির নিচতলা থেকে ১২ এপ্রিল রাতে তার ৯ খণ্ড লাশ উদ্ধার করা হয়। লাশের টুকরোগুলো কয়েকটি বস্তায় রাখা ছিল।

পুলিশের ধারণা, সম্পত্তি নিয়ে বিরোধের জের ধরে এ হত্যাকাণ্ড ঘটেছে। তবে পরিবারের অভিযোগ, অপহরণের পর মুক্তিপণ হিসেবে ২০ লাখ টাকা নেয়ার পরও তাকে খুন করার ঘটনা রহস্যজনক। এর পেছনে অন্য কোনো ষড়যন্ত্র থাকতে পারে। কয়েকটি আলোচিত ঘটনা : গত ১৪ এপ্রিল যশোরের বড়বাজার ব্যবসায়ী সমিতির নেতা অপহৃত রফিকুল ইসলাম চৌধুরী ওরফে মুল্লুক চাঁনকে ব্যবসায়ীদের চাপে এক ঘণ্টার ভেতরেই উদ্ধার করে পুলিশ। অভিযোগ উঠেছে, স্থানীয় এমপি খালেদুর রহমান টিটোর ছেলে ও শ্যালকের নেতৃত্বে একদল অস্ত্রধারী সন্ত্রাসী তাকে অপহরণ করে।

এতে বাধা দেয়ায় সুবল ও জাহাঙ্গীর নামে দুই শ্রমিক সন্ত্রাসী হামলায় আহত হন। এ ঘটনার প্রতিবাদে স্থানীয় ব্যবসায়ীরা বড়বাজার বন্ধ রেখে ধর্মঘট পালন করে। ১৫ এপ্রিল বান্দরবান শহরতলির বেসরকারি পর্যটন রিসোর্ট �শাকুরা ভিলেজ� থেকে ওমর ফারুক নামের এক কর্মচারীকে দুর্বৃত্তরা অপহরণ করে। অপহরণকারীরা পরে ৫০ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করে। আমাদের প্রতিনিধি জানান, অপহৃতকে উদ্ধারে পুলিশ ও সেনাবাহিনী অভিযানে নেমেছে।

১১ এপ্রিল রাঙামাটির বাঘাইছড়ি উপজেলার সাজেক ইউনিয়ন থেকে ওই ইউনিয়নের ১০ নম্বর গ্রামের বিক্রম চাকমা (২৯) এবং শিজক ছড়া গ্রামের প্রদীপ চাকমাকে (৪০) অপহরণ করেছে দুর্বৃত্তরা। গত ১৬ এপ্রিল ঢাকা মেডিকেল কলেজ থেকে অপহৃত গৃহবধূ মিনু বেগমকে (২০) পাওয়া গেছে বলে জানিয়েছেন তার বোন সোনিয়া আক্তার। মিনু জানান, রাজধানীর কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার থেকে সাদা পোশাকধারী পুলিশ সদস্যরা তাকে আটক করে মোহনগঞ্জ থানায় নিয়ে যায়। থানায় নিয়ে তাকে সন্দেহজনক অপরাধী বানিয়ে পুলিশ নির্যাতন চালায়। এ ব্যাপারে দৈনিক আমার দেশ পত্রিকায় একটি খবর ছাপা হয় এবং ১৭ এপ্রিল পুলিশ তাকে কোর্টে চালান না দিয়ে ছেড়ে দিলে তিনি পুরান ঢাকার নিজ বাড়িতে ফিরে আসেন।

১১ ফেব্রুয়ারি বাড্ডা থেকে অপহৃত ব্যবসায়ী হাবিবুল করিমের (৩৫) লাশ পাওয়া যায় চার দিন পর। পুলিশ জানায়, খিলগাঁওয়ের সিপাহীবাগ এলাকায় নির্মাণাধীন ভবন থেকে গত ১৫ ফেব্রুয়ারি তার হাত-পা বাঁধা পচা লাশ উদ্ধার করা হয়। খিলগাঁও থানার সাব-ইন্সপেক্টর (এসআই) শরিফুল জানান, স্থানীয় লোকজনের কাছ থেকে খবর পেয়ে দুপুর দুটার দিকে সিপাহীবাগের সাহেরুনবাগ এলাকায় নির্মাণাধীন ৭ তলা ভবনের পঞ্চম তলার ফ্ল্যাট থেকে হাবিবুলের মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়। রাজধানীর শুক্রাবাদের বাসিন্দা ইউসুফ আলী সুজনকে (৩১) অপহরণের পর হত্যার অভিযোগ উঠেছে র্যাবের বিরুদ্ধে। ৯ মাস ধরে নিখোঁজ সুজনকে অপহরণের অভিযোগে র্যাবের দু�জন সোর্সকে আসামি করে শেরে বাংলানগর থানায় করা মামলাটি বর্তমানে তদন্ত করছে গোয়েন্দা পুলিশ।

এরই মধ্যে পুলিশের হাতে গ্রেফতার হওয়া এক সোর্সের বরাত দিয়ে সুজনের পরিবার দাবি করেছে, র্যাব-২-এর কিছু কর্মকর্তা এ ঘটনায় জড়িত। সুজনের ভাই ৫১ নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মাহবুবুর রহমান গত ১ জানুয়ারি সাংবাদিকদের জানান, আমার ভাইকে র্যাব-২-এর সদস্যরা ধরে নিয়ে হত্যা করে লাশ গুম করেছে। তিনি বলেন, বিষয়টি স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীকে জানানো হয়েছে। পুরান ঢাকার লালবাগ থেকে অপহরণের ৩২ দিন পর পরিবহন ব্যবসায়ী মনির হোসেনকে (৪২) গত ২৭ ফেব্রুয়ারি অচেতন অবস্থায় পাওয়া যায়। মনিরের স্বজনরা বলেন, মনিরের শ্যালক ব্যবসায়ী জাহাঙ্গীর হোসেন (৩০) প্রায় চার মাস ধরে নিখোঁজ।

এদিকে সিলেট সদর উপজেলায় অজ্ঞাত পরিচয় দুই তরুণের লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। সোমবার বিকালে উপজেলার কান্দিরগাঁও ইউনিয়নের ডালুয়া বিল এবং রোববার সন্ধ্যায় জালালাবাদ ইউনিয়নের আলকিনগর গ্রামে লাশ দুটি পাওয়া যায়। সিলেট কোতোয়ালি থানার সহকারী সাব-ইনপক্টর (এএসআই) আবদুর রহিম জানান, ডালুয়া বিলে গলাকাটা লাশটি (২৫) দেখে এলাকাবাসী পুলিশে খবর দেয়। এদিকে আলকিনগর গ্রামের একটি ডোবা থেকে একটি গলিত লাশ উদ্ধার করা হয়। পুলিশের ধারণা, অন্য কোথাও থেকে এ দু�জনকে অপহরণের পর হত্যা করা হয়েছে।


অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।