আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

আমার জানালায়...

...

ভোর বেলা থেকে রাস্তাটা নিরবই থাকে, বেলা হতে থাকে আর মানুষের আনাগোনা বাড়তে থাকে, রাস্তার আশেপাশে সব কর্মব্যাস্ত মানুষের বাস, তারাই বেশি ব্যাবহার করে রাস্তাটা। তাই অফিসে যাওয়ার সময় হঠাৎ করেই চেহারাটা বদলে যায়, সাড়ে আটটা থেকে নয়টা পর্যন্ত মানুষ মানুষের গায়ে ধাক্কা দিয়ে চলতে থাকে, শুধু মাত্র নয়টা বা তার কিছু পর পর্যন্ত, তারপর আবার নিরব হয়েযায় সব। সারাদিন ধরে অল্প কিছু মানুষ আর কিছু পথশিশু হেঁটে বেড়ায় সেই রাস্তা দিয়ে, মাঝে মাঝে গরুর পাল হেঁটে যায় সাথে একজন রাখাল। বৈশাখের কটকটে রোদে সারাদিন একাই পোড়ে রাস্তাটা। ওটার ধারে একটা ছোট্ট মজা পুকুর, তাতে সারাদিন খেলা করে হাঁসের দল, প্রচন্ড গরমে তাদের আরামদায়ক সাঁতার আর গোসল দেখে ইচ্ছা হয় যদি আমিও হাঁস হতাম! ছোট বেলায় ফড়িং ধরতে যেতাম পাশের বাড়ির বাগানে, ধরতে পারতামনা, উড়ে উড়ে অনেক উঁচুতে অনেক দূরে চলে যেত ফড়িংগুলো, মনেহত যদি আমি ফড়িং হতাম! ভাইয়া বলত তাহলে তোকে কেউ ধরে ফেলত আর তুই মরে যেতি, তখনই ইচ্ছা বদলে ফেলতাম ভয়ে, বলতাম তাহলে আমি পাখি হব, ভাইয়া বলত কি পাখি? বলতাম চড়ুই পাখি, ভাইয়া বলত তাহলে সবার আগে মারা পড়বি, সবাই চড়ুই পাখির বাসায় হামলা করে পাখি ধরে এনে রান্না করে খায়, তারপর ভাবতাম কোন পাখিটা সবচেয়ে উচু দিয়ে উড়ে, কিন্তু নিরাপদ কোনও পাখির নাম পেতাম না, ভাইয়া কোনও না কোনও বিপদ খুঁজে বের করত। খুব গরমে হাঁসদের সাঁতার কাটার আনন্দ দেখে আমার এখনও লোভ হয় হাঁস হওয়ার আবার তার পর মুহূর্তেই ভয় পাই যদি কেউ ধরে জবাই করে ফেলে! হাঁসেরা চলেগেলে পুকুরটাও একা হয়েযায়, একলা একটা পুকুর একলা একটা রাস্তা। মাঝে মাঝে হাল্কা বাতাস বয় তাতে পুকুরে ঝিরিঝিরি ঢেঁউ হয়, ময়লা সবুজ পানিতে নীল আকাশের ছায়া পড়ে রংটা পরিষ্কার লাগে, মনেই হয়না এটা কোনও মজা পুকুর। পুকুরের ধারে একটা কড়ই গাছ ছায়া দিচ্ছে, ফুল ফুটেছে, বাতাসে গোলাপী ফুল গুলো দুলতে থাকে, রাস্তা ফাঁকা হয়ে যাওয়ায় উদাসী ভাবটা কেটে যায়, হঠাৎ গাছের ওপরে চোখ উঠতেই সারিসারি অট্টালিকার দিকে তাকিয়ে মনেপড়ে যায় কত কাজ পড়ে আছে আমার।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।