আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

ব্রাহ্মণবাড়িয়া কোন পথে?

লিখে খাই, সবার ভাল চাই

ব্রাহ্মণবাড়িয়া কোন পথে? শামীমুল হক এক লোক রাস্তা দিয়ে হেঁটে যাচ্ছিলেন। অনেক দূর যাবেন তিনি। হাঁটতে হাঁটতে এক সময় চোখে পড়ল রাস্তার পাশের জমিতে বাঁশের মাচায় লাউ গাছ। মাচার ফাঁকে ফাঁকে বিরাট বড় বড় লাউ। চিন্তা করতে থাকলেন তিনি।

চিকন লতের লাউ গাছ। আর এ গাছে ধরে ইয়া বড় বড় লাউ। যাকে কি-না মাচা দিয়ে আটকে রাখতে হয়। আল্লায় কি বোকা! এত বড় আম গাছে ধরে ছোট ছোট আম। লাউ গাছে আম আর আম গাছে লাউ দিতে পারতেন না? আল্লায় বড় ভুল করেছে।

এ কথা ভাবতে ভাবতেই তিনি হঠাৎ রাস্তার পাশের একটি আম গাছের নিচে গিয়ে বসলেন। অনেকক্ষণ হেঁটেছেন। একটু জিরিয়ে নেবেন তিনি। কিছুক্ষণ বসার পরই হঠাৎ ওপর থেকে তার মাথার ওপর একটি আম এসে পড়ে। আমটি মাথার সামনে দিয়ে নাকে আঘাত করে নিচে পড়ে যায়।

এতে করে তার নাক দিয়ে রক্ত ঝরতে থাকে। তিনি রক্ত মুছতে মুছতে বলতে থাকেনÑ না, আল্লায় বুঝেই আম গাছে আম আর লাউ গাছে লাউ দিয়েছে। আজ মাথায় আম না পড়ে যদি বড় লাউ পড়ত তাহলে কি হতো? এজন্যই গাছ বড় হলেও ফল দিয়েছে ছোট। আর লতের মতো গাছে দিয়েছেন বড় লাউ। কিন্তু আমাদের সমাজে ঘটছে ভিন্ন।

এখন আল্লার ওপরই কেউ কেউ হাত দিতে শুরু করেছেন। আর শুরু করবেনই না কেন? তিনি কি কম ক্ষমতাধর? তার পেছনে থাকে শত শত মানুষ। যারা তার নামে সে­াগান দেয়। যারা তার নামে জান কোরবান দিতে প্রস্তুত। যার হাতের ইশারায় ওলট-পালট হয়ে যেতে পারে অনেক কিছু।

বলছিলাম সংস্কৃতির ভাণ্ডার ব্রাহ্মণবাড়িয়ার কথা। গোটা ভারতবর্ষের গানের রাজ্য শাসন করেছে এ ব্রাহ্মণবাড়িয়া। সাহিত্যেও ব্রাহ্মণবাড়িয়া এগিয়ে। আর সাংবাদিকতায় ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নাম সেই বৃটিশ আমল থেকেই। যেখান থেকে হাতে লেখায় পত্রিকা বের হতো।

কল্পনা করা যায়? ব্রাহ্মণবাড়িয়া কতটুকু এগিয়ে! কিন্তু আজকের ব্রাহ্মণবাড়িয়া দেখে মনে প্রশ্ন জাগে আসলে ব্রাহ্মণবাড়িয়া এখন কোন পথে যাচ্ছে। নারীনীতি নিয়ে দেশ এখন উত্তপ্ত। সরকার দলীয় লোকজন বুঝুক আর নাই বুঝুক নারীনীতির পক্ষে সাফাই গাইছেন। এমন যে এ নীতি বাস্তবায়নে প্রয়োজনে তার জান কোরবান দেবেন। আর ইসলামী ঐক্যজোটের চেয়ারম্যান মুফতি ফজলুল হক আমিনী কোরআন হাতে নিয়ে নারীনীতির বিরুদ্ধে মাঠে নেমেছেন।

তিনি ইসলাম বুঝেন। কোরআনের মর্মার্থ বুঝেন। নারীনীতি তিনি দেখেছেন। বুঝেশুনেই তিনি কথা বলছেন। এমনটাই দাবি তার এবং তার সমর্থকদের।

কিন্তু সমস্যা এখানে নয়, অন্যখানে। ইসলামী আইন বাস্তবায়ন কমিটি নারীনীতির বিরুদ্ধে গত ৪ঠা এপ্রিল হরতালের ডাক দেন। তাদের হরতাল কতটুকুইবা পালন হবে? এমনটাই আলোচনা হচ্ছিল সর্বত্র। এরই মধ্যে ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় ঘোষণা দেয়া হলোÑ যে করেই হোক হরতাল প্রতিহত করা হবে। সারাদেশে হরতাল হলেও ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় হরতাল হতে দেয়া হবে না।

গণতান্ত্রিক শাসন ব্যবস্থায় হরতাল করা যেমন অধিকার, তেমন হরতাল না করাও অধিকার। কিন্তু হরতাল প্রতিহত করার ঘোষণা কোন অধিকার? এ প্রশ্ন স্বাভাবিকভাবেই এসে যায়। প্রতিহত করার ঘোষণা দিয়ে পক্ষান্তরে কি ওলামাদের ক্ষেপিয়ে দেয়া হলো না? এছাড়া হরতালে একজন গাড়ি নিয়ে চলার অধিকার অবশ্যই রাখেন। কিন্তু ওই ব্যক্তি যদি হন প্রতিহত করার ঘোষণাকারী তাহলে কেউ কেউ ক্ষিপ্ত হয়ে গাড়িতে আক্রমণ করে বসতে পারেন। যেমনটি হয়েছেও।

কিন্তু এ আক্রমণকে কোনভাবেই সমর্থন করা যায় না। আর এ আক্রমণের পর যে রামদা বাহিনীর তাণ্ডব চলেছে তাও ছিল জঘন্য। এমন পাল্টাপাল্টি অবস্থায় ব্রাহ্মণবাড়িয়া ক’দিন ছিল আতঙ্কের শহর। এমন আতঙ্ক সাম্প্রতিক সময়ে দেখা যায়নি। এমনটি কেন হচ্ছে? ব্রাহ্মণবাড়িয়া আসলে কোন পথে যাচ্ছে? এসব নিয়েই কথা হচ্ছিল দাদার সঙ্গে।

দাদা উপরের গল্পটি শুনিয়ে বললেন, আসলে লাউ গাছে যদি আম ধরে আর আম গাছে লাউ তাহলে এমন অবস্থাই হবে। অতএব, সাবধান!

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.