আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

শাবাস মন্ত্রীজি! শেকড়কে ভোলেন নাই



ভোটের বাজারে পঁচা নর্দামা মাড়িয়ে তারা বস্তিতেও যান। বেছে বেছে খুঁজে নেন ভুখা-নাঙ্গাদের। হয়তো গোসলও করেনি বেশ ক'দিন। এদেরকেই বুকে টেনে পোজ দেন ক্যামেরার সামনে। বিশেষ করে টিভি ক্যামেরায় ছবি দেখানো চাই-ই চাই।

আমাদের রাজনীতিবিদদের কথা বলছি। তাদের সম্পর্কে সবচেয়ে বড় অভিযোগ, তারা নাকি ভোটে জিতে গেলে ভুলে যান সব। নির্বাচনী ওয়াদাতো দূরের কথা, এলাকার মানুষের চেহারাও মনে রাখতে পারেন না। কিন্তু আমাদের মানণীয় নৌ-পরিবহনমন্ত্রীকে এমন দোষ দিতে পারবেন না তার শত্রুও। তিনি শুধু মন্ত্রীই নন, শ্রমিকদের নেতাও বটে।

তাও আবার পরিবহন শ্রমিকদের। কোনো একটি শ্রমিক সংগঠনের সভাপতিও আমাদের এই মাননীয় মন্ত্রী। তো এই মন্ত্রী মহাশয় কিন্তু তার শ্রমিক ভাইদের কথা মোটেও ভোলেননি। বরং তাদের সুখে দুঃখে পাশে দাঁড়িয়েছেন। এই যেমন ১৬ এপ্রিল শ্রমিক ফেডারেশনের একটি অনুষ্ঠানে মন্ত্রী আশ্বাস দিলেন দুর্ঘটনায় মানুষ মারলে চালকদের এখন আর আগের মতো কঠোর শাস্তি পেতে হবে না।

যদিও মানুষ মেরে কোনো চালকের তেমন কোনো শাস্তির কথা শোনা যায় না। হত্যার ঘটনায় মামলা হয় দুটি ধারায়। এরমধ্যে পরিকল্পিতভাবে কাউকে হত্যার উদ্দেশ্যে আঘাত করলে মামলা হয় ৩০২ ধারায়। আর অনিচ্ছাজনিত আঘাতে মারা গেলে মামলা হয় ৩০৪ ধারায়। প্রথমটিতে শাস্তি যাবজ্জীবন অথবা মৃত্যুদন্ড।

পরেরটিতে যাবজ্জীবন অথবা সর্বোচ্চ ১০ বছরের সাজা। যদিও দুই তিন বছরের বেশি সাজা কারো হয়েছে বলে শোনা যায়নি। এখন নৌ-পরিবহন মন্ত্রী বলছেন মোটরযান অধ্যাদেশ সংশোধনের কাজ চলছে। যেখানে সড়ক দূর্ঘটনায় কেউ মারা গেলে চালকের বিরুদ্ধে হত্যার উদ্দেশ্যে মামলার বিধান বাতিল করা হবে। অর্থাত মামলা হবে কেবল অনিচ্ছাজনিত আঘাতে মৃত্যুর ধারায় (৩০৪ ধারা)।

মন্ত্রী কি দুর্ঘটনার শিকার যিনি তাকে রক্ষা করতে চাইছেন, নাকি তার সহযোদ্ধা পরিবহন শ্রমিক ঘাতক চালককে? সেটাই স্বাভাবিক। কারণ তিনি যে ওই ঘাতক চালকেরই নেতা। আমজনতার জানমালের নিরাপত্তা নিয়ে ভাবলে কি তার চলবে? এ কারণেই ঘাতক চালকের শাস্তির মেয়াদ কমানোর শত চেষ্টায় লিপ্ত মন্ত্রী। আপনাকে বাহবা দিতেই হয় মন্ত্রীজি। কারণ অন্যদের মতো আপনিতো আপনার শ্রমিকদের কথা ভুলে যাননি।

না হয় দুর্ঘটনায় ক্ষতিগ্রস্ত আম জনতা সঠিক বিচার পেলো না।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.