আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

গরিবরা আবার মানূষ নাকি!!



ছোট্টবেলার একটা ঘটনা মনে পরে গেল। মনে পড়ার কারণটা তেমন কিছুই না - এক ব্লগার ভাইয়ের পোস্ট। লিখাটা ঐ পোস্টের কমেন্ট হিসাবে দেয়া যেত কিন্তু আলাধা করেই দিলাম। ছোট্টবেলায় বড় হয়েছি গ্রামে। বলা যায় অজপাড়াগাঁ।

মনে আছে হাফপেন্ট পড়ে খালি পায়ে দৌড়ে স্কুলে যেটাম। কখনো চাকচিক্ক কি জিনিষ বুঝি নাই। আসলে আমাদের চারপাশে যারা ছিল সবাই মূলত ছিল বেশ গরিব। মনে আছে বছরের একটা দিন নতূন জামা পড়তাম। কি ভীষন আনন্দ লাগত সেদিন।

রাতে মনে হয় ঘুমই আসতো না। আমার বাবা বেশ পরিচিত লোক ছিলেন। অনেক বন্ধু-বান্ধব ছিল তার। তারাও বেশ গরিব ছিল মূলত সবাই। আমাদের পাশের বেশ দু-তিন গ্রাম পড়ে বাবার এক বন্ধু ছিল।

উনার পরিবারটা খানিকটা বড় ছিল। বড় বলছি এ কারণে যে, তার যখন তৃতীয় সন্তান আমার তখনকার বয়সি, তখন তার চতুর্থ সন্তানের জন্ম হয়। পেশায় উনি পুরোহিত ছিলেন। পুরোহিত ব্যপাড়টা হল উনি হিন্দুদের বিভিন্ন ধর্মীয় আচাড় অনুষ্টান সম্পন্ন করতেন। হিন্দুদের এমনিতেই পুরো বছর জুরে অনেক ধর্মীয় রৃতি নিতি পালন কড়তে হয়।

সেই সুবাদে উনারও দু-চার পয়সা আয় হত যা দিয়ে উনি সংসার চালাতেন। দর্গাপূজা হিন্দুদের সব থেকে বড় ধর্মীয় উৎসব। যারা (ব্যক্তি বা মন্দির কমিটি) এটা আয়োজন করতেন মূলত বেশ ভালো বাজেট ও রাখতেন এর পিছনে। তো সেবার উনি ব্যক্তি উদোগে আয়োজিত একটি পূজার পূরোহিত হন। সাধারণতঃ এসব পূজায় যারা পূজক হন তাদের উপোশ (রোজা) থাকতে হয়।

অনেকে দিনে খুব সামান্য আহাড় করেন তাও আবার দিনের বিশেষ একটা সময়ে (আসলে পুরো ব্যপাড়টা ভালো ভাবে বলতে পড়ছিনা বলে দুঃখিত)। একে উনাড় তখন অনেক বয়স তার উপড় আবার সারাদিন রোজা রাখা। খুব সম্ব্বত পূজোর তৃতিয় দিন মানে অস্টমির দিন। যথারৃতি উনি রোজা রেখে সান্ধোআরোতি করছেন। (আপনারা যারা দর্গাপূজা দেখেছেন তারা নিশ্চয় যানেন, সন্ধার সময় ঢাক ডোল পিটিয়ে এক ধরনের জাকজমকপূর্ণ আয়োজন করা হয় সেটাই মূলত সান্ধোআরোতি।

) এমন সময় উনি হটাৎ মাটিতে লুটিয়ে পড়েন। তার কিচুক্ষন পর উনি মূচ্ছাযান। এরও বেশ কিচুক্ষনপর আসেন ডাক্তার। ততক্ষনে অনেক দেরি হয়ে যাই। উনার বাড়ির লোকদের খবরও দেয়া হয় না।

পরে কাছের এক জনের কাছ থেকে শুনি একটা ভেনগাড়িতে (রিক্সার মত হিউমেন হাউলড্ কিন্তু পাচ চাকার ছাউনি ছাড়া গারি) করে উনার মৃতদেহটা অনেক রাতে বাড়ি পাঠানো হয়। যে বাড়িতে উনি পূজা করতে যান তাদের একটা লোকও সাথে ছিল না। উনি গরিব ছিলেন। এতে তার অবদান কি তা আমি জানি না। তবে তার মৃত্যুপরবত্তি যে ইমিডিয়েট ট্রিটমেন উনি পেয়েছেন তা আমাদের একটা বিষয় বেশ পরিস্কার করে তা হলো সমাজের উচ্চবিত্তের নিম্নবিত্তকে অবহেলা।

বাজার থেকে আমরা তরিতরকারি/মিস্টিদ্রব্য কিনে অন্য কারো বাসায় যখন পাঠায় সঙ্গে নিজেদের কেউ বা নিদেন পক্ষে কাজের ছেলেটা অন্তত থাকে। কিন্তু এই পূজক বাম্মণের ভাগ্যে তাও জুটলো না তার কারন উনি গরিব। এগুলোই আসলে আমাদের কালচার। মাঝেমধ্যে ভাবি এত সভ্যতার কথা বলে কি লাভ আমরা কি আসলেই সভ্য??


এর পর.....

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।